>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী

    SongSoptok | 9/15/2016 |


    (চতুর্থ পর্ব)

    আগে যা ঘটেছে:: অষ্টমীর শ্বাশুড়ি মারা যাওয়ায় তার বর ও সতীন তাদের মা বেটিকে তাড়িয়ে দিলে, এদিকে মঙ্গলার পরীক্ষার ফল দারুণ হল, সব মিলিয়ে শুরু হয় তাদের নতুন অধ্যায়।

    হঠাৎই একদিন দারুণ ব্যথা উঠলো অষ্টমীর পেটে; জানা গেলো, গত কয়েকদিন ধরেই নাকি ব্যথা টের পাচ্ছিল অষ্টমী, ভেবেছিল ঠিক হয়ে যাবে তাই কাউকে কিছুই বলেনি কিন্তু এখন যখন মাত্রা ছাড়িয়ে গেলো তখন আর কিছু করার রইলো না,হাসপাতালে নেবার পথেই সব শেষ; ডাক্তাররা বললেন অ্যাপেন্ডিক্স বার্স্ট করেছে। নিজের অবহেলায় শেষ হয়ে গেল অষ্টমী। সৌভাগ্যক্রমে সেদিনই মঙ্গলাদের কলোনিতে বৃহন্নলা মাসীরা উপস্থিত;শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা এবং রাত্রে একা মঙ্গলাকে পাহারা দেওয়া সবই করলো ওরাই। সাথে মঙ্গলাকে সৎ পরামর্শও দিল যে, অষ্টমীর কাজের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় চাইতে। তারাতো মঙ্গলাকে চেনে,ভদ্রলোক ভালোও বাসেন আর নাহলে এই পাড়ায় যদি একা থাকতে চায় শেয়াল কুকুরে ছিঁড়ে খাবে তাকে। রোজ রোজ তো আর বৃহন্নলারা তাকে পাহারা দিতে পারবেনা না?

    মঙ্গলার প্রস্তাবে নিম রাজি সর্বানি মজুমদার। খামোখা একটা উঠতি বয়সের মেয়েকে থাকতে দেওয়া,যথেষ্ট সুন্দরী,তবে এটাও ঠিক এমন একটা মেয়েকে হেল্প করলে সোসাইটিতে বেশ নাম ডাক হবে,আর থাকতে দিচ্ছে,খেতে পড়তে দিচ্ছে কাজেই বিনি পয়সার কাজের লোকও হলো। যদিও ছেলেমেয়েদের জন্য বড় বড় দুটো ঘর আর গেস্টদের জন্য একটা ঘর সাজানো গোজানো পড়েই থাকে তবু মঙ্গলার ঠাঁই হলো ওয়াকইন ক্লজেটে। এর থেকে বেশি মিসেস মজুমদার দিতেও রাজি নয় আর মঙ্গলাও আশা করেনা। অলকেন্দু অবশ্য মঙ্গলা এসে থাকায় খুবই খুশি,মঙ্গলাকে নিজের মেয়ের মতই ভালোবেসে ফেলেছে;তবে গেস্টরুমের বাথরুম যদি ব্যবহার করতে পারে তাহলে গেস্টরুমে কেন থাকতে পারবেনা মঙ্গলা,এই প্রশ্ন তুললেও সর্বানির কাছে পাত্তা পায়নি। মেইডকে ঘরে রেখে লেখাপড়া করছে বলে পার্টির সময়ে বেশ নাম কেনে আজকাল সর্বানি; মঙ্গলা অবশ্য খুব সচেতন ভাবেই নিজেকে মেইড বলে পরিচয় দেয়। সে গর্ব করে বরং বলে যে তার মা কত কষ্ট করে,লোকের বাড়িয়ে এঁটো কাঁটা কুড়িয়ে তাকে আজ এই জায়গায় এনেছে। বেশ বুঝতে পারছে, তার বয়সী অন্য মেয়েদের তুলনায় শুধু মাত্র পরিস্থিতির চাপে আজ সে অনেক বেশি ম্যাচুয়ার্ড,অনেক বাস্তব বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে। শুধু কোনো কোনো রাতে মা ঠাকুমার জন্য হু হু করে মনটা,সারা রাত গুমরে গুমরে কাঁদে।

    সময় বোধহয় সবচেয়ে বড় প্রলেপ;মুঠিতে ধরা বালুর মতই কখন ঝুরে ঝুরে পড়ে যায় টেরও পাওয়া যায়না। মঙ্গলার এগারো ক্লাসের পরীক্ষার ফলও দারুন হলো;মিসেস মজুমদারের কিছুটা হলেও বদল এলো তাতে। কারণ,সবাই মঙ্গলার ভালো রেজাল্টের জন্য মিসেস মজুমদারের অবদানের কথা বলতে লাগলো। তাকে যদি ঠিক ওই সময়ে সর্বানি থাকতে না দিত;তাহলে কি আর মঙ্গলার পক্ষে সম্ভব হত একা থেকে এত ভালো রেজাল্ট করা? কথাটা হয়ত আংশিক ঠিক,তবে দুনিয়ায় তো মঙ্গলাদের অভাব নেই প্রত্যেকেরই কি একজন করে মিসেস মজুমদার জোটে কপালে, তবে তারা ভালো রেজাল্ট করে? যাইহোক মিসেস মজুমদার এখন আরেকটু সম্মান দেয় মঙ্গলাকে এখন ঠিক মেইড মনে করেনা,মনে করে আশ্রিত। ক্লজেট ছেড়ে গেস্টরুমে স্থান হলো মঙ্গলার; বেশ কিছু ভালো পোশাক আশাকও জুটল নাহলে তো সর্বানি মজুমদারেরই বদনাম। মোবাইলও দিতে চেয়েছিল,কিন্তু মঙ্গলাই নিতে অস্বীকার করে। আরো একটা সুবিধা অলকেন্দু দিতে চেয়েও দিতে পারেনি,তা হলো গাড়ি। অলকেন্দু বুঝি তাকে নিজের মেয়ের চেয়েও বেশি ভালোবেসে ফেলেছে। নিজের মেয়েকে নিয়ে তো কোনো আহ্লাদীপনা করার সুযোগই পায়নি সেভাবে অলকেন্দু মজুমদার, কারণ কাজরী ছিল তার মায়ের ছত্র ছায়ায়। মঙ্গলাকে দিয়ে তাই নিজের অপূর্ণ সাধ মেটাতে থাকে অলকেন্দু। তার জন্য কারণে অকারণে সাধারণ মানের কোনো জিনিস কিনে আনা, রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়া,কি রাস্তার ধারের তেলেভাজার দোকানের তেলেভাজা খাওয়া। সবেতেই একজন সাধারণ বাবার স্নেহটুকু উজাড় করে দিত আর মঙ্গলাও সেটা পুরো মাত্রায় গ্রহণ করত। সবই হত সর্বানির চোখ কে যতটা আড়াল করা যায় সেই ভাবে। মঙ্গলার শাসনে, অনুরোধে মি.মজুমদার স্মোক করা,ড্রিংক করা প্রায় বন্ধই করে দিয়েছে। এই ক'দিনে মঙ্গলাও এ বাড়িতে অনেক রকমের পার্টি দেখল;সেগুলোতে অষ্টমীর অভিজ্ঞতাগুলো মনে পড়ত তার। শুধু মঙ্গলার ক্ষেত্রে একটা ধাপ বেশি ছিল কেউ কেউ তাকেও কুপ্রস্তাব দিয়ে বসতো। মঙ্গলা অলকেন্দুকে বুঝিয়েছে ওই সব পার্টিতে সে যদি প্রকিতিস্থ থাকে তাহলে মঙ্গলার এই সব নোংরামোর সম্মুখীন হতে হয়না। কথা শুনেছে অলকেন্দু। তবে স্কুল যাওয়া বা একা কোনো দিন বেরোতে হলে অলকেন্দুর অনেক অনুরোধ উপরোধেও গাড়ি ব্যবহার করেনা মঙ্গলা। "তুমি থাকলে চড়তে বাধ্য, কিন্তু আমার এসব বড়লোকি পোশায় না তুমি তো জানোই" বলেই দিয়েছে সে।

    আজকাল অনেকটা সময় পায় পড়াশোনা করার,সর্বানি তাকে কিছুটা হলেও ছাড় দেয়। সেদিনও বসে পড়ছিল মঙ্গলা;সর্বানি গেছে বিল্ডিংএই একজনের ঘরে তাদের কিসের আড্ডা ছুটির দিনের বিকেল সন্ধ্যে মিলিয়ে। অলকেন্দু সেই সুযোগে গেছে তেলেভাজা আনতে। লিভিংরুমে বসে পড়ছিল মঙ্গলা; সামনেই বারো ক্লাসের পরীক্ষা। চুলগুলোকে উঁচু করে বেঁধে হেয়ার পিনের বদলে হাতের সামনে পেন ছিল তাই দিয়েই আটকে রেখেছে। ডোরবেল বাজতে অলকেন্দু ফিরেছে মনেকরে, একটু অন্যমনস্ক ভাবে ম্যাজিক আই দিয়ে না দেখেই দরজা খুললো। কিন্তু সামনে পিঠ ফিরে দাঁড়ানো আগন্তুককে দেখে ঘাবড়ে গেলো

    "কে?" বলতে সে ও সামনে ফিরে চমকে উঠলো
    "এটা সর্বানি আর অলকেন্দু মজুমদারের বাড়ি না?" বলে দরজায় লাগানো নেম প্লেটের দিকে তাকায়
    "হ্যাঁ" বলেই মঙ্গলা চিনলো "ও ও আপনি শুভ না? ভেতরে আসুন আমি আন্টিকে খবর করছি; জ্যেঠুও এসে যাবেন এক্ষনি"। হ্যাঁ,মজুমদারদের ছেলে শুভ; ভাগ্যিস ছবি ছিল ঘরে,মঙ্গলা দেখেছিলো। সিনেমার হিরোদের মত চেহারা, দারুন সুন্দর জায়গায় তোলা ছবি।
    "আপনি? না মানে আগেতো দেখিনি" শুভর চোখ ঝিকমিক করছে দুষ্টুমিতে

    "আমি মেইড; আপনি আসবেন খবর দেননি তো তাই ওরা কেউ বাড়ি নেই" মেইড কথাটায় যে খোঁচা আছে শুভ বুঝলো। কারণ মেয়েটির পোশাক,কথা বলার ভঙ্গি কোনো কিছুই মেইডের মত নয়। তাছাড়া ও লেখাপড়া করছিল মন দিয়ে,লিভিংরুমে ওর বই খাতা ছড়ানো,খোঁপায় পেন গোঁজা;আর সেই জন্যই অন্যমনস্ক অবস্থায় দরজা খুলেছে। মঙ্গলা গিয়ে ফোন করলো সর্বানিকে; সে তো খবর পেয়ে পড়িমরি দৌড়ে এলো,ইতোমধ্যে অলকেন্দুও তেলেভাজা ইত্যাদি নিয়ে খুশ মেজাজে হাজির। দুজনেই আচমকা ছেলেকে দেখে যেমন অবাক তেমনি আনন্দিত। এসেই যথারীতি সর্বানির ঢং শুরু

    "কি রোগা হয়ে গেছিস বাবাই, তুই বললি নাতো আসবি, ইসস্ একটু রান্না বান্না করাতাম"

    "আন্টি চা করবো এখন?" মঙ্গলার প্রশ্নে সর্বানির আগে অলকেন্দুই জবাব দেয়, চোখের ইশারায় তেলেভাজা গুলো দেখিয়ে "হ্যাঁ, হ্যাঁ করনা আরেহ ___ইয়ে সর্বানি, বলছি কি,তুমি বরং তোমার ওই পার্টি সেরেই এসো নাকি? বাবাই তো থাকছেই; কি বলিস?" বাবার বক্তব্য বুঝলো শুভও

    "হ্যাঁ, মম তুমি সেরে এসো" বলে তাকিয়ে দেখে ওর লাগেজগুলো মঙ্গলা টানছে; হাঁ হাঁ করে উঠলো

    "ওকি ওকি আপ্ মানে তুমি টানছ কেন? আমিই নিয়ে যাচ্ছি"

    "আপনার রুমে রেখে দিচ্ছি,রুম ক্লিন করা আছে,বেডের চাদর আজকেই পাল্টানো" যন্ত্রবত কথাগুলো বলল মঙ্গলা চোখ নামিয়ে

    "আচ্ছা, তাহলে আমি সেরেই আসি,ওদেরকে খবরটা দিয়েও আসি। আর তোমরা বাবা ছেলেতে এখন কথা বলতে চাও বুঝলাম;ওক্কে নো প্রবলেম" বলে সর্বানি যেন অনিচ্ছাসত্ত্বেও যাচ্ছে এমন ভঙ্গিতে উঠে চলল আবার তার সেই পার্টিতে।

    শুভ ঘরে গেলে মঙ্গলা লাগেজ রেখে বেরোচ্ছিল,শুভ ইচ্ছে করে ব্যথা লাগার মতো "ওঃ" করলো। চমকে তাকালো মঙ্গলা "কি হলো?" শুভর চোখে চোখ,হাসছে চোখ দুটো। মঙ্গলার কালো কালো হরিণ হরিণ চোখ দুটো দরজা খোলার সময়ে দেখেছিলো,তারপর থেকেই চোখ নামিয়ে রাখছে; শুধু চোখ দুটো দেখার জন্যই করলো এটা শুভ। মোটামুটি আন্দাজ করলো মঙ্গলা,বিরক্তি ফুটল চোখে মুখে

    "তোমার নাম কি? ইয়ে, মানে আমি কিন্তু তুমি করেই বলছি"

    "সেটাই নর্ম্যাল,আমার নাম মঙ্গলা" বলে এক মুহূর্ত আর না দাঁড়িয়ে চলে গেল চা বানাতে।
    ঝটপট চেঞ্জ করে শুভ সিগারেট ধরিয়ে ঘরে বসে

    "কিরে ব্যস্ত?" অলকেন্দু ঘরে পা দিয়ে দেখে ঠোঁটে সিগারেট টা ঝুলিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসেছে শুভ

    "নাহ এসো"

    "ইস্ করেছিস কি? নেভা নেভা এক্ষুনি নইলে একটা কুরুক্ষেত্র বাধবে রে; আর নাহয় ব্যালকনিতে যা, ওরে যাআ"

    "কি হলো আমি তো___" বলতে বলতে চা আর ওই তেলেভাজা নিয়ে ঘরে এলো মঙ্গলা; এসেই দেখে শুভ স্মোক করছে। কটমট করে তাকালো অলকেন্দুর দিকে; ঠকাস করে ট্রে টা নামিয়ে দুমদুম করে চলে যাচ্ছে দেখে ডাকলো অলকেন্দু "মংলি, ইয়ে বলছি যে তুইও আয়, না মানে এক সাথে খাই। আসলে বাবাই নতুন তো হেঁ হেঁ, অতশত জানেনা তো তাই ই ঘরে বসে ধরিয়ে ফেলেছে, আর কি, আর হবেনা" শুভ ব্যালকনিতে উঠে গেছে ঠিকই কিন্তু দরজা দিয়ে উঁকি মারছে ঘরের ভেতরের ঘটনাটা বোঝার চেষ্টা করছে। মঙ্গলা অলকেন্দুর কথায় একটুও নরম হলোনা সেই দুমদুম করে চলেই গেলো। সে চলে যেতেই লাফ দিয়ে শুভ এলো ঘরে অলকেন্দুর কাছে

    "বাবা, হু ইজ শি?"

    "অ্যাই,এই প্রশ্নটার জন্যই আমি ওয়েট করছিলাম,বোস বোস বলছি" সংক্ষেপে মঙ্গলা আর অষ্টমীর পরিচয় জানালো, আরও জানালো যে আজ কাজরীর জায়গায় মঙ্গলাকে বসিয়ে ফেলেছে অলকেন্দু।

    "তবে তো তোমার খুব প্রবলেম বাবা, এ তো মমের থেকেও স্ট্রিক্ট" গম্ভীর মুখে বলেই ফিক করে হেসে ফেললো।

    "শুধু কি জানিস,মেয়েটা সব সময় নিজের জায়গাটা বজায় রাখে;ওর মা যে কি করে আজ ওকে এইখানে এনেছে ভুলে তো যায়ই না বরং বেশ প্রাউডলি বলে। আর মাঝে মাঝেই মনে করিয়ে দেয় ও আমাদের ক্লাসে বিলং করে না। এতোটুকুন লোভ নেই ওর, অথচ ভালবাসার কাঙাল। দাঁড়া ওকে একটু ঠাণ্ডা করে আসি, মনে হচ্ছে খুব চটেছে" বলে মঙ্গলার ঘরের দিকে গেলো অলকেন্দু; শুভও পিছে পিছে গেলো মজা দেখতে। গিয়ে দেখে দরজার দিকে পিঠ ফিরে বসে কাঁদছে মঙ্গলা। শুভ দরজাতেই হেলান দিয়ে দাঁড়ায়,অলকেন্দু মাথায় হাত রেখে জিজ্ঞেস করে,

    "মোগলি,একি রে,কাঁদছিস কেন?"অলকেন্দুর হাত চেপে ধরে আরো কাঁদে

    "ওমা,মারে,কাঁদছিস কেন? এই দেখো,আচ্ছা না বললে আমি বুঝি কি করে বলতো? হ্যাঁরে, বাবাই কিছু বলেছে? অবশ্য ও বলবেই বা কখন? আচ্ছা,আমি তো বললাম বাবাই আর ঘরে বসে স্মোক করবেনা"

    "নাঃ, সে জন্য নয়" অতিকষ্টে চোখ মুছে বলে,
    "তাহলে?"

    "তুমি আমায় ভালোবাসো,অনেক সম্মান দাও,তবু আমিতো আর তোমার সত্যিকারের মেয়ে নই। তোমার সত্যিকারের ছেলে এসেছে ___" আর বলতে পারল না

    "এহেঃ! এই মেয়েটা তো বড্ড হিঁসকুটি; আমার ছেলে এসেছে তো? তাতে তোর জায়গা চলে যায় বুঝি? বরং___ যাক্ গে, চল একসাথে চা টা গুলো খাই"
    "না, আমি ওঘরে যাবোনা, সিগারেটের গন্ধ"

    "আচ্ছা তাহলে এখানেই নিয়ে আসছি। বাবাই খুব ভয় পেয়েছে বুঝলি? ও আর খাবেনা। ধুর ও তো জানেই না ঘরে খাওয়া বারণ"

    "বারে বারে 'জানেই না,জানেই না'কোরো না তো,সিগারেট খাওয়া যে খারাপ সেটা একটা আনপড় মানুষও জানে; তোমার অত পড়াশোনা করা ছেলে,এদিকে ফিল্মস্টারের মতো চেহারা বানিয়েছে ওদিকে ওই সব"

    "ফিল্মস্টারদের মতো চেহারা?"
    "নয়?"
    "তা, ঠিক কোন চোখে দেখা হোলো ওকে? এই মানে ছেলেটা যে সুন্দর আমার?" গলাটা একটু ঝেড়ে অলকেন্দু জিজ্ঞেস করে; জিজ্ঞাসু মুখে তাকানো শুভও; অলকেন্দুও টুক করে ছেলের দিকে তাকিয়ে নিলো "এই চোখে" বলে বীভৎষ ট্যারা চোখ করে দেখালো মঙ্গলা, হাসতে থাকে দুজনেই; শুভ শুধু ভুরু কুঁচকে তাকালো।

    "যা এবারে চা টা নিয়ে আয়, জুড়িয়েই গেল তো"
    "আনছি, আরো গরম চা আছে মিশিয়ে আনছি" বলে ঘুরেই শুভর মুখোমুখি, এত সময় টের পায়নি সে ও আছে যে।

    (চলবে)

    [মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী]

    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.