>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • মনোরমা বিশ্বাস

    SongSoptok | 5/09/2014 |
    আমার ১৪ই ফেব্রুয়ারী


    আমার কাজের দিন কমে গেছে। আগে সময় পেতাম না। সকালে উঠে কাজে যাওয়া, রাতে ফিরে পরের দিনের জন্য নিজেকে রেডি করা— এই ছিল নিত্য দিনের কাজ। বিদেশে আমরা কেন যেন টাকা আয়ের যন্ত্রে পরিণত হয়ে যাই। টাকা কীসের জন্য, জীবনে কত টাকা দরকার তা ভেবে দেখি না।এই টাকা ছাড়াও আমার মন অন্য কিছুর জন্য বুভুক্ষু। এই জন্য কাজের ফাঁকেও ঘুরে বেড়াই।

    এদেশে নতুন আসার পর আমার কাজ কম ছিল, মানে কাজ করার অধিকার ছিল না। তখন ছেলে দুটোকে নিয়ে ম্যানহাটান ঘুরতে যেতাম।ম্যানহাটান আমার খুব ভালো লাগে। ম্যানহাটানে ঘাড় বাঁকা করে আকাশের দিকে চেয়ে বিশাল-বিশাল বিল্ডিং দেখতাম। ছেলে দুটোও অনেক আনন্দ পেত। এই ম্যানহাটানে অনেক কিছু দেখার আছে। এখানে আছে বিশাল সেন্ট্রাল পার্ক। সেন্ট্রাল পার্কে আছে বিশাল মাঠ, ঘাস দিয়ে ঢাকা। একবার এক সামারে সীমার সাথে সেন্ট্রাল পার্কে গিয়েছিলাম, বিশাল মাঠের ভেতর বিছানার চাদর বিছিয়ে শুয়ে-শুয়ে উদার আকাশ দেখেছি। সীমার তিনটে ছেলে-মেয়ে, আমার অর্ক-অন্তু মাঠের ভেতর ছুটোছুটি করেছিল। আমার এখনও ইচ্ছে করে ওই মাঠের ভেতর শুয়ে-শুয়ে বই পড়ি। ছেলেরা বড় হয়ে গেছে,ওরা আর যেতে চায় না। ম্যানহাটানে ব্রডওয়ে-শো দেখতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে টুরিস্টরা আসে। আমার খুব ইচ্ছে এই ব্রডওয়ে-শো দেখার।কয়েকবার চেষ্টা করেছি Lion king দেখার জন্য। টিকিটের মূল্য ১০০ ডলারের বেশি, তার পরও যখনই টিকিট কাটতে গিয়েছি, দেখেছি— এক মাসের মধ্যে সব টিকিট সেল হয়ে গেছে। এ ছাড়া, বাসার মধ্যে একা আমারই আগ্রহ, অন্যদের তেমন আগ্রহ নেই। তাই আর যাওয়া হয়নি, আমার একা-একা যেতে ইচ্ছে করে না।

    গত সপ্তাহে এক বয়স্ক রোগীর সাথে কথা হচ্ছিল। রুমের ভেতর একটা পেইন্টিং ছিল, সেটা নিয়ে মহিলা কথা বলছিলেন। উনি জানালেন মিউজিয়ামে এই রকম অনেক আর্ট আছে। তখন হঠাৎ মনে হল, তাই তো, আমি কেন মিউজিয়ামে যাই না। ট্রেনের ভেতর অনেক সুন্দর-সুন্দর ভাষায় বিজ্ঞাপন লেখা আছে এইসব মিউজিয়ামে যাওয়ার জন্য। শীতের সময় এইসব মিউজিয়ামে যাওয়াই শ্রেয়। আমি মহিলার কাছে মিউজিয়ামে যাওয়ার ইচ্ছে ব্যক্ত করলাম, এও বললাম, একা-একা যেতে ইচ্ছে করে না। উনি বললেন, উনি সব সময় একা-একা যান। উনি আমার কার্ড চাইলেন এবং বললেন,আবার যখন যাবেন, আমাকে কল করবেন। আমি তাঁকে আচ্ছা বলে দিলাম। তখনই মনে-মনে ঠিক করে ফেললাম, এই ভ্যালেন্টাইন'স ডে-তে MoMAদেখতে যাব, কারণ ওই দিন আমার অফ। বাসায় এসে অর্কের সাথে কথা বলে ঠিক করলাম আমরা দু'জন মিউজিয়ামে যাব। ও তো খুব খুশি।

    এই MoMA-এর কথা আমি প্রথম পড়ি ভারতীয় 'সানন্দা' ম্যাগাজিনে। সত্যজিৎ রায়ের স্ত্রী লিখেছিলেন লেখাটা। তাঁরা যখন নিউইয়র্ক এসেছিলেন,তখন এই মিউজিয়াম ভিজিট করেছিলেন। কিছু ছবিও তখন দেখে ছিলাম। তখন তো চিন্তাও করিনি এই মিউজিয়ামে আমি একদিন যেতে পারব।

    অর্ক সাথে থাকলে আমার কোনো চিন্তা থাকে না, ও একবার ইন্টারনেট থেকে জেনে নেয় কীভাবে, কোন ট্রেন ধরে যেতে হবে। এটা ওর ব্রেনের ভেতর থাকে, লিখে রাখার দরকার হয় না। বৃহস্পতিবার দু'জন বের হব, এমন সময় ওর বাবা বাসায় ফিরে এল বাইরে থেকে। এসেই অর্ককে বলল, 'সেভ করে বের হও, তোমার মাকে বলো, তোমাকে সেভ করে দেবে'। বিশ বছরের অর্ক এখনও ভালো করে সেভ করতে জানে না। আমি ঘর থেকে বের হয়ে ওকে অনুরোধ করলাম সেভ করার জন্য। অর্ক বাবার কথা অমান্য করলেও মায়ের কথা অমান্য করে না। কিন্তু রেডি হয়ে বাইরে যাওয়ার সময় ও রাজি হতে চাইল না, তাই মাথা নিচু করে বলল, 'আজ নয়'। আমি রসিকতা করে বললাম, 'বাবা একটু ফিটফাট না থাকলে মেয়েরা তোমার ধারে কাছে ঘেঁষবে না'। আমার কথা শুনে ওর দিদা বললেন, 'এখনই মেয়ের কথা কেন, বিয়ে করে ও বউকে খাওয়াবে কী?'

    : বউকে খাওয়ানোর প্রশ্ন আসছে কেন? তোমার বউমাকে কে খেতে দিচ্ছে? যার খাবার সে নিজেই জোগাড় করবে। দরকার হলে আমি খাওয়াব।আমি ঠিক করেছি, আমার সম্পত্তি ছেলেদের না দিয়ে ছেলেদের বউদের দেব।
    : দেখা যাবে, ছেলের বউরা যদি খারাপ হয়?

    : আমার চোখে মেয়েদের খারাপ কিছু ধরা পড়ে না। আর খারাপ হলেও আমি দেব, কথা আর কাজের মধ্যে আমার সামঞ্জস্য আছে।
    এইসব বলেই অর্ক আর আমি বের হয়ে হেঁটে ট্রেন স্টেশনের দিকে যাচ্ছি। হঠাৎ অর্ক বলল, 'মা, ইউ আর আ গুড মা, ডু ইউ নো দ্যাট?' আমি হাসতে-হাসতে উত্তর দিলাম, 'বিকজ ইউ আর মাই গুড সান'।

    স্টেশনে ঢোকার আগে ওকে ব্রেকফাস্ট কিনে দিলাম। স্টেশনে ঢুকে দেখি— একটা ন্যাকেড মেয়ের ছবি— বিজ্ঞাপন। অর্ক তাকাল, আমি বললাম, 'বাবা এমন ছবি বা মেয়ে বাংলাদেশে থাকলে মানুষ ঘিরে ধরবে'। ও অবাক হয়ে আমার দিকে চাইল। এই দেশে এইসব নরমাল ব্যাপার। কিন্তু কেউ ফিরেও চায় না। ততক্ষণে ট্রেন এসে গেল।

    অর্কের কথামতো ৬ ট্রেন থেকে M ট্রেন ধরলাম, এক স্টেশন পরই গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। মাটির নীচেই দেখি অনেক আর্ট, আর এক ধাপ উপরে উঠে দেখি একটা আর্ট গ্যালারি, অর্ককে বললাম, 'চল ঢুকে পড়ি'। অর্ক বলল, 'না আগে MoMA-তে যাই'। উপরে উঠেই দেখি MoMA-র সাইনবোর্ড।রাস্তা পার হয়ে ঢুকে গেলাম।

    কি সুন্দর পরিচ্ছন্ন পরিবেশ! দেখেই মন ফ্রেশ হয়ে গেল। টিকিট কাউন্টার থেকে ৫০ ডলার দিয়ে দুটো টিকিট কেটে নিলাম। এক জায়গায় দেখলাম,কিছু লোক লম্বা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। খেয়াল করে দেখলাম, জ্যাকেট জমা রাখছে। আমরা জমা রাখলাম, এত হ্যাভি জ্যাকেট গায়ে দিয়ে ঘোরা মুশকিল।

    এক ধাপ উপরে গিয়ে দেখি একটা উঠানের উপর হলুদ মেঝে, মনে হচ্ছে উপর থেকে হলুদ আলো পড়েছে, তাই এমন দেখাচ্ছে। আমি ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুলতে গেলাম, ডিউটিরত লোকটা ফ্লাশ ছাড়া ছবি তুলতে বললেন। আমি লোকটাকে ছবি দেখিয়ে বললাম, 'দেখো ফ্লাশ দিয়ে তুলেছি, তাও ছবি ভালো হয়েছে'। আমার ধারণা, ফ্লাশ ছাড়া ছবি তুললে ছবি ভালো হবে। লোকটা আমাকে বুঝিয়ে বললেন, ফ্লাশ দিয়ে ছবি তুললে এই পেইন্টিংগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। হাজার-হাজার মানুষ, লাখ-লাখ মানুষ পেইন্টিংগুলোর ছবি তুলছে। এই ফ্লোরেই ছিল লাইব্রেরি, অর্ক দৌঁড়ে লাইব্রেরিতে চলে গেল।এখানে ৩ লাখ বই আছে। ডিউটিরত এই লোকটার কথামতো ৬ তলায় চলে গেলাম। এখানে অনেকগুলো রুম। প্রত্যেক রুমে কত রকমের আর্ট। এক রুম থেকে আর এক রুমে যাচ্ছি, আর্টগুলো দেখছি।

    আমার এক বন্ধু জিজ্ঞেস করেছিল, 'মডার্ন আর্ট কাকে বলে তা কি জানো?' সত্যি বলতে কি, আমি আর্ট ভালো বুঝি না, কিন্তু এই আর্টগুলো দেখতে ভালো লাগছিল। অর্কও খুব এনজয় করছিল। দেখলাম, এক মহিলা ছবি আঁকছেন। ছবি তোলা নিষেধ, তাই আর্ট দেখে-দেখে ছবি আঁকছিলেন। আমি ভাবছিলাম তাঁদের কথা যাঁরা এই মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রথমে উদ্যোগ নিয়েছিলেন Ms Abby. উনি দু'জন বান্ধবীর সহায়তায় এই মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমি এই আর্টগুলো দেখছিলাম আর ভাবছিলাম এঁরা কত উন্নত সংস্কৃতমনা ছিলেন, কত গুণী, আর কত উন্নত মানসিকতার ছিলেন।

    এর পর ৫ তলায় গেলাম। এখানে ছবি তোলা যায়। কিছু ছবি তুললাম। এর মধ্যে দেড়টা বেজে গেল প্রায়। দেড়টায় একটা মুভি দেখার কথা। অর্ক কিছুতেই না খেয়ে মুভি দেখবে না। অগত্যা ওকে খাইয়ে মুভি দেখতে ঢুকলাম। মুভির নাম 'লাভারস'। ভ্যালেন্টাইন'স ডে উপলক্ষ্যে এই মুভি। খুবই রোমান্টিক মুভি।

    মুভি শেষ না হতেই অর্ক বলল আর দেখবে না, অগত্যা বের হয়ে আরও কিছু আর্ট দেখলাম। তার পর এদিক-ওদিক ঘুরে মিউজিয়ামের মলে ঢুকলাম। শাশুড়ির জন্য একটা বুকমার্ক কিনলাম। তাঁকে আমি কিছু বাংলা বই পড়তে দিয়েছি। আর একটা স্যুভেনির কিনলাম। যেখানেই যাই, সেখান থেকে কিছু কিনে আনি স্মৃতি স্বরূপ।

    অর্ক বায়না ধরল ও দামি রেস্টুরেন্টে খাবে। আমি একটু মৃদু আপত্তি করলাম। ও বলল, 'মা টুডে ইস মাই ভ্যালেন্টাইন'স ডে'। মিউজিয়াম থেকে বের হয়ে বেশ খানিকটা হাঁটলাম। রাস্তা পরিষ্কার, রাস্তার ধারে ফুল বিক্রি হচ্ছে। অনেকের হাতেই ফুল। একজন বৃদ্ধের হাতে ফুলের গুচ্ছ দেখে ভালো লাগছিল। উনি দুই হাতে ফুলের গুচ্ছ বুকের সাথে আঁকড়ে রেখে হাঁটছিলেন। আর একজন বয়স্ক মহিলার হাতে দেখলাম একটা গোলাপ ফুলের বেলুন।আমি অনেকক্ষণ ধরে সেই বেলুনটা দেখলাম। এমন বেলুন আগে দেখিনি। রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে অর্ক বায়না ধরল, ওকে বই গিফট দিতে হবে।এমনিতে এই ছেলের জন্য আমার অতিরিক্ত কিছু টাকা খরচ হয়ে গেল, তাই আমি রাজি হলাম না লাইব্রেরিতে যেতে। অর্ক একাই লাইব্রেরিতে বই পড়তে চলে গেল, আমি একাই ম্যানহাটান থেকে বাসায় ফিরে এলাম।

    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.