>
>>
  • SriSuvro
  • >>
  • VERA DROZDOVA
  • >>
  • TILOTTAMA BOSE
  • >>
  • THADDEUS HUTYRA
  • >>
  • SUTAPA KHATUA
  • >>
  • SUMANA BHATTACHARJEE
  • >>
  • STEPHEN STONE
  • >>
  • STACIA LYNN REYNOLDS
  • >>
  • SOUMYA SEN SARMA
  • >>
  • SIAMIR MARULAFAU
  • >>
  • SHARMILA DASGUPTA
  • >>
  • RUMA CHAKRAVARTI
  • >>
  • ROULA POLLARD
  • >>
  • RINITA MAZUMDAR
  • >>
  • RIMI PATI
  • >>
  • RANIA ANGELAKOUDI
  • >>
  • PRERNA SINGLA
  • >>
  • PHILLIP
  • >>
  • PAPIA ROY
  • >>
  • NUPUR LAHIRI
  • >>
  • NILANJANA BANERJEE
  • >>
  • NANDITA SAMANTA
  • >>
  • NANDITA BHATTACHARYA
  • >>
  • MITRA GHOSH CHATTOPADHYAY
  • >>
  • MITA CHAKRABORTI
  • >>
  • MICHAEL MILLER
  • >>
  • MASSIMILIANO RASO
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • MARY L PALERMO
  • >>
  • MARIETA MAGLAS
  • >>
  • MANISH MITRA
  • >>
  • LaDean Birkhead
  • >>
  • KOLPITA BASU
  • >>
  • KALYAN MUKHOPADHYAY
  • >>
  • JYOTI BISWAS
  • >>
  • JULIE ANNA
  • >>
  • JAYANTHI SEN
  • >>
  • GITA ASSEFI
  • >>
  • EFTICHIA KAPARDELI
  • >>
  • DEBORAH BROOKS LANGFORD
  • >>
  • CLIFF GOGH
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • >>
  • BRITTA HOFFMANN
  • >>
  • BENEDICTA RUIZ
  • >>
  • ASIM RANJAN PATI
  • >>
  • ARONI
  • >>
  • ANURADHA BHATTACHARYYA
  • >>
  • ANTORA
  • >>
  • ANNA ZAPALSKA
  • >>
  • ANINDA GHOSH
  • >>
  • ANCHITA GHATAK
  • >>
  • ANCA MIHAELA BRUMA
  • >>
  • AMRITA KANGLE
  • >>
  • ADRIJ
  • >>
  • SUBHODEV DAS
  • >>
  • MARY SCULLY
  • >>
  • LIPIKA DEY
  • >>
  • CHRYSSA VELISSARIOU
  • রত্নদীপা





    সংশপ্তক:  আমাদের সমাজ সংসারে মেয়ে হয়ে জন্মানো সত্যিই কি বিড়ম্বনা বলে মনে হয়েছে কখনো জীবনের কোন পর্বে?
    রত্নদীপা: না , না । তা কেনো ? ... আমি আপনার মনে , আপনার রঙে বিকশিত হয়েছি । খুব ছোটবেলায় আমার মাকে দেখেছি একজন চাকুরীরত মহিলা হিসেবে । স্বাধীন । একইসাথে  সুগৃহিণী । কর্মকুশলতায় ভরপুর  একজন মহিলা । এমনকি আমার দাদু এবং ঠাকুমাও আমার মায়ের ওপরেই বেশি নির্ভরশীল ছিলেন । খুব স্বাভাবিকভাবেই মায়ের মধ্যে কখনো কোনো গ্লানি দেখতে পাইনি ... ছোটবেলায় মা আমাকে স্বপ্ন দেখাতেন ... বড় হও । সমৃদ্ধ হও ... গ্রেস্ফুলি বেঁচে থাকো  , নিকটজনদের  কাছাকাছি  হও । আবার অন্যদিকে , নিজের পায়ে দাঁড়ানো ... ইত্যাদি  ঝঙ্কারও আমাকে অপরূপ আকাশে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল ... আরেকটা কথা না বললে অসম্পূর্ণ থেকেই যাবে ... আমি ছিলাম ঠাকুমার ‘ ডালিম ‘ ... দাদুর ‘ মুন ” ...অত্যন্ত আদরের ... প্রিয় ছাত্রী । দাদু আমার প্রথম পাঠশালা । আমার হাতে খড়ির গুরুও দাদু । প্রথম নামতা ... দু’ঘরের বৃষ্টি প্রথম দাদুর সাথেই ... মেয়ে হিসেবে বিড়ম্বনা ? কখনো না । কখনই না ।

    সংশপ্তক: শৈশব কাটিয়ে কৈশরে পৌঁছে ছেলে মেয়েদের চলা ফেরা ওঠা বসার মধ্যে পার্থক্য গুলো প্রাথমিক ভাবে কেমন লাগতো আপনার?
    রত্নদীপা: অই যে বল্লুম , ছেলে মেয়েদের চলা ফেরা ওঠা বসা ইত্যাদি নিয়ে কোন পার্থক্য টের পাইনি । তবে মায়ের শাসন ছিল বেশ কড়া । সময় ধরে  কাজ করা , পড়তে বসা । সবি করতে হত । কিন্তু কোন শাসনই মেয়ে হিসেবে নয় যা করা হত , যতটুকু শাসন করা হত তা মানুষ হিসেবে , মানুষ গড়ার জন্যে ... ছেলে মেয়ে নিয়ে কোন বিভাজন আমি কখনও টের পাইনি ... হয়ত তার কারণ , আমার শৈশব থেকে কৈশোর কেটেছে কুচবিহারে । ছোট কিন্তু পরিচ্ছন্ন শহর ... আমার সৌভাগ্য কলকাতার বন্ধুদের মত বিভাজন আমাকে  সহ্য করতে হয়নি ।। আমার বেড়ে ওঠার পর্বে  ছেলে  এবং মেয়ের বিভেদ  ছিল না বললেই চলে ... আমি এবং আমার মাসতুতো দাদা একই বৃক্ষের শাখা প্রশাখায় বড় হয়েছি ...

    সংশপ্তক:  আমাদের বাঙালি সমাজে একেবারে সংসারের ভেতরেই ছেলে মেয়েদের মধ্যে ছোট থেকেই একটা বৈষম্য মূলক  আচরণের ধারাবাহিকতা চলে আসছে আবহমান কালব্যাপি পরিতাপের কথা, যে মেয়েটি নিজের বাড়িতেই এই বৈষম্যের পরিবেশে বেড়ে ওঠে, সেই কিন্তু গৃহকর্ত্রীরূপে আবার নিজের সংসারেও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখে এই বিষয়টি আপনাকে কতটা ও কিভাবে নাড়া দেয়?
    রত্নদীপা: নাড়া দিয়েছে । নাড়া দ্যায় বৈকি । আমি এমন একজন মহিলাকে চিনি , যিনি পেশায় একজন শিক্ষিকা । সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা । অথচ তাঁর সংসারে এতটুকু স্বাধীনতা ছিল না যে নিজের রোজগারের পয়সায় তিনি  নিজের পছন্দের কিছু কেনেন ... অদ্ভুত ... আমার খুব অবাক লেগেছিল এটা শুনে ... প্রসঙ্গত উল্লেখ্য , যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপিকাকে দেখেছি , সামান্য বাসভাড়ার জন্যে স্বামীর কাছে হাত পাততে ... তবে এখন সময় পালটাচ্ছে । আমরা বুঝি আলকিত হচ্ছি । ছেলে মেয়েদের মধ্যে বিভাজন আর করা হচ্ছে না ... শুনতে পাই ... তবে শুধুমাত্র আমাকে দিয়ে জগত বিচার করলে তো আর চলবে না । গৃহবধূরা এখনও হাত পাতে সংসারের কাছে ... সংসার কে ? কার ? এই গৃহবধূর কতটা অর্জন ? উপার্জনই বা কতখানি ...  স্বামীই প্রভু ... তিনিই ঈশ্বর । এও শুনতে পাই ... শুনতে হয়  ...চারদিকের আকাশখানি তাই দরজা বেঁধেই খুলে রাখতে হয় ...

    সংশপ্তক:  পিতৃতন্ত্রের যে ঘেরাটোপে নারীর জীবন, সেইটি আপনাকে ব্যক্তিগত ভাবে কতটা প্রভাবিত করে?
    রত্নদীপা: আমি প্রচলিত নারীবাদী নই । আবার আমি পুরুষসেন্ত্রিকও নেই । আমি । আমিই । এই আমিত্বটুকুই আমার উপার্জন । আমি চাকরি করিনি কোনদিন । তা স্বত্তেও আমার ব্যাক্তিত্ব আমার মেধা , রুচিবোধ ... সংস্কার আমাকে এমন একটা জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে যে আমি প্রকৃত অর্থে স্বাধীন জীবন যাপন করছি ... বাবা বা স্বামীর অধীনে ধারণ করে  আছি এই জীবন ... মেনে নিতে পারছি না আদৌ ... আর ঘেরাটোপ শব্দটিতে আমার আপত্তি আছে ... আমার মনে হয় প্রতিটি নারীর ঘেরাটোপ তার নিজস্ব শঙ্খবলয় । তাঁর একান্ত নিজস্ব সিঁদুরকাহিনী । বৈবাহিক জীবনের শৈশবে না হোক , তার কৈশোরে নারীর উচিত পলুর রেশমগুটি কেটে প্রজাপতি যাপন ...
    সংশপ্তক:  নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা যে খুবই জরুরী সে নিয়ে আজ আর বিতর্কের অবকাশ নেই কিন্তু দুঃখের সাথে লক্ষ করা যায় অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী নারীও সমাজ সংসারে সঅভিভাবকত্ব অর্জনে বাধা প্রাপ্ত হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই বিষয়ে আপনার অভিমত কি?
    রত্নদীপা: আগেও বলেছি , এখনও বলছি ... নারীর শেকল নারী নিজেই । যে নারী মাথা তুলতে পারে না , তার ধর্মান্তর কোনো পুরুষ এনে দিতে পারে না । যে  শেকল কাটতে ভয় পায়  তার ডানা তার পুরুষ অবশ্যই ছেঁটে দ্যায় ... আর যে পালক খুলে বেরিয়ে পরে  আর আকাশের স্রতে সাঁতার কাটতে পারে  ... বল্গার রাশে বেঁধে রাখতে পারে নিজেকে , নিজের পুরুষকে এবং সংসারকেও ।। পুরুষও মোহোগ্রস্ত হয় তার অভিভাবকত্বের ...

    সংশপ্তক:  কথায় বলে সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে কিন্তু এর পেছনে পুরুষতন্ত্রের কৌশলগত অবস্থানটি সম্বন্ধে সাধারণ ভাবে আমরা কতটা ওয়াকিবহাল?
    রত্নদীপা: আজকের দিনে প্রাক-বিবাহ পুরুষ এবং রমণী একে অন্যকে গভীরভাবে চেনে । সেখানেই গড়ে ওঠে সখ্যতা । ভালোবাসা । এবং একই সমতলে পা ফেলবার আস্থা এবং বিশ্বাস । আজকের নারী পুরুষের সাথে প্রথাগত কাঠামোর বাইরে সাক্ষাৎ করে অথবা মিলিত হয় ... এবং বাইরের বহুধা অস্তিত্বের মাঝখানেও তার সংসারকেও সমান ভাবে ধারণ করে রাখে ... সুতরাং সংসারের স্থায়িত্ব এবং বিকাশের ব্যাপারে রমণীর অবদান পুরুষের থেকে কিছুটা হলেও বেশি কিন্তু আজকের নিউক্লিয় সংসারে প্রজনমান্তরের বাধ্যবাধকতার বেড়াজাল না  থাকার কারণে সংসার টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে পুরুষের ভূমিকা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না ... যে পুরুষ তার ঘরের নারীকে অবহেলা করে ... অদূর ভবিষ্যতে তার বিষময় ফল সে হাতেনাতে প্রত্যক্ষ করে ...

    সংশপ্তক:  পেশাগত জগতে একজন নারী কতটা স্বাধীন আর কতটা পরিস্থিতির শিকার, সেটা নারীর ব্যক্তিত্বের উপর কতটা নির্ভর করে, আর কর্মজগতের বাস্তব অবকাঠামোর উপর কতটা নির্ভর করে?
    রত্নদীপা: গত এক থেকে দু বছরের কর্মজগতের ইতিহাসে চোখ রাখলে , আই টি সেক্টর থেকে ফিল্ম এবং প্রকাশনা বা মিডিয়ায় নারীর নির্যাতন বা শোষণ সহজেই প্রতিপন্ন হয় । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এর ব্যতিক্রম নেই । যেটা সামাজিক ভাবে নারীবাদ ও নারীচেতনা অর্জন করতে পেরেছে সেটা হল --- অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিবাদী নারীদের কণ্ঠস্বর সমাজের এবং রাষ্ট্রের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে । নারী শোষণ তো নতুন ঘটনা নয় , না তার আধুনিক মনস্কতা অথবা অত্যাধুনিকতা অথবা পাশ্চ্যাতায়ন  ... তার ওপর পুরুষের ব্যাবহারের পরিবর্তনের জন্য দায়ী । আগেও ষাট এবং সত্তরের দশকেও ( বামপন্থা ছেড়ে দিলে ) নারীকে নিজের রিসার্চ ফেলোশিপ থেকে চাকরির পদন্নতি কিম্বা নায়িকার ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রেই আদায় করতে হয়েছে পুরুষকে তুষ্ট করে , যখন সেই দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের পাশে দাঁড়াবার মত কাঁধ ছিল না একটাও । নারীর আকুতি ছিল একান্ত নিজস্ব । আজ প্রতিটি কোম্পানিতে একজন ডিরেক্টর নারী । সংরক্ষিত আসনে পঞ্চায়েত , এমএলএ  এম পি জেলা পরিষদ – নারী তার পুরুষের ছায়াপ্রক্সির ভূমিকা থেকে বেরিয়ে নিজের স্বাধীন ভূমিকা জাহির করে ...।

    সংশপ্তক:   এই প্রসঙ্গে আমাদের সমাজ বাস্তবতায় লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়টি একজন কবি রত্নদীপাকে কতটা বিচলিত করে সেই বিচলনের রূপ ও বিকাশ সম্বন্ধে যদি আমাদের অবহিত করেন!
    রত্নদীপা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও একজন নারী তার শীর্ষভূমিকা সংস্থার শীর্ষ কর্তৃত্বের বদান্যতায় অর্জন করে । তবু এর মধ্যেই চন্দা কোঁচার , শিখা শর্মা , কিরণ মজুমদার শ ... এরা প্রত্যেকেই বিশাল বিশাল সংস্থায় শীর্ষপদ দখল করেছেন ।এমনকি স্টক আক্সেঞ্জেও নারীদের রমরমা । তবু ভাবতেও অবাক লাগে , পাঞ্জাব থেকে মহারাষ্ট্র অথবা বিহার থেকে অসম ভ্রূণ পরীক্ষা এবং নারী ভ্রূণের গর্ভপাতের শিকার । প্রদীপের নিচে বড় বেশি বোরখা । বড় বেশি পর্দা । বড় বেশি ঘোমটা । এবং নারীর শত্রু নারী নিজেই ... পণপ্রথার বলি যে নারী তার রক্তে রাঙা আরেক নারীই ... খাপ থেকে লাভজিহাদ কিম্বা ধর্ষণ ও বলাৎকার – সর্বত্রই সামন্ততান্ত্রিক পুরুষের মধ্যযুগীয় মানসিকতা নারীর শিক্ষার অন্দরমহলেও সুগ্রথিত । পৃথিবী জুড়ে যত শিশু কিশোর অপহারণ দাসত্ব , ভিক্ষাবৃত্তি বেগার মজুরি এবং বেশ্যাবৃত্তি অবশ্যই সিংহভাগ নারীই ... যদি কোনোদিন এই ব্যাবস্থার পরিবর্তন হয় ... তখনি নারীর মুক্তি সম্ভব ... আর তার জন্যে সব চেয়ে প্রয়জন নারীর সত্যিকারের শিক্ষা ... শিশু থেকে বৃদ্ধা ...

    সংশপ্তক:  বর্তমান সমাজে নারী নির্যাতনের বিষয়টি কি রাষ্ট্র ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে বলে মনে হয় আপনার? সামাজিক ভাবে আমাদের ভূমিকাই বা কি হওয়া উচিত এই বিষয়ে?
    রত্নদীপা: উইমেন্স লিব সোভিয়েত-উত্তর , বামপন্থাহীন পৃথিবীতে নারীর শরীরই উদ্ভাসের বিকৃতিতে আত্মসমর্পণ করেছে । সুতরাং যৌথ পরিবার ... অফিস কাছারি , কৃষি পুলিশ ও সেনা , সরকারি দপ্তর অথবা শ্রমিক কিম্বা নিজস্ব সংসার ... নারী পরাধীন । নারী নির্যাতিতা । তার স্বাধীনতা পুরুষের দান , তার বোধ বিচার চিন্তা মনন অহঙ্কার --- দু একটি রাজ্য ছাড়া পুরুষতন্ত্রের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত । নারী তার পিতা , ভাই কর্তা পুত্র অথবা জামাতার অধীন এবং সেটাই নিজের আভূষণ  হিসেবে ভাবতে ভালবাসে নারী এবং তার সমাজ এমনকি তার ফেসবুক ... প্রথম বিশ্বের যৎসামান্য দেশে নারী শীর্ষ ভূমিকা পালন করে । আবার ভারতবর্ষ বাংলাদেশ পাকিস্তান মায়নামার থাইল্যান্ড ... প্রত্যেকেই শীর্ষস্থানে নারীকে আরোহণ দিয়েছে ... শ্লাঘার বিষয় হল কোন রেনেসাঁই মনুবাদী আর্যব্যাবস্থার মূলে আঘাত হানার জন্যে সত্যিকারের কোন মুক্তিসূর্যকে আবাহন করতে পারেনি । অথবা বলা যায় এশিয়ার মুক্তিসূর্যের বিশ দফা কর্মসূচী কখনই চায়নি , নারীর প্রগতি হোক ...

    সংশপ্তক:  বাড়ির বাইরে মেয়েদের সুরক্ষার বিষয়টি আজও কেন এত অবহেলিত! কি মনে হয় আপনার? দেশের প্রশাসনের শীর্ষপদে মহিলারা নেতৃত্ব দিলেও অবস্থার উন্নতি হয় না কেন? গলদটা রয়ে যাচ্ছে কোথায়?
    রত্নদীপা:  শিলা দীক্ষিত থেকে মায়াবতি , জয়ললিতা কিম্বা মমতা ব্যানার্জি আসলে মনুবাদি পুরুস্তন্ত্রের অভিভাবকত্বে পুষ্ট বোধ । তাই ১৬ই ডিসেম্বর ২০১৩ আততায়ীরা ফাঁসির আদেশ পাবার পরেও মনে করে তারা কোন ভুল করেনি কারণ যে নারী নৈশচারিণী অথবা আধুনিকা তাকে ধর্ষণ করার মধ্যে কোন পাপ নেই । আসলে শৈশব থেকে বার্ধক্য এদের মগজ নিজেদের মা বউ বোনের ধর্ষণ দেখতে অভ্যস্ত এবং সেটাকেই স্বাভাবিক জীবনচর্যা মানতে অভ্যস্ত ... এদেশে জজ , এজলাসের মহিলা উকিলকে অবলীলায় বলতে পারেন ... এদেশে এখনও শাড়ি বিক্রি হয় ... শুধুমাত্র কয়েকটি ফাস্ট ট্র্যাক আদালত অথবা জনরোষের সামনে কোর্টের ফাঁসীর বিধান নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে না । পুলিশ প্রশাসন থেকে স্কুল কলেজ সংসার কর্মক্ষেত্র সর্বত্র নারীর প্রতি পুরুষের মনোভাব বদল হওয়া আশু প্রয়োজন । শিক্ষা ব্যাবস্থার অঙ্গ হিসেবেও । সমাজতন্ত্রে নারী কখনো পণ্য হয় না ।

    সংশপ্তক:  আন্তর্জাতিক নারীদিবস পালন আর সারা বছর নারী নির্যাতনের ধারাবাহিক ব্রেকিং নিউজ, এর মধ্যে সমন্বয় হবে কি করে? মেয়েদের এই বিষয়ে কি কর্তব্য আপনার মতে?
    রত্নদীপা: কখনই হবে না । কারণ ৮ই মার্চও অন্তত চব্বিশ জন নারী পণপ্রথার বলি হবেন , ৮ জ নারীর মুখে অ্যাসিড ছোড়া হবে ।  ৪৮টি নারীভ্রূণ হত্যা হবে । অন্তত ১২ জন ধর্ষিতা হবেন । যাদের খবর আমরা পাবো না ...

    সংশপ্তক:  সমাজে নারীর সম্মান প্রতিষ্ঠিত না হলে কোনো দেশ জাতি সমাজ উন্নত হতে পারে না ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?.
    রত্নদীপা: ধনতন্ত্রী ব্যাবস্থায় যে অন্ধ বাহুল্য বিলাসের দিকে আমরা ছুটছি তাতে নারী ভোগবাদী পণ্য হিসেবেই গণিত হবে । আরবে অথবা ইরানে গাড়ি চালাবার অপরাধে নারীকে প্রকাশ্য রাস্তায় বেত্রাহত হতে হবে । ধর্ষিতা নারীর ফাঁসী হবে । স্কুলে যাবার অপরাধে মালালার মত বহু কিশোরীকে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করতে হবে ... জাতিগর্ব রক্ষার তাগিদে নারীকে প্রকাশ্য রাস্তায় দেওয়া হবে মৃত্যুদণ্ড আর সেই খবর যে নারী টিভির পর্দায় পর্বে তার মুখ থাকবে নাকাবে ঢাকা ... ...
    তবু আমি আশাবাদী । একুশ শতকের পৃথিবী ঝঞ্ঝামুক্ত হবে ... বেরিয়ে আসবে পুঁজিবাদের কঠোর দেওাল ভেঙে ... নারী তার অধিকার ছিনিয়ে নেবে ... ইচ্ছেদেওয়ালে ফুটে উঠবে ... হোম , হেম আর সুবর্ণপাখিরা ...




    [রত্নদীপা দে ঘোষ। বিশিষ্ট কবি ও সমাজকর্মী]

    Comments
    0 Comments

    No comments:

    Blogger Widgets
    Powered by Blogger.