‘অণু’কথায় বনফুল
রবীন্দ্রনাথের ভাষায়
– ‘মানুষ’ গল্পপোষ্য
জীব। গল্প
শোনা, গল্প
করা, এবং
গল্প বানানো
মানুষের জন্মগত
গুণ । ছোটগল্প মূলত আধুনিক
কালের সৃষ্টি।
আগে কথা,
লোককথা , রূপকথা,
ফার্সি গপ্
, কিসসা , ইংরেজি
টেল, ফেবল,
প্যারাবেল ইত্যাদি
মাধ্যম পেরিয়ে
আমরা এখন
ছোটগল্প- র
কালে এসে
পৌঁছেছি ।ভারতবর্ষ তথা
বাংলা সাহিত্যে
কথাশিল্পের প্রাণপুরুষ
কিংবা ছোটগল্পের
কিংবদন্তী জনক
প্রধানত রবীন্দ্রনাথই
। আমেরিকায়
ন্যাথানিয়েল হর্ন,
এডগার অ্যালান
পো , ফরাসি
তে মপাঁসাঁ
, রুশে চেকভ-
এভাবেই ছোটগল্পের
বিকাশ ও
উদ্ভব । ছোটগল্প প্রসঙ্গে সাহিত্যিক , অধ্যাপক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
বলেছেন – “ ছোটগল্প হচ্ছে প্রতীতি
জাত একটি
সংক্ষিপ্ত গদ্যকাহিনী
যার একতম
বক্তব্য কোনো
ঘটনা বা
কোনো পরিবেশ
বা কোনো
মানসিকতাকে অবলম্বন
করে ঐক্য-
সংকটের মধ্য
দিয়ে সমগ্রতা
লাভ করে”
।
ছোটগল্প যদি
ছোট পরিসরের
‘সংক্ষিপ্ত গদ্যকাহিনী’
হয় , তবে
অণুগল্প কী?
ছোটগল্প আর
অণুগল্পের মধ্যেই
বা ফারাক
কী ? ছোটগল্পের
কালে হঠাৎ
করে অণুগল্প
রচনার প্রাসঙ্গিকতাই
বা কী
???
বিশেষ কোন
ঘটনার বা
মানসিকতার ওপর
লিখিত হঠাৎ
বিদ্যুৎ চমকের
মতন আলোকসম্পাত
ই হোল
অণুগল্প।
ছোটগল্পের তুলনায়
পরিসর , বক্তব্য,
ভাবনা
ও আয়তনের
দিক থেকেও
ছোট হয়-
অণু গল্প।
এখন ভাবনা
– জীবন – সময়
, এবং জীবন যাপনের আদব
কায়দা সংক্ষিপ্ত
থেকে সংক্ষিপ্ত
তর হয়ে
উঠেছে। ক্রিকেটে
যেমন টেস্ট
থেকে ওয়ান
ডে, ওয়ান
ডে থেকে
টি-টোয়েন্টি
তেমন সাহিত্যের
ক্ষেত্রে ছোটগল্পের
পাশাপাশি অণুগল্প
।
আমাদের মূল
আলোচ্য বিষয়
– অণু গল্পের
আঙিনায় বনফুল
।
বনফুলের লেখা
‘ছোটগল্প’ নামক
একটি কবিতায়
তিনি বলেছিলেন
–
‘ নদীর বুকে
আলোর ঝলক,
গালের উপর
চূর্ণ অলক,
মুচকি হাসি
ত্রস্ত পলক
হলদে পাখির
টিউ ।
বর্ষা ঘন
রাত্রি নিবিড়
,
‘দেশ’ রাগিণীর
সুমিষ্ট মীড়
,
গঙ্গা ফড়িং
, বিহঙ্গ নীড়
টিকিট কেনার
কিউ।
জোনাকিদের নেবায়
জ্বলায়
রূপসীদের ছলায়
কলায়
প্রতিদিনের থামায়
চলায়
ছোট গল্প
আছে ।
পাহাড় কভু
, কখনও মেঘ
কখনও থির,
কখনও বেগ,
কান্না কভু
, কভু আবেগ
বিদ্যুতেরি নাচে
এই আছে
এই নেই
,
ধরতে গেলে
বদলে যে
যায়
একটি মুহূর্তেই
!
ছোটগল্প বহুরূপী
শিল্পী স্বয়ম্বরা
তাদের কাছেই
মাঝে মাঝে
দিয়ে ফেলেন ধরা ।। -
বনফুলও ধরা
দিয়েছিলেন ছোটগল্পের শিল্প
সুষমার কাছে
। প্রায়
সাড়ে পাঁচশোর
বেশি গল্প
লিখেছেন তিনি
। বনফুলের
অসংখ্য গল্প
কেই নির্দ্বিধায়
অণু গল্প
বলা চলে।
যেমন – চম্পা
মিশির, চুনোপুঁটি,
হিসাব, ছাত্র,
দুই ভিক্ষুক,
অধরা, প্রজাপতি,
যুগল স্বপ্ন
, হাসির গল্প,
দর্জি, চৌধুরী,
মানুষ, শ্রীপতি
সামন্ত, অজান্তে,
সমাধান, ছেলে
-মেয়ে , বিধাতা,
তর্ক ও
স্বপ্ন, নিমগাছ,
ক্যানভাসার, বৈষ্ণব
শাক্ত,তপন,
ছোটলোক ইত্যাদি
ইত্যাদি ।
রবীন্দ্রনাথ বনফুলকে
বলেছিলেন – ‘জগতের আনাচে-কানাচে
আড়ালে-আবডালে
ধূলিধূসর হয়ে
আছে যারা
, তুচ্ছতার মূল্যেই
তাদের মূল্যবান
করে দেখাবার
কাজে কোমর
বেঁধে বেরিয়েছে
তোমাদের মতো
বিজ্ঞানী মেজাজের
সাহিত্যিক’।
কিন্তু বনফুল
শুধুই ‘বিজ্ঞানী
মেজাজের’ সাহিত্যিক
নন । তিনি একজন কবিও
বটে। যার
সাহিত্য সাধনায়
নিহিত হয়েছে
প্রকৃতি-মানুষ-
‘সত্য সুন্দর’।
‘জংলী বাবু’র ছোটগল্প অথবা
‘অতি ছোট
গল্পে’ ( অণু গল্প) তিনি
জীবনের রন্ধ্রে
ডুব মেরেছেন
ডুবুরির মত
। জীবন
অতলে কেবল
মণি-কাঞ্চন
থাকে না।
থাকে চাওয়া-পাওয়ার বিভেদ, স্বপ্ন-
বাস্তবের ফারাক
আর থাকে
যন্ত্রণা- আনন্দের
এক সুস্বাদু
ককটেল। বনফুলের
সাহিত্য রচনা
সাম্প্রতিক নয়
, কিন্তু চরম
প্রাসঙ্গিক। সাহিত্যিকেরা
ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা,
বনফুল ‘মানুষের
নিয়তি বলতে
চান’ । জীবনের বাঁকে বাঁকে
যে অসামঞ্জস্যতা
,বৃন্তে যেখানে
ফুলের বদলে
কেবল কাঁটার
জ্বালা- সেই
রসদ নিয়েই
বনফুল সাহিত্যে
‘ফুল’ ফুটিয়েছেন।
বনফুলকে গল্প
বানাতে হয়নি,
পরিচিত পথের
ধারের গজিয়ে
ওঠা , টিকে
থাকা সুখ-অসুখের ছবিই এঁকেছেন
তিনি । মন ভরিয়ে দেওয়া
আলো নয়,
মন সরিয়ে
নেওয়া কালোকেই
তিনি প্রাধান্য
দিয়েছেন তাঁর
শব্দ তুলির
টানে । তাঁর গল্পের সৌন্দর্য
বলতে- আগাগোড়া
সাদামাটা ,সহজ
শব্দ ও
যথাযথ ভাষার
আঙ্গিকে তুমুল
মর্মভেদী মনস্ত্বত্ত
এবং শেষে
গিয়ে তুমুল
শরক্ষেপণ , যা
মনের গভীরে
গিয়ে আন্দোলিত
করে প্রতি
শিরা উপশিরা
।
বনফুলের অণুগল্পের
আলোচনায় এবার
আসা যাক।
প্রথমেই ‘চম্পা
মিশির’ গল্পের
কথা বলা
যাক। এক
পরোপকারী সাধারণ
মানুষের টুকরো
কিছু ঘটনার
প্রেক্ষিতে চয়িত
গল্পটি। ঘটনার
আন্তরিক উপস্থাপনা
এবং চরিত্রের
নিটোল অঙ্কনে
গল্প টি
আলাদা মাত্রা
পায় । গল্পের শেষটি যদিও
কাব্য ধর্মী
,গভীর ব্যাঙ্গনালব্ধ
– ‘ মানুষেরই ওষুধ
দিয়েছিলাম ভেড়াটাকে
।বাজি জিতেছে যখন,
উপকার হয়েছে
নিশ্চয়ই । মনে হচ্ছে , চম্পা
মিশিরের মতো
লোকেরা কোথায়
গেল, যারা
কেবল দুর্বল
মানুষদেরই সাহায্য
করত, বাঙালী
বিহারী হিন্দু
মুসলমান – এসব
ভেদ ছিলনা
যাদের কাছে
... ?
বাড়ি ফিরে
দেখলাম, শরবতিয়া
লেবুর গাছটা
শুকিয়ে যাচ্ছে।
তার চারদিক
খুঁড়িয়ে ,সার
দিয়ে, জল
দেওয়ালাম ভালো
করে। গাছটাকে
বাঁচাতেই হবে’
।
শেষের কয়েকটি
পঙ্কতিই গল্পটির
সুষমা ও
মাধুর্য দ্বিগুণ
করে তুলেছে।
আরও কয়েকটি
গল্প উল্লেখ করা যেতে
পারে যেখানে
একটি ব্যাক্তি
বা ব্যাক্তি
সত্তা উদ্ভাসিত
হয়েছে, কিন্তু
গল্পটি কোথাও
ব্যাক্তিগত হয়ে
ওঠেনি, বরং
অনেকাংশে সার্বিক
হয়েছে। যেমন
– অজান্তে, সমাধান,
মানুষ, ছেলে-
মেয়ে , ছোটলোক,
হাসির গল্প
প্রভৃতি। ‘অজান্তে’ গল্পে ওপর
তলা-নীচের
তলার মানুষের
মানসিকতা ও
ব্যাবহারের এক
সূক্ষ্ম পার্থক্য
চোখে পরে
অতি ক্ষুদ্র
পরিসরের মধ্যেই
।‘সমাধান’
ও ‘ছেলে-
মেয়ে’ র
বক্তব্য প্রায়
এক বলা
চলে। ‘ছেলে-
মেয়ে’ গল্পে
দুই নারীর
পুরুষ জাতির
প্রতি অশ্রদ্ধা
অথচ ‘ছেলে’
সন্তানের বিপুল
আকাঙ্ক্ষা আর
‘সমাধান’ গল্পে
‘বুচিঁ’ নামক
কদাকার মেয়ের
জন্মে সমস্যা
ও তাঁর
মৃত্যুতে ‘সমাধান’
- করুণ হলেও
বাস্তবিক ও
নগ্ন সত্যই
বটে। ‘মানুষ’
গল্পটি বনফুলের
জীবনদর্শনের এক
অন্যতম শ্রেষ্ঠ
উদাহরণ। দুই
ভিক্ষুক পাশাপাশি,
একজন রুগ্ন
–আরেকজন যুবতি।
একজনের মূল
ধন ব্যাধি,
আরেকজনের যৌবন।
অসাধারণ দৃশ্যকল্পের
মাধ্যমে বনফুল
স্বপ্ন-বাস্তবের
খাঁটি চিত্র
এঁকেছেন। ‘হাসির
গল্প’ নামক
লেখাটিতে হরিহর’
নিজে অসুন্দর,ব্যাধিজর্জর । পাশে অসুস্থ কন্যা,
তাঁর সাথে
করুণ- অভাব
গ্রস্ত জীবন,
কিন্তু তিনি
তখন হাতল
ভাঙ্গা চেয়ারে
হাসির গল্প
লিখতে ব্যাস্ত
–কারণ তিনি
হাসির গল্পেই
খ্যাত। এ
যেন সাদা
–কালো সৌন্দর্য
। পাশাপাশি
‘ছোটলোক’ গল্পটিতে
এক রিকশাওলার
সম্মান বোধ
আমাদের নতুন
করে ভাবায়,
বোঝায় আমাদের
নাগরিকতা এখনও
কতটা ঠুনকো
ও শিথিল
।
‘মানুষের মন’
গল্পে সংস্কার
ও অন্ধতার
এক অপূর্ব
মনস্ত্বত্ত ফুটিয়ে
তুলেছেন । স্নেহের আবহে ও
অন্ধবিশ্বাসে মানুষ
কেমন ভাবে
অদৃষ্টের কাছে
মাথা নোয়ায়
তাঁর ছবি
জীবনের ক্যানভাসেই
এঁকেছেন বনফুল।
‘নিমগাছ’ গল্পটি
আবার এক
অপূর্ব কাব্যধর্মী
ও সম্পূর্ণ
ব্যাঞ্জনা রূপী।
একটি নিমগাছের
সাথে এক
গৃহবধূর তুলনা
টেনে এক
আন্তরিক রূপ
দিয়েছেন লেখক-
‘ নিমগাছটার ইচ্ছে
করতে লাগল
লোকটার সঙ্গে
চলে যায়।
কিন্তু পারলে
না। মাটির
ভিতর শিকড়
অনেক দূর
চলে গেছে।
বাড়ির পিছনে
আবর্জনার স্তূপের
মধ্যেই দাঁড়িয়ে
রইল সে
।
ওদের বাড়ির
গৃহকর্ম- নিপুণা
লক্ষ্মী বউটার
ঠিক এই
দশা।
বনফুলের শ্রীপতি
সামন্ত গল্পে
এক আদ্যপান্ত
বাঙালীর রুচি
ও নিপাট
বাঙালিয়ানার পরিচয়ে
আমরা বিস্মিত
ও আনন্দিত
হই। আবার
একি সাথে
বাঙালীর হিন্দির
বলার কায়দায়
এক সরল
হাস্যরসের ও
উদ্রেক ঘটে
– “কটা বাঙালী
আপ দেখা
হ্যায়? জাত
তুলকে গালাগালি
দেওয়া কোন
দিশি ভদ্রতা
রে বাপু!”
‘বিধাতা’ গল্পটিও
বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
প্রতিদিনের মন্দিরে
ভিড় দেখে
বেশ টের
পাওয়া যায়
আমাদের ঈশ্বর
ভক্তির আড়ালে
ফরমায়েশ জারির
লম্বা তালিকাটি।
বনফুলও তাঁর
গল্পে সে
কথাই সাদামাটা
ভাবে বলে
গেছেন, গল্পের
শেষে বিধাতার
ভূমিকাটিও বেশ বাস্তবসম্মত- “ ব্রম্ভার বাসা হইতে ভালো
তৈল আসিল।
বিধাতা তৎক্ষণাৎ
তাহা নাকে
দিয়া গাঢ়
নিদ্রায় অভিভূত
হইয়া পড়িলেন।
আজও ঘুম
ভাঙে নাই”
এখনকার বাস্তব
দশায় এটি
স্বীকৃত;ঈশ্বর
বলে কেউ
যদি থেকেও
থাকেন , তিনি
অবশ্যই ঘুমে
আচ্ছন্ন। এই
প্রসঙ্গে ‘নরক
গুলজার’ নাটকের
একটি গান
মনে পড়ে
যায় –
‘ কেউ কথা বোলোনা,
কেউ শব্দ
কোরোনা,
ভগবান নিদ্রা
নিয়েছেন,
গোলযোগ সইতে
পারেন না
...’
এখন একুশ
শতকে আমরা দাঁড়িয়ে আছি।
এক পাশে
প্রগতির নামে
ভ্রষ্টাচার- আরেকপাশে
ধর্মের নামে
ব্যাবসায়িক মনোবৃত্তি
– আর অন্যপাশে
সিভালেরির নামে
নপুংশকতা। বনফুল
সময়ের দিক
থেকে না
হলেও লেখনীর
দিক থেকে
সম্পূর্ণ এই
সময়ের এই
কালের। ‘দুধের
দাম’ গল্পটিতে
এক বৃদ্ধ
মহিলার
অসহায়তা ও
পাশাপাশি এক
কুলির আন্তরিক
ব্যাবহার এবং
কিছু উগ্র
নাগরিকের ভণ্ডামির
সিভালেরি লেখক
চমৎকার ফুটিয়ে
তুলেছেন। ‘যুগল
স্বপ্ন’ গল্পটির
আঙ্গিক ও
বক্তব্যও এই
যুগেরই। দুই
যুবক যুবতী
একান্ত হয়েও
পূর্ব প্রেমের
স্বপ্নে বিহ্বল।
এ আমাদের
রোজের চলতি
জীবনেরই ছবি।
যেখানে আড়ালে
প্রতিনিয়ত হাজার
শুঁয়োপোকা ‘প্রজাপতি’
হয়ে ঘুরে
বেড়ায়, সেইখান
থেকেই লেখক
নিজের কালি
নিয়ে এসেছেন।
আর আমাদের
চোখে আঙ্গুল
দিয়ে দেখিয়েছেন
রঙিন চশমার
আড়ালে ধূসর
চিত্রপট।
বনফুলের গল্প
মূলত বিন্দুতে
সিন্ধুর আস্বাদ
, একে অণু
গল্প বলা
যায় কিনা
এ নিয়ে
অনেকেই প্রশ্ন
তুলতে পারেন
। কিন্তু
রবীন্দ্র ছোটগল্পের
তুলনা টেনে
বলতে গেলে
বনফুলের গল্প
কে অণু
গল্প নির্দ্বিধায়
বলা যেতে
পারে । রবীন্দ্র গল্পের
চরিত্র, ঘটনা,
মনস্ত্বত্ত, প্রাসঙ্গিক
প্রেক্ষিত চয়ন
সবই খানিক
দীর্ঘ । বনফুল সার্থক গল্পকার
তাঁর গল্পের
আঙ্গিক বা
রচনা ভঙ্গী
কখনই গল্পকে
অসম্পূর্ণ বা
পাঠক কে
অতৃপ্ত করেনি
। তাই
এক্ষেত্রে গল্পের
বিভাজন ছোটগল্প
আর অতি
ছোটগল্প হলেই
শ্রেয় হবে
বলে মনে
হয় । যদিও এ বিভাজন
পাঠক ও
প্রকৃত সমালোচকের
হাতে তুলে
দেওয়া হোক।
আমি কেবল
নিমগ্ন পাঠক
হয়ে নিজের
কিছু মুগ্ধতা
বর্ণনা করলাম মাত্র । বনফুলের সমগ্র স্নিগ্ধ
‘ফুল’ গন্ধময়
সাহিত্য এই
ছোট্ট পরিসরে
তুলে ধরা
অসম্ভব।শেষে রবীন্দ্রনাথের
ভাষাতেই বলা
যায় – ‘আগেকার সাহিত্য চোখ
ভোলানো সামগ্রী
নিয়ে , এখনকার
সাহিত্য চোখ
এড়ানো সাহিত্য
নিয়ে । আমাদের প্রত্যক্ষ দৃষ্টির
সীমানা বাড়িয়ে
দিচ্ছে উপেক্ষিত
অনতি- গোচরের
দিকে। তাতেও
রস আছে,
সে কৌতূহলের
রস’ । সেই ‘কৌতূহলের’ ঝোঁকেই
আমরা বনফুলের
গল্প থেকে
জীবনের অতল
গভীরে প্রবেশ
করি। যেখানে
বনফুল তাঁর
গল্পের মাধ্যমে
হাত ধরে
আমাদের সেই
কালসমুদ্র থেকে
এই মহানদীতে
নিয়ে এসেছেন,
যা চলতে
থাকবে যতদিন
বাঙালি ও
বাংলা সাহিত্য
জীবিত থাকবে।
(ঋণ স্বীকারঃ
‘বর্ণময় বনফুল’-
ডঃ শ্রাবণী
পাল)