>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • শ্রীশুভ্র

    SongSoptok | 4/10/2015 |





    অভিজিতের মৃত্যুর দর্পনে নিজেদের দিকে তাকালে চমকে চমকে উঠতে হয়। হ্যাঁ আমি আমাদের বাঙালিদের কথাই বলছি। আমাদের সম্বন্ধে আজ থেকে বহু বছর পূর্বেই সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র কয়টি মহা মূল্যবান কথা বলে গিয়ে ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমরা শিক্ষিত বাঙালি; যারা বাক্যে অজেয়, পরভাষাপারদর্শী (যেমন ব্রাহ্মণের সংস্কৃত- মৌলবির আরবী আর পণ্ডিতমন্যের ইংরেজী!), মাতৃভাষাবিরোধী, যাদের পাণ্ডিত্য শৈশবাভ্যস্ত গ্রন্থগত, তারা নিজেদেরকে অনন্তজ্ঞানী বিবেচনা করে কর্মে জড়ভরত এবং বাক্যে সরস্বতী হয়ে থাকি। আর তাদেরই বাক্য মনোমধ্যে এক- কথনে দশ- লিখনে শত এবং কলহে সহস্র হয়। কি নির্ভুল বিশ্লেষেণ! তারপর গঙ্গাপদ্মামেঘনা দিয়ে কতজলই না গড়িয়ে গেল, বৃটিশের ঘাড়ধাক্কা পাকিস্তানিদের বুলেট হিন্দুস্তানিদের দাদাগিরির মুখোমুখি হয়েও আমরা আমাদের এই দুটুকরো ভুখণ্ডের বঙ্গসন্তানেরা আমাদের পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার থেকে একচুলও বিচ্যুত হইনি আজও!

    আর হইনি বলেই, যে মৃত্যুকে ঘিরে কোনোভাবেই কোনো বিতর্ক গড়ে ওঠার কোনোরকম অবকাশই ছিলো না; সেই অবিতর্কিত বিষয়টি নিয়েই আমরা আজ বিতর্কের ঝড় তুলে দিয়েছি।  বিতর্ক উঠেছে নানান কোণ থেকে। আর তাতেই বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক যুক্তিখণ্ডনের কি বিপুল উদ্যোম! আমরা সকলেই নিজ নিজ গোষ্ঠীবদ্ধ মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গীতে নির্ভুল ভাবেই নিজ নিজ যুক্তিতে অভ্রান্ত। ভাবতে অবাক লাগে একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে এত এত পরস্পর বিরোধী অভ্রান্ত যুক্তিজাল! আর তখনই ভ্রান্তি লাগে অভ্রান্ত শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থেই!

    নিজে স্বঘোষিত নাস্তিক হয়েও হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের কাছেই অভিজিতের মূল পরিচয় তাঁর উপাধি রায়! আর সেই উপাধিকে ঘিরেই উভয় সম্প্রদায়ের অভ্রান্ত তার্কিককুল তাদের যুক্তিজালকে সম্প্রসারিত করে চলেছেন প্রতিদিন। অভিজিতের মৃত্যুর আগেই হত্যা করা হয়েছে প্রবাদপ্রতিম মনীষী ডঃ হুমায়ুন আজাদকে। হত্যা করা হয়েছে ব্লগার রাজীব হায়দারকে। কিন্তু কোনো মৃত্যুকে ঘিরেই এমন ভাবে বিতর্কের ঝড় ওঠেনি। ওঠেনি কারণ আগের দুটি ক্ষেত্রেই হত্যাকারী ও নিহত উভয়ই একই সম্প্রদায়ভুক্ত বলে। ডঃ আজাদের মৃত্যুর সময় ইন্টারনেট ও স্যোশাল সাইটের এত রমরমা ছিল না বলেও জলঘোলা কমই হয়েছে। রাজীব হত্যার সময়সীমায় দুনিয়া জুড়ে ইন্টারনেটের দাপট প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলেও বিষয়টি নেহাৎ নাস্তিকতা ও আস্তিক্যের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব বলেই ভাবা হয়েছিল! আগের দুটি বিষয় নিয়ে জনমানসে যেটুকু কোলাহলের সৃষ্টি হয়ে ছিল, সেটুকু প্রধানত বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরেই সীমাবদ্ধ ছিল।  কিন্তু অভিজিতের মৃত্যু আগেকার সব সীমাকেই ওলাট পালট করে দিল কারণ এবারের  নিহত ব্যক্তি নিজে নাস্তিক হলেও জনমানসে তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত এবং তিনি অন্য একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিষয়ে অনধিকারীর মতো নাক গলিয়ে ফেলেছিলেন! এটাই তার অপরাধ।

    বিশ্বের অপরাপর জাতিগোষ্ঠীর থেকে বাঙালির বিশিষ্টতা এখানেই যে, বাঙালির আত্মপরিচয়ের কেন্দ্রভূমি তার ভাষা ও সংস্কৃতি নয়। তার আত্মপরিচয় গড়ে উঠেছে তার ধর্ম ও ধর্মীয় রীতিনীতির ভিত্তিতেই। আর ঠিক এইখানেই যে, জাতি হিসেবে বাঙালি হীনবল হয়ে পড়েছে, প্রায় দুইহাজার বছর ধরে পৃথিবীর পথে পথ হেঁটেও বাঙালি সেই সহজ সরল প্রথমিক সত্যটা আজও বুঝে উঠতে পারে নি, বা চায় নি। আর তাই আমাদের পরিচয় কেউ ভারতীয় হিন্দু বা মুসলিম, আর কেউ বাংলাদেশী হিন্দু বা মুসলিম। আমাদের নিজেদের কাছে কেউই আমরা শুধু বাঙালি নই! আমাদের সকল সমস্যার আঁতুরঘর এইটিই। তাই নাস্তিক হলেও আমাদের কাছে রাজীব হায়দার বাংলাদেশী মুসলিম। আর অভিজিৎ বাংলাদেশী হিন্দু, অতএব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।

    আর সেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজনের ওপর আততায়ীর চাপাতি নেমে এলে আমরা ভারতীয় হিন্দুরা আর চুপ করে বসে থাকি কি করে? অথচ সেই আমাদের কাছেই রাজীব হত্যা পররাষ্ট্র বাংলাদেশেরই অভ্যন্তরীণ বিষয় ছিল এই দুই বছর আগেও! তাই সেদিন স্যোশাল মিডিয়ার ওয়ালে ওয়ালে, কিংবা নাগরিক রাজপথে তথাকথিত মুক্তমনা ভারতীয় হিন্দুদের প্রতিবাদী মিছিলের ঝড় ওঠে নি সেভাবে। আবার রাজীব হায়দারের মৃত্যুতে বাংলাদেশে নাস্তিক বনাম আস্তিকের বাকযুদ্ধ যে পরিমান উষ্ণ হয়ে ওঠার অবকাশ পেয়েছিল, অভিজিতের মৃত্যু সেই উষ্ণতায় অনেকটাই জল ঢেলে দিয়ে গেল। বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিকের কাছেই অভিজিতের মৃত্যু, ইসলামের বিষয়ে বিধর্মীর অনধিকার নাক গলানোরই ফল বলে বিবেচিত হচ্ছে। এপাড় ও ওপাড় দুই পাড়ের বাঙালিই ভুলে যাচ্ছে অভিজিত বা রাজীব কেউই কোনো ধর্মের নাগপাশে আবদ্ধ ছিল না! তাই তাদেরকে কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের তকমাতেই যুক্ত করা উচিৎ নয়।

    বাংলাদেশের জনমানসের অধিকাংশেরই মত হল, অভিজিৎ হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন হয়ে বাঙালি মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করেছেন। যার কোনো ক্ষমা হয় না! আবার কাঁটাতারের এপাড়ে, অধিকাংশ মানুষই মুক্তমনা অভিজিতের হয়ে যুক্তিতে শান দিচ্ছেন। ঠিক যে যুক্তিগুলিকে তাঁরা রাজীব হত্যার সময় নৈতিকতার খাপ থেকে বার করেন নি, কারণ সেটা ছিল পড়শী দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়। তবে এটাই কিন্তু সার্বিক চিত্র নয়! এর বাইরেও মুক্তমনা বাঙালির সংখ্যা কম হলেও আছে, তাদের প্রতিবাদ কাঁটাতারের দুই পারেই ক্ষীণ কণ্ঠের হলেও কান পাতলে শোনা যায়। যে প্রতিবাদগুলি সাম্প্রদায়িক অন্ধকারের উর্ধে উঠে ডঃ আজাদের সময়ও শোনা গিয়েছে, শোনা গিয়েছে রাজীবের হত্যার সময়ও।  

    কিন্তু সেই ক্ষীণ কণ্ঠস্বরগুলিকে ছাপিয়ে উত্তুঙ্গ হয়ে উঠেছে যে কোলাহল, সেই কোলাহলের মধ্যে থেকে উঠে আসছে মূলত দুইটি কথা। একটি হল ‘মৌলবাদ’আর একটি, ‘ধর্মীয় ভাবাবেগ’যেহেতু জনমানসে অভিজিত মৃত্যুর পর আরও বেশি করে হিন্দু হয়ে উঠছেন দিনে দিনে, তাই মূলত ভারতীয় জনমানসে তার এই হত্যার প্রতিবাদের অভিমুখ মৌলবাদের বিরুদ্ধেই সোচ্চার হচ্ছে বেশি করে। পক্ষান্তরে তার এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশের জনমানসে ইসলামী ধর্মীয় ভাবাবেগকে আহত করার চক্রান্তের বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ দানা বাঁধছে দিনে দিনে। একটি মৃত্যু অথচ দুইটি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী প্রতিবাদী অভিমুখ। উভয় পক্ষই মনে করছে তারাই অভ্রান্ত!

    আর এইখানেই প্রায় তিনশো বছর আগের বৃটিশ প্রবর্তিত দ্বিজাতি তত্ত্বের সাফল্য। কত আগে অথচ কত সুদূর প্রসারী দৃষ্টিশক্তির অধিকারী এই অ্যাংলোস্যাকসান জাতিটি, ভাবলে অবাক হয়ে যেতে হয়। ১৯৪৭ এর এই তত্ত্বেই দেশভাগ আজ ইঙ্গমার্কিণ শক্তির কাছে কতবড়ো পুঁজি! অনেকেই ভাবছেন এ আবার ধান ভানতে কোন শিবের গীত শুরু হল? না তা নয়। বস্তুত বাংলার ভুখন্ডে মৌলবাদের চর্চা বৃটিশের শাসনামল থেকেই। কেননা দ্বিজাতিতত্ত্বকে সাফল্যমণ্ডিত করতে গেলেই মৌলবাদের ভাইরাস আমদানী করা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ! আর সেই মৌলবাদের বিষবৃক্ষ আজ আর চারাগাছ নেই বাংলার ভুখণ্ডে। আমাদের সমস্য হল আমরা কোনো বিষয়েরই গভীরে ঢুকি না সচারচর। বা ঢুকতে চাই না! বৃটিশের আগমন বাঙালির জাতিগত অভিমুখটিকেই ঘুরিয়ে দিয়েছিল মূলত। পরাধীন জাতির আত্মশ্লাঘায় আর দ্বিজাতি তত্ত্বের সংক্রমণে বাঙালি মানস তার জতিগত ঐতিহ্যের শিকড় খুঁজেছিল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে। এক পক্ষ সনাতন হিন্দুত্বের চর্চার মধ্যে আর এক পক্ষ বৈদেশিক ইসলামের চর্চায়। সেদিনের বাঙালি বুঝতেই পারে নি বাঙালির ঐতিহ্য ও উত্তারাধিকারের শিকড় কোনো ভাবেই সনাতন ভারতীয় হিন্দুত্বের মধ্যে থাকতে পারে না। ঠিক যেমন থাকতে পারে না বৈদেশিক ইসলামের ঐতিহ্যে। মক্কা মদিনা কাশী বৃন্দাবন কোনটাই যে বঙ্গসংস্কৃতির পীঠস্থান নয়, নয় বাঙালির ধর্মীয় ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার এই সরল সত্যটি আমাদের পূর্বপুরুষরা বিস্মৃত হয়েছিল সেদিনযার বিষময় প্রভাবে আজ দ্বিখণ্ডীত বাংলা দিনে দিনে মৌলবাদের খপ্পরে চলে যাচ্ছে ও যাবে। বাঙালি আজও বুঝতে চায় না এই সরল সত্যটিও যে, ঠিক যেমন ইংরেজী ভাষাতে যত বুৎপত্তিই কেউ অর্জন করুক না কেন, সেই ভাষা তার কাছে চিরকালই একটি বিদেশী ভাষাই থাকবে; তেমনই যে যত বেশিই নিষ্ঠাবান মুসলিম কিংবা খৃষ্টান হোক না কেন, এই দুটি ধর্ম বাঙালির পক্ষে বিদেশী ধর্ম ছাড়া আর কিছুই নয়! মুশকিল হল, আমরা বাঙালিরা পরধর্ম পরভাষা পরপরিচ্ছদের প্রতি এত বেশি লোভাতুর যে এই প্রাথমিক বোধগুলিও আমাদের মগজে ঢোকে না! ঢুকবে না!

    তাই একদিকে সনাতন ভারতীয় হিন্দুত্ব ও অন্যদিকে বৈদেশিক ইসলামের প্রভাবে বাঙালি তার লোকায়ত ধর্ম থেকে বহু পূর্বেই বিচ্যূত হয়েছে। যার ফলে বাঙালির নিজস্ব কোনো ধর্মবোধ গড়ে ওঠেনি। অনেকেই বলবেন ধর্ম তো দেশ জাতি নিরপেক্ষ একটি সংস্কৃতি। তার আবার নিজস্ব ধর্মবোধ কি? কথাটিই তো অর্থহীন। ধর্ম তো নিজের ব্যক্তিস্বাধীনতা সম্ভুত পছন্দের বিষয়। ঠিক কোনো সন্দেহ নাই। কিন্তু তা হলে আমাদের ধর্ম পরিচয় বংশানুক্রমে ঠিক হয় কেন? জানি এই কথার উত্তরে তারা সত্য যুক্তির পথে বেশিদূর এগোতে পারবেন না! আর তখনই তাদের আশ্রয় নিতে হবে মৌলবাদের। মৌলবাদ কখনোই সত্য ও যুক্তির পথে এগোতে পারে না বেশিদূর। মৌলবাদ প্রশ্নহীন আনুগত্য দাবি করে। কারণ মৌলবাদের জন্মই হল যুক্তিহীন অন্ধবিশ্বাস থেকে। তাই মানুষের সভ্যতায় সবচেয়ে বড়ো মৌলবাদই হল ঈশ্বর বিশ্বাস! আর এই ঈশ্বর বিশ্বাসকেই পুঁজি করে আবিশ্ব সকল ধর্মের উৎপত্তি ও বিস্তার। যা মানুষের সভ্যতায় ভালো করেছে যত, সর্বনাশ ঘটিয়েছে তার থেকে অনেক অনেক বেশি পরিমাণে। ঈশ্বর বিশ্বাস ভিত্তিক এই ধর্মগুলির খপ্পরেই আবহমান কালব্যাপি বলি হতে হয়েছে নিরস্ত নিরীহ অসহায় মানুষকে। আর সেই ধর্মের নামেই ধর্মের রক্ষকদের হাতে এই আধুনিক বিশ্বেও খুন হতে হয় ডঃ আজাদ ব্লগার রাজীব ও লেখক অভিজিতকে!

    জানি অনেকেই বলবেন তবে ধর্মগ্রন্থগুলিতে এত ভালো ভালো কথা থাকে কি করে? থাকে এই কারণেই যে, ধর্মগ্রন্থগুলি এক এক সময়ে এক এক বিশেষ অঞ্চলের মনীষার সাধনার ফসল। মানুষ যেদিন থেকে এই জগৎ ও জীবন সম্বন্ধে প্রশ্ন করতে শুরু করেছে সেদিন থেকেই জেগেছে তার ধর্মবোধ। মানুষের অন্তহীন প্রশ্নগুলি এক এক যুগে  যে যে উত্তরগুলি খুঁজে পেতে সমর্থ হয়েছে, সেগুলিই কোন না কোন অঞ্চলভিত্তিক ভাষাকে কেন্দ্র করে সংহত হয়ে রূপ পেয়েছে এক একটি ধর্মগ্রন্থে। কিন্তু সেই উত্তরগুলিকেই শেষ প্রশ্ন বলে, শেষ কথা বলে, অভ্রান্ত বলে মনে করাই মৌলবাদআর সেইটি মনে করানোই ধর্মরক্ষকদের পেশা। সেখানেই তাদের সুখে সমৃদ্ধিতে থাকার চাবিকাঠি। দুঃখের বিষয় আমরা অধিকাংশই মৌলবাদের এই আদিরূপটি সম্বন্ধে সচেতন থাকি না। তাই অভিজিতের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মের সমালোচনা করার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই অভিযোগই মৌলবাদের অস্তিত্ব ঘোষণা করে সদর্পে। এই প্রসঙ্গে আমরা যেন ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক হিংস্রতাকে সমার্থক না মনে করি। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সৃষ্টিতে ধর্মীয় মৌলবাদ সহায়ক ঠিকই, কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। সেখানে সাম্রাজ্যবাদী ধনতন্ত্রই নির্ণায়ক ভূমিকা গ্রহণ করে। সে প্রসঙ্গ পরে। কিন্তু এই যে, কোন ধর্ম সম্বন্ধে কোন ধর্মগ্রন্থ সম্বন্ধে ধর্মীয় রীতিনীতি সম্বন্ধে প্রশ্নহীন আনুগত্যের দাবি; এই দাবিই মৌলবাদ। সেই দাবি যে সবসময় মানুসের শিরচ্ছেদ করে তা কখনোই নয়, কারণ পূর্বেই বলেছি সহিংসতার কারণ শুধুই মৌলবাদ নয়, আরও বড়ো ভয়ানক অশুভ শক্তি, যা মৌলবাদকেই হাতিয়ার করে নিজের কার্যসিদ্ধি করে। তাই প্রশ্নহীন এই আনুগত্যের দাবি প্রকৃতপক্ষে মানুষকে ও ধর্মকেই ছোট করে ফেলে। আর তখনই ধর্মের সজীবতার অপমৃত্যু ঘটে। এ যেন প্রেয়সীর কবরকেই জড়িয়ে নিদ্রা দেওয়া। পরিতাপের কথা পৃথিবীর প্রচলিত ধর্মগুলির অধিকাংশই আজ এই প্রশ্নহীন আনুগত্যের চর্চা করতে গিয়ে একদিকে যেমন রাজনৈতিক অপশক্তির হাতিয়ার হয়ে উঠছে অপর দিকে তেমনই মানুষের প্রশান্তির জন্যে, আত্মশক্তির উদ্বোধনের জন্যে আধ্যাত্মিক চেতনা ও জ্ঞানের যুগলবন্দীতে মানুষকে নিরন্তর পথপ্রদর্শনের কাজে সফল হতে পারছে না আদৌ। আর এখানেই এক অভিশপ্ত আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছি আমরা।

    তাই আজ যারা অভিজিতের প্রতি আঙ্গুল তুলছেন, ইসলামের সমালোচনা করার জন্যে, তারা ভুলে যাচ্ছেন, অভিজিতের এই সমালোচনা করার অধিকার তার মৌলিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে।  তারা ভুলে যাচ্ছেন অভিজিতের তোলা প্রশ্ন ও যুক্তিগুলি ঠিক কি বেঠিক সেই বিচার আগে নয়। আজকের মূল প্রসঙ্গ অভিজিতের হত্যা পৃথিবীর কোনো সভ্য সমাজের নীতিতেই সমর্থন যোগ্য নয়! আজকের প্রশ্ন মানুষের মৌলিক অধিকার, তার চিন্তা করার অধিকার, তার বাক স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব এইগুলি রাষ্ট্র ও সমাজ কিভাবে গ্রহণ করবে, সেটাই। আজকের প্রসঙ্গ, বাংলা কি তবে  মৌলবাদের অন্ধকারকেই গ্রহণ করবে না কি আধুনিক উন্নত বিশ্বের উপযুক্ত একটি দেশ গড়ে নবজাতকের জন্যে বাসযোগ্য করে তুলতে পারবে তার ভুখণ্ডকে! আজকের প্রশ্ন বিদেশী একটি ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থের জন্যে বাঙালি কি এইভাবেই নিজেদের মধ্যে মারামারি কাটাকাটি করতে থাকবে, এইভাবেই নিজের জাতির শ্রেষ্ঠ মনীষাগুলিকে স্তব্ধ করে দিতে থাকবে একে একে? আজকে আমাদের বুঝতে হবে, কোনো ধর্মগ্রন্থকেই প্রশ্নহীন আনুগত্যে স্বীকার করে নেওয়ার মধ্যে কোনো গৌরব নেই। বরং সেই ধর্মগ্রন্থকেই যুগোপযুগী করে নিয়ে নিরন্তর সজীব রাখাতে পারার মধ্যেই কৃতিত্ব! আমরা যেন এই কথাও বিস্মৃত না হই, পৃথিবীর সকল ধর্মগ্রন্থই মূলত সেই যুগে সেই অঞ্চলের প্রচলিত ধর্মমতকে কখনো নস্যাৎ করে কখনো বা সংস্কার করে সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা যেন এও ভুলে না যাই, ধর্মগ্রন্থকে ঈশ্বরের পবিত্র বাণী বলে প্রচার করার মধ্যে গ্রন্থ প্রণেতা মনীষীদেরই অস্বীকার ও অপমান করা হয়, তাতে ধর্মব্যবসা যতোই মুনাফা দিক না কেন! অভিজিত যা বলেছেন তা তো লিখেই বলেছেন। সেই কথাগুলির মধ্যে যদি সার পদার্থ কিছু নাই থাকে, তা যদি মূলত কুৎসা প্রচারের মতো অসৎ উদ্দেশ্যও হয়ে থাকে, তবে সেই কথাগুলি কালের বাতাসে ধুলোবালির মতো উড়ে যাবে। ইসলাম বা প্রচলিত কোনো ধর্মই এতো পলকা নয়, যে এক আধজন নাস্তিকের সাধ্য ফুঁ দিয়ে তা উরিয়ে দেয়!

    আবার অভিজিতের মৃত্যুতে যারা ইসলামকেই দুষছেন মৌলবাদী ধর্ম বলে, যাদের ধারণা ইসলাম মানেই মারামারি কাটাকাটি, আত্মঘাতী সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর বলেই যারা ইসলামকে দেখেন; যারা মনে করছেন বিশ্বশান্তির জন্যেই ইসলামধর্মের অবসান জরুরী; যারা মনে করেন ইসলাম ধর্মের মুল উদ্দশ্য বিশ্বকে মধ্যযুগীয় বর্বরতার কালে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া, তারা যেন আগে এই কথা বিস্মৃত না হন, মানবসভ্যতায় এযাবৎ যতো বড়ো বড়ো নৃশংসতম বর্বরতার কাণ্ড ঘটেছে, তার প্রথম তিনটেই কিন্তু কোন মৌলবাদী ইসলামিক শক্তির হাতে ঘটে নি। যেমন বর্বরতার বীভৎসতায় সবকিছুকেই ছাপিয়ে যাওয়া হিরোসিমা নাগাসাকির পারমানবিক বিস্ফোরণ! না এই নৃশংসতম বর্বরতা ঘটানোর পেছনে কোনো মৌলবাদী মুসলিম ছিলেন না। যাঁরা ছিলেন, তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ শক্তিধর ট্রুম্যান ও রুজভেলটের এত বড়ো জঘন্য অপরাধের জন্যও আজও কোনো বিচার হয়নি।  তাদের নামও কোনো রাষ্ট্রশক্তির  মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টেও স্থান পায়নি।  যেমন আজও ভিয়েতনাম যুদ্ধে পরাজিত মার্কিণ শক্তির বিচার হয়নি আন্তর্জাতিক যুদ্ধপরাধের ‌আদালতে। অথচ বছরের পর বছর ন্যাপাম বোমার মতো বিষাক্ত অস্ত্রে ভিয়েতনামের নাগরিকদের কয়েক প্রজন্মকে বিকলাঙ্গ পঙ্গু করে দেওয়ার মতো পাশবিক কাণ্ড ঘটিয়েও তারা আজও কোনো অপরাধবোধে ভোগে না! তৃতীয় জঘন্যতম নৃশংস বর্বরতা প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্ব, হিটলারের নাৎসী বাহিনীর ইহুদী নিধনে। না এই সব  নৃশংস বর্বরতার পেছনে মৌলবাদী ইসলামের কোনো ভূমিকা ছিল নাবরং ইতিহাস বলছে এই কাণ্ডগুলি যারা ঘঠিয়েছেন তারা বাইবেলের নামে শপথ নেওয়া খৃষ্টান। আসলে কোনো ধর্মই এইসব বর্বরতা ঘটায় না! ঘটায় কেবল মাত্র সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তি। যে অপশক্তির সাম্প্রতিক আস্ফালন আমরা আবার  প্রত্যক্ষ করলাম আবার নতুন করে, নতুন অজুহাতে আফগানিস্তানে, ইরাকে। সামনে হয়তো প্রহর গুনছে ইরান ও কোরিয়া। আমরা আবার সান্ধ্য টিভি খুলে প্রত্যক্ষ করবো আরও ভয়াবহ সব ক্ষেপনাস্ত্রের প্রযুক্তিগত চোখ ধাঁধানো ঝলকানি! ধর্মীয় মৌলবাদ যেমন প্রশ্নহীন আনুগত্য দাবি করে বলে, আমার ধর্মই সর্বশ্রেষ্ঠ, আমার বিধানই শেষ কথা; ঠিক তেমনই এই রাজনৈতিক সাম্রাজ্যবাদী মৌলবাদও সেই একই প্রশ্নহীন আনুগত্যে বন্দী করে ফেলে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মানুষেরই স্বাধীন চিন্তাশক্তি নৈতিক শুভবোধ! সুস্পষ্ট বিবেক! তাদের প্রচারিত তথ্য ও বিধানকেই মানুষ প্রশ্নহীন আনুগত্যে অনুসরণ করতে থাকে! নিজেদের অজান্তেই শিকার হয় ভয়ংকর এই সাম্রাজ্যবাদী মৌলবাদের!

    আর সেই বন্দীদশায় আমরা যারা একবার আটকিয়ে যাই তারা আর বুঝতে চাই না কিছুতেই যে, বর্তমান বিশ্বে যেখানেই ধর্মীয় মৌলবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, সেখানেই মৌলবাদের পেছনে পেছনে গিয়ে থাবা গেড়েছে ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদ। বস্তুত আমরা যদি বিশ্বায়নের ঢক্কানিনাদের রঙিন চশমাটা একবার খুলতে পারতাম, তাহলে দেখতে পেতাম বিশ্বজুড়ে সাম্যবাদের বিপর্যয়ের সাথে সাথে সমাজতান্ত্রিক দুনিয়ার পতনের পরপরেই এই মৌলবাদের আমদানী। ধর্মীয় মৌলবাদ চিরকালই ছিল। কিন্তু তাকে আত্মঘাতী সন্ত্রাসের বোমায় পরিণত করা সাম্প্রতিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আবিষ্কৃত বিষয় যা ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদকে নিরঙ্কুশ আধিপত্য কায়েম করতে সাহায্য করে চলেছে একটানা! ঠাণ্ডাযুদ্ধের অবসানের পর এই ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে রাখতেই ইসলামী মৌলবাদের বারবাড়ন্ত ঘটানো। কারণ এখন আর কমিউনিস্ট জুজুর ভয় দেখিয়ে আবিশ্ব অস্ত্র বিক্রীর বাজার ধরে রাখা যাবে না। ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্যেই আমদানী করতে হল এই নতুন জুজু! যা কমিউনিস্ট জুজুর থেকেও বিপুল কার্যকরী, এবং সর্বত্রগামী। আর এই জুজু যে কত কার্যকরী তার প্রমাণ সকল দেশেরই সামরিক বাজেটের বিপুল বৃদ্ধি। তার প্রমাণ মধ্য প্রাচ্যের তেলের উপর ইঙ্গমার্কীন শক্তির একছত্র আধিপত্য কায়েম। ঠিক যে কারণেই আফগানিস্তানের পথে ইরাক দখল। এও এক ভয়ংকর মৌলবাদ। হয় আমার সঙ্গে থাকো, নয়তো আমার গুলি খাও। বস্তুত ধর্মীয় মৌলবাদের থেকেও এর ভয়ঙ্করতা শতগুন বেশি। কারণ এই মৌলবাদের এক হাতে সামরিক অস্ত্রসজ্জিত নৃশংস শক্তি আর এক হাতে বিশ্বরাজনীতির নিয়ন্ত্রণের লম্বা ও মজবুত সুতো! যে সুতোর অন্যতম বড়ো গিঁটই হলো ধর্মীয় মৌলবাদ।

    তাই বিশ্বের যেখানেই এই ধর্মীয় মৌলবাদের আস্ফালন যত বেশি, তলিয়ে দেখলে দেখা যাবে সেই আস্ফালনের সুতোর গিঁটে তত বেশি টান দিচ্ছে সেই ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদআর এই কার্যে নানান সূত্র থেকে অঢেল অর্থের আমদানী রপ্তানী চলে তলায় তলায়। হ্যাঁ বাংলাদেশের চিত্রও এই চিত্রনাট্যের বাইরে নয়। আর নয় বলেই শাহবাগ আন্দোলনের গোড়ায় সারা দেশ জুড়ে যখন মৌলবাদী শক্তি জামাতকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি ওঠে, তখন প্রথমেই বৃটিশ বিদেশমন্ত্রক থেকে বলা হয়, তারা কোনো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার পক্ষপাতি নয়। বাংলাদেশের সরকারের কাছেও বার্তাটা স্পষ্ট পৌঁছিয়ে যায় এই ভাবেই। লক্ষণীয় এই ইঙ্গমার্কীণ শক্তিই আবিশ্ব বিভিন্ন সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সৈন্যসামন্ত পাঠিয়ে থাকে। তবে সেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করার একটা টাইমটেবিল থাকে। ঠিক যেমন ছিল আলকায়দাকে সৃষ্টি করার পর থেকে নিষিদ্ধ করা অব্দি। এইটাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সেই নব আবিষ্কৃত অধ্যায়। বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, এই সেই ইঙ্গমার্কীণ শক্তি যারা সর্বতোভাবে চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রুখে দেবার। কিন্তু ঠাণ্ডাযুদ্ধের তৎকালীন ক্ষমতার বিন্যাসে পিছু হটতে বাধ্য হয়ে ছিল একেবারে শেষ মূহুর্ত্তে। যখন ভারতমহাসগরে সোভিয়েত ডুবো জাহাজের আগাম উপস্থিতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছিল কুখ্যাত মার্কীণ সপ্তম নৌবহর! স্বাধীন হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দিতে হয়েছিল চরম মূল্য। ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধজীবি হত্যার মাধ্যমে মেধাশুন্য হ‌য়ে যায় বাংলাদেশ। আর সেইখান থেকেই পরিকল্পিত ভাবে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জামাতের উত্থান।

    সেই জামাতের হাত ধরেই বাংলাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদের চর্চা বিগত চারদশকে একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে দিনে দিনে। আজ এই মৌলবাদী শক্তি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনীতিতে অন্যতম নির্ণায়ক শক্তি। তাই একে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। চরম দারিদ্র্য আর শিক্ষার অভাবকে সম্বল করে ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমেই মৌলবাদী মানসিকতার বীজ বোনা হয় দেশে দেশে। বাংলাদেশও এর ব্যাতিক্রম নয়। তাই সারা দেশে জামাত নিষিদ্ধের দাবি উঠলেও যখন বৃটিশ বিদেশমন্ত্রক থেকে বলে দেওয়া হয়, তারা কোনো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার পক্ষপাতি নয়; তখন বাকি চিত্রনাট্য নিয়ে খুব বেশি গবেষণার পরিসর আর থাকে কি? তাই কথায় বলে সাপ হয়ে কাটা আর ওঝা হয়ে ঝাড়া! গল্প নয়, সেটাই বাস্তব! বাংলাদেশ আজ মৌলবাদী আগ্নেয়গিরির উপর দাঁড়িয়ে। আর সেই আগুনে আঁচ দেওয়ার জন্যেই ড: হুমায়ুণ আজাদ, রাজীব হায়দার, অভিজিত রায়দের মৃত্যুগুলির বিশেষ প্রয়োজন। জীবিত অভিজিতদের থেকে মৃত অভিজিতরা এই ধর্মীয় মৌলবাদ ও ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদের হাডুডু খেলায় অনেক বেশি কার্যকার!

    [শ্রীশুভ্র]


    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.