>

রিমি পতি

SongSoptok | 11/10/2014 |



অভিসার

প্রত্যেক দুপুরে কথার পিঠে কথা সাজিয়ে
অবিরাম খুনসুটি চলে বেপরোয়া-
সংক্ষিপ্ত, নিষ্প্রাণ প্রশ্ন ছুঁড়লে
পর্দায় অভিমান কাঁপে।
 ভীরু, অনুচ্চারিত শব্দমালা ভেদ করে
 কখনো  এক আধটা স্ফুলিঙ্গ ওড়ে,
ফেলে আসা কোনও এক সমুদ্রতটে
মধ্য রাতে হেঁটে যাওয়ার স্মৃতি
কাঁহাতক রোমন্থন করা যায় ? অগত্যা  
শেষ রাত্রির আগের প্রহরে, আধ ঘুমে, আধ জাগরণে
স্বপ্নের সুড়ঙ্গ  বেয়ে  নিরুচ্চারে জ্যোৎস্না তলব করে ওরা।
 শুনশান ছায়াপথে, এক নক্ষত্র থেকে আরেক নক্ষত্রে 
 অবলিলায় চলতে থাকে, দ্বিধাহীন অশরীরী  অভিসার। 
চোখ খুললেই অশ্রুহীন বিদায়  পর্ব সমাপ্ত হয়--  
বাস্তবে জুটি বাঁধার শর্তই ছিল না কোনওদিন।


গার্হস্থ্য
কিছু কিছু অচিন  প্রেমের অসুখ
অন্তরালে থাকে
সন্ধানী  বন বেড়ালীর  মতো
আঁচড়ে  যায়  বুকের গভীরে  

কল্পিত ঈর্ষার  খুনসুটি  সৃষ্টি করি
যদি মান ভাঙানো  বানভাসি আসে ?
দু এক টুকরো  মাখো মাখো  ভাব
আদুরে ধার করা সংলাপ ,
সান্ধ্য চায়ের আসরে পরিবেশন করি ; মাপ বুঝে
তবু আহ্লাদী কুক্কুরীর  মত প্রেম  ---  কুণ্ডলী  পাকায়  না
কোথাও  কোনো ঘরে

এখানে  হলুদ প্রজাপতি  বসে না
মায়াবী ডানা  মেলে   চলে যায়  দূরে, আরো  দূরে
তবুও  গার্হস্থ্য   চলতে থাকে ঢিমে তালে , স্বল্প  আঁচে
টেলিফোনে পরনিন্দা , অফিসে  নেট সার্ফ
কাজ ফাঁকি , মিথ্যা  অজুহাত , মিটিঙে  আঁকিবুকি
অর্থহীন  বাস্ততায় , দিনপঞ্জী  ভরাই
দু একটা  কমজোরী সমাপন  হালকা  ঢেউ  তোলে
সেল ফোনে  আলতো  আদর--- আদ্যপান্ত মেকি

দিন আসে দিন যায় ,
গার্হস্থ্য-- গদ্যময়  ভরাট  
অপেক্ষায় প্রহর গুনি
যদি কোনো চোরা  স্রোত  নিয়ে
আসে সুনামির দুরন্ত জলোচ্ছাস


পাখি ঘর
ছায়াময় বিশাল বৃক্ষকাণ্ড্‌, ডাল পালা মেলে
শান্ত পাখিঘরখানি আদরে জড়িয়েছিল
সযত্ন, ছলনাহীন গভীর আশ্বাসে।
এক আধটা, নিরীহ দোয়েল, টিয়া আনাগোনা করতো
জোনাকিরা  জ্বলতো  প্রতি রাতে।
খুনসুটে চিল কিম্বা কামুক প্যাঁচা    
সরে যেত, বৃক্ষের মৃদু আন্দোলনে।
হেমন্তের শেষে বল্গা হরিণের আচমকা ডাকে
আহ্লাদী পাখির নাসারন্ধ্র আচমকা স্ফীত,  
গ্রীবাভঙ্গি, অবৈধ অপরূপ--
মৃগনাভি সুগন্ধি বাতাসে তখন যৌন রসায়ন।
স্তম্ভিত বৃক্ষের পাতা কাঁপে, ডাল বেয়ে চুঁইয়ে পড়ে অভিমান
তবুও সে মায়াময় আদরে আগলে  রাখে নষ্ট পাখিঘর।


[রিমি পতি ( স্পারটেনবার্গ)]



Comments
0 Comments

No comments:

Blogger Widgets
Powered by Blogger.