>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • আনওয়ারুল কবীর





    সংশপ্তক:  বাংলাসাহিত্যের উদ্ভব ও বিকাশের ধারায় ৪৭ –এর দেশভাগ বাংলাদেশের সাহিত্যের অগ্রগতিতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনার মনে হয়? অনেকেই বলে থাকেন অখণ্ড বাংলার হিন্দুসমাজের নিরঙ্কুশ প্রভাব থেকে মুক্তি দিয়ে দেশভাগ বাংলাদেশের সাহিত্যে আশীর্বাদস্বরূপ এক যুগান্তর এনে দিয়েছে! এই বিষয়ে একটু বিস্তারিত ভাবেই আপনার কাছ থেকে জনতে চাইছি!
    কবীর:  ৪৭-এর দেশভাগ সার্বিকভাবে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির ধারায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। দেশভাগের কারণেই দ্বিকেন্দ্রিকতায় দুটি ভিন্ন বৃত্তে (কলিকাতা ও ঢাকাকেন্দ্রিক) বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা আবর্তিত হতে  শুরু করে। বিভাগপূর্ব সময়ে বাংলা সাহিত্যের মক্কা ছিল কলিকাতা এবং সে সময়ে সঙ্গীত বাদ দিলে সাহিত্য-সংস্বৃতির অন্যান্য শাখায় বাঙালী মুসলমানদের অংশগ্রহণ ছিল সীমিত। এর কার্যকারণও ঐতিহাসিক। মোঘল শাসকদের কাছ থেকে ইংরেজ বেনিয়া শক্তি রাষ্টক্ষমতা কেড়ে নেওয়ায় ভারতের মুসলমানেরা সার্বিকভাবে নিজেদের বিপর্যয় হিসেবেই ভাবতে শুরু করে। জাত্যাভিমানের কারণে মুসলানেরা ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষা  তথা আধুনিক শিক্ষায় অংশগ্রহণে দীর্ঘদিন বিরত থাকায় জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা-সংস্কৃতিতে তারা অনেক পিছিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রদত্ত ফতোয়া, 'ইংরেজী শিক্ষা হারাম' স্মর্তব্য।  পক্ষান্তরে হিন্দু সম্প্রদায় ইংরেজ  প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থায় দ্রুত অংশগ্রহণে তারা এগিয়ে যায়। মূলতঃ  বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ স্যার সৈয়দ আহমেদের এর শিক্ষা আন্দোলনে ১৮৭৫ সালে ফলশ্রুতিতে মোহামেডান-অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ (পরবর্তীতে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠিত হলে মুসলমানেরা  আধুনিক শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে শুরু করে।
    এবার আসা যাক বাঙালি মুসলমানদের প্রসঙ্গে।  অবিভক্ত বাংলার মুসলমানদের গরিষ্ঠ অংশই পূর্ববঙ্গের এবং তারা ছিল প্রান্তিক কৃষক জনগোষ্ঠীর। শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণেই নয় বরং অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার জন্যও বাঙালী মুসলমানদের আধুনিক শিক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ ছিলো না। অন্যদিকে বাঙালী  হিন্দুসম্প্রদায় ইংরেজি শিক্ষায় ব্যপক অংশ্রগ্রহণে শিক্ষা-সংস্কৃতি-সাহিত্যে তারা নেতৃত্ব দিতে শুরু করে। এ প্রসঙ্গে বাংলাভাষা-সংস্কৃতির উপর ইংরেজি শিক্ষার ব্যাপক প্রভাব উল্লেখ করা প্রয়োজন। উদাহরণ স্বরূপ ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর কতৃক প্রবর্তিত বাংলাভাষায় যতি চিহ্ন ব্যবহার ইংরেজিভাষারই অনুর্বত্তী। এমনকি ইংরেজি সাহিত্যের আদলে বাংলা গদ্যচর্চা শুরু করেন উইলিয়াম কেরী (১৭৬১-১৮৩৪) নামে ইংরেজ  সরকারী কর্মচারী।  ডিরোজীয়র নেতৃত্বে হিন্দু কলেজকেন্দ্রিক  (১৮১৭-১৮৫৫) বাংলায় যে রেঁনেসার শুরু হয় সঙ্গত কারণে তাতে মুসলমানদের কোন অংশদারিত্ব ছিল না।  এই প্রেক্ষাপটে ৪৭-র দেশভাগ বাঙালি মুসলমানদের জন্য বিশেষ সুযোগ এনে দেয় তা বললে কি অত্যুক্তি হবে?
    মূলতঃ পাকিস্তান আন্দোলনের ডামাডোলেই ঢাকাকেন্দ্রিক শিখা সাহিত্য আন্দোলন, তমদ্দুন মজলিশ ইত্যাদি সংগঠন বাঙালি মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র সাহিত্যধারার সৃজনের প্রয়াস পায়। এ সব আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন  কাজী আব্দুল ওদুত, কাজী মোতাহার হোসেন, অধ্যাপক আবুল কাসেম ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খান, কবি গোলাম মোস্তফা, জসিম উদ্দিন সহ তৎকালীন  অগ্রসর মুসলিম লেখক-কবি-সাহিত্যিকবৃন্দ। এই আন্দোলনকে নিছক মুসলিম সাম্প্রদায়িকতা হিসেবে বিবেচনা করলে তাদের প্রতি অবিচার করা হবে। মূলতঃ বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিতে মুসলমানদেরকে এগিয়ে নিতেই এ প্রচেষ্টা ছিলো।
    ঐ যে শুরুতে বলেছিলাম, দেশভাগের ফলশ্রুতিতেই বাংলাসাহিত্য চর্চায় দ্বিকেন্দ্রিকতা পায় তা মুখ্যতঃ শুরু হয় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই। ঢাকাকেন্দ্রিক বাংলা সাহিত্যচর্চা পাকিস্তান শাসনামলে প্রতিক্রিয়াশীল এবং প্রগতিশীল এ দুভাগে বিভক্ত ছিল। প্রতিক্রিয়াশীলেরা আবহমান বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিকে অস্বীকার করে পাকিস্তান আন্দোলনের অনুর্বত্তী হয়ে মুসলিম বাংলা সাহিত্য ধারা প্রবর্তনের  সাম্প্রদায়িক অপচেষ্টা চালিয়েছিলো। তাদের দৃষ্টিকোণে আবহমান বাঙালি সাহিত্য-সংস্কৃতি মূলতঃ হিন্দুয়ানিসংস্কৃতি এবং সে কারণে তা বর্জনীয়। প্রতিক্রিয়াশীলেরা সঙ্গতকারণেই তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের আনুকল্য পেয়েছিল। পক্ষান্তরে প্রগতিশীলেরা ঐতিহ্যকে ধারণ করে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেওয়ার প্রয়াস পায়। এই প্রগতিশীলদের বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের ফলশ্রুতিতেই পূর্ববাংলার জনগোষ্ঠী ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদে উজ্জীবিত হয়ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে, সর্বোপরি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত না হলে কি স্বাধীন বাংলাদেশের উদ্ভব হতো? আর বাংলাদেশ সৃষ্টি না হলে ঢাকাকেন্দ্রিক স্বতন্ত্র বাংলা সাহিত্যের ধারারও উদ্ভব হতো না।  বাঙালি মুসলমানদের জন্য ৪৭-র দেশভাগের ইতিবাচক দিক সম্ভবতঃ এটিই।
    বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বাংলা একই ঐতিহ্যের অনুসারী হলেও সমসাময়িক সাহিত্য-সংস্কৃতিচর্চায় অনিবার্যভাবে ভিন্নতা আছে।  এটাকে ভিন্নতা না বলে বৈচিত্র্যতা বলাই সঙ্গত।

    সংশপ্তক:  ইতিহাসের কালপরিক্রমণের ধারায় বার বার বিদেশী শক্তির পদানত হওয়ার প্রভাবেই আধুনিক বাংলাসাহিত্য অধিকতর পুষ্ট হয়ে উঠেছে বলেই অনেকে মনে করেন। এই বিষয়টি সম্বন্ধে আপনার অভিমত জানতে চাই!
    কবীর:  বারবার বিদেশী আগ্রাসনের ফলে বাংলাভাষা, সাহিত্য যে অধিকতর পুষ্ট হয়ে উঠেছে তা কি আদৌ অস্বীকার করা যায়? মোঘলদের আগ্রাসনের ফলে বাংলাভাষা আরবি-ফারসি অনেকে শব্দ আত্নীকরণ করেছে, আরবি ফারসি সাহিত্যের প্রভাবও পড়েছে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিতে ইংরেজ শাসনামলেও  ইংরেজি ভাষা-সাহিত্য অনুসরণ করে বাংলাভাষা, সাহিত্য সমৃদ্ধ হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু তা বলে বিদেশী আগ্রাসন না হলে বাংলা ভাষা-সাহিত্য সমৃদ্ধ হতো না এমন ভাবনা করাও  সঙ্গত নয়। সময়ের বিবর্তনে হয়তো অন্য কোনভাবে ঠিকঠিকই বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি এগিয়ে চলতো।

    সংশপ্তক:  সাহিত্য মূলত দেশজ সংস্কৃতি ঐতিহ্য ও জলবায়ু সম্ভূত স্বাভাবিক আত্মপ্রকাশ। কিন্তু বিদেশী ভাষা সংস্কৃতি ও রাজনীতির প্রভাবে যে নাগরিক মনন ও চিন্তা চেতনার বয়ন গড়ে ওঠে, তার সাথে দেশজ শিকড়ের টানা পোড়েন কিভাবে একজন সাহিত্যিককে পুষ্ট করে?
    কবীর: সাহিত্য মূলত দেশজ সংস্কৃতি ঐতিহ্য ও জলবায়ুর সম্ভূত স্বাভাবিক আত্মপ্রকাশ  কথাটি যথার্থই বলেছেন। চলমান বিশ্বায়ন যুগে সাহিত্যে বিদেশী ভাষা, সংস্কৃতি রাজনীতির প্রভাব অনিবার্য। তবে একজন সত্যিকার সাহিত্যসেবকের থাকতে হবে মা ও মাটির প্রতি দায়বদ্ধতা। অন্ধ অনুকরণ নয় বরং বিদেশী ভাষা, সংস্কৃতি আত্মীকরণ করে দেশজ সাহিত্যে বৈচিত্রতা আনার মাঝেই নিহিত আছে একজন মহৎ শিল্পী সাহিত্যিকের সত্যিকার সফলতা।  উদাহরণস্বরূপ কবি নজরুলের কথাই ধরুন। তার বেশকিছু কবিতায় কিংবা গানে অনেক আরবী-ফারসি শব্দ ব্যবহার করেছেন বাংলা সাহিত্যোর  আবহ ঠিক রেখেই। তেমনি মাইকেল মধুসুদন দত্ত বাংলা কবিতায় ইউরোপীয় সনেট প্রবর্তন করেন বাংলা কাব্যের ভাবধারার সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবেই। মূলতঃ  যথাযথভাবে আত্মীকরণই সার কথা। অধুনা কেউ কেউ তথাকথিত উত্তরাধুনিকতার নামে বাংলা কবিতা লেখার চর্চা করে যাচ্ছে যা বোদ্ধা পাঠকের কাছেও অবোধ্য মনে হয়। এর বড় কারণ এ সব প্রচেষ্টা হচ্ছে সম্পূর্ণভাবে বিদেশী অনুকরণ এবং আমাদের দেশজ শেকড়ের সাথে সংযোগহীনতাবিদেশী উত্তরাধুনিক আবহকে বাংলাভাষায় যথাযথ আত্মীকরণ করতে না পারায় এ ধরণের অনুকরণকে তারুণ্যের উন্মাদনা বলা যেতে পারে এবং মহাকালের বিচারে এ সব ছিন্নমূল সাহিত্যকর্ম কতোদূর টিকে থাকবে সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে।

    সংশপ্তক:  এখন এই যে দেশজ সাহিত্যসংস্কৃতির প্রবাহমান ধারা, তার সাথে নাগরিক সাহিত্যধারার কোনো বিরোধাভাস কি আপনার দৃষ্টিগোচর হয়? হলে তার রূপ ও বিকাশ সম্বন্ধে যদি আলোকপাত করেন!
    কবীর:  দেশজ সাহিত্য-সংস্কৃতি বলতে আপনি কি লোকজ সাহিত্য বোঝাচ্ছেন? যদি তাই বুঝিয়ে থাকেন তাহলে আমি বলবো নাগরিক সাহিত্যধারা ক্রমান্বয়ে ধ্বংস করে যাচ্ছে লোকজ-সাহিত্য সংস্কৃতিকে। এর বড় কারণ বাংলাদেশ দ্রুত নগরায়ন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ননাগরিক সভ্যতার প্রভাবে গ্রামীন তথা লোকজ সংস্কৃতি আজ  বিলুপ্তির পথেধরুন, আমার ছেলেবেলায় গ্রামে গ্রামে কবিগান তথা তাৎক্ষণিকভাবে  কবিতা রচনা করে  কবিদের মাঝে তর্ক-বিতর্কের আয়োজন হতে দেখেছি। লোকজ সাহিত্যের এই ধারা আজ বিলুপ্তির পথে। তেমনি অতীতের  জারি, সারি, ভাটিয়ালির চর্চা আগের মতোন জোরালো নেই; সৃষ্টি হচ্ছে না হাছন রাজার মতোন আর কোন লোকজ কবি কিংবা গীতিকার। নগরায়ন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়া কারণে মফস্বলের লেখক, কবি, শিল্পীরা এখন নাগরিক সাহিত্যধারাতেই অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে দেশজ বা লোকজ সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চাকে অব্যাহত করতে হলে প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা।  আমাদের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য এটা জরুরীও বটে।

    সংশপ্তক:  বাংলাদেশের সাহিত্যের আলোচনায় অতি অবশ্যই ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের কথা চলে আসবে। ৪৭ পরবর্তী বাংলাদেশে এই দুইটি ঘটনার অভিঘাত নিয়ে যদি একটু বিস্তারিত আলোচনা করেন আপনার অভিজ্ঞতা ও ইতিহাসবোধের আলোতে!
    কবীর:  আগেই বলেছি তৎকালীর পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল ধারার লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের কারণেই এই এলাকার জনগণ বাঙালি জাতীয়তাবাদে উজ্জীবিত হয় এবং এই জাতীয়বাদকে প্রতিষ্ঠিত করতেই বাহান্নর ভাষা আন্দোলন এবং পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয়। বিশ্বরাজনীতির আবহে বাংলাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদের প্রভাব  পড়লেও আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতির মূলধারা এখনো ধর্মনিরপেক্ষ। আর এই ধর্মনিরপেক্ষতা কিংবা শান্তিপূর্ণ সহবস্থানই  তো  বাঙ্গালি সংস্কৃতির প্রধানতম চেতনাপাকিস্তান প্রতিষ্ঠার অব্যহতি পর বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিতে মুসলিম সাম্প্রদায়িকতা প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিলো কিন্তু তা শেষটায় ধোপে টিকেনি।
    বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক শাসকগোষ্ঠীও একই ধরণের প্রচেষ্টা চালিয়েছিলোকিন্তু জনগণ তা মেনে নেয়নি। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এই ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকার বিরোধী, এর প্রমাণ মিলে সাম্প্রতিকালে ঘটে যাওয়া তরুণদের নেতৃত্বে শাহবাগ আন্দোলনে
    মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা আমাদেরকে দিয়েছে আত্মমর্যাদাবোধ, শিখিয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে। নতুন প্রজন্ম, যারা মুক্তিযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেনি তারাও কিন্তু এই আত্মমর্যাদাবোধে উজ্জীবিত। এর প্রতিফলন আমাদের সাহিত্যেও প্রবল।

    সংশপ্তক:  পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষ ও রাজাকার আলবদরদের মিলিত ষড়যন্ত্রে বুদ্ধিজীবী নিধনের প্রভাবে বাংলাদেশের সাহিত্য সংস্কৃতির ভূবনে  হঠাৎ যে শুন্যতার সৃষ্টি হয়েছিল, আজকের বাংলাদেশ কি  সেই অন্ধকার কাটিয়ে উঠতে পেরেছে বলে আপনার ধারণা! স্বাধীনতার পরবর্তী বিগত চার দশকের আলোতে যদি বলেন!
    কবীর:  মুক্তিযুদ্ধের শেষপর্যায়ে দেশের স্বাধীনতাকামী মেধাবী বুদ্ধিজীবিদের  হত্যা করে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার সুদুরপ্রসারী ষঢ়যন্ত্র ছিলো এটি। এ শূন্যতা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। তবে যুদ্ধের পর আজ প্রায় ৪৫ বৎসর পার করেছে বাংলাদেশ। একাত্তর পরবর্তী প্রজন্মের প্রাগ্রসর মেধাবীরাই আজ বুদ্ধিজীবি শ্রেণীকে প্রতিনিধিত্ব করছে।  তবে সমসাময়িক কালের বুদ্ধিজীবিরা দেশ এবং দেশের মানুষের কাছে কতোটুকু দায়বদ্ধ  সে বিষয়ে যথেষ্ঠ সন্দেহ রয়েছো। নবপ্রজন্মের বুদ্ধিজীবিদের উপর কর্পোরেট নিয়ন্ত্রিত ভোগবাদ দর্শনের প্রভাব খুব বেশী লক্ষণীয়। আর এ কারণেই বুদ্ধিজীবিরা স্বাধীনচেতা না থেকে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি করে যাচ্ছে, যা সত্যিই হতাশাজনক। 

    সংশপ্তক:  আমরা জানি বাংলাদেশে এপাড় বাংলার সাহিত্য বিপুল জনপ্রিয়, কিন্তু দুঃখের বিষয়, এপাড় বাংলায় ওপাড় বাংলার সাহিত্য সম্বন্ধে উদাসীনতার ইতিহাসটি দীর্ঘকালের! এর মূল কারণ ঠিক কি বলে আপনার মনে হয়? নেট বিপ্লবের হাত ধরে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই পরিস্থিতির উন্নতির কোনো দিকচিহ্ন কি আপনার নজরে পড়ছে সম্প্রতি!
    কবীর:  সংশপ্তকে প্রকাশিত ইংরেজিতে লেখা এক নিবন্ধে আমি এ বিষয়ে আলোকপাত করেছিলাম। আমার জানামতে পশ্চিমবাংলার সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে বাংলাদেশী সাহিত্য-সংস্কৃতির আবেদন রয়েছে্। বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক বইপত্র কলিকাতার বাজারে যদি সহজলভ্য হতো তাহলে ক্রেতার অভাব হতো না তা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের বইপত্রের বাজার ভারতে কেন সৃষ্টি হচ্ছে না, এর কার্যকারণ আপনাদেরই ভালো জানার কথা। ভারতীয় টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে অবাধ সম্প্রচারিত হয় কিন্তু বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো কেন ভারতে প্রচার করা হয় না? এর কারণ সম্ভবতঃ ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের মনোভাব। নিঃসন্দেহে এটি রাজনৈতিক। সাহিত্য-সংস্কৃতিতে দুই বাংলার মিলন হলে কোন একদিন যে বৃহত্তর বাংলাদেশ গড়ার দাবি উঠবে না তা কে বলতে পারে! বিশ্ব ইতিহাসে দুই জার্মানের এক হওয়ার নজির তো রয়েছেই। আর কোনদিন যদি এরকম পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তা হলে পশ্চিমবাংলাকেই কাঁটাতার ছিড়ে এগিয়ে আসতে হবে, যেভাবে পূর্ব বার্লিনের জনগোষ্ঠী প্রাচীর ভেঙ্গে ভেঙ্গে মিলিত হয়েছিল পশ্চিম জার্মানীর সাথেস্বাধীন বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে ভারতের অধীনে পশ্চিমবাংলার সাথে মিলিত হতে যাবে না। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কি এ কারণেই পশ্চিমবাংলায় যাতে বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রভান না পড়ে সে বিষয়ে সজাগ?
    তবে ইন্টারনেটভিত্তিক সোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে দুই বাংলার জনগোষ্ঠীর মাঝে সাহিত্যসংস্কৃতির যেভাবে আদান-প্রদান শুরু হয়েছে তা বেশ আশাপ্রদ। পশ্চিমবাংলার সাহিত্যপ্রেমীরাও এখন বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাচ্ছে। সংস্কৃতির এই আদান-প্রদানে দুই বাংলার সাহিত্যই যে সমৃদ্ধি পাবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

    সংশপ্তক:  আমাদের এই দ্বিখণ্ডীত জাতিসত্ত্বায় সাম্প্রদায়িকতার যে চোরাস্রোত নিরন্তর বহমান, যাকে পুঁজি করে ইঙ্গমার্কীণ মহাশক্তি ও তাদের বঙ্গজ সহসাথীরা ধর্মীয় মৌলবাদের রাজনীতিতে সদাসক্রিয় থাকে; নেট বিপ্লবের দৌলতে সুদূর ভবিষ্যতে সেই সাম্প্রদায়িকতার চোরাস্রোত থেকে কি গোটা জাতিকে মুক্ত করতে পারবো আমরা? আপনার অভিমত! আর সেই কাজে সাহিত্যের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে আপনি মনে করেন!
    কবীর:  ১৯৯০-তে রাশিয়া তথা কমিউনিস্ট ব্লকের পতনের কারণে পুঁজিবাদি শক্তির বিপরীতে আদর্শগত বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এই শূন্যতার কারণেই মৌলবাদ বিশেষ করে ইসলামি মৌলবাদের উত্থান। আপনি লক্ষ্য করে থাকবেন বিশ্বব্যাপি মুসলিম মৌলবাদের নেতৃত্বে যারা রয়েছে তারা কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং ইন্টারনেটভিত্তিক  সোসাল নেটওয়ার্কেও সক্রিয়। সাম্প্রদায়িকতার এই চোরাস্রোত থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হলে প্রয়োজন পুঁজিবাদ এবং মৌলবাদ বিরোধী তৃতীয় শক্তির উত্থান, যে শক্তি ধারণ করবে  যুগোপোযোগী নতুন কোন দর্শন বা চেতনা। অর্থাৎ এই তৃতীয় শক্তিকে যুগপদ যুদ্ধ করতে হবে  পুঁজিবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের কথাই ধরুন, এখন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত মৌলবাদ বিরোধী লুটেরা পুঁজিবাদি শক্তি। গণকল্যানকামী কোন তৃতীয় শক্তির অভাবে জনগণ  দিশেহারা। মৌলবাদ বিরোধী শাহবাগ আন্দোলন আমজনতাকে  আশান্বিত করলেও ক্ষমতাসীন পুঁজিবাদি শক্তি এ আন্দোলনকে কৌশলে নিস্ক্রিয় করে দেয়,   কারণ জেগে উঠা শাহবাগ প্রজন্ম লুটেরা পুঁজিবাদি শক্তির বিরুদ্ধেও যে একসময়  রুখে দাঁড়াতে পারে এ আশংকার কারণেই।
    মৌলবাদ এবং লুটেরা পুঁজিবাদের খপ্পর থেকে জাতির মুক্তি এখন সুদূর পরাহত।  তবে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে থেকেই শিল্পি-সাহিত্যিক-কবি তথা বুদ্ধিজীবিদের কাজ করে যেতে হবে। জনগণের সার্বিক মুক্তির জন্য সঠিক দর্শন তথা দিকনির্দেশনা দিতে এগিয়ে আসতে হবে  হবে বুদ্ধিজীবিদেরকেই। বুদ্ধিজীবিদের মাঝে কবি সাহিত্যিকদের ভূমিকাই  এক্ষেত্রে হতে হবে  মুখ্য।

    সংশপ্তক:  এবার একটু ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে আসি বরং, আপনার গড়ে ওঠার পিছনে কোন কোন সাহিত্যিকের প্রভাব বিশেষ ভাবে ক্রিয়াশীল ছিল জানতে ইচ্ছে করছে!
    কবীর: লেখালেখির জগতে এখনো আমি শিক্ষানবীশ, হাত মকশো করে যাচ্ছি এখনো কোনদিন লেখালেখি করবো কিংবা লেখক হওয়ার স্বপ্ন  দেখিনি।  নব্বইয়ের দশকে যুক্তরাজ্যে বসবাসকালে বাংলা সংস্কৃতি এবং বাংলাভাষাকে খুব মিস করতাম, ফেলে আসা বাংলাদেশ আমাকে খুব ভাবাতো। এই প্রেক্ষাপটে শুরু করলাম সেখনকার বাংলা পত্রিকাগুলোতে লেখালেখি। লেখতাম মূলতঃ প্রবন্ধ এবং পরে কবিতা। পাঠকআদৃত হওয়ায় উৎসাহ বেড়ে যায় এবং অব্যাহত চলে লেখালেখির।
    ছেলেবেলা থেকেই পাঠ্যবইয়ের বাইরে প্রচুর বই পড়তাম। কিশোর বয়সে  রুশ সাহিত্য বিশেষ করে দস্তয়োভস্কি, গোর্কি, টলস্টয় প্রমুখের লেখায়  বুঁদ হয়ে থাকতাম। শরৎও  আকর্ষণ করতো বেশ। এছাড়া এপার বাংলার সৈয়দ মুজতবা আলী, শওকত আলী, হাসান আজিজুল হক, হুমায়ুন আজাদ এবং ওপার বাংলার  সুনীল, সমরেশ মজুমদার, শীর্ষেন্দুর কথাসাহিত্যও পড়েছি প্রভূত। আমার লেখালেখিতে  এদের  কমবেশী প্রভাব রয়েছে বলে মনে করি। জীবনানন্দ দাস আমার প্রিয় কবি।  নির্মলেন্দু গুণের ভক্ত আমি। তবে কবিতার ক্ষেত্রে  কোন বিশেষ কবির প্রভাব যেন আমার কবিতায় না পড়ে সে বিষয়ে সজাগ থাকি।  এখনো আমি আমার স্বকীয় পথের সন্ধানে আছি।

    সংশপ্তক:   আপনার নিজের সাহিত্যকর্মের অন্তরালে দেশবিদেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনীতির প্রভাব কিভাবে ক্রিয়াশীল যদি একটু বিস্তারিত ভাবেই বলেন!
    কবীর: যদিও আমি বিজ্ঞানের ছাত্র এবং বিজ্ঞান বিষয়েই শিক্ষকতা করছি তবুও বৈষম্যপূর্ণ সমাজ বাস্তবতা আমাকে বেশ ভাবায়। ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতিতে উৎসাহিত হওয়া এবং অংশগ্রহণ করার নেপথ্য কার্যকারণ এটিই। সমমাময়িককালের রাজনীতি আরো জটিল। কর্পোরেট নিয়ন্ত্রিত ভোগবাদ বুদ্ধজীবিসহ সমাজের সব শ্রেণীর মানুষকে অসৎ করে তুলেছে। ক্রমান্বয়ে মানুষ হয়ে পড়েছে আত্মকেন্দ্রিক। আমি আমার ছাত্রদের লক্ষ্য করি, এই প্রজন্মের বেশীরভাগ সদস্যই যে যার কেরিয়ার গঠনে অধিকতর ব্যস্ত। আমাদের সময়কার ছাত্রদের মতোন সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা তারা বোধ করে না। এ কারণে তারা রাজনীতি বিমুখ। এই রাজনৈতিক বিমুখতা এক অশুভ সংকেত। সৎ এবং মেধাবীরা রাজনীতিতে না আসায় রাজনীতি এখন নষ্টদের দখলে। জাতীয় দৈনিকে আমার ইংরেজি কলামগুলোতে  প্রাসঙ্গিকভাবে এ বিষয়গুলো উঠে আসে।  সমাজভাবনায় লেখা আমার গল্প কিংবা কবিতাগুলোতেও এর ছাপ পাওয়া যায়।

    সংশপ্তক:  ফেসবুকের ওয়াল ভরা কবিতা সম্বন্ধে আপনার অভিমত কি?  বাংলায় লিটিল ম্যাগাজিনে কাব্যচর্চার সুদীর্ঘকালের ঐতিহ্যের পাশে সাম্প্রতিক এই সোশাল মিডিয়ার অভ্যূত্থান বাংলা কাব্যসাহিত্যের পক্ষে কতটা আশীর্বাদ সরূপ আর কতটাই বা অশনি সংকেত বলে আপনার মনে হয়?
    কবীর:  আমি এটিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছিফেইসবুকে এই কবিতাচর্চা তো কবিতার প্রতি মানুষের ভালোবাসারই প্রতিফলন। হয়তো বা অকবিরাও কবিতা লিখে চলছে। তাতে ক্ষতি কি! হাজার হাজার অকবিদের মাঝ থেকে  কিছু কবিও যে বের হয়ে আসছেন তাও তো দেখা যাচ্ছে।  এটিই বা কম কীসের!
    আর লিটল ম্যাগাজিনের কথা বলছেন? আমি তো দেখছি বাংলাদেশে ফেইসবুক নির্ভর সাহিত্যপাতাগুলো নতুন নতুন লিটল ম্যাগাজিনের জন্ম দিচ্ছে বলা চলে সোসাল মিডিয়া লিটল ম্যাগাজিনগুলোকে আরো গতিশীল করে তোলছে।

    সংশপ্তক:  এত স্বল্প পরিসরে কতকথাই অনালোচিত রয়ে গেল, ভবিষ্যতে সেগুলির জন্যে আপনাকে আগাম আমন্ত্রণ সংসপ্তকের পক্ষ থেকে। তবে আজকের আলোচনা শেষ করতে চাই আপনারই লেখা কোনো একটি কবিতা দিয়ে। যদি অনুগ্রহ করে আপনার স্বরচিত কোনো একটি প্রিয় কবিতার উল্লেখ করেন, ভালো লাগবে আমাদের!
    কবীর: সংশপ্তকে আমাকে আমন্ত্রণ করার জন্য আপনাদেরকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ। সংশপ্তকের একজন লেখক/পাঠক হিসেবে এই ব্লগজিনটির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।  পরিশেষে সুপ্রিয় পাঠকদের জন্য আমার একটি কবিতা নিবেদন করছি-
    -         রিপুকরা সময়ে -

    বাতিঘরে জ্বলে উঠেছে ভয়াল সংকেত
    ঈশ্বরের ঘরে আগুন!
    প্রেমপাথরে ফিনকি দিয়ে ঝরছে নোনাজল
    শাস্ত্র ফুঁড়ে নেমে আসা ঋষিরা করছে যজ্ঞ
    কোথায় মহেশ্বর!

    থেমে নেই কিছুই
    ফুলের পরাগায়ন, গাঙশালিকের বসন্তবাসর
    বাড়ন্ত ভ্রুনের নিভৃত সঞ্চালন
    প্রেমিকার চোখে প্রেমিকের মরণ আর
    যুগল স্বপ্নের ঘাসফড়িং খেলা।

    রিপুকরা সময়েই ফলাবো মুক্তা
    মেয়ে তুমি দিয়ে যাও তোমার ছোঁয়া।


    [আনওয়ারুল কবীর: অধ্যাপক, কম্পিউটার সাইন্স ডিপার্টমেন্ট। এআইউবি]
    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.