>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • রিতা রায়

    SongSoptok | 9/10/2014 |



    কত রকমের মানুষ, তাদের কত রকমের গল্প-ভালোবাসার গল্প
    তিন মজনু'র গল্প
    মজনু একঃ


    সেদিন এক মা এলেন সাথে মেয়ে আর ছেলেকে নিয়ে। উনাদের দুই বছরের ফোন চুক্তি নবায়ন করতে। এতদিন উনাদের দুই ফোন লাইনের ফ্যামিলি প্ল্যান ছিল, এবার আরেকটি লাইন যোগ করতে চাইলেন। মায়ের সাথে প্রয়োজনীয় কথা সারছিলাম, লক্ষ্য করছিলাম, সাথে আসা মেয়েটি তার ছোট ভাইকে কিছু একটা বলে কনভিন্স করতে চাইছে।
    তখনও বুঝি নি, ওরা কী নিয়ে গুজুর গুজুর করছিল। দুই লাইনের সাথে যখন তৃতীয় লাইনটি অ্যাড করছিলাম, সঙ্গত কারণেই তাদেরকে 'কত মিনিট প্ল্যান' চাই, জিজ্ঞেস করতে হয়েছে। এবার দেখি বোন বেশ জোরে জোরেই ভাইকে বলছে,
    " ভাই, শোন, যে প্ল্যান মা নিচ্ছে, সেই প্ল্যানে তুমি গ্লোরিয়ার সাথে রাত নয়টার পর থেকে সারা রাত কথা বলতে পারবে। তাছাড়া, আনলিমিটেড টেক্সট মেসেজ তো আছেই। তুমি ওকে টেক্সট করবে"।
    ছেলেটি বলছে, না, আমার আনলিমিটেড মিনিট প্ল্যান চাই। রাত নয়টার পরে কেন, আমি সারাদিনই ওর সাথে কথা বলতে চাই।
    ভাই-বোনের কথাবার্তা শুনে আমার আক্কেল গুড়ুম! মা'কে জিজ্ঞেস করলাম, ছেলে কার সাথে সারাদিন কথা বলতে চাইছে।
    মুখে একগাল হাসি ছড়িয়ে মা বললেন, " ওর গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে"।
    ছেলের বয়স কত?
    -বারো পূর্ণ হলো। মেয়ের বয়স আঠারো।
    -তোমার বারো বছর বয়সী ছেলের গার্ল ফ্রেন্ড আছে, তার সাথে কথা বলার জন্য সে এত দামের আনলিমিটেড মিনিট প্ল্যান চাইছে, তুমি মানা করতে পারছো না?
    -টিন এজ, টিন এজ! টিন এজের ছেলেপেলে মায়েদের কথা শুনলে তো! বাড়িতেই বুঝিয়েছি, কিছুতেই মানবে না।
    আমি ডাকলাম ছেলেটিকে, বললাম, " বাবু, শোন, আমি তোমাকে অনেক সুন্দর প্ল্যান পছন্দ করে দিচ্ছি। আগে বলো, তোমার গার্ল ফ্রেন্ড কোন ফোন ব্যবহার করে?"
    -আমার গার্ল ফ্রেন্ডের আনলিমিটেড মিনিট প্ল্যান আছে, ওরা এটিএন্ডটি সার্ভিস ব্যবহার করে।
    -ভালো কথা, মা যেই প্ল্যান নিতে বলছে, সেটা নিলেও তুমি গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে রাতদিন কথা বলতে পারবে। 'মোবাইল টু মোবাইল' ফ্রী তো।
    -কিন্তু আমার গার্ল ফ্রেন্ডের আনলিমিটেড মিনিট প্ল্যান। ওকে আমি বলেছি, আমারও আনলিমিটেড মিনিট প্ল্যান আছে, এখন আমার আনলিমিটেড প্ল্যান চাই।
    তার বোন এবার ফোঁস করে উঠলো, ইস রে! তোমার বান্ধবীর সাথে গল্প করার জন্য যদি আনলিমিটেড মিনিট প্ল্যানের দরকার হয়, আমাকেও তাহলে আনলিমিটেড ওয়েব অ্যাকসেস প্ল্যান দিতে হবে।
    -ওয়েব অ্যাকসেস তো তোমার আছেই। তুমি যখন তোমার বন্ধুর সাথে টেক্সট চালাচালি করতে চেয়েছিলে, তখনতো মাম্মি তোমাকে আনলিমিটেড টেক্সট দিয়েছিল, এখন আমাকেও দিতে হবে। আমি আর কোন কথা শুনতে চাই না।
    ভাই বোনের ঝগড়া দেখে মা খুব খুশী। আমার দিকে চোখ টিপে হাসছে আর ইশারায় বুঝাতে চাইছে, দেখো কী কান্ড!
    আমার ছোট মেয়ের বয়সী 'মজনু'র কান্ড দেখে আমার যত না মজা লাগছিল, তার চেয়ে বেশী বিরক্ত লাগছিল মাত্র ১২ বছরের ছেলের প্রেম-পীরিতি নিয়ে তার মা'কে আহ্লাদ করতে দেখে। এক সময় শিক্ষকতা করেছিলাম, শিক্ষকসুলভ ভাব এখনও মাথার ভেতর রয়ে গেছে , মাঝে মাঝেই তা জেগে উঠে বলেই 'মজনু'কে কাছে ডেকে বললাম,
    - বাবু, শোন, একই কথাই তো! তোমার বান্ধবীর মত তোমারও আনলিমিটেড মোবাইল টু মোবাইল প্ল্যান আছে! এটা দিয়েই তুমি ওর সাথে সারাদিন-রাত কথা বলতে পারবে। তাছাড়া সারাদিন কানে ফোন লাগিয়ে রাখা তো ভালো নয়। কয়েক বছর পর তোমাদের দুজনেরই কান নষ্ট হয়ে যাবে! তুমি তো জানো না, আমরা ফোন বিক্রী করি, আমরা জানি, সারাদিন ফোন কানে লাগিয়ে রাখতে নেই। তারচেয়ে তুমি আনলিমিটেড টেক্সট ব্যবহার করো, সুন্দর সুন্দর কথা লিখবে, বানান শুদ্ধ হয়ে যাবে, স্পেলিং টেস্টে হানড্রেড পাবে!
    আমার এই কথা শুনে বারো বছরের মজনু কালো মুখে দুধসাদা দাঁত বের করে এমন এক হাসি দিয়েছে, দেখে আমারও হাসি পেয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত রফা হয়েছে, লিমিটেড মিনিট প্ল্যানই নিবে, তবে ফোনটি হতে হবে 'আই ফোন'। মা'কে চোখ ইশারায় বললাম, " মেনে নাও! আই ফোন ৪ মাত্র এক ডলারে পাবে, ওটাই ছেলেকে দাও। ছেলের দিকটাও তো দেখতে হবে, 'লাইলীর কাছে মজনু'র একটা মান সম্মানের ব্যাপার আছে তো"!
    আই ফোন ৪ হাতে পেয়ে বারো বছরের মজনু খুশী মনে মা আর বোনের হাত ধরে আমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো।

    মজনু দুইঃ


    মজনু এক ছিল কালো। মজনু দুই হচ্ছে দুধসাদা বরণ। সেও এসেছে তার মাম্মি'কে নিয়ে। দুধবরণ মজনু আবার খুব হাইটেক' বালক। আধুনিক ফোনের কলাকৌশল সম্পর্কে বিশেষ বিজ্ঞ, মানে বিশেষজ্ঞ। এদিন সে নিজের জন্য আসেনি, মায়ের জন্য ফোন পছন্দ করে দিতে এসেছে। তার মা নতুন 'বয়ফ্রেন্ডের' সাথে কথা বলার জন্য কোন ফোনটি ব্যবহার করতে পারে, তা চিনিয়ে দেয়ার গুরু দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এসেছে সে। আমি তাদেরকে আমার তরফ থেকে যতটুকু ইনফর্মেশান দেয়ার, দিলাম। তবে বুঝলাম, অণর্থক প্যাঁচাল পেরেছি। 'মজনু' বাবু ঠিক করেই এসেছে মায়ের জন্য 'আই ফোন ফোর এস' কিনবে।
    আমি যখন আইফোন ফোর এবং আই ফোন ফোর এস' এর দামের পার্থক্য বললাম, মা তখন একটু সময়ের জন্য থমকালেন। মা'কে থমকাতে দেখে 'মজনু'ও থমকে গেছে। তবে মজনু'র থমকানোটা ' কী আশ্চর্য্য! বাড়ী থেকে কী বলে নিয়ে আসলাম' ধরনের। সে আগেই তার মা'কে বলেছে, আই ফোন ফোরে কিন্তু 'সিরি' নেই, ফোর এস' এ আছে। আমার মত মজনু'র মায়েরও ধারণা নেই, 'সিরি' দিয়ে কী করতে হয়!
    মা বললো, সিরি দিয়ে আমি কী করবো? আমি শুধু জর্ডানের সাথে কথা বলবো, তার জন্য তো হাই টেক ফোনের প্রয়োজন নেই বাবা!
    মজনু তার মা'কে বুঝালো,
    " মাম্মি, তোমাকে কিছুই করতে হবে না। তুমি শুধু আই ফোন ফোর এস' সাথে রাখবে। জর্ডান'এর কাছে তোমার ইজ্জত বেড়ে যাবে! আমি দেখেছি সেদিন, মিঃ জর্ডান 'আই ফোন থ্রী' ব্যবহার করে। হাহ! আই ফোন থ্রী এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। উনি বোধ হয় জানেন না। তোমার হাতে নতুন মডেলের ফোন দেখলে তার মাথা ঘুরাবে। হা হা হা!
    -ছি ছি!! এ কেমন কথা তোর! জর্ডান খুব ভালো মানুষ। তার মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার কোন ইচ্ছে আমার নেই। তুই কী অ্যামান্ডা'র মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার জন্যই গ্যালাক্সী থ্রী কিনেছিস?
    -ওয়েল! তুমি আমাকে ভালই চেনো। আমি তোমার ভালোর জন্যই কথাটা বলেছিলাম।
    মা আর ছেলের কথোপকথন শুনে অবাক হইনি। অনেক দেখে শিখেছি, এদেশে ছেলে-মেয়েরা খুব ছোটবেলা থেকেই প্রেমের পাঠ নিতে শুরু করে। নিজেদের বাবা-মায়ের সম্পর্ক ক্ষণস্থায়ী হয় বলে বাবা বা মায়ের নতুন জুটিকে নির্দ্বিধায় স্বাগত জানায়। এভাবেই জুটি ভাঙ্গা-গড়ার খেলা দেখতে দেখতে ওরা ছোট্টবেলা থেকেই 'লাইলী' বা 'মজনু' হতে শিখে যায়। তবে, দ্বিতীয় মজনু'র মাম্মি বোধ হয় এখনও ছেলের উপর সব কিছু ছেড়ে দেয় নি, তাই নিজের মতকে প্রাধান্য দিয়ে মাত্র এক ডলার মূল্যে 'আই ফোন ফোর' নিয়ে বাড়ী ফিরেছেন।

    মজনু তিনঃ

    আমি একফাঁকে নিজের কাজগুলো গুছিয়ে নিচ্ছিলাম। যতগুলো কন্ট্র্যাক্ট সাইন করিয়েছি, সেগুলোর ডাটা লগবুকে এন্ট্রি করছিলাম। পেছন থেকে বাচ্চা কন্ঠে কেউ ডাকলো, অ্যাই মাম!!
    খেয়ালে ছিল না আমি আমেরিকান স্টোরে আছি, ডাক শুনে মনে হলো আমার ছোট মেয়ে বুঝি ডাকছে! মুখ ফসকে বেরিয়ে গেলো, " কী হলো!"
    রেজিস্টারের দিকে তাকিয়ে দেখি এক কালো বালক শিশু দাঁড়িয়ে! নিজের ভুল বুঝতে পেরে সাথে সাথে সামলে নিলাম। ওর বয়সী ব্ল্যাক ছেলেদের দেখলেই আমার আদর করতে ইচ্ছে করে! মাথা ভর্তি কালো কোঁকড়া চুল, মুখে অনিন্দ্য সুন্দর হাসি, আদর না করে পারা যায়! আমার মেয়েরা আমাকে সব সময় 'রেসিস্ট' বলে আনন্দ পায়। কারণ, আমি অধিকাংশ ব্ল্যাক মহিলাদের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষন করি না। ওদের আচরণে ঝগড়াটে ভাব দেখে ভয় পাই, তাই সব সময় ওদের কাছ থেকে শত হস্ত দূরে থাকার চেষ্টা করি। আমার এই মনোভাব মেয়েদের কাছে খুবই নিন্দনীয়! আমি অবশ্য মানুষের প্রতি মেয়েদের এই অনুভূতিকে শ্রদ্ধা করি। আমার বড় দুই মেয়েই কিছুটা নারীবাদী। এ কারণেও ওরা আমার উপর ক্ষ্যাপা! আমি যখন অতি ভাল কালো মহিলাদের সম্পর্কে জয়গান করি, সেগুলো ওরা আমলে নেয় না, কালো ছেলেদের ব্যাপারে আমি খুব নমণীয়, কালো ছেলেদের ব্যবহারে সরলতা থাকে, ওরা ঝগড়ুটে স্বভাবের হয় না, সারাক্ষণ নাচ-গানের ছন্দে চলাফেরা করে। এমন কথা শুনলেই আমার মেয়েরা রেগে যায়, বলে, আমি নাকি পুরুষদের হয়ে সাফাই গাই, মেয়ে হয়েও মেয়েদের বিরুদ্ধে কথা বলি! তা বলুক ওরা, ওদের কথার মধ্যেও যুক্তি আছে! থাকুক যুক্তি, তাই বলে তো আর অনিন্দ্য সুন্দর কালো বালক বা কিশোর ছেলের প্রতি আমার যুক্তিহীন ভালোবাসার কিছু কমতি হবে না!
    সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কৃষ্ণ কিশোরকে জিজ্ঞেস করলাম,
    -কী হলো তোর! তোর জন্য কী সাহায্য করতে পারি, বলতো সোনা!
    -আমি একটা ফোন কার্ড কিনতে চাই। এই যে টাকা নিয়ে এসেছি।
    -দাঁড়া, আগেই টাকা বের করছিস কেন? এত উতলা হয়েছিস কেন? কী, গার্লফ্রেন্ডকে ফোন করতে হবে?
    -দারুণ লজ্জা পেয়ে সে বললো, আরে নাহ! আমার মায়ের জন্য কার্ড কিনতে এসেছি।
    -ওহ আচ্ছা, আয় আমি তোর জন্য কার্ড খুঁজে দেই। কিন্তু আমার তো মনে হচ্ছে, তোরও একখানা কার্ড দরকার আছে, তাইনা?
    -লজ্জা মাখা মুখে, আমার তো ফোন নেই।
    -সে কী রে!! তোর ফোন নেই?? হায় হায়! তোর গার্ল ফ্রেন্ড আছে তো!!!!!
    আমাকে অবাক করে দিয়ে সে 'হ্যাঁ' সূচক মাথা নাড়ালো। আমি ওর সাথে মজা করছিলাম, এত ছোট ছেলের আবার গার্ল ফ্রেন্ড থাকে নাকি? সাইজ দেখে মনে হচ্ছিল আট বছর হবে বয়স। কিন্তু গার্ল ফ্রেন্ডের কথা বলতেই অমন করে লজ্জা পেলো কেনো! ব্যস! শুরু হয়ে গেলো আমার দুষ্টামী! বললাম,
    -সোনাবাবু, তোর বয়স কতরে!
    -বারো বছর!
    -বলিস কী!! বারো বছর তোর, অথচ তোর ফোন নেই?
    -না, আমার মা আমাকে ফোন কিনে দেয় নি। যদি ভেঙ্গে ফেলি, সেই জন্য ফোন দেয় নি।
    -কেন, ফোন ভেঙ্গে ফেলার কথা মনে হচ্ছে কেনো? তুমি কী মায়ের অনেক দামী জিনিস ভেঙ্গে ফেলেছো?
    -না, অনেক জিনিস ভাঙ্গিনি, তবে আমার হাত থেকে অনেক জিনিস পড়ে যায়। ফোনও যদি পড়ে যায়, তাহলে ভেঙ্গে যাবে, মায়ের হাতে তাহলে পিটানি খেতে হবে!
    -তাহলে তো তোর অনেক সমস্যা! গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে যোগাযোগ করিস কীভাবে?
    -স্কুলে গেলেই তো ওর সাথে দেখা হয়!
    -তাও তো বটে! তা তোর গার্ল ফ্রেন্ডের ফোন আছে?
    -হ্যাঁ, ওর ফোন আছে।
    -ও কী তোকে কখনও ওর ফোন ব্যবহার করতে দেয়?
    -না, ওর ফোন আমাকে ব্যবহার করতে দেয় না। তাছাড়া আমিও ওর ফোন ব্যবহার করতে চাই না।
    -এটা খুবই ভালো কথা। তোর আত্মসম্মান বোধ দেখে আমার খুব ভালো লাগছে। আচ্ছা, এই বয়সেই প্রেম করছিস, লেখাপড়া করিস না?
    -করি। লেখাপড়াও করি।
    -হুম! খুব ভালো। এতক্ষণ ধরে তোর সাথে কথা বলছি, তোর নামই জানা হলো না। তোর নাম কি বাবা?
    -কুইন্টেরিয়াস!
    -অনেক কঠিন নাম, কিন্তু খুব সুন্দর নাম। আর তোর গার্ল ফ্রেন্ডের নাম কি?
    -এটা বলা যাবে না!
    -কেনো, বলা যাবে না কেনো?
    -ও চায় না, ওর কথা অন্য কেউ জানুক।
    -বাহ! তোর গার্ল ফ্রেন্ডটা তো দারুণ বুদ্ধিমতী! কিন্তু আমার যে খুব ইচ্ছে করছে অমন একটা বুদ্ধিমতী মেয়ের নাম শুনতে!
    আবার ওর মুখে লজ্জা এসে ভর করলো, বললো, তোমাকে শুধু বলি, কাউকে বলে দিও না, ওর নাম অ্যাঞ্জেলিনা!
    -ওরে! খুব সুন্দর নাম। তোদের দুজনকেই আমার পছন্দ হয়ে গেছে। অ্যাঞ্জেলিনাকে না দেখেই পছন্দ হয়ে গেছে। তোর মত এমন লক্ষ্মী একটা ছেলের সাথে ও ফ্রেন্ডশীপ করেছে, ও তো অনেক লাকী। কুইন্টেরিয়াস, তোর কাছে তো পয়সা নেই, ভ্যালেন্টাইন'স ডে'তে অ্যাঞ্জেলিনা কে কী উপহার দিবি?
    -ভাবতে হবে!
    -বেশী ভাবতে হবে না। ওর জন্য একটা কবিতা লিখবি, আর বাগান থেকে একটা সুন্দর গোলাপ তুলে কবিতার সাথে আটকে দিয়ে অ্যাঞ্জেলিনাকে প্রেজেন্ট করবি। দেখবি অ্যানজেলিনা তোর দিকে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির মত হাসি দিবে!
    -হেই ম্যাম! তুমি কী যে বলো! অনেক মজা করে কথা বলো। হা হা হা হা! আমার হাসি পাচ্ছে।
    -হুম! এতক্ষণ মজা করে কথা বলেছি, তোমার সাথে গল্প করে আমার খুব ভালো লেগেছে। তুমি ভাল করে লেখাপড়া করো, বড় হয়ে যেন ইউনিভার্সিটিতে পড়তে পারো, তাহলে তোমার অ্যাঞ্জেলিনা জোলিও খুশী হবে, তোমার মাও খুশী হবে।
    -হি হি হি হি!! ওকে, ঠিক আছে। বাই!
    -বাই বলতে হয় না, সী ইউ বাচ্চা, ভালো থেকো।



    Comments
    1 Comments

    1 comment:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.