একান্ত ব্যক্তিগত পর্ব - ৩
আমাদের
ডাঃ
গৌতম
বৃদ্ধের
কথা
যেন
শেষ
হইয়াও
শেষ
হয়
না
। তাঁহার পরিবহন সম্পর্কিত আবিষ্কার “একান্ত ব্যক্তিগত ২” সমাধানের বদলে সমস্যা এনে ফেলেছে কিছু লোকের মধ্যে । অনেক
সময়
এ
রকম
হয়
। কিছু লোকের যেখানে সমস্যা অন্য কিছু লোকের সেটাই সমাধান । যেমন ধরুন কম্পিউটারে ভাইরাস আসে বলেই তো এন্টিভাইরাসের এত চাহিদা । জল অশুদ্ধ হয়ে লোকের সমস্যা হয় বলেই তো ফিল্টার তৈরি আর বিক্রি করে অন্য কিছু লোকের সমাধান । অর্থাৎ এ জগত ময় শুধু একের সঙ্গে অন্যের খাদ্য-খাদকের সম্পর্ক । যেমন রুগি আছে তাই ডাক্তার আছে, চোর আছে বলেই না পুলিশ ?
কিন্তু
বিজ্ঞানীরা
বড়
ভালমানুষ
।
এসব
নিয়ে
চিন্তা
করেন
না
।
তাঁদের
ভাবনায়
শুধু
আবিষ্কারের
নেশা
।
আর
দু
দুটো
আবিষ্কার
করে
গৌতমবাবুও
এখন
বড়
বিজ্ঞানী
।
তাই
তিনিও
গ্যালিলিও
হতে
চান
নি
।
প্রহরীর
চোখে
ধুলো
নিজের
গৃহের
মায়া
কাটিয়ে
দিয়ে
বেরিয়ে
পড়েছেন
।
না
যেদিকে
দুচোখ
যায়
এই
চিন্তা
নিয়ে
নয়
।
যেদিকে
আছে
গাছের
সারি
এই
ভাবনা
নিয়ে
।
বেরিয়ে
চলে
এসেছেন
কোন
একটা
স্টেশনে
।
আসলে
তাঁর
নিজের
স্টেশনে
আসতে
ভরসা
হয়
নি
কারণ
প্রহরীরা
আবার
যদি
তুলে
নিয়ে
যায়
।
একটা
দূরের
কোন
স্টেশনের
টিকিট
কেটে
প্ল্যাটফর্মে
ঢোকার
মুখেই
শুনলেন
খবরটা
।
কোথায়
একটা
এক্সিডেন্ট
হয়েছে
ট্রেন
বন্ধ
।
এই
মরেছে
।
একটু
ভাবতে
হবে
।
ভাবার
জন্যে
বসতে
হবে
।
বসার
জন্য
আবার
একটা
গাছ
পেলে
মন্দ
হয়
না।
গাছের
নিচের
হাওয়া
নাকি
বেশ
ঠাণ্ডা
আর
বিশুদ্ধ
।
গাছ
নাকি
বাতাসের
অতিরিক্ত
কার্বন
ডাই
অক্সাইড
শুষে
নিয়ে
বেশী
করে
অক্সিজেন
দেয়
।
খুজছেন
এপাশ
ও
পাশ
কিন্তু
গাছ
কই
।
সারা
প্ল্যাটফর্ম
জুড়েই
তো
মাথার
ওপর
শেড
।
এটা
একটা
নতুন
স্টাইল
।
যাত্রীরা
একটুও
জলে
ভিজবেন
না
বা
রোদে
পুড়বেন
না
।
টিকিট
কাটার
পর
থেকেই
আপনার
মাথা
আমার
জিম্মেয়
।
আমার
মানে
রেল
কোম্পানির
।
আপনার
মাথা
থাকবে
কি
না
থাকবে
সে
আমি
বুঝব
।
পয়সা
দিয়ে
টিকিট
কেটেছেন
না
? সে
কি
আর
এমনি
এমনি
?
অতএব
একটাও
গাছ
নেই
কোত্থাও
।
যে
সব
বৃহৎ
বৃহৎ
বৃক্ষরা
ছিলেন
তাঁদের
বনস্পতির
মর্যাদা
খুইয়ে
শুধু
পাতাহীন
প্রকাণ্ড
কাণ্ডখানা
পেটে
জড়িয়ে
ধরে
হাত
পা
গুটিয়ে
বসে
আছেন
কবে
এ
কালের
আলিবাবারা
উদ্ধার
করে
নিয়ে
যায়
।
এর
থেকে
কেউ
দরজা
জানলা
হবেন
কি
কেউ
বা
শুধু
জ্বালানী
তার
খবর
কে
নেয়
আর
কে
দেয়
?
কি
আর
করবেন
বেরিয়ে
এলেন
।
বেরিয়ে
এসে
পড়লেন
বাস
রাস্তায়
।
বাসে
করেই
যাবেন
কোনও
অজানা
জায়গায়
।
যেখানে
কোনও
পোপের
কোপে
পড়ে
কোনও
খোপে
পড়ে
থাকতে
হবে
না
সারা
জীবনের
মত
।
আর
যদি
পেয়ে
যান
মনের
মত
কোনও
গাছ
তো
তৃতীয়
বারের
জন্য
নিউটন
হওয়া
আটকায়
কে
?
বাস
নেই
রাস্তায়
।
আর
বাস
কেন
নেই
লরি,
ট্যাক্সি,
ম্যাটাডোর,
রিক্সা
কিচ্ছু
।
বন্ধ
চলছে
এখন
এ
রাস্তায়
।
অবরোধ
।
কারণ
একটা
দুর্ঘটনা
।
দুর্ঘটনার
কারণ
একটা
হাঁই
ফাই
করে
ছুটে
চলা
বাসের
সঙ্গে
একটা
নিরীহ
ছোট্ট
মোটর
গাড়ীর
মুখোমুখি
ধাক্কা
।
ড্রাইভার
সমেত
সামনের
সীটের
একজন
আরোহীর
ঘটনাস্থলে
মৃত্যু
আর
পেছনের
সীটের
দুজন
মৃত্যুর
সঙ্গে
পাঞ্জা
লড়ছে
।
এই লাগামহীন
গাড়ী
চালকের
শাস্তি
চাই
।
ঐ খুনী বাস ড্রাইভারের বিচার চাই । জনতা খেপলে তো নিস্তার নেই । বনধের চেহারা নেবেই । অতএব ডাঃ গৌতমের এখন প্রধান চিন্তা তিনি পালাবেন কোন পথে ।
অবশেষে পথ
পাওয়া
গেল
।
একজন
পরামর্শ
দিল
গঙ্গা
পেরিয়ে
ওপারে
যান
মশাই
।
বাস
পেয়ে
যাবেন
।
শুধু
বাস
কেন
বাস,
ট্রেন,
ট্যাক্সি,
লরি
ট্রাক
সব
– সব
কিছু
।
অতএব
ধরা
গেল
নৌকো।
এ
পারে
পৌঁছে
বাস
ধরার
আগেই
খিদে
পেয়ে
গেল
।
খেতে
না
খেতে
পেল
ঘুম
।
রাস্তা
দিয়ে
হাঁটতে
হাঁটতেই
পেলেন
একটা
বেশ
বড়
সড়
নিমের
গাছ
।
নিমগাছের
পাতা
তেঁতো
হলেও
তার
ফাঁক
দিয়ে
বেরোন
বাতাস
নাকি
ভারি
মিষ্টি
হয়
।
তাছাড়া
চর্ম-শুদ্ধিতেও
নাকি
নিমের
জুড়ি
নেই
।
স্বগৃহে
পরের
ইচ্ছায়
অন্তরীন
থাকার
জন্যে
তাঁর
এলারজিটা
বোধ
হয়
আবার
বেশ
মাথা
চাড়া
দিয়েছিল
।
এখন
ট্রেনেও
চড়েন
না
যে
হকার-ডাক্তারের
কাছ
থেকে
এক
ফাইল
চাল
মোগরার
তেল
কিনে
মাখবেন
।
তাই
ভাবলেন
মন্দ
কি
।
ঘুম,
বিশ্রাম
হবে
আবার
সারানো
যাবে
স্কিন
ডিজিজটাও
।
টানা দু
ঘণ্টা
নিশ্চিন্ত
নিদ্রা
।
তবে
সেই
ঘুমের
মাঝে
একটা
স্বপ্ন
বা
বলা
যায়
দুঃস্বপ্ন
তাঁকে
বড়
বিব্রত
করছিল
।
ঐ
বাস-মোটরের
দুর্ঘটনা
।
আচ্ছা
এমন
কিছু
কি
করা
যায়
না
যাতে
–
সেই নিমগাছ
তাঁকে
আবার
নিউটন
করল
।
তৃতীয়
বারের
জন্য
।
নিউটন
হয়েই
তিনি
ছুটলেন
সোজা
এক
টিভি
চ্যানেলের
দিকে
।
যেটা
এরপর
থেকে
নিরন্তর
টেলিকাস্ট
করে
চলল
একটি
খবর
।
মানে
ডাঃ
গৌতমের
শেষতম
আবিষ্কার
যার
নাম
তাঁর
নিজের
ভাষায়
হল
“একান্ত
ব্যক্তিগত
-৩”
।
কি বৈশিষ্ট
এই
যন্ত্রের
? এটা
হল
এন্টি-কলিশন
ডিভাইস
।
এই
যন্ত্র
অন্য
যন্ত্রের সঙ্গে ধাক্কা নিরোধ করবে । অর্থাৎ যে গাড়ীতে এই যন্ত্র বাঁধা থাকবে সে একটা সিগন্যাল ছড়াবে । সেই সিগন্যাল তার থেকে একশ ফুট দূরত্বের কোনও গাড়ীর ভেতর সম-চৌম্বক ধর্ম আরোপ করবে যেটা মাত্র পঞ্চাশ ফুটের মধ্যে
এলেই
কাজ
শুরু
করে
দেবে
অর্থাৎ
নিজের
ও
অন্য
গাড়ীর
গতি
কমিয়ে
দেবে
আর
ধাক্কা
হবে
না
।
অনেকে হতাশ
হয়ে
বলবেন,
ফুস
এ
যন্ত্র
তো
ভারতীয়
রেল
বিভাগ
আগেই
বার
করে
ফেলেছে
।
হ্যাঁ
রেল
বিভাগ
রেলের
কর্তব্য
করেছে
।
আর
ডাঃ
গৌতমের
মত
সাচ্চা
মানুষ
মানুষের
কর্তব্য
করেছেন
।
বুঝতে দেরি
হচ্ছে
? কষ্ট
হচ্ছে
? তবে
শুনুন
এই
যন্ত্র
শুধু
গাড়ির
সঙ্গে
গাড়িরই
নয়,
মানুষের
সঙ্গে
মানুষের
কলিসন
মানে
ধাক্কা
আটকাবে
।
যেমন
ধরুন
কোনও
সুন্দরী
মেয়েকে
দেখলেই
যে
সব
পুরুষের
একটু
গা
ঘেঁষতে
ইচ্ছে
হয়
তারা
পড়বেন
মুশকিলে
।
এই
যন্ত্র
যে
সমমেরু
আরোপ
করবে
।
মানে
পুরুষটিও
যে
যন্ত্রের
গুনে
সাময়িক
নারীত্ব
প্রাপ্ত
হবেন
।
তাই
আর
আকর্ষণ
তো
এমনিতেই
বিনষ্ট
।
আর
যদি
হন
“হোমো’র
দলের
কেউ
তো
যন্ত্রের
গুনে
তিনি
হয়ে
যাবেন
বিপরীত
মানে
তিনি
হবেন
একজন
পুরুষ
।
নারীপুরুষে
কি
আর
“হোম
সার্ভিস”
দেওয়া
যায়
?
তাই তো
এটা
হয়েছে
আর
একটা
“একান্ত
ব্যক্তিগত”
।
সিনেমা হলে
এক
রূপসীর
পাশে
বসে
থাকতে থাকতে এক দর্শকের তো হঠাৎ ধর্ষক হতে ইচ্ছে হয়েছিল । তা ওর চোখের গতিবিধি দেখেই ঠিক ধরে ফেলল মেয়েটি । অমনি চকচকে লেডিস ব্যাগ থেকে ঝকঝকে সেই যন্ত্র মানে ডাঃ গৌতমের “একান্ত ব্যক্তিগত” বার করে হাতে বেঁধে ফেলল মেয়েটি ।
আর অমনি
যায়
কোথা
।
মুহূর্তে
সেক্স
চেঞ্জ
।
ছেলেটি
গলা
মিহি
করে
বলল,
নায়কটা
না
কি
দুষ্টু
আর
কি
দুষ্টু
।
দুজনে কাঁধে
কাঁধ
দিয়ে
সমস্ত
সিনেমাটা
দেখল,
পপ
কর্ণ
খেল
।
অন্য
অঙ্গগুলো
স্রেফ
ভোঁতা
হয়েই
রইল
।
এবার বোধহয়
ডাঃ
গৌতমের
ভারতরত্ন
হবার
বাধা
আর
থাকল
না
।