ইতিউতি
আলো দাও
আরও আলো উঁচুনিচু
অই অধরা মৃগশিরা
বিবাহে রম্য হরিণীদল .
শিকড় দাও আরও বৃক্ষ
সেজো মেজো
বেনারসির ঘরানায় অই পুতুল হরফ
অইখান অবধি ক্লান্ত নাচ
পৃথিবী আজ গৃহত্যাগী ,
জ্যোৎস্নার ঝনঝন অলীকআঙটি
দিনের সমস্ত ওজন কাঁধে যে রাত ,
তার কণ্ঠনালীতে খানিক ঢুকে পড়া যাক
ঝাপসা অন্ত্যমিল ,
জোটেনি এমনকি পরবাস .
মসৃণ
অনেকটা বৃষ্টির মত বায়বীয়
নিজগুণে সম্পূর্ণ আকাশ
ফাগুনে লোহার আকারে জ্বলে
আছে
আমি তোমার বিষণ্ণতা হই
তুমি আমার পুনশ্চ
আগামী প্রার্থনার ঘড়ি
টুপটুপ মিনিট সেকেন্ড
তলায় তলায় আনন্দের জপতাপ
বেতসের বিদ্যুৎ
রাতি পোহাইল
কত রক্তজবা বেজেছে
সেই সাড়া শুনে সারাভোর
ভোরের সাড়াটি
শ্যাম থেকে বকুল থেকে বিদ্যাপতি
কেউ অভিসার শোনে
কেউ দশের হিমফুল
ছাতিমকূল ইত্যাদি
একলা মানুষের ডাকনাম
যে যমুনার রাধারঙের সিনান নেই
যে রাধার স তে যমুনার য নেই
সে বুঝি খুব আপনজন
অন্তত একটি ছদ্মনাম ভুলে
নিজেকে
যদি নিজেকে বাঁশী বলে আঁকো
পিতামহ
পাখি হয়ে যাবার পর আকাশ হয়ে আসে
বসন্তের বনভূমি । মিথিলায় কে তখন বাঁশি
বাজায় ...
যেন এক আশ্চর্য প্রেমিকা হাওয়ায় ভেসে
এসেছে বহুকাল পর । মেঘের পায়ে অলীক বেজেছে তারামরু ..বহুদূর ঝনক রাখাল ... সবকিছুই কুয়াশাময় ..
ডমরু কাঁধে
নদীদের প্রাচীন বিদ্যালয় ...
মধুকুপি দেয়াল ফেটে ওড়ে ধমনীর বীজ ...
যে তুমি আমাকে বিষাদ দিয়েছ । যে তোমার
ঈশ্বর ছাড়া কোনো রঙ নেই । যে ঈশ্বর মানে যমুনার কোমরে বাঁধা এক বিশাল তরবারি । যার
নাম ধাম কোলাহল জ্যোৎস্নার হোলি , সেই চমৎকারকে আমি বলি পিতামহ ... ফেরিঘাটের বিবর্ণ ময়ূর ... পাতার ফাঁকে সূর্য ওঠে , কখন অস্ত
যায় গাছপালার পা ...
সেই ভিখিরিনীলে আরও কিছুকাল ভ্রূণটি
পূর্ণ করি ...
জন্মদিন
আজ নোঙর ফেলি শিষ ভুলে যাওয়া পাখিদের
গায়ে
, তরীবিকেলে ঝরে যাক মেহেন্দির
বিষণ্ণতা
, আজ আগুন জ্বালিয়ে দিই অরণ্যের
ফাগুনে
, আজ একবার উচ্চারণ করি পুরনো
প্রেমিকের অস্তকথা ...
ভোরের ডেসিবল উড়িয়ে আজ আমি আকাশনারী , বেদুইনের ফুটনোটে অনায়াসে লিখি বিচ্ছিন্ন মারমেইড
, দূরপাল্লার হরিণবাড়ি
, সোনার খনিতে আজ ডুবে যাক
সহস্র নিয়নের ধুলো ...
প্রেমেও পড়তে পারি আজ নতুন
, পরিযায়ী বেদনার সাথে সাজাতে
পারি গহনাবাসর । গান হতে পারি , সরগম ঝরানো মেয়েগান । ক্ল্যারিওনেটে বাজাতে পারি শৈশব
, প্রকাশ্যে চুমুও খেতে পারি
ঝর্ণাশহরের লাল হ্রদে ...হঠাৎ দেখা জোনাকির প্রান্ত বিছানায় আজ ঘুমিয়ে পড়তে পারি নিপুণ চোখে ...
অন্যদিনের তুলনায় তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে
পড়াও এক ধরণের জন্মদিন ....
সংগীত
বৃষ্টি আমাকে ছুঁয়ে
, না আমি বৃষ্টিকে ...
চাঁদ খেলতে খেলতে অজস্র সেতার চুলে
ঝরে পরে
, পাখিরা বাজায় ময়ূর ...
ধানিসার কুহুজলে এখন যে কেউ আঁকতে
পারে আমার ঢেউহীন জানালা ... নদীর তুলিতে ঘন চোখ । এই তো বেঁচে আছি ক'দিন , মোমলাগা শরীরী ভোর , আকাশ মাটি আর সুর্মাকালোর দিগন্ত ... সাঁকো পেরিয়ে আরও কাছে নেমে আসি
, সুরে বোনা গানটিতে শুনতে পাই
কাঁপা হরফের তিস্তা ...
এই যে নিঃসঙ্গতা চাইছি তোমার কাছে আর
লিচ্ছবি নগরের ধাপগুলো নিচ্ছি জেনে , মাপছি শীতঘুম , কবেকার মহুলে জমে থাকা ঝুমুর আমায় পাখিপড়া শেখাচ্ছে আর আমি
টসটসে শ্বেতপাথরের মত জংলাপাড়ের মুস্কান হয়ে উঠছি ...
আমাদের একসাথে থাকা না থাকাটাই সমুদ্র
.
..
সরগমের
প্রান্তটুকু যেমন সঙ্গীত ...
[রত্নদীপা দে ঘোষ]