>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • অরুণ চক্রবর্তী

    SongSoptok | 10/15/2016 |


    ক্যানভ্যাসার


    একদিন বাইরে যাবার মুখে জুনের সঙ্গে দেখা, জুন জিরার্ড। সেদিন সবার ছুটি। ফ্লয়াটের বাইরে দড়িতে কাপড় জামা মেলছিল। আমাকে ডাকে। আলতো ভেজা ভেজা শরীর। ওর শরীরকে জরিপ না করে ওর দিকে তাকানো অসম্ভব। সেটা জুন নিজেও জানে। কিছু মনে করে না। বলে, 'শান্তিপুর, ইউ আর লুকিং ফর আ জব, আই অ্যাম টোল্ড।' বললাম, ঠিক শুনেছ। 'আই নো সাম ওয়ান, হি ওয়ান্টস ইন্টেলিজেন্ট ইয়ংম্যান। ফর ক্যানভাসিং।' আমার তখন সাংবাদিকতার থেকেও বড় দরকার একটা কিছু করে পকেটে কিছু রাখার। কাগজ কিনতেও তো পয়সা লাগে! এস্প্লানেড যেতে অন্তত এক পিঠের বাস ভাড়া তো দিতে হয়। এক পিঠ না হয় হন্টন। মেজদার দোকানে কেক পিসের পয়সাও অনেক সময় বাকি পড়ে যাচ্ছিল। স্টের্টসম্যানের বিলও। জুন বলল, 'টুমরো, নাইন থার্টি। আই উইল টেক ইউ টু দেম। দেয়ার্স আরে নিয়ার মাই অফিস।'

    জুনদের অফিসটা ছিল, তখন ব্রেবোর্ণ রোড-হাওড়া ব্রিজ কানেক্টর ফ্লাই ওভার তৈরি হয়েছে কিনা মনে নেই, তার ডান দিকে। তেতলায়। ঝুলে কালিতে যেমন হয় বিল্ডিং তেমনি। টানা বারান্দায় পরপর অফিস। জুনদের অফিসের পাশেই, দুটো অফিস বাদে একটা অফিসে নিয়ে গেল। চাকরিতে জুটে গেলাম। সদার্জি বস। ঝকঝকে চেহারা, বাংলা হিন্দি ইংরেজি তিন ভাষাতেই চোস্ত। মুহূর্তে আকর্ষণ করার পার্সোন্যালিটি। কাজঃ সোভিয়েত ইউনিয়নের নানা প্রকাশনের গ্রাহক সংগ্রহ করতে হবে, নানা কনসেশন্যাল স্কীমে। আমি খুশি অন্য কারণেও। ওই সোভিয়েত ইউনিয়ন পত্রিকাটি দেখে। ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতে রাখা হত। আইসোটপ আবিষ্কারের কথা এই পত্রিকাতেই প্রথম পড়েছিলাম। এই পত্রিকা মানেই মানুষের কাজের খবর, খেত-খামার কল-কারখানা সবাই সবখানে কাজ করছে তার ছবি। আধুনিক সব যন্ত্রপাতি। মেশিন ধান কাটছে, কল নিজে নিজেই তৈরি করছে নানা জিনিস এই সব ছবিওয়ালা লেখা। বাবা বলতেন, মানুষকে  সমান মর্যাদা দিলে সবাই কাজে উৎসাহ পায়। কম্যুনিজম মানে, সমান মর্যাদা, সমান সম্মান। আমি পত্রিকাগুলো আর রসিদ বই একটা বড়  খামে ভরতে ভরতে ভাবলাম, আমাদের শ্রমিক কৃষকদের খুব উৎসাহিত করার পত্রিকা এসব। সবার কাছে পৌঁছে দেয়া একটা বড় কাজ হবে। সর্দার্জি বললেন, আজ এসব নিয়ে বাড়ি যাও। ভালো করে দেখ, হোয়াট আর দ্য গুড আবাউট দীজ। উই উইল ডিসকাস নেক্সট।' পরদিন হাওড়ার অশোকা হোটেলে যেতে বললেন। সর্দার্জী আমারই কাছে পিঠের বয়স, কিন্তু অভিজ্ঞতায় আর স্মার্টনেসে আমার চেয়ে বহুগুণ এগিয়ে।

    আমি নিজেই ঠিক করে নিলাম, বউবাজার টু চাঁদনি। সর্দাজীও বলল, 'ঠিক আছে, আমি অন্যদের অন্য জায়গায় রিক্রয়ুট  করছি।' তারা কারা জানি না, নইলে একটু শিখে টিখে নেয়া যেত ওদের ফিল্ড এক্সপেরিয়েনস থেকে। বেশ চলতে লাগল আমার ক্যানভাসিং। নানা দোকানের কর্মচারিরাই আমার লক্ষ, আমার যুক্তি আর জীবন-সম্ভাবনার কথায় অল্পেতেই বিশ্বাসী হয়ে উঠতেন তারা। টাকা দিয়ে মাসিক, ত্রৈমাসিক এমন কি ছয় মাসের জন্যও গ্রাহক হতে থাকে তারা। সর্দার্জী খুব খুশি, 'তুমি ব্রিলিয়ান্ট সেলসম্যান, অরুণ, ইউ উইল গো ফার ইন ইওর লাইফ।' আমার উৎসাহ দ্বিগুণ হয়ে যায়, গ্রাহকের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। আমার কমিশনও। একদিন আমজাদীয়ায় 'বিরিয়ানি' অর্ডার করলাম। ফরিদ থ। মনি ব্যাগ খুলে অনেকগুলো নোট দেখালাম, 'কমায়া ভাই। ম্যায় বহত খুশ আজ।' ফরিদও খুশি। বেছে বেছে ভালো পীস, বেশ খানিকটা পরিমাণ বাড়িয়ে জাফরানে ম ম করা বিরিয়ানি নিয়ে এলো। সম্ভবত সেটাই আমার নিজের পয়সায় প্রথম এলাহী খাওয়া।

    আমি জানতাম, এখানেই জীবনের শেষ না। এটা শুরু মাত্র। তাই ক্যানভাসিংয়ের  ফাঁকে ফাঁকে আমার অন্য চেষ্টাগুলো বস্তাবন্দী ছিল না। গ্রাজুয়েট কের্সে ভর্তির মর্শুম শুরু হতেই কোমর বাঁধি। সীটী ডে আমহার্শটে পড়ব, কেননা, বাড়ির কাছে। দুই, চেনা কলেজ। কিন্তু পড়ব আমি ইংরেজি অনর্স। যদিও ইংরেজিতে মারক্স কম। ৫৩ কি ৫৪, মনে নেই। কলেজ অফিস আমাকে হঠিয়ে দিল। অঙ্কে অনর্স নাও, নিদেন কেমষ্ট্রি বা বাংলায়, ইংরেজিতে অসম্ভব। আমি হতাশ হবার মানুষ কোনদিন্ই না। তবে ফেল টেল করি। এখানে যেমন ঘটতে চলেছে। মানে, আমার সাংবাদিকতা ফেলের মুখে। ইংরেজি না শিখলে সাংবাদিকতা হবে না, তা বাংলাতেই হোক বা ইংরেজিতে, সেটা বুঝে ফেলেছি। একটিও বাংলা নিউজ ঊইক নেই। শুধু যুগান্তর আনন্দবাজারের স্থানীয় সংবাদ পড়ে কি আর সাংবাদিক হওয়া যায়? ইংরেজিতেও নেই কোন নিউজ উইক্লি। ডাইজেস্ট পত্রিকা বলতে 'রিডার্স ডাইজেস্ট', কিন্তু সেটা তো খবরের না। নানা ধারার ইংরেজি লেখালেখির সঙ্গে অবশ্য পরিচয় হয়, খুব কাজের। কলেজ স্ট্রিটের ফুটপাথ থেকে রিডার্স ডাইজেস্ট কিনি, এই একমাত্র পত্রিকা, যা কয়েক বছর পরেও পড়ে একই আনন্দ পাওয়া যায়। 'টাইমস' পত্রিকার দাম তো আমাকে বিক্রি করার মত। তাও মাঝে সাঝে কভার স্টোরির প্রয়োজনীয়তা অপ্রয়োজনীয়তা খুটে খুটে দেখে কিনে ফেলি। তখন মনে হত, এই সময় যদি বাড়িতে থাকতাম! দাদা 'টাইমস' পত্রিকার ভক্ত। নিয়মিত রাখতেন। নিজে নিজে ইংরেজি শেখা ছাড়া উপায় কি? তাই ইংরেজি অনর্সচাইই চাই। ইংরেজিতে ডায়রি লেখা বন্ধ করেছি দিন সাতেক চেষ্টা করার পরই। আর্টিক্ল জানি না, পার্টস আফ স্পীচ জানি না, টেনসের জ্ঞান নেই, সবচেয়ে বিপদ, আমার ইংরেজি শব্দ ভান্ডার খুব খুব সীমিত। এঙ্গলোদের সঙ্গে ঝরঝরিয়ে কথা বললেই কি আর ইংরেজি শেখা হয়? মনে হয়. ওদের  শব্দ ভান্ডারও কম। শ' খানেক? তাও সন্দেহ হয়। সুতরাং পড়া ছাড়া উপায় নেই। তাতে ইংরেজি লেখা শিখতে না পারি, ইংরেজিটা জানতে তো পারব? স্টেস্টসম্যান তো আছেই, আছে আমেরিক্যান লাইব্রেরি, সাতদিনে একদিন ইন্ডিয়ান একস্প্রেসে দিল্লি এডিশন, আর মাঝে সাঝে রীডার্স ডাইজেস্ট আর টাইমস। সারাক্ষণ সংবাদের দুনিয়ায় ভেসে বেড়াই।

    কাগজে একটা বিঞ্জাপন দেখে আনন্দে ফেটে পড়ি। যাদবপুরের  রিজিওন্যাল ইনস্টিট্যুট অফ প্রিন্টিং টেকনোলজিতে ফোটোগ্রাফি ক্লাশে কয়েকটা সিট, ভর্তির পরীক্ষা দিয়ে ঢুকতে হবে। ফোটো জার্নালিজম তো খারাপ ব্যাপার না! আমেরিক্যান লাইব্রেরিতে গিয়ে ফোটো জার্নালিজমের ওপর বেশ কিছু বই অ্যালবাম খাবলে খাবলে দেখে আমার উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল। অ্যাপ্লিকেশন জমা দিয়ে এলাম। লাইব্রেরিতে বসে নিজের কল্পনায় কিছু কোশ্চেন আনসারও ঠিকঠাক করে নিলাম। পরীক্ষা দিলাম, রেজাল্ট বেরুল। আমার নাম এক নম্বরে। মানে, আমি টপার! জীবনে কোন দিন ফার্সট হইনি। স্কুলে মলয়টা ঐ জায়গাটা এক বছরের জন্যও ছাড়েনি। আমি সেকেন্ডই থেকে গেছি চিরকাল। একি কান্ড! মাকে লিখলাম, ' মা, আমি ফার্সট। তোমার ছেলে কলকাতায় টপার। ফোটোগ্রাফি কলেজের পরীক্ষায়।'

    উত্তর এলো দাদার কাছ থেকে। চিঠিটার বয়ান এই রকম-- 'ছোটবেলা থেকেই আমরা সবাই তোর মধ্যে এক মস্ত ইঞ্জিনিয়ারের সম্ভাবনা দেখেছি। ছবি তোলার নেশা ছেড়ে, বিই কলেজে এডমিশন নে। ভর্তির ফর্ম জমা দিয়ে এডমিশন টেস্টের অ্যাডমিট কার্ডের কপি আমাকে পাঠাবি। আমি দেখতে চাই, তুই চেষ্টা করেছিস, পরীক্ষা দিয়েছিস।' বিপদ। আমাদের পরিবারে দাদা এমন একটি ব্যক্তিত্ব, যাঁকে অমান্য করার কথা আমরা ভাই-বোনেরা ভাবতেই পারি না। দাদা কোনদিন আদেশ করেন না, মনে হয়, যেন দুটি হাত জড়িয়ে ধরে অনুরোধ করছেন। আমি ধস্ত হয়ে গেলাম এই চিঠি পেয়ে।

    শিবপুরের বিই কলেজে ভর্তির ফর্ম জমা দিলাম। অ্যাডমিট কার্ড এলো। ঢাউস কাঁচের বুকে ভুষো কালির ছাপে ঘটাং ঘট, জেরক্স কপি হল। পাঠিয়ে দিলাম কপি, দাদাকে। ফোটোগ্রাফির কী হবে? আমার অবশ্য ফোটগ্রাফি ক্লাশের ঘোরটা একটু একটু করে কমতে শুরু করেছে তখন। আমার একটা আদ্দিকালের মরচে ধরা কোডাক বক্স ক্যামেরা ছিল। ছবি তোলা আমার চিরকালের নেশা। ফিল্ম রোল কেনা, তার নেগেটিভ করা প্রিন্ট করা-- মস্ত খরচ। এখনো আমার কাছে ঠাসা প্রায় এক কারটন নেগেটিভ রাখা আছে, প্রিন্ট করা হয় নি। কোডাক পাল্টে দামী ক্যামেরা জুম ওয়াইড। তার ওপর ট্রাভেলিং... ভয় হতে শুরু করল। অন্যদিকে ইংরেজি অনর্সে ভর্তি হবার কোন সম্ভাবনাও দেখছিলাম না। ৫৩ মারক্স নিয়ে ইংরেজিতে অনর্স দেয়া যায় না, জিদ ধরেছে কলেজ অফিস। আমি আবার চক্রব্যুহে ফেঁসে যাই। দাদা যাই-ই বলুন, আমার মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিঙ্গের কোন ছটা নেই। ওটা দাদার  কল্পনা প্রসূত। ফোটোগ্রাফি ধীরে ধীরে না-এর দিকে চলে যাচ্ছে, ইংরেজি অনর্স সুদূরে। তাহলে? ক্যানভাসিং সম্বল? ফ্রম দুধ টু মেডিক্যাল ভায়া আইস্ক্রিম এন্ড ম্যাগাজিন? পার্ক সারকাস অঞ্চলে বেশ কিছুদিন দুধের ক্যানভাসিং করেছি, বোতলের দুধের গ্রাহক সংগ্রহ করতাম, কিছুদিন আইস্ক্রিমের ঠেলা ঠেলে হকারিও করেছি। এখন চলছে ম্যাগাজিন। এরপর না হয় মেডিক্যাল। সেই সময়ে আমার বয়সীদের মধ্যে দুটি ক্ষেত্রে ক্রেজ। মেডিক্যাল রিপ্রেসেন্টেটিভ আর 'জেনারাল অর্ডার স্কপ্লায়ার্স', মানে, আলপিন টু কাগজের বড় বড় রিম সাপ্লাই, অর্থাৎ যাবতীয় স্টেশনারি সাপ্লাইয়ের কাজ। তো না খেতে পেয়ে কলকাতার ফুটপাথে আমার কঙ্কাল কোনদিন পড়ে থাকবে না, তাতে আমি স্থির।

    দিনের সিটিতে একদিন মরীয়া হয়ে পৌঁছে যাই। একজন সিনিয়ার ছাত্রকে জিজ্ঞেস করি, 'আপনাদের ইংরেজি ডিপার্টমেন্টে সবচেয়ে স্নেহশীল, ছাত্রবৎসল, ইনস্পায়ারিং টীচার  আছেন কেউ? কে তিনি?' ছাত্রটি ঝট করে বলে, 'সিএন্আর, সি এন রায়। ওঁর মত টীচার  হয় না। যেমন সৌমিকান্তি (ইংরেজিতে বলেছিল, শব্দটা মনে পড়ছে না এখন) তেমন কাইন্ড।' ছেলেটি আমাকে স্যারের বাড়ির নাম্বার দিতে পারল না, ডিরেকশন দিল। ক্রিষ্টোফার লেন। এন্টালি পেরিয়ে ডান দিকে বাঁক, সুন্দরী মোহন এভুন্যু, তার ডান দিকে।

    পরদিন সকালেই, কলেজে যাবার সময়ের আগে পৌঁছে যাই সি এন রায়ের বাড়িতে। ব্লাইন্ড লেনের মুখে দরজা। হাল্কা পর্দা হাওয়ায় দুলছে। ঠান্ডা পরিবেশ। কড়া নাড়বার আগেই পর্দা তুলে দেখেন, আমি প্রণাম করি। অমন সৌম্যকান্তি মানুষকে প্রণাম না করে থাকতে পারিনি। গোলপনা মুখে গোল ফ্রেমের চশমা, গায়ের রং ফর্সা, পাট করে চুল আঁচাড়ানো, 'এসো।' আমি ভেতরে যাই, ছোট ঘর কিন্তু অনেক বড় পৃথিবী। আলমারিতে টেবিলে গাদা বই, ছাদের পায়ের কাছে, দেয়ালের মাথায় তিন পাশ জুড়ে শেল্ফ, ঝকঝক করছে বই। আমি কাতর ভাবে সব নিবেদন করলাম। আমার সব কথা বললাম তাঁকে (আমার ইংরেজির অদক্ষতার কথা গোপন রেখে), ইংরেজি আর বাংলায়, 'আমাকে সাংবাদিক হতেই হবে, স্যার। বাংলা পড়ে সাংবাদিক হওয়া যায় না। বাংলা ভাষা সাংবাদিকতার ভাষা নয়, স্যার।' সব শুনে একসময় বললেন, 'কলেজের সময় হয়ে এলো। তুমি কাল কলেজে বেলা বারোটা নাগাদ আমার  সঙ্গে দেখা কোর। আমি টীচার্স রুমেই থাকব।' দূর দিগন্তের কোথায় যেন, ঝলসে উঠল এক চিলতে বিদ্যুৎ।

    পরের দিন দেখা করলে বললেন, ‘সামনের সপ্তাহে তারকবাবুর সঙ্গে কথা হবে। তুমি নতুন একটা ফর্ম সংগ্রহ করে রাখ।হবে হবে নাহবে না হবে। দম বন্ধ অবস্থা আমার। এদিকে ফোটোগ্রাফি এডমিশনের ইন্টারভ্যু এগিয়ে এলো। শিবপুরের এডমিশন টেস্টও।
    (চলবে)


    অরুণ চক্রবর্তী

    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.