সংশপ্তক: আমাদের সমাজ সংসারে মেয়ে হয়ে জন্মানো সত্যিই কি বিড়ম্বনা বলে মনে
হয়েছে কখনো জীবনের কোন পর্বে?
মেঘ অদিতি: জীবনের
কোনো একটা বিশেষ পর্বে নয়, পারিবারিক ও সামাজিক বৈষম্যের সরু দড়ির উপর ভারসাম্য
রেখে হাঁটতে গিয়ে অনেকবারই একথা মনে হয়েছে।
সংশপ্তক: শৈশব কাটিয়ে কৈশরে পৌঁছে ছেলে মেয়েদের চলা ফেরা ওঠা বসার মধ্যে পার্থক্য
গুলো প্রাথমিক ভাবে কেমন লাগতো আপনার?
মেঘ অদিতি: শৈশব তো হু হু করে চলে যায়। আর কৈশোরে এসে জানলাম
তখন থেকে আর আমার দস্যিপণা করা চলবে না। এখন থেকে এই এই করতে পারব আর এই এই করতে
পারব না। অর্থাৎ ডু’জ এন ডোন্ট’স এর আওতায় এসে গেলাম আর বলা বাহুল্য সেই ডোন্ট’স
এর তালিকা কমেই বড় হয়ে চলল। কেননা তুমি মেয়ে, কেন না সমাজে বুঝে শুনে পা ফেলার
দায়িত্ব কেবল তোমার। প্রথম অবস্থায় বুঝতে পারতাম না এতসব কেন আমাকেই বলা। ওই তো
বিকেলবেলা পাশের বাড়ির ছেলেটা ড্যাং ড্যাং করে মাঠে চলে গেল খেলতে। আর আমাকে বলা
হলো বাড়ির বাইরে না, খেলবে বাড়ির প্রাচীর ঘেরা চৌহদ্দীতে থেকে খেলো। তখন মন কীরকম
বিরূপ হয়ে উঠত, বিদ্রোহীও বলা যায় তাকে।
সংশপ্তক: আমাদের বাঙালি সমাজে
একেবারে সংসারের ভেতরেই ছেলে মেয়েদের মধ্যে ছোট থেকেই একটা বৈষম্য মূলক আচরণের ধারাবাহিকতা
চলে আসছে আবহমান কাল ব্যাপি। পরিতাপের কথা, যে মেয়েটি নিজের বাড়িতেই এই বৈষম্যের পরিবেশে বেড়ে ওঠে, সেই কিন্তু গৃহকর্ত্রীরূপে আবার নিজের সংসারেও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখে।
এই বিষয়টি আপনাকে কতটা ও কিভাবে নাড়া দেয়?
মেঘ অদিতি: আমাকে ভীষণ অস্বস্তিতে ফেলেছে এই ব্যাপারটা সবসময়ই। ব্যক্তিগতভাবে
আমি কিন্তু সচেতনভাবে তা এড়িয়ে যেতে চেয়েছি। যেমন আমার ছেলে, তার বেলায় খেলনা
কেনার সময় আমি এমন খেলনা কিনতাম যাতে স্পেসিফিকেলি তা বয়’জ টয় না হয়। মেয়ের
বেলাতেও ঠিক তাই। ছেলেকে স্কুলে ভর্তির সময় থেকে শেখাতে শুরু করি, তোমার ক্লাসে
যারা তোমার সহপাঠি তারা তোমার বন্ধু এবং সবাই মানুষ। কেউ ছেলে বা কেউ মেয়ে নয়।
কিন্তু আমি একা বদলাতে চাইলে তো আর সব বদলে যায় না। মানে সামাজিক বা পারিবারিকভাবে
এই বৈষম্যমূলক আচরণের প্রভাবমুক্ত তো নই আমরা। অন্য একজন মহিলা তখন ঠিক তার
সন্তানকে শিখিয়ে দিচ্ছেন হয়ত ছেলে ও মেয়ের ভেতর পার্থক্য। আবার যে মায়েরা বাইরে
কাজ করেন, আর তাদের সন্তানের পরিচর্যার কাজে যারা থাকেন তাদের মানসিকতার প্রভাব
থেকেও এ বৈষম্য ঘোচানো সহজ নয়। ভাল খাবারটি ছেলের জন্য আর কন্যাকে বলা হয় তুমি ভাইয়ের
জন্য এটা রাখো অথবা তুমি অল্প খাও। ফলে কোনো না কোনোভাবে এ বৈষম্য রয়েই যায় আর তার
প্রভাব হয় ঋণাত্মক।
সংশপ্তক: পিতৃতন্ত্রের
যে ঘেরাটোপে নারীর জীবন, সেইটি
আপনাকে ব্যক্তিগত ভাবে কতটা প্রভাবিত করে?
মেঘ অদিতি: পিতৃতন্ত্র বা Patriarchy এক ধরণের সামাজিক কাঠামো যা সমাজ দ্বারা নির্ধারিত ফলে বহুদিন ধরে বহুল
প্রচলিত এই পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে কিছু
বলার অবকাশ কই! পিতৃতন্ত্র মানে আধিপত্য। আর পুরুষ সেই আধিপত্যের কেন্দ্র। প্রান্তিক
নারীটি তাই আজীবন প্রান্তিক।
সংশপ্তক: নারীর অর্থনৈতিক
স্বাধীনতা যে খুবই জরুরী সে নিয়ে আজ আর বিতর্কের অবকাশ নেই। কিন্তু দুঃখের সাথে লক্ষ
করা যায় অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী নারীও সমাজ সংসারে সঅভিভাবকত্ব অর্জনে বাধা প্রাপ্ত
হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই। এই বিষয়ে আপনার অভিমত কি?
মেঘ অদিতি: অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন নারীটি যখন পুরুষের রোজগারের উপর নির্ভরশীল নয় তখনও দেখা যায় নারীর সাথে পুরুষের ব্যবহারের
ভেতর সেই দ্বন্দ অর্থাৎ অর্থনৈতিক অসমতা না থাকার পরও নারী পুরুষের
সম্পর্কের অসমতা রয়ে যায়। এক্ষেত্রে একে অপরের দৃষ্টিভঙ্গী, চিন্তা ও আচরণের প্রতি
শ্রদ্ধাশীল ও সমভাবাপন্ন নয় বলে এ পার্থক্য রয়ে যায়। বেশির ভাগ পরিবারেই দুজন
মানুষ অর্থনৈতিক অবদান রাখার পরও অভিভাবক কিন্তু সেই পুরুষ। আর এটা ততক্ষণ পর্যন্ত
রয়ে যাবে যতদিন দৃষ্টিভঙ্গি এবং সাংস্কৃতিক চেতনার ভেতর পার্থক্য না ঘুচে যায়।
সংশপ্তক: কথায় বলে
সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে। কিন্তু এর পেছনে পুরুষতন্ত্রের কৌশলগত অবস্থানটি সম্বন্ধে
সাধারণ ভাবে আমরা কতটা ওয়াকিবহাল?
মেঘ অদিতি: বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা ওয়াকিবহাল নই । পুরুষের ভাবনার ছকে ফেলা নারীর
যাপনে শুধু শিক্ষিত হলেই তো হয় না, বোধ না থাকলে শিক্ষিত যে নারী, তার পক্ষে এ যাপন
সম্পর্কে সচেতনতা আসা সম্ভব নয়। আবার সচেতনতা থাকলেই এর বিকল্পপথ ভাবা সম্ভব হয় না
কুশলী এ জেন্ডার স্বার্থে। ফলে আমাদের অস্তিত্বে-মজ্জায় চিন্তা-চেতনায় পুরুষতান্ত্রিক
এ কৌশল এভাবেই প্রতিষ্ঠিত।
সংশপ্তক: পেশাগত
জগতে একজন নারী কতটা স্বাধীন আর কতটা পরিস্থিতির শিকার, সেটা নারীর ব্যক্তিত্বের উপর কতটা নির্ভর করে,
আর কর্মজগতের বাস্তব অবকাঠামোর উপর কতটা নির্ভর করে?
মেঘ অদিতি: একজন নারীর ঘর এবং বাইরের দুটি জগত যার কোনো একটি জগতেই সে অসফল নয়। পরিবার
সামলানো থেকে কর্মক্ষেত্র দুটি জগতেই সে তার যোগ্যতার প্রমাণ রাখছে অথচ পেশাগত জীবনে
সে নানাভাবে নানাদিক থেকে হয়তো বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হয়। নারী বিভিন্ন কাজ বা ব্যবসার
সঙ্গে যুক্ত তবু তাকে পুরুষতান্ত্রিক মূল্যবোধসহ নানা বাধার সন্মুখীন হতে হচ্ছে শ্রমিক
যে নারী তার মজুরী কাঠামো, ঋণ প্রদান ও আদায় প্রক্রিয়া থেকে শিক্ষিত নারীটির নিযুক্তি,
পদন্নোতির সবক্ষেত্রেই সে পরিস্থিতির শিকার হতে পারে। এর বাইরেও আরেকটি বিষয় আছে যাকে
এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। সেটা হলো যৌন নিপীড়নের সম্ভাবনা। পদোন্নতির ক্ষেত্রে, কর্ম পরিবেশে
অবমাননামূলক কথাবার্তা কখনও বিদ্রুপ, কর্মক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন করা এসমস্তই নারীর ব্যক্তিত্ব
থাকা সত্বেও কিন্তু ঘটতে পারে।
সংশপ্তক: এই প্রসঙ্গে
আমাদের সমাজ বাস্তবতায় লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়টি একজন লেখিকা মেঘ অদিতিকে কতটা বিচলিত
করে। সেই বিচলনের রূপ ও বিকাশ সম্বন্ধে যদি আমাদের অবহিত করেন!
মেঘ অদিতি: নারী। দ্য সেকেন্ড সেক্স, আর সে কারণেই তারা পুরুষের সমঅধিকার পাবে
না! যোগ্যতা নয়, মেধার বিচারেও নয় বা সৃষ্টির রহস্যে একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে্ও
নয়, বিষয়টা শুধুই লিঙ্গ বৈষম্য? কোনো বিশেষ পেশায় পুরুষের দক্ষতার সমান নারী অথবা নিজেকে
আরও বেশি দক্ষ হিসেবে একজন নারী তো কতবার প্রমাণ রেখেছে। ঠিক পরিবারে অথবা সমাজেও এই
লিঙ্গ বৈষম্য কিন্তু যোগ্যতার প্রশ্ন নিয়েই নারী-পুরুষের মধ্যে প্রভেদ সৃষ্টি করে আসছে।
আর এ বৈষম্য তো সামাজিক স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করে দেয়। ধর্ষণ, হত্যা, এসিড নিক্ষেপের
মতো অসামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়টি যুক্ত। যেখানে রাষ্ট্রের অর্ধেক
জনগোষ্ঠী নারী সেখানে যদি তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো এবং অন্যান্য উন্নয়নের
সঙ্গে সম্পৃক্ত না হতে পারে তবে প্রকৃত উন্নয়নের পথ সত্যিই দুরূহ হয়ে পড়ে। নারী-পুরুষের
সম্মিলিত প্রচেষ্টা আর সৃষ্টিশীলতা নিয়েই তো আজকের এই সভ্যতা। একটি
শিশু নারী না পুরুষ হবে সেটার জন্য তো সে দায়ী নয়। হতে পারে না। তাহলে? কেন এই
বৈষম্য?
সংশপ্তক: বর্তমান
সমাজে নারী নির্যাতনের বিষয়টি কি রাষ্ট্র ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে
বলে মনে হয় আপনার? সামাজিক
ভাবে আমাদের ভূমিকাই বা কি হওয়া উচিত এই বিষয়ে?
মেঘ অদিতি: আসলে এই শতাব্দীতে এসেও এখনও নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে এই ব্যাপারটা
মেনে নিতে কষ্ট হলেও গোটা বিশ্বজুড়েই এই চিত্রটা ভয়াবহ। আর এটা ঘটে চলেছে। এই নির্যাতন
প্রতিরোধে রাষ্ট্রের ভূমিকা দুর্বল হলে নির্যাতিতরা আইনের বিচার সে অর্থে পান না।
আইন আছে কিন্তু তার কার্যকারী ব্যবহার নেই। আবার আইনের দ্বারস্থ হলে পারিবারিকভাবে
বা সামাজিক ভাবেও হয়ত আরও বেশি নির্যাতিত হতে পারেন এ আশঙ্কাতে বা লোকলজ্জার ভয়েও অনেকে
চুপ করে থাকেন। লিঙ্গ বৈষম্য না ভেবে মানুষকে মানুষ হিসেবে তার মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি
এবার ভাবা উচিত। আর পুরোনো চিন্তাভাবনা বদলানোর জন্য রাষ্ট্রীয় ও
সামাজিক উদ্যোগ বহুলভাবে দরকার। কেবল নারী শিক্ষা বা নারীর ক্ষমতায়নের মধ্যেই আটকে
থাকলে এই নির্যাতন এড়ানো সম্ভব নয়। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গীতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে
হলে প্রয়োজন ব্যাপক প্রচারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধি যা একই সাথে রাষ্ট্র ও সমাজ উভয়েরও
দায়িত্ব।
সংশপ্তক: বাড়ির
বাইরে মেয়েদের সুরক্ষার বিষয়টি আজও কেন এত অবহেলিত! কি মনে হয় আপনার? দেশের
প্রশাসনের শীর্ষপদে মহিলারা নেতৃত্ব দিলেও অবস্থার উন্নতি হয় না কেন? গলদটা রয়ে যাচ্ছে কোথায়?
মেঘ অদিতি: নারীর নিরাপত্তা যে একটি জাতীয় ইস্যু সেটাই তো মনে করা হচ্ছে না। আমাদের
রাষ্ট্রীয় আইনে নারীর জন্য যথেষ্ট সুরক্ষার বিধান রয়েছে। সামাজিক অবক্ষয়, সুরক্ষার
জন্য যে আইন তার দুর্বল প্রয়োগ, সময়মতো আইনের আশ্রয় না নেয়া এবং আমরা
বৃহত্তর জনগোষ্ঠির ভেতর এই সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে সচেতনতাই সৃষ্টি করতে পারছি না।
মূলকথা যথাযথ পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির অভাব।
সংশপ্তক: আন্তর্জাতিক নারীদিবস পালন আর সারা বছর নারী নির্যাতনের ধারাবাহিত ব্রেকিং
নিউজ, এর মধ্যে সমন্বয় হবে কি করে? মেয়েদের এই বিষয়ে কি কর্তব্য আপনার মতে?
মেঘ অদিতি: এ ব্যাপারে আগের প্রশ্নেই কথা হয়ে গেছে। এবার আসা যেতে পারে এ বিষয়ে
মেয়েদের কর্তব্য। প্রশ্ন যদি এবার আমি করি যে, যে কোনো দুর্ঘটনার জন্য কি তবে মেয়েরাই
দায়ী? কেননা বেশীরভাগে ক্ষেত্রে নারীর উপর সহিংসতার জন্য নারীকেই তো ঘুরে ফিরে দায়ী করা হয়। বরং এভাবে ভাবি না কেন যে কোনো রকম নির্যাতনের
ক্ষেত্রে নারী সম্পর্কে সেই পুরোনো ধ্যান ধারণাকে বদলানো দরকার আর তা নারী তো বটেই
পুরুষেরও প্রথম ও প্রধান কর্তব্য!
সংশপ্তক: সমাজে নারীর
সম্মান প্রতিষ্ঠিত না হলে কোনো দেশ জাতি সমাজ উন্নত হতে পারে না। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে
আপনি কতটা আশাবাদী?
মেঘ অদিতি: মোদ্দাকথা নারী পুরুষ সমতা। এই ধারণাটিকে মনে স্থান দেওয়া জরুরী।
সম্মান সেভাবেই প্রতিষ্টা পাবে। আর ভবিষ্যত, যে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে আমাদের সমাজ,
তা বদলাতে হলে শুধু নারী উন্নয়ন নীতি ও পরিকল্পনা
প্রণয়নই শেষ কথা নয়, যথাযথ প্রয়োগ চাই তার চাই সর্বস্তরের
সচেতনতা বৃদ্ধি তাহলে নিশ্চয়ই তার সুফল আশা করতে পারি। স্বপ্ন দেখতেই পারি
বৈষম্যহীন এক সমাজের যেখানে নারী এবং পুরুষ উভয়ের পরিচয় প্রথমত মানুষ এবং
শেষপর্যন্ত মানুষ।
[মেঘ অদিতি।
বাংলাদেশ। সাহিত্যের দুই শাখাতেই সমান পারদর্শী। প্রতিষ্ঠিত চিত্রশিল্পী]
The Supreme Court of India recently dismissed a plea by a woman to declare marital rape a criminal offence. The petitioner, a Delhi-based executive, alleged that she was repeatedly subjected to sexual violence by her husband, including having torch lights pushed into her. Sadly, she has no legal recourse: according to Section 375 of the Indian Penal Code, sexual intercourse by a man with his wife, the wife not being under 15 years of age, is not sexual assault, even if it is without consent.
ReplyDelete"These laws persist in India because our lawmakers, a majority of whom are men, are still steeped in patriarchal notions of family, honour and women-as-chattel."
Marriage Certificate = Right to Sexual Assault?
It is possible that the SC dismissed the plea on technical grounds: "You are espousing a personal cause and not a public cause...This is an individual case", it said. But other attempts to seek legal recourse against marital sexual assault have not been successful. Nine months ago, a trial court in Delhi refused to consider forcible sexual intercourse between married partners an offence, even though the petitioner claimed that she had been forced into marriage. Unable to verify the authenticity of her claims that she had been abducted and forced to sign a marriage certificate, the judge went by the enlightened guidelines of Section 375 -- that it was all right for her legally wedded husband to do as he pleases with her.
The prosecutrix and accused being legally wedded husband and wife, the prosecutrix being major, the sexual intercourse between the two, even if forcible, is not rape and no culpability can be fastened upon the accused.
So once a woman is married and is above 15 years of age, she loses to the right to consent in sexual relations. This despite a recent UN Study confirming the prevalence of sexual violence in Indian marriages. How is this not a gross violation of our fundamental right to life, equality and against exploitation?
A Wife's Duty
But why blame Section 375 alone? The Hindu Marriage Act of 1955 compels a wife to have sex with her husband, and a husband can easily seek divorce on grounds of cruelty if he can convince the court that his wife refused him sexual intercourse. A Delhi High Court judgement upheld the divorce granted to a man by a trial court because:
The refusal of the appellant wife to participate in the "Dud Mundari ceremony" and thereafter "Chudha ceremony", which were customary rituals in the family of the respondent husband caused embarrassment and humiliation to the respondent and such acts on the part of the appellant amounted to cruelty.
and
In the span of one year and two months of the married life, the parties had sex only for about 10-15 times and also denial of the appellant for sexual relationship on the very first night of the marriage is a grave act of cruelty as healthy sexual relationship is one of the basic ingredients of a happy marriage.
So a wife's dharma is to provide sex to her husband, as frequently as he demands. Has a woman sought divorce on the grounds of inadequate sexual intercourse? That's unlikely -- the only conditions under which a wife is granted divorce on sexual grounds is if she presents compelling evidence to establish her husband's impotence.
Child Marriages
A further dichotomy is that while the legal age for marriage in India is 18 years for women, India has the second highest number of child marriages in the world. It is widely known that the child brides--some as young as 12--have little agency in these marriages. Since child marriages are linked to education and income levels, it is highly likely that a majority of the child brides would not have registered birth certificates, making it difficult to prove their age. By legalising marital rape, we also seem to be legalising sexual assault of children under the aegis of marriage.
The Indian Family System
ReplyDeleteThe truth is that these laws persist in India because our lawmakers, a majority of whom are men, are still steeped in patriarchal notions of family, honour and women-as-chattel. The Justice Verma Committee (JVC) that was set up to re-examine laws related to crimes against women rightly recommended in 2013 that marriage should not be considered as an irrevocable consent to sexual acts:
exemption for marital rape stems from a long outdated notion of marriage which regarded wives as no more than the property of their husbands... whereas marriage is in modern times regarded as a partnership of equals.
How did our lawmakers respond to this? A Home Ministry Standing Committee invoked our beloved "family system" in rejecting the JVC's recommendation to criminalize marital rape:
... several Members felt that the marital rape has the potential of destroying the institution of marriage. The Committee felt that if a woman is aggrieved by the acts of her husband, there are other means of approaching the court. In India, for ages, the family system has evolved and it is moving forward. Family is able to resolve the problems and there is also a provision under the law for cruelty against women. It was, therefore, felt that if the marital rape is brought under the law, the entire family system will be under great stress and the Committee may perhaps be doing more injustice.
Incidentally, how many women did this Committee have? Three out of 29.
This map on Wikimedia shows how India compares with the rest of the world on the legal treatment of marital rape (Hint: We're not exactly progressive). No wonder that this widely shared article dissed our marital rape regulations as amongst the most sexist, and dangerous, from around the world.
Do read the entire Delhi HC judgement and the observations of the Home Ministry Standing Committee to understand what we are up against.
CA ANINDA GHOSH-- When Dr Abhijit Roy is brutally slaughtered , who murders is a Man , --Muslim or may be even Hindu ... might have been a Christian of the past ... This perceived image of supremacy / dominance is quite responsible for a lady's degradation also. That happens with Taslimadi, that happens with ladies of Iraq , Saudi & Pakistan , who are relegated to public humiliations .
ReplyDelete