ঘোড়সওয়ার
বয়েসটা গড়িয়ে গড়িয়ে এখন সূর্যাস্ত দেখছে
কাঁচাপাকা এলো চুলে গোধূলি
সারা শরীরে যানজট তীব্র
হৃদয়ে পথ অবরোধ
তবু বেঁচে আছি এখনো
হাঁটছি ... হাঁটছি ...
ও সবেমাত্র চার
এক মানিক সাত রাজার ধন
আমার ভোরের বাতাস
সাউথ পয়েন্টের দুটি ঘণ্টা বাদ দিয়ে
বাকি সময়টুকু আমার খেলার সাথী
কাতুকুতু ... দলাই মলাই
খিলখিল দুষ্টুমির হাসি বায়না মর্জি ...
ওর হাজার প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে
আমি হিমশিম ঝর্ণা
হঠাৎ কোনোদিন রাজপুত্রের ভঙ্গীতে
আমায় বলে , দাদু ...
তুমি ঘোড়া হও ...
থেমে গেলে চলবে না ...
অসহ্য হাঁটু ব্যথা ...
হামাগুড়ি দিয়ে এগোচ্ছি
আমার পিঠ সাপটে জ্বরিয়ে আছে শিশু ঘোড়সওয়ার
আমার প্রশাখা
কবিতার মৃত্যু নেই
মানুষ ছুটছে
ব্যস্ত ইনফোসিস
কবিতা ঘুমিয়ে আছে
আমি কবি নই
তবু কবিতা লিখি
লিখে যাবো
যদি কোনোদিন কবিতাগুলো ঝর্ণা হয়ে যায়
আমার কবিতার প্রসাধনী নেই
নিরাভরণ
অঞ্জলি জুয়েলার্সের কোনো জড়োয়াও নেই
আমার কবিতায় পানাপুকুরের গন্ধ
সদ্যস্নাতা গ্রাম্য তরুণীর
খোলা আকাশে
এক চিলতে মেঘের আড়ালে
উঁকি দিচ্ছে ভাবী সৃষ্টি
আমার কবিতা পর্ণকুটীরের পর্না
আমার কল্পলোকের কাঁথাস্টীচ
আমি কবি নই
তবু কবিতা লিখে যাবো
যদি কবিতাগুলো কোনোদিন ঝর্ণা হয়ে যায়
আমি যে কবিতার দেবদাস
কবি ও কবিতা
আয় ঘুম আয় দত্তপাড়া দিয়ে
ঠাম্মা দিদার ঘুমপাড়ানি গানগুলো
ঘুমিয়ে আছে বৃদ্ধাশ্রমের ঘুলঘুলিতে
এখন আর সহজে আসে না ঘুম ...
ঘুম কমতে থাকে ...
শুরু হয় কফিনঘুমের প্রস্তুতি
আমার বয়েস এখন রাতের আকাশ
তারাদের মিটিমিটি ,
আড়চোখে দৃষ্টি
মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে
আমার লেখা কবিতাগুলোকে বুকে চেপে শুয়ে থাকি
বড়ো দুঃখী ওরা
আদর পেলো না কোথাও
কোনো কোনো দিন মাঝরাতে
কর্কশ শব্দে অ্যাম্বুলেন্স ছুটে যায়
ঢিপঢিপ বুক
কবিতাগুলোর মাথায় চুলে হাত বুলিয়ে দিই
আদর করি , ফিসফিস করে ওঠে ওরা ...
দুঃখ পেও না কবি ...
থেমেও যেও না যেন ...
লিখে যাও তুমি জয়ন্তী ঝর্ণার মত ...
দিলীপ কুমার দে: