>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়





    সংশপ্তক: মানুষের সমাজ ও সভ্যতায় ট্রেন ও বিদ্যুৎ শক্তির আবিষ্কারের মতোই এক যুগান্তকারী ঘটনা ইন্টারনেট প্রযুক্তির বিকাশ। যার হাত ধরে উত্থান সোশ্যাল মিডিয়ার। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই নবতম উপহারের সাথে আপনার পরিচয়ের সূত্রপাত সম্বন্ধে যদি একটু আলোকপাত করেন!
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:   যে বয়সে একজন গড়পড়তা বাঙালি মফঃস্বলের রেলের প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চে বসে পরচর্চা আর মাগগীভাতার হিসাব কষেন কিংবা হরিসভায় যুক্তহস্তে নামকীর্তন শোনেন তেমন বয়সের একজনের কাছে জানতে চাইছো অন্তর্জাল ব্যবহারের সাত-সতেরো । বেশ আমি আমার মত করে উত্তর দিই । হ্যাচাকুরী থেকে অবসর নেওয়ার পর তেরো/চোদ্দ বছর তো হয়ে গেল আমার অন্তর্জাল নিয়ে নাড়াচাড়া করার । অন্তর্জাল তো দূরের কথা কম্পিউটার সম্পর্কেও বিন্দুমাত্র ধ্যান-ধারণা আমার ছিল না, থাকার কথাও নয় । মেয়ে মালটি মিডিয়ার কাজ শিখছিল , মার্চ দুহাজার দুয়ে চাকুরী থেকে অবসর নেওয়ার পর মেয়ের আবদারে অবসরকালীন টাকা থেকে কেনা কম্পিঊটার বাড়িতে এলো । মেয়ে কলেজে যায় আর আমি কম্পিউটার ঘাঁটাঘাঁটি করি । কলকাতায় ছিল কিনা জানা নেই কিন্তু মফঃস্বলে তখন এখনকার মত ব্রডব্যান্ড বা নেট কার্ড ইত্যাদি ছিল না। বিদেশ সঞ্চার নিগম থেকে একটা সিডি লোড করে অন্তর্জাল ব্যবহার করতে হত টেলিফোনের মাধ্যমে । আনাড়ি ছিলাম, সুতরাং অনেক ভুলভাল করতাম আর মেয়ের বকুনি খেতাম । দুহাজার ছয়ে মেয়ের বিয়ের পর আর বকুনি দেবার কেউ রইলো না । হাতে অঢেল সময়, অতয়েব ঘাঁটাঘাঁটি করে কময়য়সী তরুণদের কাছে বোকা বোকা প্রশ্ন করতাম আর এইভাবে একটু একটু শিখতাম । এক তরুণের কাছে কায়দা শিখে ইয়াহুতে একটা মেইল আইডি খুলে ফেললাম । কিন্তু মেইল করবো কাকে ? তখন ইয়াহু ছাড়া আর কিছু জানতাম না। ইয়াহুতে একটা প্রশ্নোত্তর বিভাগ আছে বিভিন্ন বিষয়ে নানা জনে নানান প্রশ্ন করে আর ইয়াহু ব্যবহারকারীরা উত্তর দেন । এবং প্রতিটি প্রশ্নের সেরা উত্তরদাতাকে বেছে নেন কর্তৃপক্ষ । আমি বেশ মজা পেলাম , ভাষা ও ইতিহাসের প্রশ্নের উত্তর দিতে শুরু করলাম অমিতাভ এই ছদ্ম নামে । এই সূত্রে কোন একটা প্রশ্নের উত্তরের সূত্রে এক তরুণ ও দুই তরুনী আমার সঙ্গে আলাপচারিতা শুরু করে । ওদের দুজন মাধ্যমিক ও একজন নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল তখন । ওরা তিনজনই আমার প্রথম অন্তর্জাল বন্ধু । এখনও আছে ।   ঐ সময় অরকুটখুব জনপ্রিয় ছিল বাঙ্গালিদের কাছে । আমিও ভিড়ে গেলাম , সময়টা বোধয় ২০০৮ কি ২০০৯ হবে ।  আনাড়ি আমি ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে কম্পিউটারের সাউন্ড প্রোফাইলটা দিলুম উড়িয়ে । সমস্যাটা জানিয়ে অরকুটে একটা প্রশ্ন ছেড়ে দিলাম ভুবনেশ্বরের এক আইটি প্রফেশনাল তরুণ কি করতে হবে জানিয়ে আমাকে মেইল করলো । শিখলাম । তারপর থেকে এখনও কম্পিউটার সম্পর্কিত যে কোন সমস্যায় আমি সেই তরুণটির স্মরণ নিই আর সে তার বাধ্য ছাত্র মনে করে শেখায় । আমাকে সে দাদু সম্বোধন করে । খুব ভালোবাসার সম্পর্ক আমার তার সঙ্গে । কিন্তু অরকুট আমার ভালো লাগেনি । ওখানে  আর থাকলাম না । ততদিনে ফেসবুকখুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে । ইয়াহুতে আলাপ হওয়া সেই তরুণটি বললো জেঠু তুমি ফেসবুকে কোন গ্রুপে জয়েন করো,ভালো লাগবে । সেই সূত্রে আমার ফেসবুকে আসা । বলতে দ্বিধা নেইপ্রথম কয়েকমাস সামান্য আড়ষ্টতা ছিল । কিন্তু, মানুষকে জানা, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে চেনা, আলাপচারিতা ও সামাজিক বিনিময়ের যে বিশাল ভুবন উন্মুক্ত করে দিল আমার সামনে সেই বিস্ময়ের ঘোর আমার এখনও কাটেনি । দুহাজার চারএ মার্ক জুকেরবার্গ যখন হাভার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সহপাঠিদের সঙ্গে আলাপচারিতার জন্য ফেসবুকনামে যে সামাজিক পরিসরের শুরুয়াত করেছিলেন তিনিও কি আধুনিক বিশ্ব জুড়ে ফেসবুকনামক এই সামাজিক পরিসরটির এমন অপ্রতিহত প্রভাবের আগাম আন্দাজ করতে পেরেছিলেন ? বোধহয় না ।

    ব্লগলেখার ব্যাপারটা সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না, বুঝতাম ও না । গুগলনাড়াচাড়া করতে করতে বিনা খরচে ব্লগ বানানোর ব্যাপারটা জানলাম । বাংলা ভাষাতে একটা পত্রিকা করার চিন্তা মাথায় এলো । অতি সামান্য বৈদ্যুতিন ও অন্তর্জাল প্রযুক্তির জ্ঞান নিয়ে দুটো ওয়েব পত্রিকা বানিয়ে ফেললাম ২০১১র অক্টোবরেএকটি সাপ্তাহিক কবিতার অন্যনিষাদঅপরটি বাংলা গল্পের পাক্ষিক গল্পগুচ্ছ অন্তর্জালের বিশাল ভুবনের অতি সামান্যই মাত্র স্পর্শ করতে পেরেছি,তাতেই পেয়েছি এক বিস্ময়কর তৃপ্তি, সৃজনের আনন্দ । সে আনন্দ প্রকাশের কোন ভাষা হয় না । অন্তর্জাল প্রযুক্তির জন্যই অসংখ্য মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, বিনিময় হয়েছে ভাবনার । এ কি আগে কোনদিন ভাবতে পেরেছি ? বিস্ময়ের ঘোর কাটেনা, যে শূন্য থেকে শুরু করে দুটো ওয়েব পত্রিকায় এই চার বছরে সাড়ে তিন হাজার কবিতা আর সাড়ে পাঁচশ গল্প অন্তর্জালে ছড়িয়ে দিয়েছি আর পত্রিকাদুটির পৃষ্ঠা দর্শন দুলক্ষ ছুঁতে চলেছে । অন্তর্জাল আমাকে আর পিছিয়ে আসতে দিচ্ছে না । কাউকেই দেয় না বোধহয় । নিজের সম্পর্কে অনেক কথা বলা হয়ে গেলোবিজ্ঞানের বিস্ময়কর উদ্ভাবন অন্তর্জাল প্রযুক্তিকে বুঝতে চাওয়া বা তার স্পর্শ পাওয়ার ক্ষেত্রে আমার প্রস্তুতিটুক বলার চেষ্টা করলাম । আর তো অগ্রসর হওয়ার সময় দেবে না কেউ, শুধু প্রস্ততিটুকু সেরে ফেলেছিলাম এটাই পরম প্রাপ্তি এবং তৃপ্তিও বটে ।

    সংশপ্তক: মানুষের সাথে মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে স্যোশাল মিডিয়ার মতোন এমন শক্তিশালী মাধ্যম আবিষ্কৃত হয় নি আগে। এই যে গোটা পৃথিবীটাই প্রায় আপনার হাতের মুঠোয়; এই বিষয়টি আপনাকে কতটা প্রভাবিত করে?
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  করে বইকি, দারুণ ভাবেই করে । না করলে কি  একা হাতে দু দুটো ওয়েব পত্রিকার প্রকাশ সম্ভব হত কোনদিন ? আমেরিকার হাভার্ড বিশ্বিবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মার্ক জুকেরবার্গ তার সপাঠীদের সঙ্গে আলাপচারিতার জন্য ফেসবুক নামক এই সামাজিক পরিসরের উদ্ভাবন করেছিলেন ফেব্রুয়ারি ২০০৪এ । তারপর নানা পর্যায় পেরিয়ে বিশ্ব জুড়ে এই সামাজিক পরিসরটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা অগস্ট, ২০১৫তে ছুঁয়েছে ১.১৮ বিলিয়ন ।স্যোসাল কমিউনিটিবা সামাজিক পরিসর মাধ্যমের সিংহভাগই দখলে রেখেছে ফেসবুকট্যুইটারও গুরুত্বপূর্ণ নিশ্চয়ই, কিন্তু সেখানে বার্তা বা মন্তব্য প্রকাশ ছাড়া সৃজনশীল কিছু করার সুযোগ সীমিত ।  কারণ সেখানে মাত্র ১৪০ট শব্দ লিখতে পারে একজন ব্যবহারকারী । ইয়াহুস্যোসাল কমিউনিটি নয়, সার্চ ইঞ্জিন , যদিও এর প্রশ্ন ও উত্তর বিভাগটি সামাজিক পরিসরের মতই ব্যবহার করা যায় । তর্কের কোন যায়গা নেই যে এখন বাঙালির সামাজিক জীবনে, তার সৃজনশীল মননে ফেসবুকএর প্রভাব সর্বগ্রাসী ও অপ্রতিরোধ্য । ফেসবুককে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে বহু অসামাজিক ও অপরাধমূলক কাজকর্ম হয়েছে, এখনও হচ্ছে । আমি কিন্তু এর ইতিবাচক বা সৃজনশীল দিকটিই দেখতে চাই । মানুষের সঙ্গে আলাপ আর ভাবনা বিনিময়ের এমন দিগন্ত বিস্তারী পরিসর উন্মক্ত হয়েছে আর কবে ? ফেসবুককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে কত গোষ্ঠী বা গ্রুপ, চর্চা করে চলেছেন, সৃজনশীল প্রকাশ ঘটাচ্ছেন তাদের সাহিত্যকর্মের, প্রকাশিত হচ্ছে অসংখ্য ওয়েব পত্রিকা ফেসবুক ব্যবহারকারীরাই যার টার্গেট পাঠক । এমনকি বেশ কয়েকটি পুস্তক প্রকাশনা সংস্থাও গড়ে উঠেছেঅনেক ওয়েব পত্রিকার মুদ্রিত সংখ্যাও প্রকাশিত হচ্ছে যার লেখকরা উঠে আসছেন ফেসবুক থেকেই । ফেসবুক হয়ে উঠেছে অনেক ছোট মুদ্রিত পত্রিকার সাপ্লাই লাইন । তাই এখন আর ও তো ফেসবুকের লেখকবলে নাক উঁচু কেউ করেন কি না জানি না । যদি করেন তবে তার ওপন আমার করুণাই হয় ।

    সংশপ্তক: মানুষের সৃষ্টিশীলতা সৃজনশীলতার বিকাশের ক্ষেত্রে এই সোশ্যাল মিডিয়া সম্পূ্র্ণ একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। যা এক কথায় অভুতপূর্ব! আগে নির্দিষ্ট কিছু মাধ্যমের ছাড়পত্র না পেলে আপন প্রতিভা প্রকাশের কোন উপায় ছিল না বললেই চলে। কিন্তু এখন যে কেউ তার সৃষ্টিশীল সৃজনশীল শক্তিকে বিশ্বের দরবারে নিজেই হাজির করতে পারছে। এই বিষয়টি আপনি ঠিক কি ভাবে দেখছেন?
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  অন্তর্জাল দুনিয়ায় ফেসবুকের উদ্ভাবন ও তার পথচলার সঙ্গে এতাবৎকালের কোন কিছুরই তুলনা চলেনা প্রকাশ-মাধ্যমের ক্ষেত্রে । কাউকে চিচিংফাঁকমন্ত্র বলতে হয়নি, উন্মুক্ত হয়ে গেছে সৃজনশীল আত্মপ্রকাশের বিস্তীর্ণ পরিসর । আমার কথাই বলি পঞ্চান্ন বছর হল নিজের ছোট বৃত্তের মধ্যে নাটক, গদ্য নিয়ে সৃষ্টিশীলতার মধ্যে থাকার চেষ্টা করি আমার মত করেতারুণ্য ও যৌবনের পুরো সময়টাই কেটে গেছে প্রবাসে হিন্দিভাষী এলাকায় । সৃষ্টি যাইই করি, প্রকাশ হবে কি করে? করবে কে? রেলের চাকুরে, প্রভিডেন্ড ফান্ড ভেঙে বা প্রাপ্য পেনশনের টাকা দিয়ে বই ছাপাবার বিলাসিতা করার সাহস হয়নি । প্রৌঢ়ত্বেরও সীমা পেরিয়ে বার্ধক্যের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে পেয়ে গেলাম ফেসবুককে এর সমস্ত রস, সমস্ত বর্ণ-গন্ধ যেন চেটেপুটে সাবাড় করে দিতে ইচ্ছা হয় ।

    সংশপ্তক: এই প্রসঙ্গেই আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের বিচলিত করে। আগে প্রতিভা বিকাশের কোন না কোন একটি মাপকাঠি ছিল। কিন্তু আজকে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে যে কেউ নিজেকে কবি সাহিত্যিক সংগীতশিল্পী বলে প্রচার করতেই পারেন। এবং বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজনদের প্রশংসায় এই ভাবে মধ্যমেধার বাড়বারন্ত শিল্পসংস্কৃতির পক্ষে কতটা স্বাস্থ্যপ্রদ বলে আপনার মনে হয়?
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  হ্যাঁ, এটা একটা দিক বটেতবে আমি মনে করি না এতে ভাবিত হবার কোন কারণ আছে । একজন সৎ ও সিরিয়াস পাঠকের গ্রহণ ও বর্জনের ক্ষমতা সহজাত । সে ঠিক তার পাঠযোগ্য লেখাটি খুজে নেবে ।  রবীন্দ্রনাথ নিজের গান প্রসঙ্গে বলেছিলেন রবার যেটা সেটাই রবে এই যে প্রতিদিন কয়েকশ কবিতা ফেসবুকের মধ্য দিয়ে প্রকাশের আলো দেখছে, তার সবগুলি উত্তীর্ণ, কেউ বলবে না । কিন্তু সবই ফেলে দেবার মত একথাও কেউ বলবে না । আমি অভিজ্ঞতায় এও জানি নিয়মিত অনুশীলনের মধ্য দিয়ে অনেক তরুণ কবিই তাদের রচনায় বিস্ময়কর উন্নতি ঘটিয়েছেন । এখন টেলিভিষনে বা অন্য কোথাও গানের অনুষ্ঠানে সঞ্চালক হাঁকেন একটু জোরে হাততালি দাওআরে বাপু, হাততালি তো প্রসংশার স্বতস্ফূর্ত অভিব্যক্তি । সেটা কি জোর করে আদায় করা যায় ? ফেসবুকেও প্রায়ই দেখি কেউ পোষ্ট করেছেন অমুক কবিতা লিখেছি, বন্ধুরা লাইক দাওএগুলো কিছু না, চিন্তার ব্যাপারও না । কেউ যদি কবিযশপ্রার্থী হতে আত্ম-প্রবঞ্চনা করে করুক । তাতে এই সামাজিক পরিসরের গৌরব খুন্ন হবে কেন?

    সংশপ্তক: আবিশ্ব বিভিন্ন সংস্কৃতিকে পরস্পরের আরও কাছে নিয়ে আসতে সোশ্যাল মিডিয়ার ভুমিকা কতটা শক্তিশালী হতে পারে?
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  প্রচন্ড শক্তিশালী  সে বিষয়ে সংশয় নেই । ক্রমশ ছোট হয়ে আসা বিশ্বে, অন্তর্জালের দৌলতে ভাবনার আদান-প্রদান ও মত বিনিময় এখন অনেক কার্যকরী । আমরা নানা প্রান্তের মানুষের কাছাকাছি আসছি, তাদের জীবনচর্যা, তাদের জীবনবোধ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানছি । স্যোশাল মিডিয়ার দেওয়া এ সুযোগ তো আগে ছিল না । গত ৩০শে অগস্টের আনন্দবাজার পত্রিকায় একটা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল । সংঘর্ষে বিধ্বস্ত সিরিয়ার এক শরনার্থী পেটের দায়ে তার চারবছরের শিশু কন্যাকে কোলে নিয়ে বেইরুটের রাস্তায় কলম ফেরি করছেন এরকম একটা ছবি কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী ট্যুইটারে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন । বহু মানবিক মুখ লোকটিকে সাহায্য করতে চাইলেন । কিন্তু কে এই লোকটি ? এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্যোশাল মিডিয়াতেই তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত জানালো আর সাহায্যের আবেদন করলো । ২৪ ঘন্টার মধ্যে আশি হাজার ডলার সাহায্য পৌছে গেল লোকটির কাছে । স্যোশাল মিডিয়ার কি অমোঘ শক্তি! আসলে এই সামাজিক পরিসরগুলি আমাদের জানার সীমানাকে দিগন্ত-বিস্তারি করেছে । বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে, মানুষের সঙ্গে আমাদের নৈকট্য সাধনে আমরা এই সামাজিক পরিসরগুলিকে কিভাবে এবং কতটা ব্যবহার করবো সেটাই গুরুত্বপূর্ণ ।

    সংশপ্তক: এই যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের লোকসংস্কৃতির সাথে সহজ আদান প্রদানের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করার ক্ষেত্রটি: সেই সম্বন্ধে আমাদের বাঙালিদের সচেতনতা কতখানি ঘটেছে বলে মনে হয় আপনার?
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজীবন ও সংস্কৃতির আদান-প্রদানে স্যোশাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সংশয় নেই । বাংলা ভাষাতেও বেশ কয়েকটি ফেসবুক পৃষ্ঠা ও ফেসবুক কেন্দ্রীক ওয়েব পত্রিকা লোকসংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে চলেছেনতবে এ বিষয়ে বাঙালি ব্যহারকারীদের সচেনতা কোন স্তরে রয়েছে সে সম্পর্কে মতামত জানানোর যায়গায় আমি আপাতত নেই । কয়েকদিন আগে একটি বাংলা টেলিভিষন চ্যানেলেলোকউৎসবশিরোনামে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে নানা ধরণের লোকগান ও লোকজীবন তুলে ধরেছিল যথেষ্ঠ আন্তরিকতায় । তারপর ফেসবুকে সেই প্রয়াসকে কেন্দ্র করে বহু মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন ও লোক-সংস্কৃতির প্রসারের পক্ষে বলিষ্ঠ মত ব্যক্ত করেছেন । এটি একটি ছোট নমুনা মাত্র । বলা এই জন্য যে লোক-সন্সকৃতির আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে স্যোশাল মিডিয়া যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে । দরকার সচেনতা ।

    সংশপ্তক: সোশ্যাল মিডিয়া স্বভাবতঃই সমাজ দর্পনের ভুমিকায় একটি কার্যকরী মাধ্যম। আমাদের বাঙালি সমাজের প্রেক্ষিতে এই দর্পনের বর্তমান প্রতিচ্ছবিটি কতটা আশাব্যঞ্জক আপনার কাছে?
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  শিল্প-সাহিত্য সমাজের দর্পণ, সত্য । ফেসবুককেন্দ্রীক অনেক শিল্প-সাহিত্য সৃষ্টিতেও সমাজ সত্যের প্রতিফলন দেখা যায় । তবুও ফেসবুক সমাজ-দর্পণের কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে এমন বলাটা বাড়াবাড়ি । কেননা এটাও তো সত্যি যে জুকেরবার্গের ফেসবুকের বাজারী মূলধন বা মার্কেট ক্যাপিটাল এখন ২৫০ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে । এহেন বহুজাতিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সমজ-দর্পণ হয়ে ওঠার কি দায় ? আর এ কথা্টাও মান্য যে বিরাট সংখ্যক মূল স্রোতের মানুষ এখনও তো ফেসবুকের আওতার বাইরেই । তাই আমার ধারনা সমাজ-চৈতন্য জাগরুক করতে আড়াইশবছর বয়সী মুদ্রন মাধ্যমের যে কার্যকারিতা, তার সঙ্গে টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা দশ বছর বয়সী ফেসবুকএখনও অর্জন করতে পারেনি । তবুও ফেসবুকের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের যে চর্চা, সেগুলি সমাজ সচেতন হয়ে উঠুক এটা তো চাইবো, আর সেই চাওয়াটা মেটানোর কাজে এই সামাজিক পরিসরটির ব্যহার করতে পারি ।

    সংশপ্তক:   একথা আমরা সকলেই জানি, ইংরেজী ও হিন্দীর দূর্দমনীয় প্রভাবে আমাদের দৈন্দিন জীবনচর্চায় ভাষা হিসেবে বাংলার প্রাসঙ্গিকতা দ্রুতহারে ক্রমহ্রাসমান। কিন্তু এই সোশ্যাল মিডিয়ার অভূত্থানে বাংলা ভাষার পুনরুজ্জীবনে কি কোন আশার আলো চোখে পড়ছে আপনার?
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  এক কথায় হ্যাঁ বা না বলে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায় না । ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে একথা মেনে নেওয়া হয়েছে যে আঞ্চলিক ভাষাগুলির বিপ্ননতার অন্যতম কারণ বিশ্বায়নের আগ্রাসন । রুঢ় হলেও একথা সত্য যে আজকের তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশ তাদের দৈনন্দিন জীবনে আলাপচারিতায়, কথাবার্তায় বাংলা ভাষার ব্যবহার ক্রমশ কমিয়ে দিচ্ছেন । মাতৃভাষার বিপন্নতা তাদের কাছে বড় কিছু চিন্তার বিষয় নয় হয়তো । একা ফেসবুক সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করবে এমন ভরসা করার কোন কারণ আছে বলে আমি মনে করি না । তবে একথা ঠিক যে ফেসবুকের পরিসর একটা ভালো সম্ভাবনার দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছে । এর ব্যবহারকারীরা বাংলায় গল্প,কবিতা,প্রবন্ধ লিখছেন, বন্ধুদের বাংলায় বার্তাও পাঠাচ্ছেন অনেকেইএখন বাংলা টাইপ করার অনেক সফটওয়ার এসেছে এমনকি মোবাইল ফোনও ব্যহার করা যাচ্ছে বাংলা লিখতে । ফেসবুক কিছুটা সুযোগ এনে দিয়েছে, কিন্তু নিজের মাতৃভাষাকে ভালোবাসার তাগিদটাতো তো অর্জন করতে হবে ! কম্পিউটারের সবকটি অপারেটিং ব্যবস্থায় বাংলা ব্যবহার করা যায় অথচ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বৃহৎ অংশটাই ইংরাজি হরফে বাংলা লিখে চলেছেন । বাংলা লেখার কোন তাগিদ বোধ করেন না । সুতরাং, একা ফেসবুক বাংলা ভাষার উন্নয়ন ঘটিয়ে দেবে এমন গল্প শোনানো অবান্তর ।

    সংশপ্তক: আমাদের এই দ্বিখন্ডিত বাংলায় কাঁটাতারের দূরত্ব ঘুচিয়ে দুই পারের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও প্রীতির সম্পর্কের উন্মেষ ঘটিয়ে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষকে পরস্পরের কাছাকাছি নিয়ে আসার বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার ভুমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে আপনার মনে হয়।
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং তা কিছুটা হচ্ছেও । কিন্তু ধর্মনামক সেই ছুঁতে না পারা, দেখতে না পারা বস্তুটির এমন প্রবল ক্ষমতা অতি সহজে দুপারের সম্ভাব্য পারস্পরিক প্রীতিপূর্ণ সম্পর্কে ফাটল ধরিয়ে দিতে পারে । অন্তর্জালের এই সামাজিক পরিসরে, এপার-ওপার একই জাতিসত্তার দুটি অংশের সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ককে জোরদার করতে পারে । এটা আমাদের মনে রাখার বিষয় আর সেই সংবেদনশীলতা বজায় রাখাটাই কাম্য ।

    সংশপ্তক: মানুষের ইতিহাস জাতিতে জাতিতে বিদ্বেষ, সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে দাঙ্গা, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে সংঘর্ষের ইতিহাস। সোশ্যাল মিডিয়ার এই উত্থান কি সেই ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দিয়ে আবিশ্ব মানুষকে জাতি ধর্ম সম্প্রদায়ের উর্ধে উঠে একটা মানবিক বিশ্ব গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারবে বলে মনে হয় আপনার?
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  না, কখনোই তেমন মনে করি না ।  জাতিবিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, কিংবা রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে সংঘর্ষ এসবই তো ধনতান্ত্রিক বন্দোবস্তের উপজাত পুঁজিবাদ তার কায়েমি স্বার্থে এগুলো জিইয়ে রাখে । সুতরাং মার্কিন পুঁজিবাদ শিরোমনি জ্যাক ডরসি, বিল গেটস, জুকের বার্গরা মানবিক বিশ্বগড়ার কাজে সাহায্য করবে এমন ভাবনা যারই থাকুক আমার নেই বিন্দু মাত্র । তবে একথাও সত্য যে  উদার মানবিক বিশ্ব গড়ার শপথ নিয়ে অনেক তরুণ এই সামাজিক পরিসরগুলিকে সফলভাবে কাজে লাগাচ্ছেনঅভিজিৎ রায়েরা আপন প্রাণ দিয়ে তা দেখিয়েছেন ।

    সংশপ্তক: আমাদের সমাজ ও সভ্যতায় দৈনন্দিন জীবনের পরিসরে অন্যায় অত্যাচার, শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের হাতিয়ার হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ার ভুমিকা কতটা কার্যকরী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  সারা বিশ্ব জুড়েই এই সামাজিক পরিসরগুলি যোগাযোগ বা জন সংযোগের শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে । বাংলা দেশের শাহবাগ আন্দোলনের ক্ষেত্রে এই জনসংযোগ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল, আমরা দেখেছি । বিভিন্ন দেশের প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরের ব্যক্তিত্বরা তাঁদের কথা জানানোর জন্য ফেসবুক, ট্যুইটারের স্মরণ নিচ্ছেন । রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলি তাদের প্রতিবাদী আন্দোলনের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন ফেসবুকের পৃষ্ঠা ব্যবহার করে । ২০১১তে মিশরের শাসক মুবারকের বিরুদ্ধে শক্তিশালী গণআন্দোলন গড়ে তুলেছিল স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের একটা বড় অংশ ২০১১র ১৪ই জানুয়ারি আমরা খালেদ বলছিনামে একটি ফেসবুক কমিউনিটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ প্রদর্শনের ডাক দিয়েছিল । আতঙ্কিত মিশর প্রধাণমন্ত্রী ২৬শে জানুয়ারি ফেসবুক, ট্যুইটার সহ সামাজিক অন্তর্জাল মাধ্যমগুলিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন । এর ১৮দিন পরে মিশরের জাগ্রত জনমত মোবারককে পদত্যাগে বাধ্য করেছিল । এরকম ঘটনা আরো আছে । আমাদের চোখের সামনেই বাংলাদেশের শাহবাগ আন্দোলন । সুতরাং প্রতিবাদ-প্রতিরোধের হাতিয়ার হিসাবে স্যোশাল মিডিয়া যে কার্যকরী ভুমিকা নিচ্ছে তাতে সংশয় নেই । মনে হয় আগামী দিনে এই ভুমিকার আরো ব্যাপ্তি ঘটবে ।

    সংশপ্তক: সংশপ্তকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে এই সাক্ষাৎকার শেষ করবো একটি কথাই জানতে চেয়ে: সোশ্যাল মিডিয়ার এই হঠাৎ উত্থান আপনার ব্যক্তিগত জীবনে কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে, তার প্রকৃতি ও বিকাশ সম্বন্ধে একটু যদি আলোকপাত করেন!
    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়:  শুনতে পাই বটে ফেসবুকএর ভার্চুয়াল বন্ধুত্বের জগত অনেকের ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনকে বিপন্ন করেছে, অপরাধচক্রের শিকার হওয়ার ঘটনাও কম নয় ।ফেসবুকব্যবহারকারীদের একটা বড় অংশ, হয়তো অর্ধেকেরও বেশি নিজের পরিচয় গোপন রাখেন বা ছদ্মনামে ব্যবহার করেন । নিজের লুকনোর কিছু আছে তাই করেন । আমার লুকনোর কিছু নেই তাই আমার ব্যক্তি বা পারিবারিক জীবনে এই সামাজিক পরিসরের উথ্বান কোন অপ-প্রভাবের ছায়া ফেলতে পারেনি তবে হ্যাঁ, অনেক ভালো বন্ধু পেয়েছি যাদের অনেকেই ভার্চুয়াল বন্ধুত্বের ঘেরাটোপ পেরিয়ে আমার পারিবারিক বন্ধুর আওতায় চলে এসেছেন ফেসবুক বা এইরকম সামাজিক পরিসর ধোয়া তুলসীপাতাএমন মনে করার কোন কারণ নেই । গ্রহণ বা বর্জন করার ক্ষমতা ব্যক্তির সামাজিক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় । সুতরাং  এর শুভকর দিকটা গ্রহণ করবো এবং অ-শুভ প্রভাব এড়িয়ে যাবো এটা বক্তির নিজেকেই অর্জন করতে হবে বলেই আমি মনে করি । অন্তর্জাল দুনিয়ার এই সামাজিক পরিসরগুলি ব্যক্তি আমিকে কতটা প্রভাবিত করেছে তার আভাস অনেকটাই দিয়েছি প্রথম প্রশ্নের উত্তরে । সত্তরছোঁয়া বয়সে আমি অন্তর্জালের এই নবতম উদ্ভাবনের মুখোমুখি হয়েছি । মাটির ঘরে চটের থলেতে বসে লন্ঠনের আলোয় পড়াশোনা করে এখন বৈদ্যুতিন বার্তা পাঠাচ্ছি, অতি সামান্য কলম-চর্চার অকিঞ্চিৎকর ফসলটাও কম্পিউটার কিবোর্ড চাপ দিয়ে অন্তর্জালে ছড়িয়ে দিচ্ছিসকলের জীবন-চক্রের অনিবার্য নিয়ম স্কুল-কলেজের বন্ধুর হারিয়ে গিয়ে চাকুরী জীবনে নতুন বন্ধুর দল চলে আসে । আর তারপর দেহপট সনে নট সকলি হারায়এর মত বন্ধুহীন হতে থাকে । ফেসবুকআমাকে এই চলমান সত্যটিকে অস্বীকার করতে শিখিয়েছে, আমাকে এক ঝাঁক উজ্বল বন্ধু দিয়েছে । এটাই আমার ব্যক্তিজীবনে ফেসবুকবা সামাজিক পরিসরগুলির সেরা প্রভাব । শেষ করি একটা কথা বলে । আমাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে সংসপ্তক’, অথচ তা তো আমারই জানানোর কথা সংসপ্তককে । আমার  সাক্ষাৎকার প্রকাশের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বলেআমি কৃতজ্ঞ ।



    ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়: সাংস্কৃতিক কর্মী কবি ও নাট্যব্যক্তিত্ব সম্পাদক- অন্তর্জাল পত্রিকা অন্যনিষাদ
    Comments
    1 Comments

    1 comment:

    1. খুব ভাল লাগলো সাক্ষাৎকারটি।

      ReplyDelete

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.