কাদম্বরীদেবী ও রবীন্দ্রনাথ
কাদম্বরীদেবী ও রবীন্দ্রনাথ
[১]
কাদম্বরী দেবী ছিলেন
জ্যোতিরিন্দ্রনাথের (নতুন দাদা )
স্ত্রী, নতুন বউঠান। বিবাহকালে
কাদম্বরীর বয়স ছিল ৯ বছর, জ্যোতিরিন্দ্রনাথের
১৯ । কাদম্বরী
কিশোর রবির থেকে মাত্র দু বছরের বড় ছিলেন। এই সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ লেখেন ঃ এমন
সময় একদিন সানাই বাজল বারোয়াঁ সুরে । বাড়িতে এল
নতুন বউ,
কচি শাম্ লা হাতে স রু সোনার চুড়ি ।পলক ফেলতেই ফাঁক হয়ে গেল
বেড়া ,
দেখা দিল চেনাশোনার বাহির সীমানা থেকে মায়াবী দেশের নতুন
মানুষ । দূরে দূরে ঘুরে বেড়াই , সাহস হয় না
কাছে আসতে । ও এসে বসেছে আদরের আসনে , আমি যে হেলাফেলার ছেলেমানুষ ।
বাহির -মহলে বড় হওয়া
রবির নতুন বউঠানকে নিয়ে কৌতূহলের অন্ত ছিল না। উপনয়নের সময় তিনি দুই দেবরদের
হবিষ্যান্ন রান্না করে দিতেন ; কবি এই বিষয়ে বলেন, ম্ নে পড়ে প ইতের সময় বউ ঠাকরুন ( কাদম্বরী দেবী)
আমাদের দুই ভাইয়ের হবিষ্যান্ন
রেঁধে দিতেন, তাতে পড়ত গাওয়া ঘি । এ তিন্ দিন তার স্বাদে - গন্ধ -এ মুগ্ধ করে রেখেছিল লোভীদের ।
[২]
কাদম্বরী ও জ্যোতি থাকতেন বাড়ি -ভেতরের ছাদের পাশের ঘরে ; কাজেই ছাদের পুরো দখল ছিল
কাদম্বরীর । সেখানে পুতুল
বিয়ের নিমন্ত্রন হত রবির ।
কাদম্বরী ভালো রাঁধতে ও খাওয়াতে ভালোবাসতেন ।সেখানে আদর করে খাওয়াতেন এই ছেলেমানুষ
দেবরটিকে । তিনি মাঝে মাঝে যখন আত্মীয় বাড়িতে যেতেন, তখন রবি তার ঘরের দামি জিনিষ লুকিয়ে ঝগড়া করতেন তার সাথে ।
এভাবেই চাকরদের মহলে বড় হওয়া
রবি পেলেন মানুষের সঙ্গ- স্নেহ । ছাদের
ঘ্ রে এল পিয়ানো, আর বউবাজারের আসবাব ।এই বিষয়ে কবি বলেন ঃ এইবার ছুটল আমার
গানের ফোয়ারা । জ্যোতিদাদা পিয়ানোর উপর হাত চালিয়ে নতুন নতুন ভঙ্গিতে ঝমাঝম সুর
তৈরী করে যেতেন , আমাকে রাখতেন
পাশে ।তখনই তখনই সেই ছুটে - চলা সুরে কথা
বসিয়ে বেঁধে রাখবার কাজ ছিল আমার। এভাবেই অনেক গান সৃষ্টি হয়েছে কবির ।
[৩]
রবীন্দ্রনাথের বহু গল্পে বা উপন্যাসে নায়িকাদের পতির প্রতি ভালোবাসা+ শ্রদ্ধা+রুচিবোধ বোঝাতে এই একটি বর্ণনা বহু স্থানে পাওয়া যায় [ ঘরে -বাইরে, চোখের বালি প্রভৃতি ] ,দিনের শেষে ছাদের উপর পড়ত মাদুর আর তাকিয়া । একটা রূপোর রেকাবিতে বেলফুলের গোড়ে মালা ভিজে রুমালে,পিরিচে একগ্লাস বরফ দেওয়া জল আর বাটাতে ছাঁচিপান ।
বউ -ঠাকরুন গা ধুয়ে চুল বেঁধে বসতেন । গায়ে একখানা পাতলা চাদর উড়িয়ে আসতেন জ্যোতিদাদা , বেহালাতে লাগাতেন ছড়ি , আমি ধরতুম চড়া সুরের গান ।গলায় যেটুকু সুর দিয়েছিলেন বিধাতা তখনো তা ফিরিয়ে নেন নি । সূর্য -ডোবা আকাশে ছাদে ছাদে ছড়িয়ে যেত আমার গান। হু হু ক রে দখিনে বাতাস উঠত দূর সমুদ্র থেকে, তারায় তারায় যেত আকাশ ভরে। রবি তার ন তুন দাদা , ন তুন বউঠানের স ংগে তাদের আদরে - প্রশ্রয়ে- সাহচর্যে এইভাবে সময় কাটাতেন ।
রবীন্দ্রনাথের বহু গল্পে বা উপন্যাসে নায়িকাদের পতির প্রতি ভালোবাসা+ শ্রদ্ধা+রুচিবোধ বোঝাতে এই একটি বর্ণনা বহু স্থানে পাওয়া যায় [ ঘরে -বাইরে, চোখের বালি প্রভৃতি ] ,দিনের শেষে ছাদের উপর পড়ত মাদুর আর তাকিয়া । একটা রূপোর রেকাবিতে বেলফুলের গোড়ে মালা ভিজে রুমালে,পিরিচে একগ্লাস বরফ দেওয়া জল আর বাটাতে ছাঁচিপান ।
বউ -ঠাকরুন গা ধুয়ে চুল বেঁধে বসতেন । গায়ে একখানা পাতলা চাদর উড়িয়ে আসতেন জ্যোতিদাদা , বেহালাতে লাগাতেন ছড়ি , আমি ধরতুম চড়া সুরের গান ।গলায় যেটুকু সুর দিয়েছিলেন বিধাতা তখনো তা ফিরিয়ে নেন নি । সূর্য -ডোবা আকাশে ছাদে ছাদে ছড়িয়ে যেত আমার গান। হু হু ক রে দখিনে বাতাস উঠত দূর সমুদ্র থেকে, তারায় তারায় যেত আকাশ ভরে। রবি তার ন তুন দাদা , ন তুন বউঠানের স ংগে তাদের আদরে - প্রশ্রয়ে- সাহচর্যে এইভাবে সময় কাটাতেন ।
[৪]
বাড়িতে রবির লেখার সূত্রপাত হলেও শিলাইদহের নিসর্গ তার ক-ল্পনাকে অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছিল। পুরানো নীলকুঠি ,অদূরে পদ্মা, নীচতলায় কাছারি এসবি। তিনি প্রথম্ বার শিলাইদহে যান
জ্যোতিদাদার সঙ্গে । এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন ঃ জমিদারির কাজ দেখতে তাকে প্রায়ই যেতে
হত শিলাইদহে । একবার
যখন সেই দরকারে বেড়িয়েছিলান সঙ্গে নিয়েছিলেন আমাকে। তখন কার পক্ষে এটা ছিল
বেদস্তুর ... তিনি বুঝে নিয়েছিলেন , আমার ছিল আকাশে-বাতাসে-চ'রে- বেড়ানো ম্ ন ---সেখান থেকে আমি খোরাক পাই আপনা হতেই... একলা থাকার ম ন নিয়ে আছি । ছোটো একটি কোনের ঘর,যত বড় ঢালা ছাদ
ততবড় ফলাও আমার ছুটি ... বউ কথা ক উ ডাকছে ত ডাকছেই , উড়ো ভাবনা ভাবছি ত ভাবছি-ই । সেই সঙ্গে সঙ্গে আমার খাতা ভরে উঠতে আরম্ভ পদ্যে।
সেগুলো যেন ঝ রে পড়বার মুখে আমের বোল । ঝরেও গেছে।এইভাবে শিলাইদহের আবহাওয়া , পদ্মার পাগল হাওয়া , নীলকুঠী তার লেখার রসদ যুগিয়েছে ।
[৫]
সেই সময় অল্পবয়সী ছেলে বা মেয়ে
ছন্দ মিলিয়ে কবিতা লিখলে ধন্য ধন্য পড়ে যেত ।কিন্তু কাদম্বরী রবিকে উল্টো কথা
বলতেন। এই বিষয়ে কবি বলেন ঃ তখনকার দিনে অল্পবয়সী ছেলে , বিশেষত মায়ে যদি অক্ষর গুনে দু ছত্র পদ্য লিখত তা হলে দেশের
সমজদারেরা ভাবত , এমন যেন আর হয়
না ,
কখনো হবে না ।
যে-সব মেয়ে
কবিদের নাম দেখেছি ,কাগজে তাদের লেখাও বেরিয়েছে । তার পরে সেই অতি সাবধানে
চোদ্দ অক্ষর বাঁচিয়ে লেখা ভালো ভালো কথা আর কাঁচা কাঁচা মিল ... ছেলেদের সাহস
মেয়েদের থেকে অনেক কম লজ্জা অনেক বেশি । সেদিন ছোটো বয়সের ছেলে-কবি কবিতা লিখেছে ম্ নে পড়ে না , এক আমি ছাড়া । আমার চেয়ে বড় বয়সের এক ভাগনে একদিন বাতলিয়ে
দিলেন চোদ্দ অক্ষরের ছাঁচে কথা ঢাললে সেটা জমে ওঠে পদ্যে... আর হাতে হাতে
সেই চোদ্দ অক্ষরের ছাঁদে পদ্মও ফুটল ;এমনকি তার উপরে ভ্রমরও বসবার
যায়গা পেল। কবিদের সঙ্গে আমার তফাত গেল ঘুচে...
কিন্তু কাদম্বরী দেবীর ব্যব হার ছিল উলটো ।তিনি খোঁতা দিয়ে ব্ লতেন
যে কবি ক খনও বিহারী চক্র ব্রতীর মতো লিখতে পারবেন না । এই কথায় কবি মনমরা হয়ে
যেতেন। কারন কাদম্বরী সাহিত্যের অনেক বড় সমজদার ছিলেন।
[৬]
কাদম্বরী দেবী ও রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক নিয়েই রচিত হয়েছিল 'নষ্টনীড়' গল্পটি ; সেখানে অমল ( রবি
), চারুলতা (কাদম্বরী ) । লেখা নিয়ে খুনসুটি যে তাদের জীবনের গল্প । এইসময়
জ্যোতিরিন্দ্র নাটক রচনা করছেন আর রবি তাতে জুড়ে দিচ্ছেন গান , এইভাবে সৃষ্টির ফোয়ারা ছুটছে তেতলার ছাদের ঘরে । এই
প্রসঙ্গে কবি লেখেন ঃ এইবার তেতলা ঘরের আর এক পালা শুরু হল ... তেতলার খালি ছাদের ঘরে আমার ছিল যেন বেদের বাসা -- ক খনো এখানে ক খনো ওখানে । বউ ঠাকরুন এলেন , ছাদের ঘরে বাগান দিল দেখা...পূর্ব দিকের চিলেকোঠার ছায়ায় জ্যোতিদাদার কফি খাওয়ার সর ঞ্জাম হত সকালে । সেই
সময়ে পড়ে শোনাতেন তার নতুন নাটকের প্রথম খসড়া। তার মধ্যে ক খনো ক
খনো কিছু জুড়ে দেবার জন্য আমাকেও ডাক পড়ত। এভাবেই রচিত মানময়ী নাটকের দুটি গান ( ১) 'ছিলে কোথায় বল
ক্ ত কি যে হল ' (২) চল চল ,চল চল ,চল চল , ফু্নধনু' । ক্রমে রোদ এগিয়ে আসত -- কাকগুলি ডাকাডাকি করত উপ রের ছাদে বসে রুটির টুকরোর 'পরে লক্ষ্য করে. ।
[৭]
স্কুল- পালানো কিশোর ছোট দেওর কাদম্বরীর সঙ্গীও । বাড়ির ছাদে নানান
কাজের সঙ্গী রবি বলেন ঃ বাড়ির ভেতরে এই ছাদটা আগাগোড়া মেয়েদের দখলে । ওখানে মেয়েরা
বসত
... টিপে টিপে টপাটপ বড়ি দিত... কাঁচা আম ফালি করে আমসি শুকনো হত...কালো পাথরের ছাঁচে আমের রস থাকে থাকে জমিয়ে তোলা হত ।
বাড়িতে আমি ছিলুম এক্ মাত্র দেওর বউদিদির আমস ত্ত্ব পাহারা , তাছাড়া আরও পাঁচরকম খুচরো কাজের সাথী ,পড়ে শোনাতুম 'বঙ্গ ধীপ প্ রিচয় ' ... খুব সরু সরু করে সুপারি কাটতে পারতুম । আমার অন্য কোনো গুন যে ছিল সে কথা
বউঠান কিছুতেই মানতেন না এমনকি চেহারার খুঁত ধরেও বিধাতার উপর রাগ ধরিয়ে দিতেন।
কিন্তু আমার সুপারি কাটার গুন বাড়িয়ে ব লতে মুখে বাধত না ।
কাদম্বরী কবির এই গুন্ টি বাদে অন্য বিষয় যেম্ ন তার বা চেহারার
গুনের ক্ থা কিছু ব লতেন না । বউঠান যে এসব ক্ থা নিয়ে দেওরে র সঙ্গে মজা করতেন তা
বুঝতেন না কিশোর রবি। রবীন্দ্রনাথের চেহারাটা যে ভালো এ ক্ থা শোনেন তিনি প্রথম
বম্বেতে
; আনা তড়খড়ের মুখে । তারপর বিলেতে জ্ঞাতি
বোনের মুখে । অথচ ব্রাইটনের বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ তাকে বলেছিলেন ,"
What a splendid head you have!" তিনি
মাঝবয়সেও এ কথা ভুলতে পারেননি যে কাদম্বরী তাকে বলতেন তার কপাল ও মুখশ্রী মধ্যম
শ্রেণীর বলে গণ্য হতে পারে । কাদম্বরী এই ক্ থা তার দর্পহরণের জন্য বলতেন ।
[৮]
বেঙ্গল একাডেমির পর সেন্ট জেবিয়ারসে স্কুল-এ স্কুল -পালানো রবিকে
আবার ভর্তি ক্ রে দেওয়া হল । কিন্তু নানা ছল করে সেখান থেকেও পালানো শুরু ক্ রলেন কিশোর
রবি। ঠাকুরবাড়িতে গৃহশিক্ষক দিয়ে বিভিন্ন ভাষা, অঙ্কন , শারীরবিদ্যা ,গান , কুস্তি এসব
শেখানো হত। স্কুলে কিছুতেই মন না বসায় এবং প্রথাগত শিক্ষায় কিছুতেই শিখতে না চাওয়া
রবিকে জ্ঞানচন্দ্র ভট্টাচার্য কালিদাসের লেখা সংস্কৃত 'কুমারসম্ভব ' থেকে বাংলায় অনুবাদ করতে দিয়ে যতক্ষন অনুবাদ না হচ্ছে ততক্ষণ ঘরে বন্ধ ক্ রে
রাখতেন । রবীন্দ্রনাথ ম্যাকবেথের বাংলা অনুবাদও করেছিলেন ,ম্যাকবেথ নাটকের ডাইনি -প্রধানা হেকেটির নাম থেকে কাদম্বরী র নাম দিয়েছিলেন 'হেকেটি' ঠাট্টা করে, কাদম্বরী ও তার নাম দিয়েছিলেন ভানু ।একথা এই জন্যই ম্ নে হয়
কারন কাদম্বরীর মৃত্যুর পর রবীন্দ্রনাথ ' পুষ্পাঞ্জলি' নামে যে রচনা
লিখেছিলেন , তাতে আছে ঃ আমাকে যাহারা
চেনে
স কলেই আমার নাম ধরিয়া ডাকে , কিন্তু সকলেই কিছু একই ব্যক্তিকে ডাকে না , এবং সকলকেই কিছু একই বাক্তি সাড়া দেয় না । এক- একজনে আমার এক-একটা অংশকে ডাকে মাত্র , আমাকে তাহারা
ততটুকু বলিয়াই জানে । এইজন্য আমরা যাহাকে ভালোবাসি তাহার একটা ন তুন নামকরণ করিতে
চাই
; কারণ সকলের সে ও আমার-সে বিস্তর প্রভেদ । ---সম্ভবত এই অংশের মধ্যে উক্ত নামক্ রনের ইতিহাসটি প্রচ্ছন্ন আছে।
বঙ্গদর্শন পত্রিকায় তখন প্রকাশিত হচ্ছে বঙ্কিমের ধারাবাহিক রচনা ' বিষবৃক্ষ' । ঘরে ঘরে শিক্ষিত মানুষদের তা পড়া নিয়ে উন্মাদনা , কিন্তু কিশোর রবি সহজেই তা হাতে পেতেন । তা নিয়ে তিনি
বলেছেন ঃ বঙ্গদর্শন এলে পাড়ায় দুপুরে কারো ঘুম থাক ত না ।আমার সুবিধে ছিল কাড়াকাড়ি
করবার দরকার হত না ; কেননা আমার
একটা গুন ছিল আমি ভালো পড়ে শোনাতে পারতুম । আপন মনে পড়ার চেয়ে আমার পড়া শুনতে বউ- ঠাকরুন ভালোবাসতেন । তখন বিজলিপাখি ছিল না , পড়তে পড়তে বউ -ঠাকরুনের হাতপাখার হাওয়ার একটা ভাগ আমি আদায় করে নিতুম ।
[৯]
কাদম্বরীর ' হেকেটি ' নামটি নিয়ে নানান কাহিনী প্রচলিত । এই বিষ্ য়ে সজনীকান্ত
দাস লিখেছেন ঃ ' হে' কে কবিকে জিজ্ঞাসা ক রেছিলাম । তিনি পা ল্টা প্রশ্ন ক রলেন ,' তোমার কি ম্ নে হয় ? বল্লাম ' হেমাঙ্গিনী ' , অলীকবাবুতে আপ নি ' অলীকবাবু' ও কাদম্বরী
দেবী
' হেমাঙ্গিনী সেজেছিলেন। তিনি স্বীকার ক রলেন , 'এটাই স ত্যি , অন্য সব অনুমান মিথ্যা । তাহ্ লে এই নামের ইতিহাস নিয়ে রহস্য তখ নো ছিল । তাই
কবিকে সজনীকান্তের অনুমাঙ্কে স্ ঠীক ব্ লতে হয়েছে । এই সম্পর্কে রবীন্দ্র জীবনীকার
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছেন ঃ আমরা ইন্দিরা দেবীর কাছে শুনেছি যে কাদম্বরী
দেবীর ছ দ্মনাম ছিল ' হে ' । তাহার ছ দ্মনাম ছিল ' হেকেটি ' --- ইনি
প্রাচীন গ্রীকদের ত্রিমুন্ডী দেবতা । অন্তরঙ্গরা রহস্যচ্ছলে এই নামটি ধ্ রে ডাক তে
ন । কাদম্বরী দেবীর নারীহৃদয় ' ত্রিবেনী
সঙ্গম'
ক্ষেত্র ছিল । কবি বিহারীলাল্ কে শ্রদ্ধা ,জ্যোতিরিন্দ্রনাথকে প্রীতি ও দেব্র রবীন্দ্রনাথকে স্নেহ
দ্বারা আপ ন ক রে নিয়েছিলেন । এজন্য ই ' হেকেটি' ।
কিন্তু বিহারীলালের সাথে জ্যোতিরিন্দ্রনাথের প রিচয় হয়েছিল বাংলা
১২৮৪ সালের শেষের দিকে । অথচ ' মালতি পুঁথি' র কবিতা লেখা ১২৮৪ এর আগে , পান্ডুলিপির কোনে লেখা 'হেকেটি ঠাকরুন ' শব্দটি তিনবার
লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ । কাজেই প্রভাতকুমার-এর অনুমান সঠিক নয় । ম্যাকবেথ -এর ডাইনি প্রধানা থেকেই তার নাম ' হেকেটি ' ।
[১০]
বয়ঃ সন্ধিকালে মানুষ নিজের ম্ নের ভাবনা লুকিয়ে রাখবার চেষ্টা
ক রে । রবীন্দ্রনাথ তার লেখা ' ' 'ভগ্নহৃদয় ' বইটি উৎসর্গ ক রেছেন করেন 'শ্রী মতী হে ' কে ।এই ' হে ' এখানে
কাদম্বরী দেবী ,কবি এখানে
দ্বিধাগ্রস্থ , তাই তিনি 'হে 'র প্ রিচয় প্রকাশ করেননি
। সেই সময় কারো
পরিচয় সরাসরি না জানাবার জন্য , অথচ পরিচিত জন কে তার নামটি জানাতে হবে তাই নামের আদ্যাক্ষ রটি ব্যবহার করা
হত । এই প্রবন্ তা কবির ' য়ুরোপ
প্রবাসীর পত্রে ' দেখা যায় ।
'ভগ্নহৃদয়' কাব্য টির উপ হার গীতির
পরিবর্তে ৩০ ছত্রের
কবিতা লেখা হয়েছে পাঁচটি স্তবকে ; মূল ভাবটি
কবিতার তৃতীয় স্তবকে বর্ণিত ঃ
হয়ত জাননা ,দেবী, অদৃশ্য বাঁধন
দিয়া
নিয়মিত প্ থে এক ফিরাইছ মোর হিয়া ।
গেছি দূরে , গেছি কাছে , সেই
আকর্ষণ আছে,
প থভ্রষ্ট হ ই না তাহারি অটল ব লে ।
ন ইলে হৃদয় মম ছিন্ন ধূমকেতু-স ম,
দিশাহারা হ ইত সে অনন্ত আকাশে ।
[১১]
কাদম্বরীর সাহিত্যে প্রবল অনুরাগ ছিল । বাংলা তিনি স ময় কাটাবার জন্য নয় স্ মস্ত ম ন দিয়ে উপভোগ ক রতেন । তার সাহিত্যচর্চার অংশীদার ছিলেন কিশোর কবি । বিহারীলাল চক্রবর্তী তার প্রিয় কবি ছিলেন । বিহারীলালের লেখা ' সারদা মঙ্গল কাব্য তখন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে শুরু করেছে । কাদম্বরী এই কাব্য মাধুর্যে মুগ্ধ ছিলেন ; তা এতটাই যে কাব্যের অনেকটা অংশ তার কন্ঠস্থ ছিল । কবিকে তিনি মঝে মাঝে নিম ন্ত্রন ক রে খাওয়াতেন এবং একটি আস্ ন উপ হার দিয়েছিলেন নিজে হাতে তৈরী ক রে । কিশোর রবিকে তিনি রাগানোর জন্য ব লতেন রবি ক খন ও বিহারীলালের মতো কবি হতে পা রবেন না । রবির কবিতায়প্রথমদিকে বিহারীলালের প্রভাব স্প ষ্ট ছিল ।
কাদম্বরীর সাহিত্যে প্রবল অনুরাগ ছিল । বাংলা তিনি স ময় কাটাবার জন্য নয় স্ মস্ত ম ন দিয়ে উপভোগ ক রতেন । তার সাহিত্যচর্চার অংশীদার ছিলেন কিশোর কবি । বিহারীলাল চক্রবর্তী তার প্রিয় কবি ছিলেন । বিহারীলালের লেখা ' সারদা মঙ্গল কাব্য তখন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে শুরু করেছে । কাদম্বরী এই কাব্য মাধুর্যে মুগ্ধ ছিলেন ; তা এতটাই যে কাব্যের অনেকটা অংশ তার কন্ঠস্থ ছিল । কবিকে তিনি মঝে মাঝে নিম ন্ত্রন ক রে খাওয়াতেন এবং একটি আস্ ন উপ হার দিয়েছিলেন নিজে হাতে তৈরী ক রে । কিশোর রবিকে তিনি রাগানোর জন্য ব লতেন রবি ক খন ও বিহারীলালের মতো কবি হতে পা রবেন না । রবির কবিতায়প্রথমদিকে বিহারীলালের প্রভাব স্প ষ্ট ছিল ।
রবীন্দ্রনাথের ও প্রিয় কবি
ছিলেন বিহারীলাল । বিহারীলাল তখন কার ইংরাজী ভাষায় নব্যশিক্ষিত কবিদের মতো যুদ্ধের বর্ণনা দিয়ে
মহাকাব্য বা উদ্দীপনাপূর্ণ দেশ অনুরাগ মূল ক কবিতা লিখতেন না । অথচ প্রাচীন কবিদের
মতো দিকে না , তিনি নিভৃতে বসে নিজের
ছন্দে নিজের মতো কবিতা লিখতেন । বিহারীলালের ছন্দে মিলের বা ভাষার দৈন্য নেই ; তা যেন ঝর্ণার মত প্রব হ
মান । রবীন্দ্রনাথ একদা বিহারীলালের কাছ থেকে কাব্য শিক্ষার চেষ্টা ক রেছিলেন। তার
লেখা
' বাল্মীকি প্রতিভা' র মূল ভাবটি এম ন কি স্থানে স্থানে তার ভাষা অব্ধি সারদা
মঙ্গল থেকে গৃহীত । আরম্ভের শ্লোক্ টি এ র কম ঃ নাহি চ ন্দ্র সূর্য তারা / অন ল হিল্লোল -ধারা
/ বিচিত্র -বিদ্যুৎ- দাম - দ্যুতি ঝল মল / তিমির নিমগ্ন ভব , / নীরব নিস্তব্ধ
সব
, / কেব ল ম রুতৃষা ক রে কোলাহ ল ।
[১২]
কাদম্বরী দেবীর সাথে পরিচয় সূত্রে বিহারীলালের সাথে কিশোর রবির
পরিচয় হয়ে গেল। এই বিষয়ে কিশোর রবি বলেছেন ঃ এই সূত্রে কবির সঙ্গে আমারও বেশ একটু
পরিচয় হইয়া গেল । তিনি আমাকে যথেষ্ট স্নেহ করিতেন । দিনে-দুপুরে যখন- তখন তাঁহার বাড়ি গিয়া উপস্থিত হইতাম । তাঁহার দেহও যেমন বিপুল তাঁহার হৃদয় ও
তেমনই প্রশস্ত । তাঁহার মনের চারিদিক ঘেরিয়া কবিত্মের একটি রশ্মিমন্ডল তাঁহার
সঙ্গে সঙ্গে ই ফিরিত , তাঁহার যেন
কবিতাময় একটি সূক্ষ্ম শরীর ছিল--- তাহাই
তাহার যথার্থ স্বরূপ । তাঁহার মধ্যে একটি পরিপূর্ণ কবির আনন্দ ছিল । যখনই তাঁহার
কাছে গিয়াছি , সেই আনন্দের হাওয়া খাইয়া
আসিয়াছি।
রবীন্দ্রনাথ অক্ষয়চন্দ্র স্ রকার ও সারদাচ্ রণ মিত্র সংকলিত
প্রাচীন কাব্যস ংগ্রহ আগ্রহের সঙ্গে পড়তেন। তার মৈ থিলী মিশ্রিত ভাষা দুর্বোধ্য
জন্য কবি আগ্রহভরে পড়তেন। তার আগেই তিনি ইংরেজ বালক কবি চ্যাটারটনের ক থা
শুনেছিলেন । তার অনুকরণে তিনি ভানুসিং হ নাম নিয়ে কবিতে লিখেছেন । 'ভানু সিং হ' ভারতী' পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে
প্রকাশিত হচ্ছিল।
[১৩]
রবীন্দ্রনাথের 'ভানুসিং হের
পদাবলী
' নিয়ে দুটি মজার গল্প আছে । তাদের মধ্যে একটি
কবির নিজের সৃষ্টি ; একদিন কবি
অক্ষয় চন্দ্র চৌধুরী কে গল্প করেন ," স্ মাজের লাইব্রেরীতে খুঁজিতে খুঁজিতে ব হু কালের একটি জীর্ণ পুঁথি পাওয়া
গিয়াছে
,তাহা হইতে ভানুসিংহ নামক প্রাচীন কবির পদ
কাপি করিয়া আনিয়াছি।" এই কথা বলে
কবি তাকে কবিতাগুলি শুনিয়েছিলেন । শুনে তিনি বিষম বিচলিত হয়ে উঠলেন ।বললেন ," এ পুঁথি আমার নিতান্তই চাই । এমন কবিতা বিদ্যাপতি - চন্ডীদাসের হাত দিয়াও বাহির হইতে পারিত না। আমি প্রাচীন কাব্যগ্রন্থ
ছাপিবার জন্য ইহা অক্ষয় বাবুকে দিব।"
তখন কবি নিজের খাতা দেখিয়ে প্রমাণ করলেন যে এ লেখা বিদ্যাপতি - চন্ডীদাসের হাত দিয়ে নিশ্চ ই বের হতে পারে না, কারণ সেটা তার লেখা । তার বন্ধু তখন গম্ভীর হয়ে বল্লেন, "নিতান্ত মন্দ হয় নাই”।
অন্য গল্পটি এরকম , কবির ভাষায় ঃ ভানুসিং হ যখন 'ভারতী' তে বাহির হইতেছিল ডাক্তার নিশিকান্ত চট্টোপাধ্যায় তখন জার্মানিতে ছিলেন । তিনি ইয়ুরোপীয় সাহিত্যের সহিত তুলনা করিয়া আমাদের দেশের গীতিকাব্য সম্বন্ধে একখানি চটি ব ই লিখিয়াছিলে ন । তাহাতে ভানুসিং হকে প্রাচীন পদকর্তা রূপে যে প্রচুর সম্মান দিয়াছিলেন কোনো আধুনিক কবির ভাগ্যে তাহা স হজে জোটে না । এই গ্রন্থখানি লিখিয়া তিনি ডাক্তার উপাধি লাভ করিয়াছিলেন । অথচ কাব্যগ্রন্থটি ১৬-১৭ বছরের কিশোরের লেখা ।এই পদাব্ লীর কাব্যগুলোর ব্যাপ্তি নিয়ে নতুন করে বল বার কিছু নেই ।
তখন কবি নিজের খাতা দেখিয়ে প্রমাণ করলেন যে এ লেখা বিদ্যাপতি - চন্ডীদাসের হাত দিয়ে নিশ্চ ই বের হতে পারে না, কারণ সেটা তার লেখা । তার বন্ধু তখন গম্ভীর হয়ে বল্লেন, "নিতান্ত মন্দ হয় নাই”।
অন্য গল্পটি এরকম , কবির ভাষায় ঃ ভানুসিং হ যখন 'ভারতী' তে বাহির হইতেছিল ডাক্তার নিশিকান্ত চট্টোপাধ্যায় তখন জার্মানিতে ছিলেন । তিনি ইয়ুরোপীয় সাহিত্যের সহিত তুলনা করিয়া আমাদের দেশের গীতিকাব্য সম্বন্ধে একখানি চটি ব ই লিখিয়াছিলে ন । তাহাতে ভানুসিং হকে প্রাচীন পদকর্তা রূপে যে প্রচুর সম্মান দিয়াছিলেন কোনো আধুনিক কবির ভাগ্যে তাহা স হজে জোটে না । এই গ্রন্থখানি লিখিয়া তিনি ডাক্তার উপাধি লাভ করিয়াছিলেন । অথচ কাব্যগ্রন্থটি ১৬-১৭ বছরের কিশোরের লেখা ।এই পদাব্ লীর কাব্যগুলোর ব্যাপ্তি নিয়ে নতুন করে বল বার কিছু নেই ।
[১৪]
রবীন্দ্রনাথের বয়স যখন ১৬ বছর তখন তাদের বড়দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথকে
সম্পাদক করে ১৮৭৭ সালে 'ভারতী' পত্রিকা বের হয়েছিল ; সম্পাদক মণ্ডলীর মধ্যে কিশোর রবিও ছিলেন। তিনি 'মেঘ নাথ বধ কাব্য' এর সমালোচনা
বের হয়
'ভারতী' পত্রিকায় । নিজের সম্বন্ধে তিনি লেখেন ঃ ইতিপূর্বেই আমি অল্প বয়সের স্পর্ধার
বেগে
'মেঘ নাথবধের ' একটি তীব্র সমালোচনা লিখিয়াছিলাম । কাঁচা আমের রসটা অম্লরস --- কাঁচা সমালোচনাও গালিগালাজ । অন্য ক্ষমতা যখন কম থাকে তখন
খোঁচা দিবার ক্ষমতাটা খুব তীক্ষ্ণ হইয়া ওঠে । আমিও এই অমর কাব্যের উপর ন খ রা ঘাত
করিয়া নিজেকে অমর করিয়া তুলিবার সুলভ করিয়া তুলিবার সর্বাপেক্ষা সুলভ উপায় অন্বেষণ
করিতেছিলাম। এই দাম্ভিক সমালোচনাটা দিয়া আমি 'ভারতী' তে প্রথম লেখা আরম্ভ
করিলাম ।
রবীন্দ্রনাথের যখন ১৭ বছ্ র বয়স স ত্যেন্দ্রনাথ মহর্ষির কাছে
প্রস্তাব করলেন রবিকে বিলেত নিয়ে যাবেন । মহর্ষির স ম্মতি পেয়ে রবি খুব খুশি হলেন
।বিলেতযাত্রার আগে স ত্যেন্দ্র তাকে নিয়ে রাখেন আমেদাবাদে ; সেখানে তিনি জজ ছিলেন । এই প্রসঙ্গে রবি বলেছেন ঃ আমার বউ
ঠাকরুন এবং ছেলেরা তখন ইংলন্ডে--- সুতরাং
বাড়ি একপ্রকার জনশূণ্য ছিল। শাহিবাগে জজের বাসা । ইহা বাদশাহি আমলের প্রাসাদ , বাদশাহের জন্যই নির্মিত । এই প্রাসাদের প্রাকারপাদ মুলে
গ্রীষ্মকালের ক্ষীণ স্বচ্ছস্রোতা সাবর মতী ন্ দী তাহার বালুশষ্যার একপ্রান্ত দিয়া
প্রবাহিত হই তেছিল । সেই নদীতীরের দিকে প্রাসাদের সম্মুখ ভাগে একটি প্রকান্ড খোলা
ছাদ । মেজদাদা আদালতে চলিয়া যাইতেন । প্রকান্ড বাড়িতে আমি ছাড়া আর কেহ থাকিত না ।
এই বাড়ি অবলম্বনে লেখা হয় 'ক্ষুধিত পাষাণ' গল্পটি।
'
[১৫]
ভারতী' র চল্লিশ বছর
পূর্তি উপলক্ষে লিখিত ' কবির নীড়' নামক রচনায় জ্যোতিরিন্দ্রনাথ লিখেছেন ঃ আমি তেতলায় যে
ঘরটিতে বসতুম ,সেখানে একটি গোল টেবিল , তার চারিপাশে খানক্ তক চৌকি আর দেয়ালের গায়ে একটা পিয়ানো
ছিল । রবি আমার নিত্য সঙ্গী [ বাল ক - কবি তখনও জগত -কবি হননি ] , আর এক কবি আমার বাল্যবন্ধু
অক্ষয় এসে মধ্যে মধ্যে জুটতেন । আমরা তিনজন যখন একত্র এই টেবিলের চারিধারে বসতুম , ক্ ত গালগল্প হত, কত কবিতা পাঠ হত ,কত গানবাজনা
হত
,কত কবিতাপাঠ হত , তার ঠিকানা নেই । পাখির গানে যেমন ছাদটা মুখরিত হত , এই দুই কবি বিহঙ্গের গানে ও কবিতা -পাঠে বৈঠকখানাটা তেমনি প্রতিধ্বনিত হত।
একদিন প্রাতে এই টেবিলে বসে আমরা সাহিত্যলোচনা করছি --- কি শুভ ক্ষণে হঠাত ম্ নে হল ,-- এই দুই কবি- বিহঙ্গ কেবল আকাশে আকাশেই
উড়ে বেড়াচ্ছে , ওদের মধুর গান আকাশেই
বিলীন হয়ে যাচ্চে । লোকালয়ের কোন কুঞ্জ- কুটীরে ওরা যদি আশ্রয় পায় কিংবা নীড় বাঁধতে পারে , তাহলে কত লোকে ওদের স্বর-সুধা পান ক্ রে কৃতার্থ হয় ।
\বস্তু'ত তত্ত্ববোধিনী' এক অর্থে ঠাকুরবাড়ির কাগজ হলেও আদি ব্রাহ্মম সমাজের মুখপত্র
হিসেবে ধর্মীয় ও সামাজিক নানা দায় দায়িত্ব থাকায় পুরোপুরি সাহিত্য পত্রিকা হ্ য়ে
ওঠা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না । কিশোর রবির সাহিত্য- প্রতিভা এই সময়ে যেভাবে বিভিন্ন দিকে বিপুল্ ভাবে আত্মপ্রকাশের তাগিদ অনুভব
করছিল
, আত্মীয়-বন্ধুরা তার একটি উপযুক্ত মাধ্যম তৈরী ক্ রে
দিতে আগ্রহী হবেন এটাই স্বাভাবিক । 'ভারতী' হল সেই মাধ্যম ।
পত্রিকাটির সম্পাদক দ্বিজেন্দ্রনাথ পত্রিকার নামক রন করেছিলেন ।
হিন্দু পেট্রিয়টে এই প্ ত্রিকার প্রকাশ সম্বন্ধে বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল। 'ভারতী'র প্রথম প্রকাশ শ্রাবণ ১২৮৪ [ ইং ১৮৭৭ ]। এই সংখ্যায় রবীন্দ্রনাথের তিনটি লেখা প্রকাশিত হয় - কবিতা 'হিমালয় ', 'মেঘ নাদ বধ কাব্যের সমালোচনা , ' ভিখারিনী' নামে এক টি ছোট গল্প ।
(পরবর্তী
সংখ্যায়)