>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • মনোরমা বিশ্বাস

    SongSoptok | 3/10/2015 |





    ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিব। কোন না কোন শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে নাগরিক মানুষ প্রশাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় দিবসটি ঘটা করে পালন করবেন সন্দেহ নাই। পত্রিকায় ক্রোড়পত্র বের হবে, বেতার টিভিতে ফলাও করে কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজনের করা হবে, এনজিওগুলো মেয়েদের নিয়ে বর্ণাঢ্য মিছিল বের করবে, বিজ্ঞ সূধীজনদের সেমিনার তাড়িত মুখে শোভা পাবে ভালো ভালো কথা। সব ঠিকঠাক পরিপাটি থাকবে কিন্তু কেউ কি একবারও খাতা কলম নিয়ে হিসেব করতে বসবেন নারী উন্নয়ন সূচকে আমরা কতটা এগিয়েছি বা কতটা এগোনো সম্ভব ছিল অথচ পারিনি আমরা জানি এ হিসেব করবেন না কেউ।দিবস চলে যাবে। সকলে ভুলে যাবেন মেয়েদের কথা। তাদের দুর্দশা মোচনের কথা। কি দুঃসহ অবমাননা মেয়েরা আজো বয়ে চলেছে মনে থাকবেনা কারও। যে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে, খুব কাছ থেকে দেখেছি, স্বাক্ষী থেকেছি মেয়েদের নির্মম বঞ্চনার, তার আলোকে অগোছালো কিছু ভাবনা আজ শেয়ার করব আপনাদের সাথে। প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম নেওয়া এবং বেড়ে ওঠার ফলে সমাজে বাঙালি নারীদের অবস্থান স্বচক্ষে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। সেই ছোট্ট শৈশবে বুঝতে পেরেছি পরিবারে একটা গাভীর বকনা বাছুর হলে যেমন সবাই খুশি হন, ভাবেন ঐ বকনা বাছুর বড় হয়ে গাভী হবে এবং দুধ দেবে। অথচ আমরা মেয়েরা সমাজে সংসারে গৃহস্থের ঐ আলোটুকুওও যেন জ্বালাতে পারিনা। মেয়ে শিশু জন্মালে বাবা-মা’র মুখ যেন আঁধারে ঢেকে যায়। অর্থাৎ আমাদের সমাজে একটা গরুর যে মূল্য আছে, একটা মেয়ের সেই মূল্য নেই। অথচ মেয়েরাই এই মহান পুরুষদের জন্ম দাত্রী,  যারা সমাজের কর্তা ব্যক্তি সেজে এখনো মেয়েদের অন্ধকার প্রকোষ্ঠের ভেতর বন্দী করে রেখেছে। আমি এই সব মেয়েদের খুব ভালো করে চিনি যারা জন্মের সময় পরিবারের সবার মুখ আঁধার করে জন্ম নিয়েছে। ভেবেছি এ বিরূপ পরিবেশে জন্ম নেওয়া একজন মেয়ে কি করে বিরূপতা কাটিয়ে মনের সুস্থ বিকাশ ঘটিয়ে বেড়ে উঠবে ? সেই কন্যাশিশু কী করে সুযোগের সাম্যতা পাবে? এদের প্রায় সবাই সমস্ত  কিছু থেকে বঞ্চিত হতে হতে বড় হয়। নিজেকে সে অবাঞ্ছিত মনে করে, অভিশপ্ত মনে করে। পদে পদে কুণ্ঠা বোধ তার পথরোধ করে। সে বুঝতেই পারে না তার মৌলিক অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সূক্ষভাবে আরো অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। এরা জানেই না তাদের অপরাধ কি। আস্তে আস্তে সে বুঝে নেয় যে সে মেয়ে হবার জন্য অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে যা ছেলে শিশু হলে হত না। তখনই তার মনে এক ধরণের হীনমন্যতার জন্ম হয়। জন্মের পর একটু বড় হয়ে যখনি সে বুঝতে পারে তার যা পাওয়ার তাকে তা দেয়া হচ্ছে না শুধু মাত্র মেয়ে হিসেবে জন্ম নেবার কারণে তখন সে আর নিজেকে ক্ষমা করতে পারেনা। এই বোধ তাকে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়। এমনকি অধিকাংশ মেয়ে এমন একটা ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে এক সময় বিশ্বাস করতে শুরু করে যে সে হয়ত সত্যই ছেলেদের চেয়ে হীনবল, ওর বুঝি জন্মই হয়েছে ছেলেদের মনতুষ্টি অর্জন করে হাসিমুখে আজীবন সেবা করে যাওয়ার জন্য। তার নিজের জন্য তার নিজের কোন চাওয়া থাকতে পারেনা। কোন আনন্দই তার থাকতে পারেনা। কিভাবে? ছোটকাল থেকেই সে অভ্যস্ত হয়ে উঠে, ভাইকে ভালো খাবার দেওয়া হয়, বেশি সুবিধা দেওয়া হয়। সে মেয়ে বলে তাকে দেয়া হয়না। অনেক ক্ষেত্রে ভাই স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায়, সে পায় না। পেলেও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ ভাই যেভাবে পায়, মেয়ে হওয়ার জন্য সে তা সে পায়না। অনেক বাবা মা মনে করেন মেয়েকে লেখাপড়া শেখানো অর্থের অপচয় বৈ কিছু না, কারমেয়ে তো পরের ঘরে চলে যাবে, সে তো টাকা ইনকাম করে বাবা মাকে খাওয়াবে না। তাই কোন রকম অক্ষর জ্ঞান আর হিসেব নিকেশ জানলেই হল। এমনকি কোন মেয়ে পড়ালেখায় ভালো হলেও তার শিক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হয়।এমন অবিচারের চিত্রও দু্র্লভ নয় ।এখানে আমার নিজের মায়ের গল্প বলি, মা নাকি পড়ালেখায় খুব ভালো ছিলেন, সব ক্লাসেই প্রথম হতেন,পারদর্শী ছিলেন খেলাধুলাতেও। কিন্তু তবু এত সব সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও প্রাইমারী পাশ করার পর মা’র পড়ালেখা আর এগোতে পারেনি। কারণ অনেক দূরে ভিন্ন গ্রামে স্কুল, গ্রামের মাঠ পেরিয়ে দূরে স্কুলে যাওয়া দুরহ তো বটেই নিরাপত্তার জন্য ছিল হুমকি। যে সমাজ নারীর সম্ভ্রম রক্ষাকে তার শিক্ষার্জনের মৌলিক অধিকারের সাথে যুক্ত করে দেয় সে সমাজে শিক্ষার পথ রুদ্ধ হয়ে পড়বে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সুতরাং মা’র পড়ালেখায় ছেদ পড়ল সেখানে। যে সামাজিক সম্ভ্রম রক্ষাকে অগ্রাধীকার দিয়ে একদা আমার মা’র পড়াশোনা ইতি টানা হয়েছিল, সমাজের গণ্যমান্য মানুষ যারা তারা একবারও ভেবে দেখননি যে এসব অনাচার দূর করার জন্যই তো সর্বাগ্রে মেয়েদের শিক্ষা দরকার। আজ যদি এভাবে দেখি অবস্থার কী খুব বেশি পরিবর্তন হয়েছে।  দৃশ্যতঃ স্কুল কলেজের সংখ্যা বেড়েছে ,বেড়েছে ছাত্র-ছাত্রী কিন্তু সমাজ অধিপতিদের রক্ষণশীল চিন্তার জায়গাটাই খুব বড়সড় পরিবর্তন কী হয়েছে। এসব পরিবর্তনে সবচে কার্যকর যে প্রাতিষ্ঠানিক যে সহায়তা দিতে পারে যে সরকার ও এনজিও তারা কী পালন করছে যথাযথ ভূমিকা ?

    এখনো মেয়ে বড় হলে বেশি দূরে বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভয় পায়, ধর্ষিত হওয়ার ভয়। সমাজ ধর্ষিত মেয়ে সহ্য করে না, কেউ ধর্ষিত মেয়ে বিয়ে করে না, অথচ ধর্ষকের শাস্তি নেই বললেই চলে, এরা বুক ফুলিয়ে সমাজে ঘুরে বেড়ায়। এই সব কারণে মেয়েদের শিক্ষার পথ বন্ধ হয়ে যায়। এখন আমাদের দেশে মেয়েরা বস্তাবন্দি হয়ে যাচ্ছে এই সব কারণেই, ধর্ষণের ভয়, লাঞ্চিত হওয়ার ভয়। এটার জন্য আমি রাষ্ট্রকে দায়ী করি। কঠোর হস্তে এই সব অনাচার বন্ধ করলে সমাজে মেয়েরা মাথা উঁচু করে চলতে পারতো । আমার মাও হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেতো। শুরুটা হয় খুব ছোট বেলা থেকে। শিশু কন্যা যখন বালিকা হয়ে ওঠে তখন তার উপর নেমে আসে কিছু অলিখিত নিয়ম। যেমন সে খেলাধূলা করতে পারবে না, খেলাধূলা দেখতেও পারবে না। আমি যখন কিশোরী ছিলাম, আমার ভাইয়েরা ফুটবল ম্যাচ দেখতে যেত, আমার খুব ইচ্ছে হত, ওদের সাথে যাওয়ার, যেতে দিত না। আমি যখন ফাইভ সিক্সে পড়ি তখন আমার খেলার সাথীদের বিয়ে হয়ে যায়। ওরা স্কুলে যাওয়ার সুযোগই পায়নি। এরা যখন ম্যাচিউর উওম্যান হবে, এরা কি কোন কথা বলতে পারবে? এদের তো কথা বলার ‘বুলি’ শিক্ষাই দেওয়া হয়নি। এদের মধ্যে থেকে হাজারে একজন বা লাখে একজন বেরিয়ে আসে। এমনই একজন আমি। ছোটকালেই ছেলে এবং মেয়ের মধ্যে এই অসামঞ্জস্য আমার চোখে ধরা পড়ে। মেয়েদের মানবেতর জীবন আমাকে পীড়িত করে। মনে হয়েছে, এই জীবন থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। লাখ লাখ মেয়ের মত আমার জীবন হতে পারে না। এটা চরম অন্যায়।  বাবার কাছ থেকে জেনেছি, এক মাত্র শিক্ষাই পারে এই জীবন থেকে মুক্তি দিতে।  কঠোর পরিশ্রম করে শিক্ষার এক এক ধাপ অতিক্রম করেছি। আমাদের সমাজে, প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ের লেখাপড়া শিখে উপরে উঠা মোটেই মসৃণ নয়। উপরে উঠতে হলে সবাইকেই কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, কিন্তু একটা মেয়ের জন্য তা খাঁরা পাহাড় অতিক্রম করার সমান। সবাই তা পারে না। অথচ, এই শিক্ষা হবে একজন মানুষের জন্য মৌলিক অধিকার, এর জন্য পাহাড় ডিঙ্গাতে হবে কেন? সমাজের কাছ থেকে বাধা, বাবা মা অভিভাবকের কাছ থেকে বাধা। বাবা মা বা অভিভাবক মনে করে মেয়ে মানেই তা অন্যের, অর্থাৎ বিয়ের পর সে অন্যের হয়ে যাবে, সুতরাং তার জন্য শ্রম দিয়ে, টাকা দিয়ে শিক্ষা দেওয়ার দরকার কি? একটা মেয়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, ধরে নিতে হবে সে এক লাখের মধ্যে একজন।? অনেকে বলেন বিয়ে হলে মেয়েদের দুর্দশা মোচন হয় কিছুটা। আমার তো মনে হয় এটা আরো ভ্রান্ত ধারণা। কেমন করে? ধরুন একটা মেধাবী শিক্ষিতা মেয়ে।  ঘটা করে তার বিয়ে দেয়াও হলো। দেখা যাবে শ্বশুরবাড়ীতে সবে এলো যে মেয়েটি বধু বেশে, সকলে মিলে তার রুপ বর্ণনায় মেতে উঠল, খোঁজখবর নেয়া শুরু হলো রান্নায় কতটা পারদর্শি, সেলাই বা হাতের কাজ জানে কিনা। এসবই হলো মেয়েটিকে ঘিরে পারিবারিক মূল্যায়ন। কেউ একবারের জন্যও খোঁজ নেবেনা বউটি শিক্ষিত কিনা, আপন পায়ে দাঁড়িয়ে চাকুরী বা ব্যবসায় নিজেকে যুক্ত করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে পারবে কিনা, সবচেয়ে বড় কথা শিক্ষিত মা হয়ে ভবিষ্যৎ বংশধরদের যথাযোগ্য ভাবে গড়ে উঠতে সহায়তা করতে পারবে কিনা।  অথচ সে শিক্ষিত মেয়েটিতো সুবিধাপ্রাপ্তদেরই একজন যে শিক্ষিত হয়ে সমাজে ভূমিকা রাখার ক্ষমতা অর্জন করেছে। কিন্তু বিয়ের পর দেখা যায়, শিক্ষিত মেয়েদেরকে চাকরি করতে দেওয়া হচ্ছে না। যেন শিক্ষিত বউ বিয়ে করেছে অন্যদের দেখানোর জন্য। বউ এর কাজ হলো ঘরে থেকে সংসারের কাজ করবে, বাচ্চা পালন করবে, শ্বশুর শাশুড়ির সেবা করবে।  এটা পুরুষতন্ত্রের একটা চক্রান্ত। ব্রিটেনের প্রাইম মিনিষ্টারে বউ চাকরি করতেন, উনার কি টাকার অভাব ছিল, প্রাইম মিনিষ্টার নিজেও রাত জেগে নবজাতকের ন্যাপি বদল করতেন। শিক্ষিত, চাকরিজীবি মেয়েরা আরো বেশি করে বাচ্চার যত্ন নিতে পারে । আমাদের পুরুষতন্ত্র তা স্বীকার করে না, তাদের ধারণা ঘরের বউ চাকরি করতে গেলে তাদের সেবা যত্নের ঘাটতি দেখা দিবে।

    এ তো গেল শিক্ষিত মেয়েদের সমস্যা, এবার আসি রুট লেবেলের কয়েকটি ঘটনায়। এই রকম হাজার হাজার হাজার মেয়ের কাহিনী আছে গ্রামে গঞ্জে। ঐ মেয়েদের অপরাধ কী ছিল ? ওদের অধিকার ছিল একটা ভালো জীবন পাবার । ওদের অধিকার ছিল একটা সুস্থ যৌন জীবন উপভোগ করার । আমি তখন ছোট, গ্রামের অল্প বয়সী এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। যার সাথে বিয়ে হয়েছে সে কিন্তু মোটেও অল্প বয়সের নয়। ঐ মেয়ে কিছুতেই শ্বশুর বাড়ি যাবে না। বাবা মেয়েকে মারধোর করে পাঠিয়ে দেয়, মেয়ে পালিয়ে বাপের বাড়ি চলে আসে। আবার পাঠায়। পরে মেয়েটি সম্পর্কে পাড়ার কুসংস্কারাচ্ছন্ন লোকেরা রটনা করার সুযোগ পেয়ে বলে বেড়াতে থাকে যে ,মেয়েটিকে নাকি ভূতে ধরেছিল, পুরুষ ভূতে। তাই সে নাকি স্বামীকে সহ্য করতে পারতো না। পড়শী নির্বোধ সহজ সরল লোকজন ভাবতে শরু করেছিল যে..সত্যি তো আর দশটা মেয়ে তো এমন করে না দিব্যি স্বামীর সংসার করে। একদিন নাকি ঢেঁকিতে ধান ভানতে ভানতে ফিট হয়ে গিয়েছিল। এমন নাকি প্রায়ই হত। পরে ওঝা ডেকে ,গাছের ডাল দিয়ে মেয়েটাকে পিটিয়ে নাকি কথিত সে ভূত তাড়াতে হয়। স্রেফ একটি মানসিক সমস্যা দলবেঁধে সকলে যে ভুল বুঝল তাই নয়, রীতিমত শারীরিক নির্যাতন পর্যন্ত সহ্য করতে হলো! আসলে এই ছোট ছোট মেয়ে যারা যৌনতা বুঝে না, অথচ ঐ বয়সে তাদের যৌনতার দিকে ঠেলে দেয়া হয়। সবাই এটা মেনে নিতে পারে না। ভুতে পাওয়া যে মেয়েটির কথা বললাম তার পরে কি হয়েছিল তা আর জানি নি, পরে শুনেছি এর পুরো পরিবারটি ভারতে চলে যায়। আরেকটা মেয়ের কথাও বেশ মনে পড়ে । খুব ছোটকালে বিয়ে হয়,  সে কিছুতেই শ্বশুর বাড়ী যেতে চায়তোনা। বাবা মা থামতে চেয়েছে ভেবেছে, বড় হলে আপনিই যাবে। কিন্তু ছেলের পক্ষ তার জন্য এতটা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করবে কেন, তারা শেষ পর্যন্ত ছেলের অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দিল। আরো অনেক পরে  বড় হয়ে ঐ মেয়ে নিশ্চয় ভুল বুঝতে পেরেছে কিন্তু তখন আর এ বিবাহিতা মেয়েকে তখন কে বিয়ে করবে? এ মেয়েটির ব্যপারেও পরে জানতে পারি অনেক বয়সী হয়ে একজন কুৎসিত দো’জ বরের সাথে তার বিয়ে হয়। এসব মেয়েরা এটা তাদের ভাগ্য বলে মেনে নেয়। দাম্পত্য জীবনের প্রকৃত সুখ কিম্বা স্বাচ্ছন্দ্য বঞ্চিত এই রকম হাজার হাজার হাজার মেয়ের কাহিনী আছে গ্রামে গঞ্জে। এদের অপরাধ কী ছিল ? ওদের অধিকার ছিল একটা ভালো জীবন পাবার। ওদের অধিকার ছিল একটা সুস্থ যৌন জীবন উপভোগ করার ।


    [মনোরমা বিশ্বাস]


    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.