৮ ই মার্চের কেস ডায়েরি
নং ১ ঃ পর্ণা সামন্ত ঃ পেশা – শিক্ষকতা ঃ
- তুমি আমাকে সব ব্যাপারে এমন বেঁধে রাখতে চাও কেন ? কেন আমার
স্বাধীন ভাবে চলাফেরার ওপর এমন নজরদারি থাকবে ?
- না , এটা বাঁধা দেবার ব্যাপার নয় । আমি তোমার সিকিওরিটি নিয়ে কনসারনড ।
- এত কনসারনের দরকার নেই । একদিনও বাড়ি ফিরতে দশ মিনিট দেরি
করলে আমার কলিগদের বাড়ি ফোনা ফুনি শুরু কর । আমারও নিজস্ব একটা জগত আছে ,
কাজকর্ম আছে ভাবতেই পারো না । একটা লোক ফোন করলে তার কি কেন কোথায় কবে
হাজার ফিরিস্তি ।
- লোকে কি বলবে ? ভাববে , আমি তোমার সম্পর্কে উদাসীন ।
- আমার প্রতি বেশি কেয়ারফুল হবার অর্থ এই নয় যে , আমার প্রতিটি
মুভমেনট আন্ডার স্ক্যানার থাকবে । আমার নিজস্ব ঘর , সময় কিচ্ছু থাকবে না
, ভালোলাগা মন্দলাগার কোন দাম থাকবে না । আমার সামাজিক মেলামেশা বা
বন্ধুমহলের জন্য তোমার মুখ হাঁড়ি করে রাখবে ।
- আজকাল বড্ড বাজে কথা বল তুমি । খালি হাওয়াই চটির মত ফটর ফটর !
- তোমার সাথে ফালতু কথা বলার ইচ্ছে আমার নেই । বাধ্য হই বলতে ।
নং ২ ঃ রুক্মিনি গোলদার ঃ পেশা – ব্যাঙ্ক কর্মী ঃ
- ছোটোটাও এবার হাতছাড়া হয়ে যাবে , বাবা মাকে চিনবে না ।
- শোনো , মানুষের মন কখনও বাঁধা যায় না , সন্তানকে ভালোবাসো ,
কর্তব্য পালন কর , ব্যস , বাকিটা নিয়ে ভাববার দরকার নেই ।
- বাচ্চা রাতে বাবা মায়ের কাছে থাকবে না তাই বলে ?
- ওর যদি আজ দিদা আর দিদিয়ার সাথে শুতে ইচ্ছে করে , থাকুক না ।
- এর পরে আর আসতে চাইবে না ।
- তোমার নিজের ওপর বিশ্বাস এত কম কেন ?
- আমাদের সাথে কোন অ্যাটাচমেনটই নেই ।
- বাজে কথা । অ্যাটাচমেনট বাইরের জিনিস নয় । দ্যাখানোর কিছু নেই
। সন্তানের সাথে বাবা মায়ের অটোমেটিক স্নেহ মায়া মমতায় বন্ড গড়ে ওঠে ।
আমি তো তোমার মত ইনসিকিওরড ফিল করি না ।
- আমার তো রাতে ছাড়া সময় হয় না ওকে কাছে পাবার ।
- ইচ্ছে থাকলেই সময় করে নেওয়া যায় । ছুটির দিনগুলোতেও কি ওকে
সময় দাও তুমি ? সেই তো নিজের ধান্দায় সারাদিন বাইরে বাইরে ... আর একটা
কথা , যারা ওকে সকাল দশটা থেকে সারাদিন রাখে তাদের কাছে একদিন রাতে শুলেই
বা কি ? এমন তো নয় , ওরা ওর বেবি সিটার !
নং ঃ ৩ ঃ সুলোচনা শিকদার ঃ পেশা - স্বাস্থ্য কর্মী , নেশা – লেখা লেখি ঃ
- রাত এগারোটা বেজে গ্যাছে , লাইটটা নেভাও , আমার ঘুমের অসুবিধা হচ্ছে ।
- ঠিক আছে । মনিটরের আলোতেই টাইপ করে নেব ।
- মনিটরের আলোটাও খুব চোখে লাগছে ।
- ঠিক আছে , ব্রাইটনেস কমিয়ে দিচ্ছি ।
- উফ , রাতে যে একটু শান্তিতে ঘুমবো তারও উপায় নেই । আমাকে তো
ভোর ছটায় উঠতে হয় । নিজে তো নাক ডেকে ঘুমাও ।
- আমি নাক ডাকি আর তোমার সংসার এমনি এমনি চলে , তাই তো ? আমাকেও
তো রান্নাবান্না সেরেই কাজে বেরতে হয় ।
- তোমার অফিস আমার চেয়ে কাছে । আমাকে তোমার আগে বেরতে হয় ।
- আমার অফিস বাড়ির কাছে , সে তো আমার কপাল । যে যেমন কপাল করে জন্মেছে ।
- তুমি কম্পিউটার অন্য জায়গায় নিয়ে যাও ।
- ঠিক আছে । ইলেক্ট্রিশিয়ান ডেকে একটা প্লাগ পয়েন্ট করে নি অন্য কোথাও ।
- রাতে এত কম ঘুমাচ্ছ আজকাল , তোমার শরীর খারাপ করবে ।
- করে করুক । আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না তোমার । কোনকিছুর
বিনিময়েই আমি আর লেখা ছাড়বো না । দশ দশটা বছর ফালতু নষ্ট করেছি আমি ।
সকালে রান্না করতে করতে লিখতে বসলেও আপত্তি , রাত জেগে লিখলেও ।
- অই তো অখাদ্য রান্না কর , পুড়ে যায় , কাঁচা থাকে , খাওয়া যায় না ওসব ।
- দু একদিন তো খারাপ হতেই পারে । আমিও তো খাই ।
- তুমি তো একটা গরু । সব খাও ।
- তাহলে রান্নার লোক ঠিক করে নাও ।
- তুমি কর ।
- আমি এসবে নেই । রান্নার লোকের সাথে অমন খিটমিট করলে রান্নার
লোক টিকবে না ।
- তারচেয়ে আমি হোটেলে খাবো কাল থেকে । বাজারও করতে হবে না ,
ভালো খেতেও পাবো ।
- ঠিক আছে , কদিন চালাতে পারো দেখি । আমার রান্না আমি করে নেব ।
রোড আছে , ঝড় জল আছে , অফিসে টাইমলি পৌঁছনোর ব্যাপার আছে , আর তাছাড়া ওই
স্পাইসি খাবার কদিন সহ্য হবে তোমার পেটে ?
নং চার ঃ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঃ গৃহবধূ ঃ
- পা সরাও আমার পায়ের ওপর থেকে । আমার সাফোকেটিং লাগছে ।
- তাহলে গায়ে জড়িয়ে শুই ?
- আমার মন টন ভালো নেই আজ ।
- তুমি আমাকে আর ভালোবাসো না ।
- বাজে কথা ছাড়ো । আমার আজ ভালো লাগছে না ।
- কোনোদিনই তোমার ভালো লাগে না । তুমি কি অন্য কাউকে ভালোবাসো ?
- উফ , তোমাকে নিয়ে আর পারি না । সারাজীবন অবিশ্বাস করে মরলে । জীবনের
প্রথম মিলনের পর বলেছিলে , আমার নাকি অন্য কারুর সাথে সম্পর্ক আছে , আজও
ভুলিনি সেই অপমান ।
- তোমার হাইমেন অক্ষত ছিল না ।
- সাইকেল চালালে অনেক সময় এমন হয় । আমার তো ক্লাস সিক্স থেকে সাইকেল ।
তুমিও তো সেটা জানতে ।
- তোমার ইচ্ছে হলে তবে আসবে , ইচ্ছে না হলে নয় ?
- আমার বান্ধবী আজই মারা গ্যাছে , র্যাদার ওকে মেরে ফ্যালা হয়েছে ।
- কাল আমি বাইরে চলে যাচ্ছি , বেশ কদিনের জন্য , এসো ।
- তুমি আমাকে সব ব্যাপারে এমন বেঁধে রাখতে চাও কেন ? কেন আমার
স্বাধীন ভাবে চলাফেরার ওপর এমন নজরদারি থাকবে ?
- না , এটা বাঁধা দেবার ব্যাপার নয় । আমি তোমার সিকিওরিটি নিয়ে কনসারনড ।
- এত কনসারনের দরকার নেই । একদিনও বাড়ি ফিরতে দশ মিনিট দেরি
করলে আমার কলিগদের বাড়ি ফোনা ফুনি শুরু কর । আমারও নিজস্ব একটা জগত আছে ,
কাজকর্ম আছে ভাবতেই পারো না । একটা লোক ফোন করলে তার কি কেন কোথায় কবে
হাজার ফিরিস্তি ।
- লোকে কি বলবে ? ভাববে , আমি তোমার সম্পর্কে উদাসীন ।
- আমার প্রতি বেশি কেয়ারফুল হবার অর্থ এই নয় যে , আমার প্রতিটি
মুভমেনট আন্ডার স্ক্যানার থাকবে । আমার নিজস্ব ঘর , সময় কিচ্ছু থাকবে না
, ভালোলাগা মন্দলাগার কোন দাম থাকবে না । আমার সামাজিক মেলামেশা বা
বন্ধুমহলের জন্য তোমার মুখ হাঁড়ি করে রাখবে ।
- আজকাল বড্ড বাজে কথা বল তুমি । খালি হাওয়াই চটির মত ফটর ফটর !
- তোমার সাথে ফালতু কথা বলার ইচ্ছে আমার নেই । বাধ্য হই বলতে ।
নং ২ ঃ রুক্মিনি গোলদার ঃ পেশা – ব্যাঙ্ক কর্মী ঃ
- ছোটোটাও এবার হাতছাড়া হয়ে যাবে , বাবা মাকে চিনবে না ।
- শোনো , মানুষের মন কখনও বাঁধা যায় না , সন্তানকে ভালোবাসো ,
কর্তব্য পালন কর , ব্যস , বাকিটা নিয়ে ভাববার দরকার নেই ।
- বাচ্চা রাতে বাবা মায়ের কাছে থাকবে না তাই বলে ?
- ওর যদি আজ দিদা আর দিদিয়ার সাথে শুতে ইচ্ছে করে , থাকুক না ।
- এর পরে আর আসতে চাইবে না ।
- তোমার নিজের ওপর বিশ্বাস এত কম কেন ?
- আমাদের সাথে কোন অ্যাটাচমেনটই নেই ।
- বাজে কথা । অ্যাটাচমেনট বাইরের জিনিস নয় । দ্যাখানোর কিছু নেই
। সন্তানের সাথে বাবা মায়ের অটোমেটিক স্নেহ মায়া মমতায় বন্ড গড়ে ওঠে ।
আমি তো তোমার মত ইনসিকিওরড ফিল করি না ।
- আমার তো রাতে ছাড়া সময় হয় না ওকে কাছে পাবার ।
- ইচ্ছে থাকলেই সময় করে নেওয়া যায় । ছুটির দিনগুলোতেও কি ওকে
সময় দাও তুমি ? সেই তো নিজের ধান্দায় সারাদিন বাইরে বাইরে ... আর একটা
কথা , যারা ওকে সকাল দশটা থেকে সারাদিন রাখে তাদের কাছে একদিন রাতে শুলেই
বা কি ? এমন তো নয় , ওরা ওর বেবি সিটার !
নং ঃ ৩ ঃ সুলোচনা শিকদার ঃ পেশা - স্বাস্থ্য কর্মী , নেশা – লেখা লেখি ঃ
- রাত এগারোটা বেজে গ্যাছে , লাইটটা নেভাও , আমার ঘুমের অসুবিধা হচ্ছে ।
- ঠিক আছে । মনিটরের আলোতেই টাইপ করে নেব ।
- মনিটরের আলোটাও খুব চোখে লাগছে ।
- ঠিক আছে , ব্রাইটনেস কমিয়ে দিচ্ছি ।
- উফ , রাতে যে একটু শান্তিতে ঘুমবো তারও উপায় নেই । আমাকে তো
ভোর ছটায় উঠতে হয় । নিজে তো নাক ডেকে ঘুমাও ।
- আমি নাক ডাকি আর তোমার সংসার এমনি এমনি চলে , তাই তো ? আমাকেও
তো রান্নাবান্না সেরেই কাজে বেরতে হয় ।
- তোমার অফিস আমার চেয়ে কাছে । আমাকে তোমার আগে বেরতে হয় ।
- আমার অফিস বাড়ির কাছে , সে তো আমার কপাল । যে যেমন কপাল করে জন্মেছে ।
- তুমি কম্পিউটার অন্য জায়গায় নিয়ে যাও ।
- ঠিক আছে । ইলেক্ট্রিশিয়ান ডেকে একটা প্লাগ পয়েন্ট করে নি অন্য কোথাও ।
- রাতে এত কম ঘুমাচ্ছ আজকাল , তোমার শরীর খারাপ করবে ।
- করে করুক । আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না তোমার । কোনকিছুর
বিনিময়েই আমি আর লেখা ছাড়বো না । দশ দশটা বছর ফালতু নষ্ট করেছি আমি ।
সকালে রান্না করতে করতে লিখতে বসলেও আপত্তি , রাত জেগে লিখলেও ।
- অই তো অখাদ্য রান্না কর , পুড়ে যায় , কাঁচা থাকে , খাওয়া যায় না ওসব ।
- দু একদিন তো খারাপ হতেই পারে । আমিও তো খাই ।
- তুমি তো একটা গরু । সব খাও ।
- তাহলে রান্নার লোক ঠিক করে নাও ।
- তুমি কর ।
- আমি এসবে নেই । রান্নার লোকের সাথে অমন খিটমিট করলে রান্নার
লোক টিকবে না ।
- তারচেয়ে আমি হোটেলে খাবো কাল থেকে । বাজারও করতে হবে না ,
ভালো খেতেও পাবো ।
- ঠিক আছে , কদিন চালাতে পারো দেখি । আমার রান্না আমি করে নেব ।
রোড আছে , ঝড় জল আছে , অফিসে টাইমলি পৌঁছনোর ব্যাপার আছে , আর তাছাড়া ওই
স্পাইসি খাবার কদিন সহ্য হবে তোমার পেটে ?
নং চার ঃ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঃ গৃহবধূ ঃ
- পা সরাও আমার পায়ের ওপর থেকে । আমার সাফোকেটিং লাগছে ।
- তাহলে গায়ে জড়িয়ে শুই ?
- আমার মন টন ভালো নেই আজ ।
- তুমি আমাকে আর ভালোবাসো না ।
- বাজে কথা ছাড়ো । আমার আজ ভালো লাগছে না ।
- কোনোদিনই তোমার ভালো লাগে না । তুমি কি অন্য কাউকে ভালোবাসো ?
- উফ , তোমাকে নিয়ে আর পারি না । সারাজীবন অবিশ্বাস করে মরলে । জীবনের
প্রথম মিলনের পর বলেছিলে , আমার নাকি অন্য কারুর সাথে সম্পর্ক আছে , আজও
ভুলিনি সেই অপমান ।
- তোমার হাইমেন অক্ষত ছিল না ।
- সাইকেল চালালে অনেক সময় এমন হয় । আমার তো ক্লাস সিক্স থেকে সাইকেল ।
তুমিও তো সেটা জানতে ।
- তোমার ইচ্ছে হলে তবে আসবে , ইচ্ছে না হলে নয় ?
- আমার বান্ধবী আজই মারা গ্যাছে , র্যাদার ওকে মেরে ফ্যালা হয়েছে ।
- কাল আমি বাইরে চলে যাচ্ছি , বেশ কদিনের জন্য , এসো ।
[শর্মিষ্ঠা ঘোষ]
* প্রসঙ্গত উপরোক্ত সব গল্পই কাল্পনিক । কোন ব্যাক্তি বা ঘটনার সাথে কোনও
মিল থাকলে তার জন্য কেউ কোনরকম দায় নেবে না ।
* প্রসঙ্গত উপরোক্ত সব গল্পই কাল্পনিক । কোন ব্যাক্তি বা ঘটনার সাথে কোনও
মিল থাকলে তার জন্য কেউ কোনরকম দায় নেবে না ।