>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • শুক্লা রায়

    SongSoptok | 12/10/2014 |





    চতুর্থ পর্ব:

    মহর্ষির নির্দেশে সমস্ত খবরের কাগজে টাকা পাঠানো হয়েছিল। এরকম খবর থেকে তাদের কাগজের কাটতি বাড়ে; সেই ক্ষতি যাতে না হয় সেই পরিমাণ টাকা তারা নিশ্চই পেয়েছিল। কাদম্বরীর আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে নানা জন নানা মত পোষণ করেন। রবীন্দ্রনাথের প্রথম জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় -এর মতে তাহোল মহিলাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের পরিণাম। আবার পরবর্তী সংস্করণে তিনি বলেন সম্ভবত ১৯৪৬ সালে অমল হোম কবির ছোটদিদি বর্ণকুমারী-র কাছে শুনেছেন যে জ্যোতিরিন্দ্রনাথের ধোপার বাড়ীতে দেওয়া জোব্বার পকেটে সেইদিনের একজন বিখ্যাত অভিনেত্রীর সঙ্গে তার অন্তরঙ্গতার পরিচায়ক কতগুলি চিঠি পাওয়া যায়।  সেই চিঠিগুলি পেয়ে কাদম্বরী ক'দিন বিমনা হয়ে কাটান। সেই চিঠিগুলিই তার আত্মহত্যার কারণ এই কথা নাকি কাদম্বরী লিখে রেখে গেছিলেন। তার সেই লেখাটি ও চিঠিগুলো সবই মহর্ষির নির্দেশে পুড়িয়ে ফেলা হয়; এমনকি অন্যত্র কোথাও কাদম্বরীর হস্তাক্ষরও পুড়িয়ে ফেলা হয়। কিন্তু তাতে রবি বা জ্যোতির জীবন থেকে তাকে মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি। অবনীন্দ্রনাথের ছোট বোন সুনয়নী জানিয়েছিলেন যে জ্যোতিকাকার স্ত্রী কাদম্বরী আত্মহত্যা করেছিলেন; তিনি শুনেছিলেন জ্যোতিকাকার সঙ্গে তার কি নিয়ে মনোমালিন্য হয়েছিল। সেই  সময় তাদের বাড়িতে এক কাপড়উলী প্রায়ই কাপড় বেচতে আসত। তার নাম বিশু। তাকে টাকা দিয়ে তিনি লুকিয়ে আফিং আনান ---তাই খেয়ে আত্মহত্যা করেন। ...ঘরে তার মৃতদেহ পড়ে আছে। সারা বাড়িতে শোকের ছায়া। পরে মৃতদেহ পুলিশ নিয়ে যায় এবং ময়না তদন্তে পাকস্থলিতে আফিং পাওয়া যায় তবে এই কথা মনে হয় ঠিক নয়, কারণ বাড়িতেই তার পোষ্টমরটেম হয়েছিল। এবং মৃতপ্রায় তাকে ঘরে পড়ে থাকতে দেখা গেছে; মৃতদেহ নয়। মৃতপ্রায় কাদম্বরীর বাড়িতে চিকিৎসক রেখে তিনদিন চিকিৎসা হয়েছিল। আসলে ঠাকুরবাড়ির মতো বড় বাড়িতে এরকম গুজব ছড়ানো অসম্ভব নয়।

    এ বিষয়ে কবির মেজদার মেয়ে ইন্দিরার স্মৃতিকথাটি বরং অনেকটা ঘটনা অনুসারী। ইন্দিরা দেবী তার স্মৃতিকথাটিতে ঘটনাটি এভাবে বর্ণনা করেছেন, 'নতুন কাকিমার মৃত্যু আমাদের জোড়াসাঁকোর বাল্যজীবনে প্রথম শোকের ছায়া ফেলে বলে মনে হয়। আমরা তখন তো বিশেষ কিছু বুঝতুম নাতবে রবিকাকাকে খুব বিমর্ষ হয়ে বসে থাকতে দেখতুম। আর শুনেছিলুম (তখন না পরে?) যে তিনি আফিং খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। কেন তা পরে অনুসন্ধান করেও জানতে পারিনি। তবে একবার শুনেছিলুম যে জাহাজে যাওয়া নিয়ে নাকি মনোমালিন্য ঘটেছিল। জ্যোতিকাকামশাই যে জাহাজের ব্যবসা ধরেছিলেন, সেই জাহাজে একদিন গানবাজনা আমোদপ্রমোদ কিছু একটা হবে, তাই নতুন কাকিমাকে পরে নিয়ে যাবার কথা ছিল; কিন্তু ভাঁটা পড়ে' যাওয়াতে জ্যোতিকাকামশাই বুঝি নিতে আসতে পারেননি। শুধু এইটুকুর জন্য অমন প্রচন্ড আঘাত ও অভিমান তো আমাদের ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে স্বাভাবিক বলে' মনে হয় না। তবে ভিতরে আরও কিছু ছিল যা ' এখন জানবার  সম্ভাবনাও নেই, প্রয়োজনও নেই যদিও অনেকের দেখি এ বিষয়ে বিশেষ কৌতুহল আছেইন্দিরার স্মৃতিকথা থেকে দুটো বিষয় লক্ষ্য করা যায়; ( ) তারও এ বিষয়ে কৌতুহল ছিল কিন্তু তা নিরসন হয়নি। ( ) পরে নিশ্চই এমন কিছু শুনেছিলেন যা তাকে গোপন রাখতে হয়ে ছিল। তার মায়ের আচরণ প্রত্যক্ষ কারণ না হলেও পরোক্ষ কারণ তো বটেই।

    উপরের উদ্ধৃতিগুলোয় জ্যোতিরিন্দ্রনাথের নাম বারবার উচ্চারিত হয়েছে ।কাদ্ম্বরীর মৃত্যুর জন্য তিনি অনেকটাই দায়ী ছিলেন। যে প্রশ্রয়-আদরে তিনি কাদম্বরীকে গড়ে উঠতে বড় হয়ে উঠতে সহায়তা করেছেন পরে সেইস্থান থেকে নিজেকে পুরোপুরি সরিয়ে নিয়েছিলেন। কাদম্বরী নিঃসঙ্গ, অভিমানী, অসুস্থ এসব খবর জ্যোতিরিন্দ্রনাথের অজানা ছিল না; তিনি বিচিত্রকর্মা পুরুষ ছিলেন। নাট্যরচনা ও অভিনয়, সংগীতচর্চা, ভারতী প্রকাশ ইত্যাদি নানা কাজকর্মের সঙ্গে পাট, ীল ও জাহাজের ব্যবসায় আত্মহারাভাবে যুক্ত ছিলেন তাছাড়া জমিদারী দেখা ও আদি ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদকের দায়িত্ব ছিল তার অন্যদিকে কাদম্বরী নিঃসন্তান; মহর্ষির অন্য পুত্রকন্যাদের ঘর যখন শিশুদের কোলাহলে পূর্ণ তখন তিনি বাহির তেতলার ছাদে বাগান করা, পাখি পোষা এসব কাজ নিয়ে এসব কথা ভুলে থাকতে চেয়েছেন। স্বর্ণকুমারীর মেয়ে ঊর্মিলাকে তিনি নিজের মেয়ের মতো করে বড় করতে চেয়েছিলেন, দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুতে সে কাজেও ছেদ পড়েছে  মাতৃহারা রবিকে প্রায় মায়ের স্নেহ দিয়েই বড়ো করেছেন, কিন্তু তার কবিখ্যাতি, জ্ঞাণদানন্দিনীর পরিবারের মুক্ত হাওয়া তাকে ধীরে ধীরে কাদম্বরীর স্নেহছায়া থেকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলএ অবস্থায় স্বামীর সাহচর্যের প্রয়োজন ছিল তার। তাছাড়াও বাংলা ১২৯০ এর আষাড় থেকে ভাদ্র তিনি যথেষ্ট অসুস্থ ছিলেনআর ঠিক সেঈ সময়ে জ্যোতির জাহাজ নির্মাণ নিয়ে প্রচন্ড ব্যস্ততা তার  সঙ্গে বিনোদিনীর চিঠিটি তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে বিহারীলালের 'সাধের আসন', অক্ষয় চৌধুরীর, 'অভিমানিনী নির্ঝরিণী ' এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছিল

    কোনো সংবাদপত্রে কাদম্বরীর মৃত্যু সংবাদ প্রকাশিত না হলেও জ্যোতিরিন্দ্রনাথের বন্ধু অক্ষয় চৌধুরী বা কবি বিহারীলাল চক্রবর্তী কবিতায় আড়াল করে বা সরাসরি জ্যোতিকে দায়ী করেছেন এই মৃত্যুর জন্য। অক্ষয় চৌধুরীর কবিতা 'অভিমানিনী নির্ঝরিণী'

    রাখিতে তাহার মন, প্রতিক্ষনে সযতন 
    হাসে হাসি কাঁদে কাঁদি--- ম ন রেখে যাই
    মরমে মরমে ঢাকি তাহারি সম্মান রাখি
    নিজের নিজস্ব ভুলে তাহারে ধেয়াই,
    কিন্তু সে তো আমা পানে ফিরেও না চায়।

    অক্ষয় চৌধুরী যেন কাদ্ম্বরীর মনের কথা কবিতায় বলেছেন; তার মধ্যে রুচিবোধের পরিচয় আছেকাদম্বরী খুব ভালো সেলাই জানতেন; রবিকে তিনি পশমের জুতো বানিয়ে দিয়েছেন, আর কবি বিহারীলালকে বানিয়ে দিয়েছিলেন আসন। সেই আসন উপলক্ষে তিনি যে কবিতা লিখেছিলেন তা অনেকটাই রূঢ ।

    কবিতার নাম 'সাধের আসন':

    পুরুষ কিম্ভুত মতি চেনে না তোমায়
    মন প্রাণ যৌবন-- কী দিয়া পাইবে মন।
    পশুর মতন এরা নিতুই নতুন চায় ।

    খুব বেশি দুঃখ পেলেও এরকম ভাষা তিনি ব্যবহার না করলেই ভালো করতেন। কাদম্বরীর মৃত্যুশোক কবিকে বাক্যহারা করে দিয়েছিল।

    কাদম্বরীর যন্ত্রনাকাতর মৃত্যু ঘটল রবীন্দ্রনাথের চোখের সামনে। তার মা যখন মারা গেছিলেন তখন তিনি ঘুমন্ত; মায়ের সাথে সবে ঘনিষ্ঠতা শুরু হয়েছিল। জীবনস্মৃতির 'মৃত্যুশোক' অধ্যায়ে লিখেছেন:  ‘ইতিপূর্বে মৃত্যুকে আমি কখনও প্রত্যক্ষ করি নাই। ...কিন্তু আমার চব্বিশ বছর বয়সের সময় মৃত্যুর সঙ্গে যে পরিচয় হইল তাহা স্থায়ী পরিচয়। তাহা তাহার পরবর্তী প্রত্যেক বিচ্ছেদশোকের সঙ্গে মিলিয়া অশ্রুর মালা দীর্ঘ করিয়া গাঁথিয়া চলিয়াছে। শিশুবয়সের লঘু জীবন বড়ো বড়ো মৃত্যুকে ও পাশ কাটাইয়া ছুটিয়া যায়--কিন্তু অধিক বয়সের মৃত্যুকে অত সহজে ফাঁকি দিয়া এড়াইয়া চলিবার পথ নাই। তাই সেদিনকার সমস্ত দুঃসহ আঘাত বুক পাতিয়া লইতে হইয়াছিল এইসময় তার কিছুদিন সৃষ্টিছাড়া মনের ভাবও বাহিরের আচরণে দেখা গিয়াছিল। লোক-লৌকিকতার বিষয় বিন্দুমাত্র গ্রাহ্য না করে ধুতির উপর চাদর গায়ে পায়ে একজোড়া চটি পড়ে থ্যাকারের দোকানে বই কিনতে গেছেনআহার-শয়ন সবই খাপছাড়া; ঘুমোতেন তেতলার বারান্দায়, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা যে কোনো ঋতুতেই কাদম্বরীর মৃত্যুতে তিনি অনুভব করেন, তার পরম আত্মীয়া,বাল্যসহচরী, এতদিনের সমূহ সাধনার প্রেরণা স্বরূপিনী কাদম্বরীর সঙ্গে সঙ্গে যেন সমস্ত জগত আত্মহত্যা করেছে; যার সঙ্গে কেটেছে অবিস্মরণীয় সতেরো বছর। সামনে দেখা দিল এক সূচিভেদ্য অন্ধকার গহ্বর। একে নাস্তিকতার সঙ্গে মোকাবিলা [encounter with nothingness] বলা যায়। জীবন স্মৃতিতে এই ঘটনা বর্ণনা করে লিখেছেন, ‘নিকটের মানুষ যখন এত সহজে এক নিমেষে স্বপ্নের মতো মিলাইয়া গেল তখন সমস্ত জগতের দিকে চাহিয়া মনে হইতে লাগিল এ কী অদ্ভুত আত্মখন্ডন! যাহা আছে যাহা রহিল না তাহার মধ্যে মিল করিব কেমন করিয়া?' আপন অন্তর্নিহিত শক্তির বলে এই অপার গহ্বরও পেরোলেন তিনিকবিতার মানসিক ভারসাম্য ফিরে পাবার প র অনুভব করলেন যে বিশ্বব্যাপী শোক তাকে এক নুতন পথের দিশা জাগিয়েছে। তিনি আগে ছিলেন এই বিশ্ব নাটকের নট আর এখন হয়েছেন আত্মসমাহিত দর্শক।তাই ব‌লেলন, 'জগতকে সম্পূর্ণ করিয়া সুন্দর করিয়া দেখিবার জন্য যে দূরত্বের প্রয়োজন মৃত্যু সেই দূরত্ব ঘটাইয়া দিয়াছিল আমি নির্লিপ্ত হইয়া দাঁড়াইয়া মরণের বৃহত পটভূমিকার উপর সংসারের ছবিটি দেখিলাম এবং জানিলাম তাহা বড় মনোহর


    [শুক্লা রায়]




    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.