>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • অরুণ চক্রবর্তী

    SongSoptok | 7/15/2016 |



    মাইকেল

    আনন্দবাজার না কোন পত্রিকায় ছিল বিজ্ঞাপণটা। একমাত্র বিকেলের ট্যুশানিতে সামলানো যাচ্ছিল না সবটা। দুপুরে প্রায়ই খাচ্ছিলাম শঙ্করদার ওখানে, মাঝে মধ্যে রাতেও। সকাল বিকাল এটা সেটা মুখে দিয়ে চিবিয়ে ম্যানেজ করা যাচ্ছিল। তো চলে গেলাম। ফড়েপুকুর নাকি শ্যামপুকুর, এখন ঠিক মনে পড়ছে না। তবে 'কলকাতা-' মনে আছে। গলির পাশে মস্ত দরজা। ভেতরে লাল সিমেন্টের মেঝে, সিঁড়ি। উঠোনের চারপাশে সরু সরু পিলার। চাতালের মত। অনেকেই থাকেন এই বাড়িতে, অনুমান করলাম। সব শুনে একজন, চাতালের দড়িতে গামছা শুকোচ্ছিলেন, একটা সিঁড়ি দেখিয়ে ওপরে যেতে বললেন। কম বয়সী একটি মেয়ে, 'দাদু, দাদু তোমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন (নাকি এয়েচেন? মনে পড়ছে না).' বলতে বলতে একটা ঘরে নিয়ে গেল। বড় ঘর। এক দেয়ালে দুটো বিশাল জানলা। মেঝে থেকে প্রায় ঘুলঘুলি অবধি। তাতে লম্বালম্বি শিক, লাল। দু' কপাটের জানলা, সবুজ খড়খড়ির। জানলা দুটো হাট খোলা। দু'জানলার মাঝখানে যে-দেয়াল অংশ, সেখানে বেতের আরাম কেদারায় একজন খুব-বেশি-বৃদ্ধ-নন মানুষ অরদ্ধ শায়িত। চোখে গগলস। চোখ দেখার উপায় নেই। পরনের ফতুয়া আর ধুতি ধবধবে ফর্সা। সারা ঘর জুড়ে আভিজাত্যের সুবাস। ঘরের মাঝখানে মার্বেল টপের একটা টেবিল। তাতে নিপাট ভাঁজ করে রাখা আনন্দবাজার। পাশে দুটো হাতলওয়ালা চেয়ার, কাঠের। একপাশে একটা বিশাল কাঠের আলমারি, তার পাশে নানা কারুকাজের পালঙ্ক, তৃতীয় বিশাল জানালার পাশে। ঘর জুড়ে আলোয় আলোময়। কলকাতার গলিতে এমন আলোময় ঘর সচরাচর চোখে পড়ে না।

    'কতদূর পড়েছ?', ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন। গভীর আওয়াজ। স্পষ্ট উচ্চারণ। গলায় অসহায়ত্বের মায়া। এই প্রশ্নের কারণ, আমার কাজ হবে এই দৃষ্টিহীন মানুষটাকে প্রতি সকালে খবরের কাগজ পড়ে শোনানো। মাসে ৫০ টাকা। অনেক অনেক টাকা আমার কাছে। এক কথায় রাজি। সেদিন পড়লামও। এডিটরিয়াল আফটার এডিট খেলা রাশিচক্র, দিনপঞ্জী.. সব। খুব খুশি। মেয়েটা এক কাপ চা আর বিস্কিট দিয়ে গেল। বাইরে বেরিয়ে মনটাও প্রফুল্ল হয়ে উঠল। আমি কাগজ রাখি না। হঠাৎ হঠাৎ শঙ্করদার বাড়িতে চোখ বোলাই। এমন পুঙ্খনাপুঙ্খ, কোনদিন না। কাইজার স্ট্রিটে ফিরতে ফিরতে মনে হল, আমি ওদের সবার থেকে আলাদা। আমি ওদের থেকে অনেক কিছু বেশি জানি। সেই দিন থেকে রবু রুমি শিলকাটাউ অসিত সবার সঙ্গে যেন একটা দুরত্ব গড়ে উঠতে লাগল আমার। রুণু কোনদিনই আমাদের দলের না। ওর মার্দাঙ্গা চরিত্রের সঙ্গে আমাদের মিল খেত না। রুণুও আমার মত শান্তিপুর শান্তিপুর ছেলেদের সঙ্গে মিশত না, বরং মনে মনে আমাদের বিরুদ্ধে একটা জন্মান্ধ ক্রোধ পুষে রাখত। যা হোক, আমার ভালো লাগতে লাগল আমার এই আলাদা সত্তাকে, সেই প্রথম দিন থেকেই।

    প্রতি সকালের খবরের আনন্দবাজারের সঙ্গে একসময় যোগ হল, স্টেটসম্যান। মাইনেও বেড়ে গেল, ৮০ টাকা। আমি মহানন্দে। এই রকম চলতে চলতে একদিন বিকেলে চলে গেলাম যুগান্তর অফিসে, কাছেই। মনে হল, আমাকে কেউ যদি দু' একটা সমসাময়িক প্রশ্ন করেই বসে, বেশ ভালো উত্তর দিতে পারব। পৌঁছে গেলাম প্রধান সম্পাদক ও মালিক, তুষার্কান্তি ঘোষের কাছে। কালো কুচকুচে ভারি গোঁফ। কপালের কাছে বাবু কলকাতার কোঁকড়া বাবড়ি। অন্য কারো ঘরে ছিলেন। টেবিলের ওপর বসে কথা বলছিলেন, দু'হাতের আলগা মুঠোতে একটা লাঠি। 'আপনার সঙ্গে দেখা করতে চায়', বলে চলে গেলেন সেই লোকটা। তিনি শরীরটা ঘুরিয়ে বললেন, গলায় সবটুকু স্নেহ ঢেলে, 'কি চাই বাবা?' 'আমি কাজ করতে চাই। সাংবাদিক হতে চাই।' কাছে ডাকলেন, সস্নেহে কাঁধে হাত রাখলেন, 'কতদূর পড়েছ?' 'প্রি-ইউনিভারসিটী পড়ছি। সিটি কলেজে। আমাকে ট্রেইনিং দিন', কাতর প্রার্থনা জানাই। গোঁফের তলে মিষ্টি হাসলেন, 'সে তো হতেই পার। কিন্তু আর একটা পাশ দিলে ভালো হয় না? মানে গ্রাজুয়েট? নইলে বড় সাংবাদিক তো হতে পারবে না, বাবা!' আমি ওর নরম স্বভাবে সাহস খুঁজে পাই, নাছোড়বান্দা হয়ে পড়ি। 'বেশ, তুমি 'অমুকের (নাম মনে নেই এখন, চীফ রিপোর্টার) সঙ্গে দেখা কোর। কাল এসো।' আমি আত্মহারা। স্বয়ং মালিক বলেছেন আবার আসতে! সেই ভদ্রলোকের খোঁজ করলাম। আসেন নি। ঠিকানা জোগাড় করলাম, 'খেলাৎবাবু লেন', টালা ট্যাঙ্কের দিকে, রাস্তার ঢালে।

    পরদিন কাগজ পড়া শেষ হলেই চলে যাই খেলাৎ বাবু লেনের সেই চীফ রিপোর্টারের বাড়িতে। শ্যামপুকুর থেকে দু' তিনটে স্টপ, হেঁটেই চলে যাই। ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা হল। খুব স্নেহশীল। বললেন একই কথা। গ্রাজুয়েট না হলে সাংবাদিক হওয়া যায় না, ক্লার্ক হওয়া যায়। 'তবু মাঝে মধ্যে অফিসে এসো। চারপাশে দেখে দেখেও নিজের ভেতরে একটা প্রস্তুতি তৈরি হয়। সেটা জরুরি।' এটাই বা কম কি? উড়তে উড়তে ফিরে আসি কাইজার স্ট্রিটে।

    সেদিন বিকেলেই মাইকেল এলো আমার ঘরে। কাকতালীয়? জানি না। বলল, 'চলো, আজ কফি খেতে যাব?' আমি আগে কখনো কফি খাইনি, কফির কথা শুনেছি, পড়েছি বটে। জামা কাপড় পরে রেডি হয়ে নিই। তিন নম্বর বাসটা ধরি। সোজা দোতলায়। মাইকেল হঠাৎ যেন সিটি গাইড। এন্টালি থেকে ডান দিকে মোড় নেবার আগে, বলল। 'তুমি যদি সোজা যাও, আসবে মল্লিক বাজার। অন ইয়োর লেফট মুসলিমস, অন রাইট খ্রিশ্চানস, ভেরি ইন্টারেস্টিং!' মাইকেলের কাছেই শুনলাম, কী করে এঙ্গলো ইন্ডিয়ানরা দলে দলে কলকাতা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। মাইকেলের ঠাকুর্দার বাবার ছিল ঘোড়াগাড়ি তৈরির কারখানা। ঠাকুর্দা ব্যাবসা করতেন ঘোড়াশালের। বাবা ছিল মোটর গাড়ির মেকানিক, এলগিন রোডে ওদের বিশাল গ্যারেজ। এখন নেই, বাবা সব বিক্রি বাটা করে চলে গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। এক আঙ্কল রেলে চাকরি করতেন, তিনিও চলে গেছেন, তাঁর কোয়ার্টারেই দু'ভাই থাকে। এখন অস্ট্রেলিয়া যাবার অপেক্ষায়। 'উই ওয়র আ বিট রিচ ইন ক্যালকাটা ইউ নো?' মাইকেলের হাত পা'র দিকে তাকাই, হ্যাঁ সে আভিজাত্যের দাবী ও করতেই পারে, কিন্তু বেশবাস? গ্যাবার্ডিন। খটকা লাগে।

    আমরা নিউ মার্কেটে ঢুকে পড়ি। আমি এখানে আগে এসেছি একবার। একা একা। তাই তেমন মজা পাই নি। ভিন দেশ ভিন দেশ মনে হয়েছিল। এবার খাঁটি এক সাহেবের সঙ্গে, নিজেকে রেডি করি।

    ম্যাগনোলিয়া। কফি বার। ম ম করছে কেক পেস্ট্রির মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ। চার-পাঁচটা চৌকো টেবিল। পাশে ছোট ছোট চেয়ার। একটা দুটো টেবিলে বসেছে কেউ কেউ। কম বয়সী, একটি লাল চুল মেয়েও আছে। মারকেটের ভেতরে এত ছিমছাম রেস্ট্যুরেন্ট থাকতে পারে ভাবনায় ছিল না। লম্বা কাঁচের শো কেস, তাতে কেক পেস্ট্রি, প্যাটিস আরো কী সব। আগলে আছে দোকানী। বুকের কাছে লালা সাদা স্ট্রাইপের অ্যাপ্রন। মাথায় বাবুর্চি টুপি। একেবারে ইংরেজি সিনেমায় যেমনটা দেখি ঠিক তেমনটি। একটুখানি বসতেই, 'ওয়ান্ট টু লিসেন টু মিউজিক? হুইচ সঙ্গ?' ভাবলাম ও উঠে গিয়ে দোকানিকে রিকোয়েস্ট করবে , কিন্তু না, বলতে বলতে একটা মেশিনের কাছে দাঁড়ায়। আমি এর আগে কখনো অটোমেটেড মেশিন দেখিনি। ওখান থেকেই জিজ্ঞেস করে আবার, 'টেল মী, হুইচ সঙ্গ?' আমি প্রথমত ঘাবড়ে গেলেও সামলে নিয়ে বলি, 'ক্লিফ রিচার্ড। সামার হলিডে।' কিছুদিন আগে পমপম শুনিয়েয়েছিল ওর গুরুদেবের গান। মাইকেল যেন লাফিয়ে ওঠে, 'হোয়াট আ চয়েস, ডিয়ার!' একটা মেশিন-হাত রেকোর্ডের গাদা থেকে আমার পছন্দ করা রেকর্ডটা তুলে নিয়ে ডিস্কে শুইয়ে দেয়। অন্য পিন ওয়ালা হাতটা আলতো করে রেকর্ডের ওপর বসতেই গানটা শুরু হয়ে যায়, আমি হা। গানটা বাজতে শুরু হতেই, বসে থাকা অন্যরাও পায়ে তাল ঠুকতে থাকে, মাথা কাঁধ ঝাঁকাতে থাকে তালে তালে। 'দিজ ইজ জ্যুক বক্স। দেয়ার ইস নো সেকন্ড ওয়ান ইন এন্টায়ার ক্যালক্যাটা। উই কাম হেয়ার টু প্লে আওয়ার ওন মিউজিক!'

    ব্লয়াক কফি। এত বাজে জিনিস আগে খাইনি কোনদিন। কিন্তু কী করা? ভালোলাগাতেই হল। অবশ্য মাইকেলের গল্পের তোড়ে খারাপটা বেশিক্ষণ জিভে লেগে ছিল না। ডক ইয়ার্ডে ওর গুরু থাকে। জাহাজে কাজ করে, ইয়া বাইসেপ। মাইকেল নিজের বাইসেপ দেখালো, মাঝারি, তাতে অ্যাঙ্গকারের উল্কি। বলল, সারা খিদিরপুরে তার গুরুই সেরা মস্তান। মুসলমান মাসলম্যান আছে সেখানে, কিন্তু 'অল আর র্যাটস টু হিম।' বলল, কী ভাবে একজনের হাত টেবিলে রেখে ছুরির এক ঝটকায় তার চারটে আঙুল উড়িয়ে দিয়েছিল মাইকেলের গুরু। আমার ডান হাতের পাতাটা উল্টে ডেমোনস্ট্রেশন দিল সে, আমি ভয় পেয়ে যাই। যদি ম্যাগনোলিয়াতেই ওর বিরুদ্ধ দল ওকে অ্যাটাক করে? তবে তো আমিও...! উশখুশ করতে থাকি। 'নো ওররি, শান্তিপুর। ইফ রুণু এভার ডিসটার্ব ইউ, টেল মী। আই উইল ফিক্স হিমরুণু রুলস ওনলি রেল কোয়ার্টার্স! হা হা হা!' ওর ওই হাসি এখনো কানে বাজে। হুঙ্কারও না, খিকখিকও না।

    মাইকেলের কথা শুনতে শুনতে একটা ব্যাপার মাথায় ঘুরতে থাকে। মাইকেলকে ভালোও লাগতে থাকে, ওর কাছ থেকে আরো গল্প শোনার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠি। ঠিক করি, পরের দিন যুগান্তরের চীফ রিপোর্টারের কাছে গিয়ে কলকাতা থেকে এঙ্গলোদের দলবেঁধে কলকাতা থেকে চলে যাওয়া নিয়ে একটা লেখার অনুমতি চাইব। যদি পাই, পাবই আমার ধারণা, তবে কেল্লা ফতে, আমার সাংবাদিক হওয়া আটকায় কে! জিজ্ঞেস করি, ‘তোমার কোন গার্ল ফ্রেন্ড নেই?’ খানিক চুপ করে থাকে, বলে, 'ইয়া, আই হ্যাড ওয়ান। বাট শী ইজ আ বিচ!' অনেক কিছু শুনতে ইচ্ছে করছিল, কিন্তু বুঝলাম, ভুল প্রশ্নে সেই সম্ভাবনার নটে গাছটি মুড়িয়ে বসলাম। মাইকেল বলল, 'লেটস গো!' আমি আর কথা বাড়াই না। কফির পয়সা মাইকেলই দিল।

    আমরা নিজামের দিক থেকে বেরুলাম। সোজা ধর্মতলা স্ট্রিট, সেখান থেকে বাস ধরে কাইজার স্ট্রিট যাব। হাঁটছিলাম। পাশেই প্যারিস বার। 'ডিড ইয়ু ভিসিট ইট এভার?' আমি মাথা নাড়ি, না। জানালো, দারুণ সব সুন্দরীরা এখানে ডানস করে। বিদেশ থেকে আসে তারা। পয়সা অবশ্য বেশি খরচ হয়। কিন্তু 'ফান ইজ ফ্যান্টাসটিক। উই উইল কাম ওয়ান ডে। ইটস নট টাইম ইয়েট, এলস উই ক্যুড সিট অ্যাট লিস্ট ফর আ মাগ অফ বীয়ার ইচ!'. আমি হাঁফ ছাড়ি। সন্দেহ হচ্ছিল।, কফির দামটা মাইকেল প্যারিস বারে মিটিয়ে নেবে না তো?

    সামনে জ্বলজ্বল করছে এলিট সিনেমা। কি এক ইংরেজি ছবি চলছে। দূর থেকে এলিট সিনেমাটা সত্যি খুব আকর্ষণীয়। মাইকেল তার মানিব্যাগ খুলে কিছু টাকা পয়সা গুণল। বললাম, 'না ভাই সিনেমা যাব না।' টাকা গুণে মানি ব্যাগে রেখে বলল, ‘নো, নট ফর দ্যাট। ওক্কে। লেটস গো!' বলে সিনেমা হলের ফয়ারে গেট কীপারকে কিছু বলে ঢুকে গেল। ঝলমল করছে নানা রঙের আর সাইজের বোতল। ওপরে লেখা, এলিট বার। ভেতরে সিনেমা চলছে, ভীড় নেই। মাইকেল এগিয়ে যেতেই বলি, 'মাইক, আই ডোন্ট ড্রিঙ্ক ডিয়ার। আই নেভার হ্যাড!' হো হো করে হেসে ওঠে, উই উইল হ্যাভ জাস্ট বীয়ার। দ্যাট'স নো ড্রিঙ্ক, শান্তিপুর। টেস্ট ইট, টু নো ইট!' বাধা দিই না। আমার যে একেবারেই ইচ্ছে করছিল না তা না। প্যারিস বারের কথা শুনেই ফিনফিনে হাওয়া বইছিল বুকের ভেতর। খরচের ভয়ে তা মুখে আনিনি। এখন রাজি হয়ে যাই। উঁচু দুটো স্টুলে দুজনে বসে বীয়ার খেতে থাকি, ইংরেজি সিনেমার মত। দারুণ লাগছিল। মাইকেল বলল, 'উই উইল কাম অন অ্যানাদার ডে। উই উইল হ্যাভ ফুল ফান দেন।' এটাই আমার প্রথম ড্রিঙ্ক করা। মাথা তখন ফুরফুর করছে, প্যারিস বারটা মাথায় ছবি হয়ে দোল খেয়ে উঠল, বললাম। 'সিওর। আই প্রমিস।' বীয়ার খাওয়া হলে, মাইকেল অন্য কোথাও গেল, আমি ফিরে এলাম শিয়ালদায়।

    মাইকেলের সঙ্গে আমার আর দেখা হয়নি সেদিনের পর। একবার খোঁজ করতে গিয়ে, ল্যুকের কাছে শুনলাম, মাইকেল দাদার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় চলে গেছে। আমার কান্না পেল। কেন? আজো মনে করতে পারি না ঠিক কোন কারণে আমার সেদিন কান্না পেয়েছিল

    -----------------------------------------

    (পরবর্তী সংখ্যায়)


    [অরুণ চক্রবর্তী]

    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.