>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • মনোরমা বিশ্বাস

    SongSoptok | 1/10/2015 |




    আমার জন্ম, শৈশব  কৈশোরে বেড়ে ওঠা সবকিছু ঘটেছে প্রত্যন্ত গ্রামে। এখনকার মত সহজ  যোগাযোগ ছিলনা তখন। নাগরিক যে সামান্য সুবিধা এখন গ্রামে পৌঁছেছে দেখতে পাই তখন তার কিছুই ছিলনা। সন্ধ্যা হতে না হতেই গ্রামগুলো রুপান্তরিত হয়ে যেত নিঃসীম কালো অন্ধকারে ঢাকা ভুতুড়ে জনপদে। বিনোদন বঞ্চিত অসহায় মানুষ পেটে যা কিছু গুঁজে দিয়ে পিদিম নিভিয়ে ঘুমের কোলে সমর্পিত করত নিজেদের । শিক্ষার আলো তখনো ঘরে জ্বলেনি ।সবেধন নীলমনি দুয়েকটা স্কুলে পড়ালেখার যে সীমিত আয়োজন তাই ছিল সম্বল আমাদের। শিক্ষাজীবন শুরু করি এমনই এক স্কুলে এমন পরিবেশে ।জীবনে প্রথাগত শিক্ষার শুরুটা যার এই, যে এখন এসে শিক্ষামন্ত্রী হবার দুঃসাহস দেখাচ্ছে তারপক্ষে ঐ সময় বড় কোন স্বপ্ন দিয়ে নিজেকে আচ্ছাদিত করার কি আদৌ কোন সুযোগ ছিল ? না ছিলনা । কিন্তু প্রবল একটা অনুসন্ধি মন ছিল আমার । হয়ত তাই আশপাশে যা কিছু দেখতাম, শিক্ষক বাবার উতসাহে যখন যা কিছু পেতাম পড়তাম। কৌতুহলী মন এসব থেকে শিখে নেবার কাজটি করত আমিও টের পেতে থাকলাম ভেতরে ঝড় বইছে, প্রচলিত অনেক কিছু বিনা প্রশ্নে বিশ্বাস করতে মেনে নিতে মন আর সায় দিচ্ছেনা । মননশীলতায় এই যে বড় পরিবর্তন তাই হয়ত এখনকার এই আমিতৈরি হতে সহায়তা দিয়েছে । ঐসময় আমাকে সবচে বেশি পীড়া দিত মানুষের দারিদ্র্য। দেখতাম পরিশ্রম বিমুখতা নয় স্রেফ বৈষম্যের কারণে নুব্জ মানুষ বুভুক্ষাকে, তাদের এই না খেয়ে থাকাটাকে প্রায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমরাও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না। সৎ শিক্ষক পিতার কায়ক্লেশে বয়ে বেড়ানো  সংসারে তাই ভীষণ, ভীষণ অভাব ছিল, স্বাধীনতার পর আমার স্কুলে যাওয়ার কথা, জামা কাপড়ের অভাবে স্কুলে যেতে পারিনি, দিনে দিনে বড় হয়ে উঠছি। ভরপেট খেতে পেতাম না সবদিন ,কোন কোন সময় রাতের বেলা ভাত জুটতো না বলে  রুটি খেতাম, কখনো গমের ভাত। রুটি আমার একদম পছন্দ হত না, তাই অধিকাংশ রাতে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়তাম, মায়ের অনেকগুলো ছেলে মেয়ে, কে কার খবর রাখে। না খেয়ে খেয়ে পুষ্টিহীনতায় ভুগতাম।

    আরেকটা জিনিস আমাকে কষ্ট দিত তা হল, মেয়ে পুরুষের পার্থক্য। খুবই অবহেলিত এই মানুষগুলো,  তাচ্ছিল্য ভরে বলতো মেয়েছেলে! কারুর ঘরে মেয়ে শিশুর জন্ম হলে কত বাজে মন্তব্য যে করা হত ঐ মেয়েশিশু আর তার মাকে নিয়ে। মেয়েরা কাজ করতো বেশি, অথচ তাদের কোন মূল্য ছিল না। পুজো বা ঈদে একটু ভালো শাড়ীর জন্য রীতিমত ঝগড়া করতে হত। ঐ ভাবে বিনোদন ছিলনা কারো, দেখতাম বৃষ্টির সময় এক নাগাড়ে ৫/৭ দিন ধরে বৃষ্টি হত, গ্রামের পুরুষেরা তখন এক বাড়িতে জড়ো হয়ে তবু তাস খেলে, গল্প করে সময় কাটাতে পারত, মেয়েদের সেটাও জুটত না, ভাবখানা এই মেয়েদের আবার অবসর কি, কিসের বিনোদন। অথচ সারাদিনমান অক্লান্ত পরিশ্রম করে পরিবারের পুরুষ সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিত মেয়েরাই। গ্রামের মেয়েদের অবর্ণনীয় কষ্ট দেখে মনে প্রশ্ন দেখা দিত, ভয় পেতাম, ভাবতাম, আমার জীবনও বুঝি এমনই হবে। তখনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় যুক্ত হইনি, মনে আছে একদিন বাবাকে হঠাত বলে বসলাম, এই জীবন থেকে উত্তরণের উপায় কি?’ বাবা বললেন, ‘শিক্ষা, শিক্ষাই পারে এই জীবন থেকে উন্নততর জীবন দিতেবাবাকে বললাম, আমি পড়তে চাই, বাবা আমাকে একটা খাতায় বর্ণমালা লিখে দিলেন, আমার মনের জোর বেশি ছিল, আমি দ্রুত সেইগুলো শিখে ফেললাম। আমরা গরীব হলেও আমাদের বাড়ীতে অনেক বই ছিল, কারণ বাবা প্রচুর বই পড়তেন, অক্ষর জ্ঞান হওয়ার সাথে সাথে বাড়ীর সেই বই গুলো পড়া শুরু করলাম। পড়াই ছিল আমার বিনোদন। ঐ সময় বি এ ক্লাসের যে বাংলা বই ছিল, সেই বইয়ের  গল্প গুলো তখনই পড়েছি । মনে পড়ছে, ‘রস, ‘প্রাগৈতিহাসিকএসব সেসময়ই পড়া শেষ!

    এবার আসি আমার ধর্ম বিষয়ে চিন্তায়, বিশাল ধাক্কাটা লাগে তার ঘটনায়। পারিবারিক চল, সুতরাং সেই  ছোট্ট বয়সে আমি সব মন্ত্র মুখস্থ করে ফেলি, যেমন স্নান করার মন্ত্র, তুলসী গাছে জল দেওয়ার মন্ত্র, পুজোর সব মন্ত্র। বলতে লজ্জা নেই, ঐ সময় আমি নিয়মিত পুজো করতাম, প্রতিদিন এক অধ্যায় করে গীতা পাঠ করতাম, মহাভারত, রামায়ন ক্লাস ফাইভেই শেষ করে ফেলি। ঐ যে আগেই বলেছি কৌতুহলী মন আমার, ইতিমধ্যে তাতে যোগ হয়ে গেছে যুক্তি দিয়ে সব কিছু বুঝার চেষ্টা। আস্তে আস্তে আমি ধর্মের ফাঁকি গুলো বুঝতে পারলাম। ধর্ম বইতে খুব সুন্দর সুন্দর কথা লেখা আছে, যার দার্শনিক মূল্য অনেক, কিন্তু মেয়েদের সম্পর্কে একটা খুব হাস্যকর  বাজে কথা পড়ে মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে গেল, মনে হল, এটা পুরুষের বানানো, মেয়েদের দাবিয়ে রাখার কৌশল বিশেষ। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব মেয়েদেরকে পরিহার করে চলতে বলেছেন, কামিনীকাঞ্চন কে খারাপ বলেছেন। উনার বউ এর সাথে নাকি ভাই বোনের সম্পর্ক ছিল। একদিন বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, এই ভাই বোনের সম্পর্ক কথার মানে কি? তখন নরনারীর দৈহিক সম্পর্কের ব্যাপার বুঝতাম না। বাবা চুপ করে ছিলেন, পরে যখন বুঝেছি, তখনই মনে হয়েছে, ঈশ্বরকে ডাকতে হলে নরনারীর এই সম্পর্ক পরিত্যাগ করতে হবে কেন।এই সম্পর্ক তো প্রাকৃতিক, কেউ তো প্রকৃতির বিরুদ্ধে যেতে পারে না। আমি যে কাজটি করেছি, সততার সাথে করেছি, যেমন যখন পুজো করেছি, সব মন্ত্র মুখস্থ করেই ঠিক মত তা আউড়েছি। আমি কিন্তু পুজোতে গেলেই পুরোহিতের ফাঁকি টা বুঝতে পারি, এঁরা ধামা চাপা দিয়ে মন্ত্র আওড়ায়, শনি পুজোয় চন্ডিপাঠ করে। প্রথম প্রথম কাউকে কাউকে ঠাট্টার ছলে  বলেওছি, ‘আরে, ঠাকুর তো ঠিক মন্ত্র পড়ছে না!ততদিনে আমার ভেতর থেকে, রবীন্দ্রনাথ যাকে বলেছেন ধর্মমোহতা কেটে যাচ্ছে। এই সব ঠাকুর দেবতা সম্পর্কে পরে যখন আরো জানলাম তখন  বুঝলাম  এই গুলো সত্যি নয়, মিথ, তখনই পুজো পরিহার করলাম, বাবাকে বললাম, আমি পুজো করতে পারবো না, বাবা সংগে সংগে অনুমোদন করলেন। এখন তাই কারুর সাথে ব্যক্তিগত ভাবে পুজো নিয়ে আলাপ হলে, তাদেরকে বলি, এটা নিয়ে আগে পড়াশুনা করো, যেমন শিব, তুমি শিবের লিংগে দুধ ঢালার আগে এটা নিয়ে পড়াশুনা করো, লক্ষ্মী পুজো করার আগে পড়ো, এরা কেউই সত্যি নয়, গল্প, কেউ কেউ বলে এটা বিশ্বাস, আমার কথা, মিথ্যে গল্পে বিশ্বাস করে সময় নষ্ট কেন করবে।

    তারপর শরু হলো নতুন উদ্যমে বৃহৎ পরিসরে আরো আরো পড়তে থাকা। ততদিনে বই কিনে পড়ার সামর্থ তৈরী হয়ে গেছে অনেকটা । বই কিনি , পড়ি আর আমার সামনে খুলে যেতে থাকে নতুন নতুন জগৎ । এ সময় রবী  ঠাকুরের লেখা উপন্যাস গোরা বই পড়ে চমৎকৃত হলাম, বাবাকে বললাম, এই বই সবার পড়া উচিত, বিশেষ করে সাধুদের।এই বই পড়লে যে জ্ঞানার্জন হয়, গীতা পড়লে তা হয় না। বাবা শুনে হাসলেন। ধর্ম ব্যবহার কারীদের বিরুদ্ধে তখনই আমার বিদ্রোহ শুরু। মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে বেগম রোকেয়া বলেছেন, “ধর্ম পুস্তক কোন আসমানি কিতাব নয়, এটা পুরুষদের লেখা’’আমি এখন ভাবি, বিস্মিত হই  এই বোধ ঐ বয়সে বেগম রোকেয়ার মধ্যে কিভাবে জন্ম নিল। উনি তো আমাদের মত স্কুলে পড়েননি, কলেজে যাননি, বাইরে মেলামেশার সুযোগ পাননি। বেশ একটা মিল খুঁজে পাই যেন আমার মধ্যেও বেগম রোকেয়ার মত এই মনোভাব এসেছিল অল্প বয়সেই। মাটির তৈরী ঠাকুর দেবতা সত্যি নয়। ধর্মের ভয় দেখিয়ে, কিছু মানুষকে এই বিশ্বাস করাতে বাধ্য করেছে যে, তারা অন্যদের থেকে ছোট, মেয়েরা ঠাকুর ঘরে ঢুকবে না মাসিক হলে, কারণ তারা অপবিত্র। আমি বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রতিবাদ করতাম, অন্যরা মনে করতো আমি কম বুঝি, তাই খাপছাড়া কথা বলি। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে কিছু কুসংস্কার, অন্ধ বিশ্বাস আছে, যার জন্য আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা দায়ী। ধর্ম বই কিছুতেই পাঠ্য বই করা ঠিক নয়। ধর্ম বইতে এমন কিছু লেখা আছে যা বর্তমান জীবন যাত্রার সাথে চলে না। বরং বিজ্ঞানের বিপরীত কথা। এই পৃথিবী কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে, কিভাবে চন্দ্র গ্রহণ সূর্য্য গ্রহণ হয়, ধর্ম বইতে এক রকম লেখা আর বিজ্ঞান বইতে আরেক রকম লেখা । তাহলে আমরা কোনটা গ্রহণ করব ? অধিকাংশ মানুষ ধর্মকে অস্বীকার করতে পারে না। মানুষ প্রকৃতির কাছে অসহায়, প্রাকৃতিক এই দূর্যোগকে এরা মনে করে ঈশ্বরের অভিশাপ। আর মৃত্যু ভয়, স্বর্গের লোভ এই সব মানুষকে দূর্বল করে তোলে। এরা ধর্মকেই বেছে নেয়।  শিশু বয়সে এই সব মাথায় ঢুকলে বড় হয়ে পরিহার করা যায় না বা পরিহার করা কঠিন হয়ে পড়ে।আমার যখন নিজের ক্লিনিক হল, আমি রোগীদের সাথে ভালো ব্যবহার করতাম, অনেকেই আমার প্রতি মুগ্ধ হত, বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে সে মুগ্ধতা প্রকাশ করতো। বেশ কিছু লোক আমাকে মুসলিম হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করতাম, কেন আমাকে মুসলিম হতে হবে। তখন তারা বলতো, আমি মানুষ হিসেবে ভালো, অথচ, মরার পর বেহেস্তে যেতে পারবো না, কারণ ওখানে এক মাত্র মুসলিমেরাই যেতে পারবে। আমি তখন জিজ্ঞেস করেছিলাম, তাহলে মাদার তেরেসা স্বর্গে যেতে পারবেন না? উত্তরে বলেছিল, না, এমনকি খুনী এরশাদ শিকদার ও বেহেস্তে যাবে একদিন, কিন্তু মাদার তেরেসা নয়। আমি খুব শক্তভাবে বলেছিলাম, এ নিয়ে একটি কথাও নয় আপনার সাথে। এই রোগীরা কিন্তু মোটেই অশিক্ষিত নয়, এরা নিজের ধর্ম বরং ভালোই জানে। এরা ছোটকালেই এই সব শিখে।

    পেশাগত ভাবে অনেক প্রভাবশালী লোকের সাথে মিশে দেখেছি, ধর্ম বিশ্বাসী লোকেরা তাদের মুক্তচিন্তার জায়গায় রূদ্ধ, কুসংস্কারগ্রস্ত। এরা মানুষকে ধর্মীয় দৃষ্টিতে দেখে। আমি যদি কখনো নিজের অভিমত প্রকাশ করেছি, অর্থাৎ ধর্মের অসারতা, ঈশ্বরের অস্তিত্বে অনাস্থা প্রকাশ করেছি, তখন অনেক হেনস্থা হতে হয়েছে। এরা সংখ্যায় বেশি, তাই আমি চুপ করে যেতাম। আমি এখন ভাবি, তখন যদি কোন গাইড পেতাম, সমমনা বন্ধু পেতাম, তাহলে ঐ হেনস্থা আমাকে হতে হত না। ধর্মীয় শিক্ষা মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যর্থ। বরং এটা মানুষকে মূর্খ করে তোলে, গোঁয়ার করে তোলে। আর এই মূর্খ জনগণকে দিয়ে যা খুশি তাই করা যায়। যেমন আইসিস বা তালিবান ধর্মের নামে প্রচুর রক্তপাত করছে, ধর্ষণ করছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দেশের ধর্মীয় দল গুলো কী করেছিল!  ধর্মীয় শিক্ষা মানুষকে পশ্চাৎপদ করে তুলছে।

    আমেরিকায় এসে দেখলাম, আমাদের সমাজের বিপরীত, যা আমি কল্পনা করেছিলাম তার অনেকটাই এ সমাজে বাস্তব। এখানকার মানুষ ধর্ম বিশ্বাস করে কিন্তু দৈনন্দিন চাল চলনে তার কোন প্রভাব নেই। এতদিন ধরে কাজ করছি, কেউ জানেই না আমার ধর্ম কি । ধর্ম নিয়ে এরা আলোচনা করে না, অধিকাংশ মানুষ নাম মাত্র খ্রীস্টান, ধর্মের গোঁড়ামি ছিটে ফোটাও নেই। এদের পাবলিক স্কুলে কোন ধর্ম সাবজেক্ট নেই।এখানে বুড়ো মানুষ সপ্তাহান্তে চার্চে যায়। ধর্ম নিয়ে মানুষে মানুষে বিভেদ নেই। এখানে আমি ছেলেদের নিয়ে মিউজিয়ামে যাই, সেখানে বিগ ব্যাং দেখায়, যার মাধ্যমে সৌর জগত সৃষ্টি হয়েছে। সব সময় সৌর জগত নিয়ে কিছু না কিছু ডকুমেন্টারি ফিল্ম দেখায় । আমেরিকানরা বাচ্চাদের নিয়ে আসে। বাচ্চারা যদি এই সব ছোটকাল থেকেই দেখে, শেখে  তাহলে ধর্ম বই এর কাল্পনিক কাহিনী আর বিশ্বাস করবে না। বিবর্তণবাদ ও প্রমাণ সমেত দেওয়া আছে। আফ্রিকায় সৃষ্টি মানুষ কিভাবে ইউরোপে এসে সাদা হয়ে গিয়েছিল, সেও প্রমাণ সমেত দেখানো হয়েছে। আদম হাওয়া থেকে মানুষ সৃষ্টি হয়েছে এটা অন্ততঃ এই সব দেশের লোকেরা বিশ্বাস করে না। এই সব দেশের মানুষ ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত নয় বলেই এদের মধ্যে মানবতাবোধ বেশি, মানুষকে মানুষ বলেই সম্মান করে। মেয়েদেরকে আর শিশুদেরকে একটু বেশিই প্রাধাণ্য দেয়। এই জন্যই তো আমি চাই দেশের শিক্ষা মন্ত্রী হতে।

    [মনোরমাবিশ্বাস
    আমেরিকান প্রবাসী চিকিৎসক]


    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.