এক অন্তরঙ্গ সাক্ষাৎকারে সাহিত্যিক কচি রেজা
সংশপ্তকঃ বাংলাসাহিত্যের
সাথে প্রথম প্রেমের সূত্রপাত ঠিক কি ভাবে ঘটেছিল?
কচি রেজাঃ নিজের সাহিত্যকর্ম
নিয়ে এখন আর সেভাবে বলা যায় না। শুরুইতো হল না। যদিও এটাই আমার মনের কথা। কবে যেন আরম্ভ
হয়েছিল। কোনো চিঠি লিখেছিলাম
কাউকে। বাবা পড়ে বললেন, সম্ভাবনাময়। তখন অর্থ ও জানিনা সম্ভাবনা মানে
কী এর ব্যাপ্তি-ভর-পরিধি। অজানা ভাল লেগেছিল।
পারিবারিক পরিবেশ একদম
অনুকূল ছিল বলাই বাহুল্য। তবে অনুকূল হলেও দেয়াল কিন্তু ছিল। নিজেকে লেখাপড়ায়
স্বাবলম্বীতার এক লড়াই যেটা মুখ্য এই সমাজে অনেক কঠিন
আর জটিল। পাশাপাশি
গান-নাচ-নাটক এটাও কিছুদূর চলে কিন্তু কবিতা লেখার মত এমন কাজ যাতে মগ্নতা এমন যে
স্বার্থপর না হলে যেন উপায় থাকে না। বাড়ির কালচারাল পরিবেশ
ততটুকূ সাপোর্ট দিয়েছে যতটা এক্সট্রা গুন হিসেবে বাইরে সামাজিক ভাবে মূল্যায়নে দাম
বাড়ে।
সংশপ্তকঃ বাংলাদেশ আর বাংলাসাহিত্য কি আলাদা করে অনুভবের আঙিনায়
ধরা দিতে পারে বলে মনে হয় কখনও?
কচি রেজাঃ এই ব্যাপার নিয়ে ইদানিং বেশ উচ্চকিত হচ্ছেন অনেকে। হয়তো সব
সময়েই ছিল যে গঙ্গাপার আর পদ্মাপারের সাহিত্য আলাদা। কেউ বলছেন ভাষার ব্যাপারে, উচ্চারনের
ভিন্নতা নিয়ে। আমার মনে হয় দুই পক্ষের বক্তব্যই হয়তো সত্য। সাধারন অর্থে ভাষা এক
হলেও দেশ তো ভিন্ন। রাজনীতি ভিন্ন। রাজনীতিও ভাষা তৈরি করে। সাহিত্যিক যদি হন সময়ের
উপস্থাপক তাইলে তিনি তার দেশের সবচেয়ে সম্ভাব্য এবং অবশ্যম্ভাব্য বিষয় নিয়ে কাজ
করবেনই তো। আবার মনে হয়, ভিন্নতা কিসে নেই! একজন মানুষ সে এক দেশের হলেও কালচারাল পরিবেশ কোনোভাবেই এক
নয়। পরিবারে পরিবারে পার্থক্য আছে। আছে মননের , শিক্ষার আর সব মিলিয়ে, সব কিছু মিলিয়ে একটা বোধ তাকে দিয়ে লিখিয়ে নেয় যখন তখন সেটা
হয়তো দেশকাল ছাড়িয়ে সবার হতে বাধ্য। কিন্তু ভিন্ন দেশ বলেই জোর করে ভিন্ন হতেই হবে
এমন ধারণা সচেতন ভাবে মাথায় না রাখাই ভালো। তাই বাংলাসাহিত্য আলাদা করে নয় শুধু
বাংলাদেশ আলাদা নয় শুধু একটা প্রকৃত রচনা এক হতে পারে আবার ভিন্ন হতেও পারে।
সংশপ্তকঃ বিষয়টি একটু বিস্তৃত করে মেলে ধরলে,
জানতে ইচ্ছে করছে,
সাহিত্য বস্তুত কতটা দেশ কাল নিরপেক্ষ আর কতটাই বা
দেশকাল সম্পৃক্ত? এবং এই দুই বিপরীত অভিমুখের মধ্যে কি ভাবেই বা সমন্বয়
সাধন করবেন সাহিত্যিক নিজে?
কচি রেজাঃ দেশকাল শুধু নয়, দেশকালের বাইরে আছে কি আছে না তা নিয়েও কবি সম্পৃক্ত। কবি আন্তর্জাতিক।
কবি আন্তর্বিশ্ব। কবি একটা নিম গাছ। কবি আকাশের মেঘ। কবি ব্ল্যাক হোলে হারিয়ে
যাওয়া প্রাণ। কবি রাস্তার কুকুর। কবি ভবঘুরে ভিখারী। পাগল।
তাই নিজের দেশের জন্য
সে আপাদমস্তক আগ্রাসী রকমের সম্পৃক্ত। সারা মনব অনাগত সব দশ্যের জন্য ও সে ব্যাকুল।
তার তৃপ্তি নেই। চির কাঙাল।
সংশপ্তকঃ বাংলাসাহিত্যের নানান শাখাপ্রশাখার মধ্যে কাব্যসাহিত্যের গুরুত্বের স্বরূপ ও
তার বিবর্তন সম্বন্ধে আপনার অভিমত কি?
কচি রেজাঃ সেদিন এক শিক্ষক বলছিলেন, পদ্মানদীর মাঝি আর তিতাস একটি নদীর নাম আর পড়তে অথবা পড়াতে ভালো
লাগে না। বুঝাতে চাইলেন, এই বইয়ের ঘটনা এখন আর সমসাময়িক নয়। কথাটা একই সাথে সত্য
আবার সত্য নয়। সাহিত্য যদি সমসাময়িক ভাবতে চাই তাইলে রিপোর্টিং সবচেয়ে বড়ো সাহিত্য।
চটজলদি ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পাঠকের দরবারে হাজির হওয়া যায়। কালেরযাত্রাধ্বনি
বলে একটা কথা বলেছেন রবীন্দ্রনাথ। এটা গতকালের এবং আগামীরও হতে পারে কিন্তু শেকড়ের
সাথে সম্পৃক্ততা থাকতেই হবে। আসলে কথাটা হয়ত তিনি বলতে চাইছিলেন ওই দুই
সাহিত্যিকের পরেও কালজয়ী রচনাতো আছেই। অর্থাৎ সৃষ্টিশীল সাহিত্য অনেকেই তারপরে
লিখেছেন। এটি একটি আভাস। বিবর্তনের ব্যাপারে। এইভাবে সময়, রাজনীতি ভূমিকা রাখে সাহিত্য বদলে পালটে দেয়ার। কাব্য মানে কবিতার গুরুত্ব
শুধু নয়, সাহিত্যের কোনো শাখাই কী আসলে কাব্য প্রেমী ছাড়া সাধারন, মানে আম জনতার কাছে ডাল চাউল বেগুনের চেয়ে বেশি? সেক্ষেত্রে কবিতা অথবা কাব্যের মতো একটি বিষয় কীভাবে সাধারন মানুষের কাছে গুরুত্ব
পাবে। সাহিত্য স্বপ্ন দেখায়। সেক্ষেত্রে কবিতা একটি স্বপ্ন যাপনের নাম। জগতের
পেটের খিদের বাইরেও আরেকটি স্বীকৃত খিদে যে আছে তা তো আর অপ্রমানিত নয় এখন। তবু
সেই প্রথম কবির কবিতার পরে কেন এখনো কবিতা রচিত হচ্ছে। কেন অসংখ্য মানুষ রোজ
লিখছে। তাও পৃথবীর সব দেশে? কোনো একট দেশ কি কবিতা অথবা সাহিত্য রচনা থেকে বিরত----জানা নেই আমার। তাই কবিতা শতাব্দীতে শতাব্দীতে পালটে যাচ্ছে। বছরে বছরে এমন কি
এই যে দশক বিভাজন করা হয়, যেমন সত্তর, আশি, নব্বই শূন্য --তার মানে এমন ধারনা হচ্ছে যে কবিতা দ্রুত উচ্চারনে এবং
কন্ঠস্বরে পালটাচ্ছে। এই পালটানো কে কী বিবর্তন বলা যায়? হয়তো না। এটি অন্য ব্যাপার।
সংশপ্তকঃ বাংলা কাব্যসাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের গুরুত্ব এবং আপনার
জীবনে সাহিত্যসাধনার যাত্রাপথে বিশ্বকবির ভূমিকা ঠিক কি রকম?
কচি রেজাঃ রবীন্দ্রনাথের
জন্মদিনে আমি একবার বলেছিলাম,
রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বাংলা সাহিত্য –এরকমের একবার ভেবে দেখলে
কেমন হয়। সে যাক অনেক জ্ঞানিরা অনেক কিছু বলেছেন তাঁকে নিয়ে আরো চিরকাল বলবেন।
বলতে হবেই। তবে তিনি অনুভবের পর্যায়ে চলে গেছেন, নিঃশ্বাসের
মতো। তিনি মানুষের অক্সিজেন, আমি ব্যাক্তিগতভাবে তাঁকে পাই। পেয়েছি। যাপনের সংকটকাল কার না আছে। বারবার
পতিত হয়ে তাঁর দ্বারাই উদ্ধার হই।
তাঁর সাহিত্য মানুষের সাহিত্য। মানসগঠনের জন্য তাঁকে অনুশীলন অবশ্যজরুরী ।
সংশপ্তকঃ রবীন্দ্রোত্তর আধুনিক যুগসাহিত্য কবির কাব্যমানস থেকে কতটা দূরবর্তী বলে মনে
হয়?
কচি রেজাঃ রবীন্দ্রনাথ কি আধুনিক নন? এইযে আমরা লিখছি তার মানে আমরা আধুনিক? আমার মনে হয় তা নয়। আরো এক শতাব্দী পরে আমাদের কেউ কি আধুনিক বলবে? আধুনিকতা সাহিত্যের ব্যাপারে সচরাচর উচ্চারিত হয় কারণ ভাষা ভঙ্গি আগের থেকে ভিন্ন হয়ে যায় নানা কারণে। আজ যখন আবার তারাশঙ্কর, বিভূতির গল্প পড়ছি (অন্তরঙ্গ আলাপ বলেই নিজের কথা বলছি) আমার তো কিছুই প্রাচীন লাগছে না। এইসব চরিত্র
এখনো সমাজে বিদ্যমান। প্রযুক্তি আবিস্কারের
ফলে পরিপার্শ্ব বদলে গেছে। গাছ পালা বিনষ্ট হয়েছে। কিন্তু এখনো আম গাছে আম হয়। রবীন্দ্রনাথের মানস বলতে আমি যদি বুঝি বোধ, তাহলে কিছুই আমরা তাঁর থেকে দূরে যাইনি। বরং কেবলই
পৌঁছাচ্ছি তাঁর কাছে। যেতে চাইছি।
ছুঁতে চাইছি। আর যদি উপস্থাপনের বিষয় হয় তাহলে তো অবশ্যই বেশ এবং ভীষন ভাবে আজকের
রচনা ভিন্ন। এইটাই কবিতা। কবিতা এক আশ্চর্য স্বপ্ন। রোজ বদলায় ।
সংশপ্তকঃ
বাংলাদেশের জাতীয়জীবনে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্য
বাংলাসাহিত্যের জন্যে যে বিপুল সম্ভবনার দিগন্ত উন্মোচন করেছিল, তা কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে মনে হয় আপনার?
কচি রেজাঃ কবির জীবনে কোনো ঘটনাই অস্পৃশ্য নয় সেখানে
মুক্তিযুদ্ধ তো তার অস্তিত্বের স্বাধীনতা ঘোষণা। বড়ো দাগে এটা নিয়ে আমার লেখা হয়ে ওঠেনি।
তবে আমার বেঁচে থাকার আর লেখার ঠিকানা ওই মুক্তিযুদ্ধ। কবিতা লিখি অথবা শুধুমাত্র
বেঁচে থাকি, খাই দাই মুক্তিযুদ্ধের জন্যে। যে
যুদ্ধ আমাদের সীমানা দিয়েছে। ঠিকানা দিয়েছে।
সংশপ্তকঃ আর ঠিক এই প্রসঙ্গেই জানতে ইচ্ছে করছে,
বিশেষত একজন লেখিকার দৃষ্টিকোণ থেকে; আমাদের পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজ সভ্যতায় একজন লেখিকার ভূমিকা কতটা
গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনার মনে হয়?
কচি রেজাঃ ঘুরে ফিরে এই প্রসঙ্গ আসে, আর এলে আমি বিব্রত বোধ করি উত্তর দিতে। কারণ কি কারণে নারী
গৃহকাজের দায়ীত্ব নিয়ে জড়িয়ে পড়েছিল আপাদমস্তক সে ইতিহাস সবার জানা। কিন্তু যে কোনো কাজের মত গৃহের কাজও তো
কাজ। সন্তানধারন ছাড়া আর কোনো কাজটি মানুষের অসাধ্য, বুঝি না। মানুষ তো পুরুষও। একটি পরিবারে
ছেলে মেয়ে সবার মেধা সমান হয় না। সুযোগ একটি
বিশাল ব্যাপার তো বটেই কিন্তু সুযোগ পেলেই কেউ কবি হয় না। পুরুষের
আধিপত্য মেনে নেওয়ার ভিতরে নারীর অধস্তনতা লুকিয়ে আছে। কিন্তু উপায় কই না মেনে? সমাজের কিছু
রীতিনীতি আছে যা বহমান এবং এড়াতে গেলে এক জীবনের লড়াই। পুরুষ শোষন
করে তা ঠিক নয়। সমাজে যার হাতে শক্তি সেই নীপিড়ক হতে পারে। তখন তার ইচ্ছে অথবা
হুকুমের বাইরে গেলেই শক্তির প্রয়োগ শুরু হয়। মুক্তি নিয়ে অনেকে ভাবছেন। প্রথম মুক্তি স্বাবলম্বীতা। এই শব্দের ভর-পরিধি ব্যাপক। কেবল অর্থের নয়, ভাবালুতারও মুক্তি চাই। এখানে লেখক হিসেবে আমার
কথা যদি বলি, তাহলে বলব, একমাত্র কাজ লিখে যাওয়া। শাব্দিকভাবে সমাজ সংস্কারকের
ভুমিকা নিতে পারলে ভালো, না পারলেও লেখকের কাজ লিখে যাওয়াই। কারণ এই লেখার
পটভূমিকা প্রেক্ষাপট এত বিশাল যে, সেই লড়াই করতে করতে তার সময় চলে যায়।
সংশপ্তকঃ সেই সূত্রেই আরও জানতে চাইব; সমাজসংস্কারে সাহিত্য এবং সাহিত্যিকের ভূমিকাকে আপনি কি ভাবে দেখবেন?
কচি রেজাঃ লেখা মানে তো অনেক কিছু। সেই সাহিত্যের আদি ইতিহাস পড়া,
ভূগোল জানা।
সমাজ জানা। অর্থনীতি তো বটেই--এইসবের ভিতর মগ্নতা না থাকলে কিভাবে লিখবে। সাহিত্যে সে তার এবং সমাজের নীপিড়ন তুলে ধরলে একার্থে সমাজ সংস্কারকের ভূমিকা পালিত হয় কিছুটা। আবার সরাসরি তুলে না ধরেও সে যে লিখছে এটাও এক ধরনের ভূমিকা রাখা। কবির কাব্য আনন্দের যেমন বেদনারও তেমনই। যেমন জীবনের
তেমনই মৃত্যুর মত শীতল।
নীলকন্ঠের কন্ঠ হয়তো দেখা যায় কিন্তু বিষ অদখা থাকতে পারে।
সংশপ্তকঃ গত এক দশকে,
গোটা বিশ্বে ইনটারনেট বিপ্লবে আপনি বাংলাসাহিত্যের
ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে কতটা আশাবাদী?
কচি রেজাঃ আমি
যথেষ্টই আশাবাদী। অনেক বেশী করে সাহিত্যচর্চার একটি পরিসর গড়ে উঠেছে এই ইনটারনেটকে
কেন্দ্র করে। আমি জানি অনেকেই হয়ত উৎকর্ষতার প্রশ্ন তুলবেন, সেটা আমিও মানি, কিন্তু আমি তার সাথে এও বিশ্বাস করি, এই ব্যাপক পরিমাণে সাহিত্যচর্চার মধ্যে থেকেই কালজয়ী সাহিত্য বেড়িয়ে আসবে, উঠে আসবেন- যুগন্ধর সাহিত্যিককুল।
সংশপ্তকঃ ইনটারনেট
সাহিত্যিক কচি রেজাকে কি ভাবে বিবর্তিত করেছে বলে আপনার নিজের মনে হয়?
কচি
রেজাঃ ফেস বুক তো সেদিনের। খুব্বি উল্লেখযোগ্য এই মাধ্যম। খাতার দিন শেষ হয়নি।
তবে ইন্টারনেটের তুলনা নেই। নিজে আমি এখানেই লিখি এডিট করি। আমার কাছে অপরিসীম এর গুরুত্ব।
সংশপ্তকঃ এই স্বল্প
পরিসরে আরও অনেক কথাই অনালোচিত রয়ে গেল, পরবর্তীতে সুযোগ পেলে
সেসব বিষয়ে অবহিত হওয়ার প্রবল আকাঙ্খা নিয়ে আপনাকে শেষ প্রশ্ন; আপনার নিজের সাহিত্যকর্ম নিয়ে আপনার মূল্যায়ণ।
কচি
রেজাঃ আগে, খুব অহংকারের বয়স তখন, নিজেকে নিজের চোখের সামনে ভীষন চকচক করতো, একটা কিছু মনে হত—অভিমান করতাম বোইকি। এখন যখন
ধুলির থেকেও ধুলি ভাবি, ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র এই কারণে যে, এই কবিতা নিয়ে দিনের পর দিন কাটালাম, আসলে এগুলাম কতটা।
বা কি করলাম সমাজের জন্য এইযে এগুনোর কথা এই কথায় এসে যায় এত
সহজ নয় এই কাজ, এত কঠিন নয় এই কাজ। এ আসলে বিশ্ব প্রকৃতিকে কেবল নিজের
ভিতর পেতে চাওয়ার এক অদম্য আকাঙ্খা। এ যে আসলে নিজের জন্য নিজের সবচেয়ে একান্ত স্বার্থ দেখার কাজ। এ পথে পরিবার কতটা সঙ্গে যায়, সমাজ
কতটা হাঁটে। প্রশ্ন উঠতে পারে আমিই ? গাছ লাগাইনি,
জমি কর্ষন করি নি। পারাপার করিনি জল। কেবলি নিজের এক সাধ পূর্ণ করায় নিয়োজিত রাখলাম শিরা-উপশিরা। সেখানে মর্মের একটা
এবস্ট্র্যাক্ট বিষয় যার আর্থিক মূল্য নেই, উচ্চাশা নেই,
দিতে পারা যায় না কাউকে কিছু, দেখানো
যায় না নিজের পোড়ামুখ ব্যাতীত অন্য কোনো উজ্জ্বল ঐশ্বর্য, কেবলি ঘাড় গুঁজে লেখা, আকাশের দিকে চেয়ে
মহাশূন্যের কারুকাজ দেখা অথবা অনুভব করা –এই কাজ এত
নিজস্ব এত ব্যক্তিক এত অগ্নিময় যে কাউকে দোষ দেয়া যায়না যদি পরিবার থেকে ত্যাজ্য
করে দ্যায়।