ঘুম ১
তোমাকে চাইতে চাইতে
তোমার দিকে চাইতে চাইতে ঘুমগুলি সরে যাচ্ছে ...
ঘুমের ঘোমটাগুলি সরু , বিনুনি বাঁধা ... আমি ঘুমুতে ভুলে যাই ... চশমা খুলে রাখি ...
তোমার ভাষাকে বুদ্ধ করি । ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে জন্ম
দিই পায়েস রঙের বোধিগাছ ...
রঙ্গিন পাখিদের চেনাই যাজকপাহাড়ের রাস্তা ..
সত্যি কথা বলতে কি তুমি যতদূর
ঘুমের প্রথম বউ ততটা সুন্দর নয় ...
ঘুম ২
ঘুম ভেঙে গেলে তোমাকে গন্তব্যে পৌঁছে দেবো ।
কুহকরমণীর নিজস্ব প্রাসাদ ... তুমি যত কাগজ আর কলম লিখেছ আমি তোমাকে তার
চতুর্গুণ ফিরিয়ে দেব ... ভূর্জপত্রের স্ফটিক সমাহার । তুমি যত বৃক্ষবহুল , আমি
ঠিক ততটাই উত্তরীয় ...
লজ্জার গন্ধে তুমি ঢেকে রাখবে চোখ ...
তোমার
দৃষ্টিতে আলস্যলতাটি ... প্রেমকে দাহ দেবে তুমি
। আমি সেই নীলের প্রসবে নতজানু । আগুনসম্ভবা হবো ...
উড়বে উড়বে ... সূর্য ঝাঁপিয়ে পড়বে গোমতীর গোপন । আমি সেই
গোপনচুমকিতে জ্বলজ্বল ... সদ্য যুবতী অরুন্ধতীও মানবে হার ... কেমন জড়িয়ে যাবে ঘুমের দ্যুতি ...
যেন
তারাদের পোষা ঘোলাটে বালক
অপরূপ তুলসীর বিটপ ... ছায়াজিভ একা হেঁটে যাবে ...
ওগো পৃথিবীর প্রথম বাসিন্দা ...
ফকির গাইতে থাকো তুমি । নদীকে বাউল করো ...
চুপিচুপি ডুব দাও ... ঘুমঘুম সুজাতায় যাও
ভেসে ...
ওগো শ্যামপেয়ালা ... দ্যাখো কেমন তুড়ি মেরে উড়িয়ে
দিচ্ছি ঘুমের শীতলপাটি ... মুছে দিচ্ছি অচেনা
ভুলের সালোক সংশ্লেষ ... দ্যাখো ... তোমার কক্ষপথে আর কোনো
দুঃখীঘুম নেই ...
ঘুম ৩
আমি শিকারী
নই দীঘি । তবু তোমাকেই জলের প্রাচুর্য বলে জেনেছি । আকাশ কেঁপে উঠলে ...তোমার টোলে আহ্লাদ ... আমি ঢেউ জপ করি তোমার নাম... দু একটি পানকৌড়ি আমাকে আষাঢ়ে করে । টুকরো টুকরো বৃন্দাবন আমার ভেতরে গুনগুন
শ্যামকেচ্ছার বাঁশী ... ওগো দীঘি , তোমাকে খেলতে খেলতে নিজেই কবে যেন নিজের খেলা হয়ে গেছি ... জানো তুমি , এই এক খেলারোগ হয়েছে আমার । অসুখ পুঁতে বের করেছি
সুখবেড়ালের গাছ ... দিনরাত গোলাপি রঙের আওয়াজ ... আমার কূল নেই ... কৃষ্ণ ? সেতো
অতিকায় কালীপুজোময় ...আমার ইচ্ছে , করে বড় শব্দ করে করুণ হই ... বড় আশ্বিন করে কাঁদি ... বড় বৈশাখ করে ঝড় হই ... জ্বর হই ...
আমি
সেগুন কাঠের আগুন হতে চাই দিঘী ...
ছাতিম
ভুলের অজগরে যেভাবে তোমার অস্ত্রাগার আমার সেতার কাঁপিয়ে যায়
...
ঠিক সেভাবে আমি উচ্চারণ করতে চাই ...
ওগো ভালোবাসা ... ওগো পদ্মাকামী রসিক ঘুম ...আমি তোমাকেই ডেকেছি ... গোপন চুক্তিতে নষ্ট করেছি
বৈজয়ন্ত পৃথিবী ...
ঘুম ৪
কে যে ভাবায় ... কাকে যে ভাবি ... কে নিজেকে ভুলে আমায় ভাবে ,
কাকে ভাবতে ভাবতে আমি আমাকে ভুলে যাই ...
আহা ! কি অপূর্ব জটিল এই মানসরোবর ..
ও দীঘি , তবে কি তুমি ?
রোদের প্রিজমে আমাকে বিভাজিত করেছ ...
চেয়েছি
তোমাকে ... তোমার বাগানজ্বরে আমি উদ্বানিত হয়েছি ... তোমার জন্যে , শুধু তোমার জন্যেই আমি পুরনো খোলস ... আর খোলস ছাড়তে গিয়ে কত সন্ধ্যে কেটেছে অজানা আজানে ... কত ঈশ্বরকে দেবালয় করেছি ...
কত
পূজাকে ভেবেছি আল্লাহ ... তোমার সফেন শীতলরঙ তারিয়ে তারিয়ে খেয়েছি ... এখন টেরাকোটার মতো মাটি হয়ে যাচ্ছি ফ্রমশ ...
এখন নির্জন ঘুরি ফিরি কবিতার মেহনত করি ...
তুমি রুক্ষস্তনের মশালরমণী ...
আমার
ইহকূল পরকূল প্লাবিত কর