>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • অরুণ চট্রোপাধ্যায়

    SongSoptok | 4/15/2016 |




    (কল্প-বিজ্ঞানের গল্প)
    একান্ত ব্যক্তিগত -১৭
    ডিজিট্যাল খামার
    - অরুণ চট্টোপাধ্যায়


    ডাঃ গৌতমের চেষ্টায় আমাদের দেশ খাদ্যে বিরাট উন্নতি করেছে। খাদ্যভান্ডার আবিষ্কার করে একটি মাত্র গাছে সব রকম খাদ্যের উৎপাদন শুরু হয়েছে। এমন কি রাসায়নিকভাবে খাবার তৈরি করে “জীবে দয়া তব পরম ধর্ম” এই নীতি পালন করে সকলকে একেবারে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ডাঃ গৌতম। দেশ তথা বিশ্ব এখন একেবারে অহিংস হবার পথে পা বাড়াচ্ছে। তবে দেশের সব মানুষ এখনও এই সর্বাধুনিক রাসায়নিক খাদ্যে অভ্যস্ত হতে পারে নি এবং সব জায়গায় এই খাদ্য তেমন করে পৌঁছচ্ছে না তাই বেশির ভাগ মানুষকে এখনও চাষের সনাতন সেই পুরান পদ্ধতিই বলবৎ রাখতে হয়েছে। চাষের কাজের মস্ত যে ঝক্কি তা হল রোদে পুড়ে বা জলে ভিজে অথবা ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে মাঠে লাঙ্গল দিতে হয় তারপর তাতে বীজ ফেলতে হয়। পরে সেই ছোট্ট ছোট্ট চারাগুলোকে অন্য জমিতে গিয়ে রুইতে হয়। জমিতে জলের জোগান দিতে হয়। সার দিতে হয় মাটিতে। মাঝে মাঝে কীটনাশক ছড়াতে হয়। আবার মনে রাখতে হয় জল, সার বা কীটনাশক যেন মাপ মত হয়। মাত্রা ছাড়ালেই অথবা কম মাপের হলেই বিপদ। জমির ফসল সব বরবাদ। অর্থ, অপেক্ষা আর শ্রম সব বিফলে যাবে। চাষির হাত কোমরের  পাশ থেকে প্রথমে উঠবে গালে আর শেষে মাথায়। আত্মরক্ষার ফসল নষ্ট হলে আত্মহত্যার প্রচেষ্টা আবার কখনও বা সেই প্রচেষ্টায় সাফল্য।

    ডাঃ গৌতমকে যারা জানেন তারা এও জানেন যে মানুষের দুঃখে তার প্রাণ কাঁদে। আর নিরন্তর এই কান্নাই তাঁকে স্থাপন করে সাফল্যের উঁচু ধাপে। তাছাড়া এসব কাজে প্রচুর পরিশ্রমী লোক দরকার। যারা চাষের বেশির ভাগটাই কাজ করে। আজকাল লোক তো বটেই পরিশ্রমী লোকেরও খুব অভাব। চাষের কাজ তো দূরস্থান, বাড়িতে বাড়িতে কাজের লোক পর্যন্ত সময় মত আর দরকার মত পাওয়া যায় না। ডাঃ গৌতমের মতে চাষের কাজটা মোটেই হেলাফেলা করার নয়। কথায় বলে খাদ্য, বস্ত্র- বাসস্থান। তাই খাদ্য উৎপাদন আরও সহজে কিভাবে করা সম্ভব তা ভেবে দেখা দরকার। তাই আবার সেই তাঁর বিখ্যাত সিন্থেটিক লাল শান বাঁধানো বটগাছ তলা আর দীর্ঘ ছয়মাসের  অপেক্ষা। এ সময় তিনি কিছু খান না। এমন কি নিঃশ্বাস পর্যন্ত নেন না। বাতাসের অক্সিজেন তাঁর গায়ের চামড়ার লোমকূপের মধ্যে দিয়ে অসমোসিস পদ্ধতিতে শরীরে প্রবেশ করে। আবার কার্বন-ডাই-অক্সাইডও একই পথে বাইরের বাতাসে মিশে যায়। বাতাসের জলীয় বাষ্প তাঁর তৃষ্ণা নিবারণ করে। দেহের ঘর্মগ্রন্থিগুলি অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে দেহের অসার পদার্থগুলিকে নির্গত করে। তার মানে প্রস্রাব বা ইউরিনেশনের আর প্রয়োজন হয় না। সারা গা তিনি জীবন্ত গাছ ও লতাপাতা দিয়ে ঢেকে রাখেন। এর ফলে দেহের সন্নিহিত গাছের পাতার মধ্যে যে ফোটোসিন্থেসিস বা সালোক সংশ্লেষের ফলে যে কার্বোহাইড্রেট উৎপন্ন হয় তা আবার অসমোসিস পদ্ধতিতেই তার রক্তে মিশে যায়। না খাওয়ার জন্যে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম থাকে কিন্তু দেহের চামড়ার ওপরে গ্লুকোজের গাঢ়ত্ব থাকে অনেক বেশি আর তাতেই অসমোসিস সফল হয়। যেহেতু খাদ্য এখানে কেবলমাত্র গ্লুকোজ তাই এন্ড মেটাবলিক প্রডাক্ট (End metabolic product) বা আত্তীকরণ প্রক্রিয়ার ফলাফল কেবলমাত্র কার্বন-ডাই-অক্সাইডই হয়ে থাকে। চামড়ার নিচে থাকা রক্তের শিরা উপশিরাতে (veins and veinuels) কার্বন-ডাই-অক্সাইডের আংশিক চাপ (partial pressure) থাকে পারিপার্শ্বিক বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের আংশিক চাপের থেকেও বেশিতাই সহজেই লোমকূপের সাহায্যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেরিয়ে আসতে পারে। সেইজন্যেই ধ্যানমগ্ন থাকার সময় ডাঃ গৌতমের মানবিক ক্রিয়াকলাপগুলির কিছুই করার দরকার হয় না।

    আজ সেই ছয়মাস অতিক্রান্ত। ডাঃ গৌতমের আমন্ত্রণে সাংবাদিক সহ সমস্ত বিশিষ্ট ও সাধারণ ব্যক্তিরা এসেছেন। ডাঃ গৌতমের প্রদর্শন প্রেক্ষাপটে সবাই হাজির। সামান্য কোলাহল যেটুকু ছিল তা দূর হয়ে গেল ডাঃ গৌতমের ভরাট সুন্দর গলায়।

    -আপনারা সবাই দয়া করে নিজ নিজ আসন গ্রহণ করুন।

    মন্ত্রমুগ্ধের মত যে যার আসনে আসীন হলেন। ঘরের একেবারে শেষ প্রান্তে একটা টেবিলে একটি সামান্য রিমোট নিয়ে বসেছেন  ডাঃ গৌতম। রিমোটে নির্দিষ্ট বাটন টিপতেই দেওয়াল জোড়া ভারচুয়াল মনিটর আলোকিত হয়ে উঠল। ফুটে উঠল একটা বিশাল খামার বা কৃষিক্ষেত্রের ছবি। বিশাল সেই কৃষিক্ষেত্রের ধারেকাছে কোনও মানুষ নেই।

    জনমানবশূন্য সেই খামারে হঠাৎ সক্রিয় হয়ে উঠল একটা ট্র্যাক্টর। চালকবিহীন সেই ট্র্যাক্টর হঠাৎ চলতে শুরু করল। অবশ্য নিজে থেকে নয় ডাঃ গৌতমের হাতের রিমোটের বাটনে টিপুনি খেয়ে।

    রিমোটের বাটনে ডাঃ গৌতমের হাত বটে তবে চোখ নয়। সেটা ঘুরে বেড়াচ্ছে ট্র্যাক্টরের সঙ্গে সঙ্গে মনিটরের পর্দায়। সমস্ত জমি চষা হয়ে গেল। এবার সে ট্র্যাক্টর ফিরে গেল তার নির্দিষ্ট জায়গায়। এবার এল একটা যন্ত্র যেটা সাঁ করে ছুটে গেল আকাশে। আর সমস্ত মাঠে ছড়িয়ে দিলে মুঠি মুঠি শস্য বীজ। জলের জন্য কোনও অসুবিধে নেই। যন্ত্রটা এবার আকাশ থেকে বৃষ্টির মত জল ছড়াতে লাগল। এইভাবে সার আর কীটনাশক। রিমোট নিজেই একটা কম্পিউটার। সেখানে সব হিসেব মজুত আছে। সেই হিসেব মত সব কাজ হচ্ছে। এরপর সবাই অবাক হয়ে দেখল স্ক্রীনে ফুটল একটা সবুজ ক্ষেত্র। ফসলে ভরা ক্ষেত। আবার রিমোটে চাপ ডাঃ গৌতমের আঙ্গুলের। আবার একটা যন্ত্র কাটতে লাগল সে ফসল। হল তা শুকোন আর গোলাজাতও। কয়েক মিনিটে যেটা ঘটল সেটা যেন একটা ভিডিয়ো গেমেই সম্ভব। ঠিক  যেমন করে ভিডিয়ো গেমে মানুষ নানান খেলা শেখে এমন কি শেখে গাড়ি চালানোও। অপেক্ষারত দর্শকদের দিকে ফিরলেন গবেষক। মুখে নয় তবে চোখে ফুটে উঠেছে সাফল্যের উজ্জ্বল ঝলকানি। হাতের ডিজিট্যাল ঘড়ি দেখলেন ডাঃ গৌতম। এবার হাসলেন। একটা বিজয়ের হাসি।  

    -আপনারা ঠিক যত তাড়াতাড়ি দেখলেন সব ব্যাপারটা ঠিক তত তাড়াতাড়ি ঘটে না বাস্তবে। আসলে এটা একটা ভিডিয়ো রেকর্ডিং। সব মিলিয়ে ব্যাপারটা বেশ কয়েকদিন লাগে।

    সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছে। তাদের চোখেমুখে কৌতূহলের ঝিলিক। যেন একটা কি হয় কি হয় ব্যাপার। বড় বড় বিজ্ঞানীরা সব বড় বড় অস্ত্র আবিষ্কার করেমিশাইল, ডেস্ট্রয়ার, বোমা, রাইফেল এসব কত কি। সব দেশই কি আর সেগুলো শুধু আত্মরক্ষার কাজে লাগাচ্ছে? কেউ আত্মরক্ষায়, কেউ অপরকে আক্রমণ করতে, কেউ অন্যকে ভয় দেখাতে, কেউ বা অন্যকে বশে রাখতে। কিন্তু ডাঃ গৌতম এ পর্যন্ত যা আবিষ্কার করেছেন সবই মানুষের কল্যাণে। শুধু নিজের দেশের নয়, সারা পৃথিবীর সব শ্রেণীর মানুষের জন্যে। আর তিনি বলেছেন, সব মানুষের প্রয়োজন যখন মিটে যাবে তখন মানুষ আর হিংসা করবে না। একে লড়বে না অন্যের বিরুদ্ধে। একের হাত অন্যে ধরবে। ‘লিভ অ্যান্ড লেট লিভ’ তত্ত্ব পুরোপুরি হবে বাস্তবায়িত।

    -এই যে চাষের ব্যাপারটা আপনারা দেখলেন, শুরু করেছেন ডাঃ গৌতম, এতে চাষের কাজের কোনও লোক লাগবে না। চাষ করতে আপনাকে যেতেও হবে না কোনও মাঠে। ঝরাতে হবে না গায়ের ঘাম বা শক্তি কিছুই। শুধুমাত্র একটি ছোট ঘরে বসে বসেই আপনি সমাধা করতে পারবেন চাষের সমস্ত ব্যাপারটা। আপনার দরকার কেবল একটা এই রকম রিমোট আর কম্পিউটারিং সিস্টেম।

    হাতের রিমোটটা ততক্ষনে উঁচু করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন সকলকে। সামান্য ছোট মাপের একটা রিমোট। দেখতেও আহামরি কিছু নয়। এমন রিমোট দিয়ে টিভি চালানো থেকে শুরু করে এসি মেশিন, ভিডিয়ো প্লেয়ার সব কিছুই চালানো যায় বা সকলেই চালায়। কিন্তু সকলেই ভেবে ভেবে অস্থির এই সামান্য রিমোট দিয়ে অসাধ্য সাধন করলেন কি করে এই বিজ্ঞানী।

    -এই ছোট্ট ঘরটি আপনি এসি মেশিন বসিয়ে ‘ঠান্ডি ঘর’ বানিয়ে নিতে পারেন অনায়াসেই। কোনও মনিটরের দরকার নেই। এই রিমোট দিয়ে যে বাতাসের বুকেই অস্থায়ী মনিটর বানানো যায় তা আমি আগেই দেখিয়েছি আপনাদের। এই মনিটরে ফুটে উঠবে আমার ফার্ম বা সমগ্র কৃষিক্ষেত্র। প্যান করে করে আপনি ঘুরে বেড়াতে পারবেন সমগ্র মাঠটি। আপনাকে এতটুকু ছুটতে হবে না বা হাঁটতে হবে না। আপনি এতটুকু হাঁপাবেন না বা ঘামবেন না। পরিশ্রান্ত হবেন না। এই ঘরের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে এমন কি এই চেয়ার ছেড়ে আপনাকে বেরোতে হবে না এক মিলিমিটারও।

    আবার রিমোটের সাহায্যে মনিটর চালু করলেন ডাঃ গৌতম। আবার শুরু করলেন, ঠিক যেমন করে ফোটশপের বাঁ দিকের টুলবক্সের টুলগুলো নিয়ে আপনারা ছবি আঁকেন ঠিক তেমনি ভাবেই এই টুলবক্সের টুলগুলো আপনাদের সাহায্য করবে চাষ করতে। এই বক্সে রয়েছে বিভিন্ন টুল বা যন্ত্র। কারোর মধ্যে রয়েছে শস্য বীজ, কারোর মধ্যে জল, কারোর মধ্যে সার বা পোকা মারার ওষুধ এ সমস্ত। তবে এই টুলগুলি সব ভার্চুয়াল হলেও আসলে মাঠের মধ্যে যেগুলি থাকবে সেগুলি সত্যিকার। ঠিক যেমন করে কম্পিউটারের নির্দেশ পেয়ে প্রিন্টারের কালি চলে যায় কাগজের দিকে আর ছাপা হয়ে যায় সাদা কাগজটা ঠিক তেমনি ব্যাপার আর কি। আর একটা ব্যাপার হল শুধু এই ঘর নয়, যে কোনও জায়গা থেকেই কিন্তু পরিচালনা করা যায় চাষের কাজটা। সে আপনি হিমালয়ের কোনও দুর্গম চুড়ায় বসেই থাকুন বা সমুদ্রের কোনও গভীরে, আপনার হাতের এই রিমোটটাই হল সব। হাতে এই রিমোট থাকলেই হল।

    আপনি হয়ত বলবেন অন্য কেউ তো তাহলে আপনার জমি চাষ করতে পারে। উত্তর হল, না। যারা চাষ করবেন নিজের জমি বা অন্যের জমি- প্রত্যেককে একটা করে রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে সরকার থেকে। মনে রাখবেন প্রত্যেকটি রিমোটের আলাদা আলাদা নম্বর থাকবে। যে নম্বর কখনও ডুপ্লিকেট হবে না। ডুপ্লিকেট করাই সম্ভব হবে না। এমনভাবেই প্রগ্রামিং করা থাকবে যে একটি নম্বর পড়ার পরমুহূর্তেই তা পালটে গিয়ে ঠিক তার পরের সংখ্যা হয়ে যাবে। তাই একের জমি অন্যে চাষ করতে পারবে না।       

    এবার হল চাষের জিনিস লুঠ হয়ে যাবার ব্যাপারটা। অনেক সময় অনেক চাষির মাঠের ফসল চুরি হয়। কিন্তু এই ব্যবস্থায় তা হবে না। প্রত্যেকের জমির চারপাশে থাকবে একটি অদৃশ্য ডিজিট্যাল বেড়া। বাইরে থেকে চোখে দেখা যাবে না এই বেড়া। কিন্তু মালিকের হুকুম ছাড়া এই ডিজিট্যাল বেড়া অতিক্রম করাও যাবে না। এর জন্যে জমির মালিককে দেওয়া হবে একটা পাস ওয়ার্ড আর যেটার কোনও ডুপ্লিকেট হবে না। আজকাল লেখাপড়ার যুগ। কিন্তু অনেকেই লেখাপড়া শিখে চাষ করতে অনিচ্ছুক হতেই পারে। তারা চাষ ফেলে চাকরি করতে চায়। এতে চাষের ক্ষতি হয়। আর দেশ খাদ্য সমস্যায় ভোগে। কিন্তু এই চাষ করতে পারবে একমাত্র শিক্ষিত আর বিশেষভাবে প্রশিক্ষিতরাই। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং আর অপারেশনের বিশেষ জ্ঞান দরকার। তাই ঠান্ডাঘরের মধ্যে বসে বসে সারা মাঠের এই চাষ করাকে সবাই বেশ সম্মানজনক বলেই মনে করবে। তাতে করে দেশে শিক্ষিতর হারও অনেক বেড়ে যাবে।

    ঘরের ভেতরে পিন পতনের নীরবতা। সবাই বিস্ময়ে বিমুগ্ধ। এটা কি কোনও রূপকথার গল্প শুনছে তারা বিজ্ঞানীর মুখে। কিন্তু দশটা লোকের কাজ একটা লোকে করবে? বেকার সমস্যা বেড়ে যাবে না তবে? প্রশ্নটা সকলের চোখেমুখে ঘুরতে লাগল অবশ্য শব্দহীনভাবে। কিন্তু ডাঃ গৌতম শ্রোতাদের কাউকে কোনও প্রশ্ন করার ফাঁক রাখেন না। আজও হল না তার ব্যতিক্রম। বললেন, আপনারা ভাবছেন দশটা লোকের কাজ একটা লোকে করলে বেকারত্ব বাড়বে? না তা নয়। তখন দরকার হবে প্রচুর কম্পিউটার জানা লোক। শিক্ষার হার বাড়ায় তারা সব কাজ করতে পারবে হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যার তৈরির কাজে। আর কম্পিউটার অপারেশন তো বটেই।

    শুধু তাই নয়, একটি মাত্র ঘরে বসে এক চাষি অন্য চাষির সঙ্গে আলোচনা করতে পারবে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে। অন্যকে পরামর্শ দিতে পারবে আবার নিতেও পারবে অন্যের কাছে। এমন কি আরও অনেক অনেক কিছু যেমন যেমন সমস্যা আসবে শুরু হবে তার তেমন তেমন ভাবে সমাধানও। ডাঃ গৌতম শেষ করলেন তার কথা। সবাই একযোগে শুরু করল তাঁকে নিয়ে জয়ধ্বনি। আপত্তি করলেন না তিনি। মিটি মিটি হাসলেন সারাক্ষন। সরকার ‘শ্রেষ্ঠ মানব- হিতৈষী বলে একটা পুরস্কার ঘোষনা করতে যাচ্ছিলেন। আপত্তি করলেন ডাঃ গৌতম।

    -পুরস্কার তো অনেক পেয়েছি। আর দরকার নেই। মানব-কল্যাণই আমার কাছে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার এখন।   


    [অরুণ চট্টপাধ্যায়]

    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.